গহন গহীন-আইনের খড়্গ ও ইন্টারনেট! by ফখরুজ্জামান চৌধুরী
বিশ্বব্যাপী অসংখ্য ইন্টারনেট ব্যবহারকারী ১৮ ডিসেম্বর সকাল ৬টায় সবিস্ময়ে লক্ষ করল, জনপ্রিয় এবং কোনো রকম মানুষ ছাড়া যে অবাধ তথ্যভাণ্ডারটি জ্ঞানপিপাসু মানুষের বিভিন্ন তথ্যের প্রয়োজন এ পর্যন্ত মিটিয়েছে, তা খুলল ঠিকই। কিন্তু মুহূর্তের মধ্যে তথ্যসমৃদ্ধ উইকিপিডিয়া, উদ্যোক্তারা যাকে বলেন, খরচবিহীন তথ্যভাণ্ডার, ঢাকা পড়ে গেল শৈল্পিক সুষমামণ্ডিত কালো এক যবনিকার আড়ালে।
উইকিপিডিয়ার মনোগ্রাম সংবলিত কৃষ্ণবর্ণের এই পর্দায় সুস্পষ্ট অক্ষরে ইংরেজিতে লেখা সংক্ষিপ্ত কিছু বক্তব্য, যার সারাৎসার বাংলায় হবে : "মুক্ত জ্ঞানবিহীন একটি পৃথিবী কল্পনা করুন। বিগত এক দশকেরও বেশি সময় ধরে লাখ লাখ শ্রমঘণ্টা ব্যয় করে আমরা গড়ে তুলেছি মানব ইতিহাসের বৃহত্তম এনসাইক্লোপেডিয়া-উইকিপিডিয়া। এ মুহূর্তে যুক্তরাষ্ট্রের কংগ্রেসে এমন কিছু আইন প্রণয়ন প্রক্রিয়াধীন আছে, যা বলবৎ হলে অবাধ ও নিখরচা ইন্টারনেট ব্যবস্থা মারাত্মক হুমকির মুখে পড়বে। এই বিপদের বিষয়ে জনগণের মাঝে সচেতনতা সৃষ্টি করার লক্ষ্যে আমরা উইকিপিডিয়া ২৪ ঘণ্টার জন্য 'ব্ল্যাক আউট' করতে বাধ্য হলাম।"
নোটিশের নিচে জনপ্রিয় তিনটি সামাজিক নেটওয়ার্ক ফেসবুক, গুগল ও টুইটারের মনোগ্রাম এবং এসব নেটওয়ার্ক ব্যবহারকারীর কাছে আবেদন করা হয়েছে প্রতিবাদে মুখরিত হওয়ার জন্য।
অনুরূপভাবে প্রতিবাদে শামিল হয় গুগল ইনক, ফেসবুক ইনক, গুগল হোমপেজের ব্যবহারকারীরা অনলাইন ক্লিক করলে পরিচিত লোগোর পরিবর্তে দেখলেন, কালো রঙে ঢাকা পড়ে আছে চির পরিচিত বর্ণিল এবং শৈল্পিক সুষমামণ্ডিত ইংরেজি বর্ণমালা আর ফুলদানির সমন্বয়ে আঁকা দৃষ্টিনন্দন চতুর্ভুজ গুগলের লোগোটি। কালো আয়তক্ষেত্রের নিচে ছোট হরফে লেখা : 'কংগ্রেসকে জানিয়ে দাও, অনুগ্রহপূর্বক ওয়েব সেন্সর করবেন না।' আরো আবেদন করা হয়েছে : 'পাইরেসি বন্ধ করুন, কিন্তু স্বাধীনতা খর্ব করে নয়।' প্রতিবাদে শামিল হয়ে রেভিট ডটকম তাদের সংবাদ প্রচারের কাজ ১২ ঘণ্টা বন্ধ রাখে। প্রতিবাদে আরো যোগ দেয় ফায়ারফক্স, মজিলা নামক ইন্টারনেট এক্সপ্লোরার।
কেন এই বিশ্বব্যাপী ইন্টারনেট জগতের বিখ্যাত প্রতিষ্ঠানগুলোর অভিনব এই প্রতিবাদ? এর অভিঘাত পড়েছে বিশ্বব্যাপী। সম্প্রতি ইন্টারনেটের ব্যবহার শুধু কিছু বিত্তশালী ব্যক্তি আর বড় বড় করপোরেট হাউসের মধ্যে সীমাবদ্ধ নেই। এর বিস্তৃতি ও প্রসার ঘটে অতি সাধারণের মধ্যেও। বিশেষ করে ছাত্রছাত্রীদের মধ্যে ইন্টারনেটের ব্যবহার যত ব্যাপক, একসময়ে আমরা যখন ছাত্র ছিলাম, তখন শ্রেষ্ঠ শিক্ষকের দেওয়া ক্লাস নোটও এত ব্যবহৃত হতো না। ইন্টারনেট সার্ভিস প্রদানকারী সংস্থার কর্তাব্যক্তি যেমন_উইকিপিডিয়ার প্রতিষ্ঠাতা জিমি ওয়েলস খুব ভালোভাবেই জানেন ছাত্রছাত্রী এবং জ্ঞানান্বেষীদের মধ্যে তাদের ওয়েবের জনপ্রিয়তার পরিমাণ।
ওয়েবটি ২৪ ঘণ্টার জন্য ব্ল্যাক আউট করার আগে কর্তৃপক্ষ এর ব্যবহারকারী, বিশেষ করে ছাত্রছাত্রীদের উদ্দেশে একরকম উপদেশই বলা যায় দিয়েছে। ছাত্রছাত্রীদের তারা জানায়, যারা তাদের পাঠ্যক্রম এখনো পড়ে শেষ করেনি, তারা যেন দয়া করে এখনই তা করে নেয়। ১৮ ডিসেম্বর সকাল ৬টা থেকে ২৪ ঘণ্টার জন্য বিনা মূল্যে ব্যবহারযোগ্য জ্ঞান কল্পদ্রুমতুল্য উইকিপিডিয়া ব্ল্যাক আউট করতে কর্তৃপক্ষ অনিচ্ছা সত্ত্বেও বাধ্য হবে। ইংরেজি এই ওয়েবটি শুধু বিনা মূল্যে লভ্য বলেই নয়, এতে যে পরিমাণ বিষয় ও তথ্যের সমাহার রয়েছে, তার তুলনায় এ মুহূর্তে অন্য কোনো তথ্যভাণ্ডারের কথা ভাবাও যায় না। এনসাইক্লোপেডিয়া ব্রিটানিকা কিংবা আমেরিকানার কথা হয়তো অনেকে বলবেন। সত্য বটে, এই দুই মহা আকর গ্রন্থ জ্ঞান-সমুদ্রতুল্য। কিন্তু তা তো সবার কাছে লভ্য নয়। এর যে বিশাল আয়তন ও দুর্মূল্য, ফলে সাধারণ মানুষ তো দূরের কথা, সাধারণ মানের লাইব্রেরি কিংবা সংগ্রহশালার সংগ্রহেও তা রাখা প্রায় অসম্ভব।
উইকিপিডিয়ার এই প্রতিবাদী ব্ল্যাক আউটের সঙ্গে অধিকাংশ জনপ্রিয় ওয়েব সংহতি প্রকাশ করে হয় ব্ল্যাক আউটে গেছে অথবা অন্যভাবে সংহতি প্রকাশ করেছে। যুক্তরাষ্ট্রের জনপ্রিয়তার বিচারে উইকিপিডিয়ার অবস্থান দশম স্থানে। ছাত্রছাত্রীদের জন্য তাদের পৌনঃপুনিক সতর্ক বাণী ছিল এ রকম : ছাত্রদের জন্য সতর্ক বাণী! তাড়াতাড়ি হোমওয়ার্কগুলো করে ফেলো এবং বাজে আইনের বিরুদ্ধে বুধবার, ১৮ ডিসেম্বর, ২০১২ প্রতিবাদ করবে! উইকিপিডিয়ার সহপ্রতিষ্ঠাতা জিমি ওয়েলস টুইটারে সর্বসাধারণ্যে ঘোষণা করেন ওয়েবসাইটটির ব্ল্যাক আউটের কথা।
বিস্ময়কর বিষয়, উইকিপিডিয়ার সঙ্গে একাত্মতা ঘোষণা করে বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তের ছোট-বড়, নামি-অনামি ১০ হাজার সাইট, 'কালো' হয়ে যায়! সংবাদ পর্যালোচনামূলক সাইট রেডিট (Reddit) এবং ব্লগিং সিস্টেম ওয়ার্ড প্রেসও প্রতিবাদে শামিল হয়। গুগল ইনক তার যুক্তরাষ্ট্রের দৃশ্যমান হোমপেজে যে আইনের প্রতিবাদে ইন্টারনেট বিশ্ব ক্ষোভে ফেটে পড়ছে, তার পূর্ণ বিবরণ পোস্ট করে দিয়েছে।
এত প্রতিবাদের ঝড় যে প্রস্তাবিত আইনের বিরুদ্ধে, তার সম্বন্ধে কিছু জানা দরকার। প্রস্তাবিত আইনের মূল উদ্দেশ্য হলো, বিদেশভিত্তিক ওয়েবসাইটগুলোর পাইরেটেড চলচ্চিত্র, সংগীত এবং অন্যান্য তথ্য-বিনোদনসামগ্রী বিক্রি করার সুযোগটি বন্ধ করে দেওয়া। এই উদ্দেশ্যে ইতিমধ্যে দুটি বিল আনা হয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিনিধি পরিষদে (হাউস অব রিপ্রেজেনটেটিভ) আনা বিলটির নাম 'স্টপ অনলাইন পাইরেসি অ্যাক্ট'_সংক্ষেপে সোপা (SOPA) আর প্রায় অনুরূপ অন্য বিল 'প্রোটেক্ট আইপি (ইন্টেলেকচুয়াল প্রোপার্টি) প্রোপার্টি অ্যাক্ট'_সংক্ষেপে পিপা (PIPA) বর্তমানে সিনেটের বিবেচনাধীন আছে। বিল দুটি পাস হলে যুক্তরাষ্ট্রের বিচার বিভাগ কোর্টের রায় নিয়ে মার্কিন ইন্টারনেট সার্চ ইঞ্জিনের সাহায্যে যেকোনো সাইটের বিষয়বস্তু মুছে ফেলতে পারবে। বিলের পক্ষে সক্রিয় হলিউড এবং প্রচলিত মিডিয়া এতকাল বিশ্বাস করত, জনসাধারণের কোনো রকম প্রতিরোধ-প্রতিবাদ ছাড়া সহজে আইন দুটি পাস হয়ে যাবে। কিন্তু বিল দুটি সম্পর্কে স্বয়ং হোয়াইট হাউসে পুরোপুরি অনুকূল মত নেই। গুগল, ফেসবুকের মতো বিশাল দুটি পর্বততুল্য প্রতিষ্ঠানের পক্ষে পাইরেসি তথা দস্যুতার অভিযোগ হজম করা সহজ নয়। এ দুটি ইন্টারনেটভিত্তিক জায়ান্ট কম্পানি তাদের পক্ষে কাজ করার জন্য ইতিমধ্যে লবিস্ট নিয়োগ করার চিন্তাভাবনা শুরু করে দিয়েছে। ফেসবুক তাদের পক্ষে কাজ করার জন্য ইতিমধ্যে হোয়াইট হাউসের সাবেক প্রেস সেক্রেটারি জো লক হার্টকে নিয়োগ দিয়েছে।
সমস্যা সৃষ্টির কারণটি কিন্তু মনঃস্তাত্তি্বক এবং এক ধরনের অভ্যাসজনিত অধিকারবোধ। ইন্টারনেট থেকে যারা এতকাল বিনা খরচে চলচ্চিত্র-টিভি অনুষ্ঠান দেখে, গান শুনে আর বই পড়ে অভ্যস্ত, হঠাৎ তারা বিনা মূল্যে পাওয়া অনুষ্ঠানাদি টাকা খরচ করে দেখতে মানুষের প্রকৃতিপ্রদত্ত কারণেই নারাজ। ইন্টারনেট ব্যবহারকারীদের এ বিষয়ে ধীরে ধীরে সচেতন করে তুলেছেন বিনা মূল্যে ইন্টারনেট সার্ভিস প্রদানকারী সংস্থাগুলোর প্রতিনিধিরা। এদের মধ্যে অগ্রণী ভূমিকা পালন করেছেন সান ফ্রান্সিসকো নিবাসী ইন্টারনেট নির্বাহী ৩৮ বছর বয়সী হান্টার ওয়াক। ওয়াকের মতো এখন অনেকেই ধীরে ধীরে প্রস্তাবিত আইন দুটির বিরুদ্ধে জোর আওয়াজ তুলছে। বিলের বিরোধিতা যারা করছে, তাদের অর্থ-সামর্থ্য কম। তাদের প্রতিপক্ষ করপোরেট হাউসগুলো।
যাকে বলা হয় ফ্রি এনসাইক্লোপেডিয়া, সেই উইকিপিডিয়া তাদের বিশাল তথ্যভাণ্ডার সমৃদ্ধ করেছে নিজেদের গবেষক লেখকদের এন্ট্রি দ্বারা, তেমনি তারা বাইরের লেখককে উৎসাহিত করেছে উইকিপিডিয়ায় তাদের মূল্যবান অবদান পাঠিয়ে তথ্য ব্যাংককে আরো সমৃদ্ধ করার জন্য।
গুগল ইউটিউব নির্বাহী বোর্ডের অন্যতম পরিচালক হান্টার ওয়াকের তৎপরতার কারণে জনরায় এখন প্রস্তাবিত আইনের বিরুদ্ধে ক্রমেই সোচ্চার হচ্ছে। যেসব পত্রিকা পরিচালিত হয়ে থাকে করপোরেট হাউসের পৃষ্ঠপোষকতায়, তারা প্রস্তাবিত আইনের পক্ষে জনমত তৈরি করছে। এতে বিলবিরোধীরা বিন্দুমাত্র চিন্তিত নয়। তাদের বক্তব্য, আমাদের ওয়েবসাইটগুলোর যদি ব্ল্যাক আউট দশার প্রাপ্তি ঘটে, তাহলে 'সোপা' নামক বিলটিকেও একই রকম ভাগ্য বরণ করতে হবে। ইতিমধ্যে ব্ল্যাক আউট সোপা, অরগ নামে একটি নতুন ওয়েবসাইট সোপাবিরোধী প্রচার শুরু করেছে। শুরুতে ৩৩ হাজার পাঠক সাইটটি ব্যবহার করে। বর্তমানে এই সংখ্যা ক্রমবর্ধমান হারে বেড়েই চলেছে। সামাজিক নেটওয়ার্ক সাইট ব্যবহারকারীদের অনেকেই এখন প্রোফাইল পিকচারের সঙ্গে 'স্টপ সোপা', ব্যাজ ব্যবহার করছে।
প্রস্তাবিত আইনবিরোধীদের ভয়, বিলটির ভাষা এমনই অর্থবহ এবং এর ব্যাখ্যা এমনই ব্যাপক যে এ আইনে মার্কিন ইন্টারনেট সার্ভিস প্রোভাইডারদের বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা নেওয়া যাবে, অথচ তারা জ্ঞানত কোনো পাইরেটেড বিষয়বস্তু ব্যবহার করে না। আর এ সমস্যা প্রকটতর হবে সদস্যদের কন্ট্রিবিউশনের ওপর নির্ভরশীল ফেসবুক, উইকিপিডিয়া এবং টুইটারের মতো জনপ্রিয় ওয়েবসাইটের জন্য। সাইট ব্যবহারকারীদের কাছ থেকে পাওয়া লেখা, মতামত, ছবি এসব সাইটের বড় একটি অংশ দখল করে থাকে। কেউ কেউ এমনও ভয় করছে, মিডিয়া কম্পানিগুলো কোর্টের রায় নিয়ে টাকা আদায়ের জন্য নিরীহ ধরনের সাইটগুলোকে চাপের মুখে ফেলতে পারে। এর ফলে খর্বিত হবে মত প্রকাশ ও বক্তব্য প্রকাশের স্বাধীনতা।
পাইরেসি-বিরোধী আইনের পক্ষে বেশ কিছুদিন ধরে সক্রিয় বড় বড় কিছু প্রতিষ্ঠান, যার মধ্যে রয়েছে কমকাস্ট করপ-এর এনবিসি ইউনিভার্সেল, ম্যাকমিলান, নিউজ করপ, ভায়াকম ইনক, টাইম ওয়ার্নার ইনক। এদের সঙ্গে যোগ দিয়েছে ব্যবসায়ী গ্রুপ ডিরেক্টরস গিল্ড অব আমেরিকা এবং ইউএস চেম্বার অব কমার্স। উল্লেখযোগ্য নিউজ করপের মালিকানাধীন অন্যতম পত্রিকা বিশ্বখ্যাত ওয়ালস্ট্রিট জার্নাল। এদের অতীব জনপ্রিয় ট্যাবলয়েড নিউজ অব দ্য ওয়ার্ল্ড অতি সম্প্রতি বিভিন্ন কলঙ্কের দায় নিয়ে প্রচ্ছদে 'গুডবাই, অ্যান্ড থ্যাংক ইউ' লেখা বড় হরফে ছেপে প্রকাশ বন্ধ করে দিতে বাধ্য হয়েছে।
হোয়াইট হাউস বিলের ব্যাপক বিরোধিতার কারণে মনে হয় এখন দ্বিধান্বিত। হাউস জুডিশিয়ারি কমিটির চেয়ারম্যান ল্যাথার স্মিথ (রিপাবলিকান : টেক্সাস প্রস্তাবিত সোপায় ক্ষতিকর কিছু থাকলে তা বাদ দেওয়ার কথা বলেছেন। সিনেট জুডিশিয়ারি কমিটির চেয়ারম্যান প্যাট্রিক লেহই (ডেমোক্র্যাট, ডারমন্ট) এ বিলের আমূল সংস্কারের পক্ষে।
এ বিলকে দুই হাউসেই অনেক বাধা-বিপত্তি পার হতে হবে। আর বিল দুটি যদি পাসই হয়, তার সিদ্ধান্ত নিতে হবে প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামাকে_বিলে স্বাক্ষর দেবেন না ভেটো দেবেন!
মনে রাখতে হবে, ২০১২ সালে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হবেন। একটি ভুল পদক্ষেপে ঘটতে পারে দলের ভরাডুবি। এটা প্রার্থীরা যেমন জানেন, নির্বাচকমণ্ডলীও জানেন।
পাদটীকা : উইকিপিডিয়ার ব্ল্যাক আউটের কারণে অনেক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে নির্ধারিত ক্লাস-টাস্ক কিংবা টার্ম পেপার লেখার কাজ পিছিয়ে গেছে। ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতা থেকে বলি, চাকরিজীবনে মেধাস্বত্ব সম্পর্কিত দুটি আন্তর্জাতিক সম্মেলনে যোগদান-লব্ধ জ্ঞান থেকে বলা যায়, জনগণের মত প্রকাশের ওপর বিধিনিষেধ আরোপ করা গণতন্ত্রের সামান্য চর্চা আছে এমন দেশে সত্যি কষ্টকর।
আর মত প্রকাশের দেশ যুক্তরাষ্ট্রে তো তা আরো কঠিন। যুক্তরাষ্ট্রে একটা কথা চালু আছে : দেয়ার ইজ নো ফ্রি লাঞ্চ_বিনা পয়সায় লাঞ্চ মেলে না এই দেশে। তাই ভয় হয় শেষ পর্যন্ত কিছু খরচ না বসিয়ে ছাড়ে সরকার।
এডমন্ড, ওকলাহোমা, যুক্তরাষ্ট্র
লেখক : কথাসাহিত্যিক, প্রাবন্ধিক
নোটিশের নিচে জনপ্রিয় তিনটি সামাজিক নেটওয়ার্ক ফেসবুক, গুগল ও টুইটারের মনোগ্রাম এবং এসব নেটওয়ার্ক ব্যবহারকারীর কাছে আবেদন করা হয়েছে প্রতিবাদে মুখরিত হওয়ার জন্য।
অনুরূপভাবে প্রতিবাদে শামিল হয় গুগল ইনক, ফেসবুক ইনক, গুগল হোমপেজের ব্যবহারকারীরা অনলাইন ক্লিক করলে পরিচিত লোগোর পরিবর্তে দেখলেন, কালো রঙে ঢাকা পড়ে আছে চির পরিচিত বর্ণিল এবং শৈল্পিক সুষমামণ্ডিত ইংরেজি বর্ণমালা আর ফুলদানির সমন্বয়ে আঁকা দৃষ্টিনন্দন চতুর্ভুজ গুগলের লোগোটি। কালো আয়তক্ষেত্রের নিচে ছোট হরফে লেখা : 'কংগ্রেসকে জানিয়ে দাও, অনুগ্রহপূর্বক ওয়েব সেন্সর করবেন না।' আরো আবেদন করা হয়েছে : 'পাইরেসি বন্ধ করুন, কিন্তু স্বাধীনতা খর্ব করে নয়।' প্রতিবাদে শামিল হয়ে রেভিট ডটকম তাদের সংবাদ প্রচারের কাজ ১২ ঘণ্টা বন্ধ রাখে। প্রতিবাদে আরো যোগ দেয় ফায়ারফক্স, মজিলা নামক ইন্টারনেট এক্সপ্লোরার।
কেন এই বিশ্বব্যাপী ইন্টারনেট জগতের বিখ্যাত প্রতিষ্ঠানগুলোর অভিনব এই প্রতিবাদ? এর অভিঘাত পড়েছে বিশ্বব্যাপী। সম্প্রতি ইন্টারনেটের ব্যবহার শুধু কিছু বিত্তশালী ব্যক্তি আর বড় বড় করপোরেট হাউসের মধ্যে সীমাবদ্ধ নেই। এর বিস্তৃতি ও প্রসার ঘটে অতি সাধারণের মধ্যেও। বিশেষ করে ছাত্রছাত্রীদের মধ্যে ইন্টারনেটের ব্যবহার যত ব্যাপক, একসময়ে আমরা যখন ছাত্র ছিলাম, তখন শ্রেষ্ঠ শিক্ষকের দেওয়া ক্লাস নোটও এত ব্যবহৃত হতো না। ইন্টারনেট সার্ভিস প্রদানকারী সংস্থার কর্তাব্যক্তি যেমন_উইকিপিডিয়ার প্রতিষ্ঠাতা জিমি ওয়েলস খুব ভালোভাবেই জানেন ছাত্রছাত্রী এবং জ্ঞানান্বেষীদের মধ্যে তাদের ওয়েবের জনপ্রিয়তার পরিমাণ।
ওয়েবটি ২৪ ঘণ্টার জন্য ব্ল্যাক আউট করার আগে কর্তৃপক্ষ এর ব্যবহারকারী, বিশেষ করে ছাত্রছাত্রীদের উদ্দেশে একরকম উপদেশই বলা যায় দিয়েছে। ছাত্রছাত্রীদের তারা জানায়, যারা তাদের পাঠ্যক্রম এখনো পড়ে শেষ করেনি, তারা যেন দয়া করে এখনই তা করে নেয়। ১৮ ডিসেম্বর সকাল ৬টা থেকে ২৪ ঘণ্টার জন্য বিনা মূল্যে ব্যবহারযোগ্য জ্ঞান কল্পদ্রুমতুল্য উইকিপিডিয়া ব্ল্যাক আউট করতে কর্তৃপক্ষ অনিচ্ছা সত্ত্বেও বাধ্য হবে। ইংরেজি এই ওয়েবটি শুধু বিনা মূল্যে লভ্য বলেই নয়, এতে যে পরিমাণ বিষয় ও তথ্যের সমাহার রয়েছে, তার তুলনায় এ মুহূর্তে অন্য কোনো তথ্যভাণ্ডারের কথা ভাবাও যায় না। এনসাইক্লোপেডিয়া ব্রিটানিকা কিংবা আমেরিকানার কথা হয়তো অনেকে বলবেন। সত্য বটে, এই দুই মহা আকর গ্রন্থ জ্ঞান-সমুদ্রতুল্য। কিন্তু তা তো সবার কাছে লভ্য নয়। এর যে বিশাল আয়তন ও দুর্মূল্য, ফলে সাধারণ মানুষ তো দূরের কথা, সাধারণ মানের লাইব্রেরি কিংবা সংগ্রহশালার সংগ্রহেও তা রাখা প্রায় অসম্ভব।
উইকিপিডিয়ার এই প্রতিবাদী ব্ল্যাক আউটের সঙ্গে অধিকাংশ জনপ্রিয় ওয়েব সংহতি প্রকাশ করে হয় ব্ল্যাক আউটে গেছে অথবা অন্যভাবে সংহতি প্রকাশ করেছে। যুক্তরাষ্ট্রের জনপ্রিয়তার বিচারে উইকিপিডিয়ার অবস্থান দশম স্থানে। ছাত্রছাত্রীদের জন্য তাদের পৌনঃপুনিক সতর্ক বাণী ছিল এ রকম : ছাত্রদের জন্য সতর্ক বাণী! তাড়াতাড়ি হোমওয়ার্কগুলো করে ফেলো এবং বাজে আইনের বিরুদ্ধে বুধবার, ১৮ ডিসেম্বর, ২০১২ প্রতিবাদ করবে! উইকিপিডিয়ার সহপ্রতিষ্ঠাতা জিমি ওয়েলস টুইটারে সর্বসাধারণ্যে ঘোষণা করেন ওয়েবসাইটটির ব্ল্যাক আউটের কথা।
বিস্ময়কর বিষয়, উইকিপিডিয়ার সঙ্গে একাত্মতা ঘোষণা করে বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তের ছোট-বড়, নামি-অনামি ১০ হাজার সাইট, 'কালো' হয়ে যায়! সংবাদ পর্যালোচনামূলক সাইট রেডিট (Reddit) এবং ব্লগিং সিস্টেম ওয়ার্ড প্রেসও প্রতিবাদে শামিল হয়। গুগল ইনক তার যুক্তরাষ্ট্রের দৃশ্যমান হোমপেজে যে আইনের প্রতিবাদে ইন্টারনেট বিশ্ব ক্ষোভে ফেটে পড়ছে, তার পূর্ণ বিবরণ পোস্ট করে দিয়েছে।
এত প্রতিবাদের ঝড় যে প্রস্তাবিত আইনের বিরুদ্ধে, তার সম্বন্ধে কিছু জানা দরকার। প্রস্তাবিত আইনের মূল উদ্দেশ্য হলো, বিদেশভিত্তিক ওয়েবসাইটগুলোর পাইরেটেড চলচ্চিত্র, সংগীত এবং অন্যান্য তথ্য-বিনোদনসামগ্রী বিক্রি করার সুযোগটি বন্ধ করে দেওয়া। এই উদ্দেশ্যে ইতিমধ্যে দুটি বিল আনা হয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিনিধি পরিষদে (হাউস অব রিপ্রেজেনটেটিভ) আনা বিলটির নাম 'স্টপ অনলাইন পাইরেসি অ্যাক্ট'_সংক্ষেপে সোপা (SOPA) আর প্রায় অনুরূপ অন্য বিল 'প্রোটেক্ট আইপি (ইন্টেলেকচুয়াল প্রোপার্টি) প্রোপার্টি অ্যাক্ট'_সংক্ষেপে পিপা (PIPA) বর্তমানে সিনেটের বিবেচনাধীন আছে। বিল দুটি পাস হলে যুক্তরাষ্ট্রের বিচার বিভাগ কোর্টের রায় নিয়ে মার্কিন ইন্টারনেট সার্চ ইঞ্জিনের সাহায্যে যেকোনো সাইটের বিষয়বস্তু মুছে ফেলতে পারবে। বিলের পক্ষে সক্রিয় হলিউড এবং প্রচলিত মিডিয়া এতকাল বিশ্বাস করত, জনসাধারণের কোনো রকম প্রতিরোধ-প্রতিবাদ ছাড়া সহজে আইন দুটি পাস হয়ে যাবে। কিন্তু বিল দুটি সম্পর্কে স্বয়ং হোয়াইট হাউসে পুরোপুরি অনুকূল মত নেই। গুগল, ফেসবুকের মতো বিশাল দুটি পর্বততুল্য প্রতিষ্ঠানের পক্ষে পাইরেসি তথা দস্যুতার অভিযোগ হজম করা সহজ নয়। এ দুটি ইন্টারনেটভিত্তিক জায়ান্ট কম্পানি তাদের পক্ষে কাজ করার জন্য ইতিমধ্যে লবিস্ট নিয়োগ করার চিন্তাভাবনা শুরু করে দিয়েছে। ফেসবুক তাদের পক্ষে কাজ করার জন্য ইতিমধ্যে হোয়াইট হাউসের সাবেক প্রেস সেক্রেটারি জো লক হার্টকে নিয়োগ দিয়েছে।
সমস্যা সৃষ্টির কারণটি কিন্তু মনঃস্তাত্তি্বক এবং এক ধরনের অভ্যাসজনিত অধিকারবোধ। ইন্টারনেট থেকে যারা এতকাল বিনা খরচে চলচ্চিত্র-টিভি অনুষ্ঠান দেখে, গান শুনে আর বই পড়ে অভ্যস্ত, হঠাৎ তারা বিনা মূল্যে পাওয়া অনুষ্ঠানাদি টাকা খরচ করে দেখতে মানুষের প্রকৃতিপ্রদত্ত কারণেই নারাজ। ইন্টারনেট ব্যবহারকারীদের এ বিষয়ে ধীরে ধীরে সচেতন করে তুলেছেন বিনা মূল্যে ইন্টারনেট সার্ভিস প্রদানকারী সংস্থাগুলোর প্রতিনিধিরা। এদের মধ্যে অগ্রণী ভূমিকা পালন করেছেন সান ফ্রান্সিসকো নিবাসী ইন্টারনেট নির্বাহী ৩৮ বছর বয়সী হান্টার ওয়াক। ওয়াকের মতো এখন অনেকেই ধীরে ধীরে প্রস্তাবিত আইন দুটির বিরুদ্ধে জোর আওয়াজ তুলছে। বিলের বিরোধিতা যারা করছে, তাদের অর্থ-সামর্থ্য কম। তাদের প্রতিপক্ষ করপোরেট হাউসগুলো।
যাকে বলা হয় ফ্রি এনসাইক্লোপেডিয়া, সেই উইকিপিডিয়া তাদের বিশাল তথ্যভাণ্ডার সমৃদ্ধ করেছে নিজেদের গবেষক লেখকদের এন্ট্রি দ্বারা, তেমনি তারা বাইরের লেখককে উৎসাহিত করেছে উইকিপিডিয়ায় তাদের মূল্যবান অবদান পাঠিয়ে তথ্য ব্যাংককে আরো সমৃদ্ধ করার জন্য।
গুগল ইউটিউব নির্বাহী বোর্ডের অন্যতম পরিচালক হান্টার ওয়াকের তৎপরতার কারণে জনরায় এখন প্রস্তাবিত আইনের বিরুদ্ধে ক্রমেই সোচ্চার হচ্ছে। যেসব পত্রিকা পরিচালিত হয়ে থাকে করপোরেট হাউসের পৃষ্ঠপোষকতায়, তারা প্রস্তাবিত আইনের পক্ষে জনমত তৈরি করছে। এতে বিলবিরোধীরা বিন্দুমাত্র চিন্তিত নয়। তাদের বক্তব্য, আমাদের ওয়েবসাইটগুলোর যদি ব্ল্যাক আউট দশার প্রাপ্তি ঘটে, তাহলে 'সোপা' নামক বিলটিকেও একই রকম ভাগ্য বরণ করতে হবে। ইতিমধ্যে ব্ল্যাক আউট সোপা, অরগ নামে একটি নতুন ওয়েবসাইট সোপাবিরোধী প্রচার শুরু করেছে। শুরুতে ৩৩ হাজার পাঠক সাইটটি ব্যবহার করে। বর্তমানে এই সংখ্যা ক্রমবর্ধমান হারে বেড়েই চলেছে। সামাজিক নেটওয়ার্ক সাইট ব্যবহারকারীদের অনেকেই এখন প্রোফাইল পিকচারের সঙ্গে 'স্টপ সোপা', ব্যাজ ব্যবহার করছে।
প্রস্তাবিত আইনবিরোধীদের ভয়, বিলটির ভাষা এমনই অর্থবহ এবং এর ব্যাখ্যা এমনই ব্যাপক যে এ আইনে মার্কিন ইন্টারনেট সার্ভিস প্রোভাইডারদের বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা নেওয়া যাবে, অথচ তারা জ্ঞানত কোনো পাইরেটেড বিষয়বস্তু ব্যবহার করে না। আর এ সমস্যা প্রকটতর হবে সদস্যদের কন্ট্রিবিউশনের ওপর নির্ভরশীল ফেসবুক, উইকিপিডিয়া এবং টুইটারের মতো জনপ্রিয় ওয়েবসাইটের জন্য। সাইট ব্যবহারকারীদের কাছ থেকে পাওয়া লেখা, মতামত, ছবি এসব সাইটের বড় একটি অংশ দখল করে থাকে। কেউ কেউ এমনও ভয় করছে, মিডিয়া কম্পানিগুলো কোর্টের রায় নিয়ে টাকা আদায়ের জন্য নিরীহ ধরনের সাইটগুলোকে চাপের মুখে ফেলতে পারে। এর ফলে খর্বিত হবে মত প্রকাশ ও বক্তব্য প্রকাশের স্বাধীনতা।
পাইরেসি-বিরোধী আইনের পক্ষে বেশ কিছুদিন ধরে সক্রিয় বড় বড় কিছু প্রতিষ্ঠান, যার মধ্যে রয়েছে কমকাস্ট করপ-এর এনবিসি ইউনিভার্সেল, ম্যাকমিলান, নিউজ করপ, ভায়াকম ইনক, টাইম ওয়ার্নার ইনক। এদের সঙ্গে যোগ দিয়েছে ব্যবসায়ী গ্রুপ ডিরেক্টরস গিল্ড অব আমেরিকা এবং ইউএস চেম্বার অব কমার্স। উল্লেখযোগ্য নিউজ করপের মালিকানাধীন অন্যতম পত্রিকা বিশ্বখ্যাত ওয়ালস্ট্রিট জার্নাল। এদের অতীব জনপ্রিয় ট্যাবলয়েড নিউজ অব দ্য ওয়ার্ল্ড অতি সম্প্রতি বিভিন্ন কলঙ্কের দায় নিয়ে প্রচ্ছদে 'গুডবাই, অ্যান্ড থ্যাংক ইউ' লেখা বড় হরফে ছেপে প্রকাশ বন্ধ করে দিতে বাধ্য হয়েছে।
হোয়াইট হাউস বিলের ব্যাপক বিরোধিতার কারণে মনে হয় এখন দ্বিধান্বিত। হাউস জুডিশিয়ারি কমিটির চেয়ারম্যান ল্যাথার স্মিথ (রিপাবলিকান : টেক্সাস প্রস্তাবিত সোপায় ক্ষতিকর কিছু থাকলে তা বাদ দেওয়ার কথা বলেছেন। সিনেট জুডিশিয়ারি কমিটির চেয়ারম্যান প্যাট্রিক লেহই (ডেমোক্র্যাট, ডারমন্ট) এ বিলের আমূল সংস্কারের পক্ষে।
এ বিলকে দুই হাউসেই অনেক বাধা-বিপত্তি পার হতে হবে। আর বিল দুটি যদি পাসই হয়, তার সিদ্ধান্ত নিতে হবে প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামাকে_বিলে স্বাক্ষর দেবেন না ভেটো দেবেন!
মনে রাখতে হবে, ২০১২ সালে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হবেন। একটি ভুল পদক্ষেপে ঘটতে পারে দলের ভরাডুবি। এটা প্রার্থীরা যেমন জানেন, নির্বাচকমণ্ডলীও জানেন।
পাদটীকা : উইকিপিডিয়ার ব্ল্যাক আউটের কারণে অনেক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে নির্ধারিত ক্লাস-টাস্ক কিংবা টার্ম পেপার লেখার কাজ পিছিয়ে গেছে। ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতা থেকে বলি, চাকরিজীবনে মেধাস্বত্ব সম্পর্কিত দুটি আন্তর্জাতিক সম্মেলনে যোগদান-লব্ধ জ্ঞান থেকে বলা যায়, জনগণের মত প্রকাশের ওপর বিধিনিষেধ আরোপ করা গণতন্ত্রের সামান্য চর্চা আছে এমন দেশে সত্যি কষ্টকর।
আর মত প্রকাশের দেশ যুক্তরাষ্ট্রে তো তা আরো কঠিন। যুক্তরাষ্ট্রে একটা কথা চালু আছে : দেয়ার ইজ নো ফ্রি লাঞ্চ_বিনা পয়সায় লাঞ্চ মেলে না এই দেশে। তাই ভয় হয় শেষ পর্যন্ত কিছু খরচ না বসিয়ে ছাড়ে সরকার।
এডমন্ড, ওকলাহোমা, যুক্তরাষ্ট্র
লেখক : কথাসাহিত্যিক, প্রাবন্ধিক
No comments