এনজিওর নামে প্রতারণা-প্রশাসন দায়িত্ব এড়াতে পারে না
সিলেটে বেসরকারি সংস্থার (এনজিও) নাম ভাঙিয়ে দেড় কোটি টাকা হাতিয়ে প্রতারক চক্রের উধাও হয়ে যাওয়ার ঘটনার দায় স্থানীয় প্রশাসন এড়িয়ে যেতে পারে না। প্রশাসন প্রতারণার ব্যাপারে সতর্ক থাকলে এ ধরনের ঘটনা ঘটতে পারত না।
রোববার সমকালের লোকালয় পাতায় প্রকাশিত এ সম্পর্কিত রিপোর্টে দেখা যায়, সিলেট নগরীর চৌকিদেবী এলাকার দুই হাজার বিনিয়োগকারীর প্রায় এক কোটি টাকা নিয়ে পাবলিক ওয়েলফেয়ার অর্গানাইজেশন নামের বেসরকারি সংস্থাটির কর্মকর্তা-কর্মচারীরা পালিয়ে যায়। প্রশাসনের নাকের ডগা দিয়ে কী করে একটি ভুয়া বেসরকারি প্রতিষ্ঠান তাদের অবৈধ কাজ অব্যাহত রাখতে পারল? যদি জেনেও তারা ব্যবস্থা না নিয়ে থাকে তাহলে এর সঙ্গে প্রশাসনের কোনো যোগাযোগ ছিল কি-না সে ব্যাপারে প্রশ্ন উঠতে পারে। সোস্যাল মার্কেটিং কোম্পানি নামে এনজিওটির কাছ থেকে মা ও শিশুর সুরক্ষা প্রকল্পের কাজ নেয় কনজ্যুমার কানেকটেড কমিউনিকেশন লিমিটেড। সংস্থাটি বৃহস্পতিবার পর্যন্ত কাজ চালিয়ে যায়। পরের দিন অর্থাৎ শুক্রবারে দেখা যায়, প্রতিষ্ঠানটির ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা-কর্মচারীরা মাঠ পর্যায়ের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বেতনের অর্ধকোটি টাকা নিয়ে উধাও হয়ে গেছে। মানুষকে প্রতারিত করে ভুয়া প্রতিষ্ঠানের নামে অর্থ আত্মসাতের ঘটনা এ দেশে এ পর্যন্ত অনেক ঘটেছে। কোনোটির বিচার হয়েছে। কোনোটির হদিস মেলেনি অথবা আমানতকারীদের অর্থ পুরোপুরি উসুল করে দেওয়া যায়নি। তাই ভুয়া প্রতিষ্ঠানের নামে অথবা আইনানুগ পন্থা ছাড়া বেআইনিভাবে মানুষের কাছ থেকে কোনো ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান যাতে অর্থ আত্মসাৎ করতে না পারে সেটি নিশ্চিত করাও এখন স্থানীয় প্রশাসনের নিয়মিত দায়িত্বের মধ্যে পড়ে। কিন্তু সিলেট প্রশাসন তাদের ওপর অর্পিত দায়িত্ব সঠিকভাবে পালন করেনি বলেই এতগুলো মানুষের অর্থ নিয়ে গুটি কয়েক প্রতারক তাদের প্রতারণার জাল বিস্তৃত করা, এমনকি অর্থ নিয়ে গা-ঢাকা দিতে পেরেছে। সিলেটের দুই ভুয়া এনজিও পরিচালনাকারী চক্রকে পাকড়াও করা প্রশাসনের দায়িত্ব। আমানতকারীদের আমানত এবং কর্মরতদের পাওনা বেতনের টাকা যাতে পাওয়া যায় তারও ব্যবস্থা করতে হবে প্রশাসনকেই।
No comments