মহেশখালীর মন্দভাগ্য-পর্যটনদ্বীপ এখন সন্ত্রাসীদের আস্তানা
মহেশখালী হতে পারত পর্যটন আকর্ষণের নিরাপদ ও ঝলমলে দ্বীপ। কিন্তু এই দ্বীপকে কেন্দ্র করে আমাদের মৃতপ্রায় পর্যটন শিল্পকে যে কিছুটা হলেও বিস্তৃত ও আকর্ষণীয় করে তোলা যায়, সেই সুদূরপ্রসারী চিন্তাটাই আমাদের প্রশাসনের নেই। এ কারণে হয়তো ২৬৮ বর্গকিলোমিটার আয়তনের দ্বীপটি সগৌরবে নিজের অস্তিত্ব বিশ্বের ভ্রমণপিপাসু মানুষের কাছে এখনও প্রকাশ করতে পারছে না।
অবহেলা, স্থানীয় প্রশাসনের দায়িত্বজ্ঞানহীনতা ও কেন্দ্রীয় পর্যায়ে দায়িত্বশীলতার অভাবে মহেশখালী এখন সন্ত্রাসের জনপদে পরিণত হয়েছে। বৃহস্পতিবার সমকালে প্রকাশিত রিপোর্টে দেখা যায়, প্রতিদ্বন্দ্বী সন্ত্রাসী গ্রুপের মধ্যে উত্তেজনা চলার সময় পুলিশ সেখানে উপস্থিত হলে পরিস্থিতি শান্ত হলেও সন্ত্রাসীরা পুলিশকে লক্ষ্য করে অতর্কিতে গুলি চালালে এসআই নিহত ও এক কনস্টেবল আহত হন। এতেই বোঝা যায় মহেশখালীর সন্ত্রাসী গ্রুপগুলো কতটা বেপরোয়া ও শক্তিশালী। লোকালয় পাতায় একই বিষয়ের ওপর আরেকটি রিপোর্ট পর্যালোচনা করে দেখা যায়, দ্বীপটিতে অনেকগুলো অবৈধ অস্ত্র তৈরির কারখানা গড়ে উঠেছে। পুলিশ মাঝে মধ্যে সেখানে অভিযান চালালেও সন্ত্রাসী ও অস্ত্র তৈরির কারখানা সম্পূর্ণরূপে ধ্বংস করে দেওয়ার জন্য ব্যাপক ও লাগাতার কোনো অভিযান চালায়নি। তাছাড়া বঙ্গোপসাগরের মুখে হওয়ার কারণে এটি সমুদ্র ও সনি্নহিত নদীতে জলদস্যুতা চালানোর পরিকল্পনা করা ও দস্যুতা সেরে পালিয়ে থাকার নিরাপদ আস্তানা হিসেবেও কাজ করছে। এ কারণে দেশি পর্যটকরাও দ্বীপটিতে ভ্রমণ করার সময় নিরাপত্তাহীনতায় ভোগেন। এ অবস্থায় জরুরি প্রয়োজন হচ্ছে, কেন্দ্রীয়ভাবে এই দ্বীপকে পর্যটন ম্যাপে গুরুত্বপূর্ণ স্পট হিসেবে চিহ্নিত করে সেখানে হোটেল-মোটেলসহ বিভিন্ন আন্তর্জাতিক মানের সুযোগ-সুবিধার ব্যবস্থা করা। তাহলে কক্সবাজারে আসা পর্যটকরা মহেশখালীতেও কিছুদিন থেকে যাওয়ার স্পট হিসেবে বেছে নিতে উৎসাহী হবেন। আমরা মহেশখালীতে অবৈধ অস্ত্র কারখানা, জলদস্যুদের আস্তানাসহ সন্ত্রাসের সব উপকরণ পরিকল্পিতভাবে ধ্বংস করে একে পর্যটকদের জন্য আকর্ষণীয় ও নিরাপদ করতে সরকারের প্রতি আহ্বান জানাই। সন্ত্রাসীদের গুলিতে নিহত পুলিশ সদস্যের পরিবারবর্গের প্রতি আমরা সমবেদনা জানাচ্ছি।
No comments