নাগরিক দুর্ভোগ-কেউ কি দেখার নেই?
প্রধান প্রধান সড়কে যানজট আর গলিপথগুলোর বেহাল দশা আমাদের রাজধানী ঢাকারই চিরচেনা দৃশ্য। এর সঙ্গে আছে কোথাও কোথাও ভাগাড়সদৃশ পূতিগন্ধময় ময়লা-আবর্জনার স্তূপ। নির্বাচিত ঢাকা সিটি করপোরেশন বা নাগরিকসেবা নিশ্চিতের জন্য বিভিন্ন সংস্থা থাকলেও সবাই নিজেদের নিয়েই যেন মজে আছে। এ কারণে সামান্য বৃষ্টিতেই রাস্তা ময়লা ও পানিতে একাকার হয়ে যায়।
পথচলতি নাগরিকদের ভূত-ভবিষ্যৎ একাকার করে দেওয়ার জন্য মুখ হাঁ করে থাকা ম্যানহোল তো আছেই কপালের লিখন হয়ে। বৃহস্পতিবার সমকালে নাগরিক জীবনের এমনই দুর্ভোগের এক অতিপরিচিত কাহিনী প্রকাশ পেয়েছে। এভাবে প্রায় প্রতিদিনই রাজধানীর কোনো কোনো এলাকার ভাঙাচোরা রাস্তা, ময়লার স্তূপ ইত্যাদি পত্রিকা ও টিভিতে প্রকাশিত ও সম্প্রচারিত হচ্ছে। কিন্তু এতে কর্তৃপক্ষের টনক নড়ে না। প্রকাশিত প্রতিবেদনে দেখা যায়, রাজধানীর কলাবাগান এলাকার বাসিন্দারা ভাঙা রাস্তা আর খোলা ম্যানহোল সঙ্গী করেই যন্ত্রণাকাতর জীবন-নদী পাড়ি দিচ্ছেন। অল্প বৃষ্টিতেই এখানকার গলিপথগুলোয় পানি জমে যায়। পানি নিষ্কাশন এবং ভাঙা রাস্তা মেরামতের উদ্যোগ দীর্ঘদিন ধরেই অনুপস্থিত। তার ওপর বিভিন্ন সংস্থার অপরিকল্পিত ও সমন্বয়হীন খোঁড়াখুঁড়িতে মানবযন্ত্রণা বাড়ে। এভাবে রাজধানীর মানুষকে আর কতকাল স্বাভাবিক নাগরিক সুবিধাবঞ্চিত অবস্থায় দিনাতিপাত করতে হবে কে জানে! রাজধানীর বিভিন্ন সংসদীয় আসনের নির্বাচিত সাংসদরা আছেন। রয়েছেন নির্বাচিত ওয়ার্ড কাউন্সিলররা। তার ওপর মেয়র এবং বিভিন্ন সেবা সংস্থা তো আছেই। তারপরও রাজধানীবাসীর চিরচেনা নাগরিক দুর্ভোগের অবসান হয় না কেন_ সেটাই জিজ্ঞাস্য। সিটি করপোরেশনের নিজস্ব অর্থায়নে রাস্তা মেরামতের কাজগুলো নির্দিষ্ট সময়ে কেন হয় না_ তা দেখার দায়িত্ব কি সিটি কর্তৃপক্ষের নয়? নামকা ওয়াস্তে রাস্তা বা অন্যান্য কাজ করে যারা নির্দিষ্ট প্রকল্পের জন্য বরাদ্দকৃত অর্থ তুলে নিয়ে লোপাট করছে, তাদের বিচার হয় না কেন? আমাদের বিশ্বাস, এসব ক্ষেত্র থেকে পুকুরচুরি বন্ধ করা গেলে নাগরিকদের স্বাভাবিক প্রাপ্য সুযোগ-সুবিধা নিশ্চিতের মাধ্যমে পথচলা স্বচ্ছন্দ করা সম্ভব। আর বিভিন্ন সেবা সংস্থার মধ্যে সমন্বয় প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে অযাচিত খোঁড়াখুঁড়িও রোধ করা যায়। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ এ ব্যাপারে নজর দেবে কি?
No comments