দুই বছরেও চূড়ান্ত হয়নি বঙ্গবন্ধু সাফারি পার্কের মহাপরিকল্পনা
স্টাফ রিপোর্টার: আন্তর্জাতিকমানের একটি সাফারি পার্ক গড়ে তোলার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছিল ২০১০ সালের মার্চে। গাজীপুর জেলার শ্রীপুর ও গাজীপুর উপজেলার বনাঞ্চলের ৩ হাজার ৬৯০ একর জমির উপর গড়ে উঠবে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব সাফারি পার্ক। কিন্তু প্রায় দুই বছরেও মহাপরিকল্পনাটি চূড়ান্ত করতে পারেনি কর্তৃপক্ষ। অথচ ২০১২ সালের জুনের মধ্যে প্রকল্পটি বাস্তবায়নের কথা। কিন্তু বন ও পরিবেশ মন্ত্রণালয়ের কাজ যেভাবে চলছে আগামী বছরের মধ্যেও বাস্তব কাজ শুরু হবে কিনা সংশয় রয়েছে। ব্যয় ধরা হয়েছে ২৪৩ কোটি টাকা। এডিপিতে বরাদ্দ রাখা হয়েছে মাত্র ২১ কোটি ৪০ লাখ টাকা। কিন্তু কাজ কিছুই হয়নি। বন বিভাগ সূত্রে জানা যায়, কোর সাফারি পার্ক, সাফারি পার্ক, সাফারি কিংডম, বায়োডাইভারসিটি পার্ক, এক্সটেনসিভ এশিয়ান সাফারি পার্ক, ফল ও পশুখাদ্য উপযোগী বাগান সৃজনের পরিকল্পনা এতে রয়েছে। এতে থাকবে পেলিকেন দ্বীপ, লেক জোন, ক্রাউন ফিজেন্ট পাখি পালা, টিয়া ও তোতা পাখি পালা, ধনেশ পাখি পালা, কুমির পার্ক, অর্কিড হাউজ, প্রজাপতি কর্নার, ভালচার কর্নার, প্যাঁচা কর্নার, এগ ওয়ার্ল্ড, কচ্ছপ, কাছিম ব্রিডিং সেন্টার, ক্যাঙ্গারু বাগান, হাতী শো গ্যালারি, বন ছাগল/গড়াল হাউজ, বানর বেষ্টনী, ময়ূর/মেকাউ, সর্প পার্ক, ফেন্সি কার্প গার্ডেন, ওরাং ওটান হাউজ, গুইসাপ বাগান, জিরাফ ফিডিং স্পট, একুরিয়াম, সুইমিং পুল, জলাধার। ১৩৩৪ একর জমির উপর হবে কোর সাফারি পার্ক। ২৩ দশমিক ৫০ একরে বাঘ, ২৮ একরে সিংহ, ৮ দশমিক ৫০ একরে কালোভালুক, ১২ একরে চিতাবাঘ, ৮ একরে আফ্রিকান চিতা, ৮১ দশমিক ৫০ একরে চিতা হরিণ, ৮০ একরে গয়াল, ১০৫ একরে হাতী, ৩০ দশমিক ৫০ একরে জলহস্তী, ২২ একরে মায়া ও প্যারা হরিণ, ২৫ একরে নীল গাই ও বারো সিংহা, ১১৪ একরে ওরিয়েক্স গাকেল, ব্ল্যাক বকসহ পাখি দ্বীপ, ৪০৭ একরে বন্য মহিষ, ওয়াটার বাফেলো, ওয়াটার বক, ইন্ডিয়ান বাইসন ও ২৯০ একরে আফ্রিকান সাফারি পার্ক থাকবে। ১ লাখ বিলুপ্তপ্রায় ও দুর্লভ প্রজাতির বৃক্ষরোপণ করা হবে। সকল এশীয় তৃণভোজী, ছোট মাংসাসি প্রাণী, পাখি, সরিসৃপ, উভচর প্রাণী থাকবে ৮২৪ একরে। বাঁশ, বেত, পাহাড়ি বৃক্ষ সৃজন করা হবে ৯৬৫ একরে। সাফারি ওয়ার্ল্ড ব্যাংকক, থাইল্যান্ড, নেহেরু সাফারি পার্ক, হায়দরাবাদ, বালি সাফারি পার্ক ও ইন্দোনেশিয়ার সঙ্গে সাদৃশ্যপূর্ণ হওয়ার কথা বঙ্গবন্ধু সাফারি পার্ক। প্রকল্প এলাকায় ব্যক্তি মালিকানার জমি রয়েছে ৬৫৮ একর। এই জমি অধিগ্রহণে কোন পদক্ষেপই নেয়া হয়নি। ভাওয়াল জাতীয় উদ্যানের শালবনে ৬৩১ প্রজাতির গাছপালা ও ২২২ প্রজাতির বন্যপ্রাণী ছিল। বর্তমানে বনাঞ্চলে উদ্ভিদ ও পানি বৈচিত্র্য হুমকির মুখে।
No comments