রেলের উন্নয়নে প্রয়োজন রাজনৈতিক সদিচ্ছা

রেলকে বেসরকারীকরণ নয়, সরকারের অধীনে রেখেই এর যাত্রীসেবা বাড়াতে হবে। রেলের উন্নয়নে নেওয়া উদ্যোগগুলোর ধারাবাহিকতা রাখতে হবে। এর জন্য রাজনৈতিক সদিচ্ছা দরকার। রেলকে শক্তিশালী করা গেলে দেশের দারিদ্র্য বিমোচন কার্যক্রমও গতি পাবে।


জাতীয় প্রেসক্লাবে রেলপথের উন্নয়নে আয়োজিত এক সেমিনারে গতকাল বৃহস্পতিবার বক্তারা এসব কথা বলেন। বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) নগর ও অঞ্চল পরিকল্পনা বিভাগ, বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব প্ল্যানার্স, পরিবেশ বাঁচাও আন্দোলন ও ডব্লিউবিবি ট্রাস্ট যৌথভাবে এ সেমিনারের আয়োজন করে।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে রেলমন্ত্রী সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত বলেন, দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নে রেলের প্রয়োজনীয়তা রাজনৈতিক দলগুলোকে উপলব্ধি করতে হবে। রাজনৈতিক দলগুলোর কর্মসূচিতে রেলের উন্নয়নের বিষয়টি অন্তর্ভুক্ত করতে হবে।
সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত আরও বলেন, ‘দীর্ঘদিনের বঞ্চনা, অবহেলা ও নানা ষড়যন্ত্রে রেল যখন খুব নাজুক অবস্থায়, তখন নতুন মন্ত্রণালয় করে আমাকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। আমি সবাইকে নিয়ে বাংলাদেশের প্রধান যাতায়াতমাধ্যম হিসেবে রেলকে গড়ে তুলতে আন্তরিকভাবে কাজ করব।’
বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টির সভাপতি মনজুরুল আহসান খান বলেন, পণ্য পরিবহন ও যাতায়াতের দিক বিবেচনা করলে রেলকে দেহের রক্ত চলাচলের সঙ্গে তুলনা করা যেতে পারে। তাই এর উন্নয়নে নতুন ইঞ্জিন-কোচ আমদানি, লাইন নির্মাণ ও নতুন নতুন ট্রেন চালু করতে হবে।
রেলওয়ের মহাপরিচালক আবু তাহের বলেন, রেল সাধারণ মানুষের বাহন। কিন্তু এটাকে দিনের পর দিন অবহেলা করে ধ্বংস করা হয়েছে।
সেমিনার ও পরিবেশ বাঁচাও আন্দোলনের সভাপতি আবু নাসের খান বলেন, ঋণ প্রদানকারী গোষ্ঠীর প্ররোচনায় রেল খাতকে সংকুচিত করা হয়েছে। প্রকল্প বাস্তবায়ন, অবকাঠামো উন্নয়ন ও ক্রয় খাতে প্রচুর দুর্নীতির অভিযোগ আছে। রেলের উন্নতি করতে হলে দুর্নীতি বন্ধ ও বিদেশিদের হস্তক্ষেপ কমাতে হবে।
নগর পরিকল্পনাবিদ নিয়াজ রহমান বলেন, প্রস্তাবিত ঢাকা উড়ালসড়ক হলে রেলের নতুন লাইন সম্প্রসারণ বাধাগ্রস্ত হবে। তাই রেল যাতে ক্ষতিগ্রস্ত না হয়, সেটা মাথায় রেখেই পরিকল্পনা করতে হবে।
সেমিনারে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন বুয়েটের নগর ও অঞ্চল বিভাগের শিক্ষক সুমন মিত্র ও ডব্লিউবিবি ট্রাস্টের পরিচালক সৈয়দ মাহবুবুল আলম। মূল প্রবন্ধে বলা হয়, রেল এমন একটি প্রতিষ্ঠান, যার লাভ শুধু টাকার অঙ্কে বিবেচনা করলে চলবে না; রাষ্ট্রীয়, পরিবেশ, অর্থনীতিতে যেসব অবদান রাখছে, তা-ও বিবেচনা করতে হবে।
সেমিনারে আরও বক্তব্য দেন বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব লেবার স্টাডিজের কর্মকর্তা কবীর আহমেদ, নাগরিক অধিকার সংরক্ষণ পরিষদের হাফিজুর রহমান, বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলনের মহিদুল হক খান প্রমুখ। বিজ্ঞপ্তি।

No comments

Powered by Blogger.