দাঁড়াও না একবার ভাই by জামান সরদার
ঢাকার যানজট-লাঞ্ছিত রাস্তায় আটকে থেকে কর্মঘণ্টা নষ্ট করতে করতে ঘর থেকে বের না হওয়ার কথা কেউ কেউ ভাবেন বটে, বের না হয়েই-বা উপায় কী? এখন ছোটাছুটির যুগ। সেটা কী মাত্রায় পেঁৗছেছে, বাংলাদেশে বসে অবশ্য বোঝার উপায় সামান্যই। উন্নত বিশ্বের মেগাসিটিগুলোতে গেলে খানিকটা বোঝা যায়।
ঢাকা-কলকাতায় যেভাবে সন্ধ্যায় মশা ওড়ে; যেভাবে এখনও গ্রামবাংলায় রাতের প্রান্তরে ঝাঁকে ঝাঁকে জোনাকির আলো ঘুরে বেড়ায়; ব্যস্ত বিমানবন্দরগুলোর আকাশ বড় পটভূমিতে তেমনই। বিমানের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে চলছে সুপার-ফাস্ট রেল। বাস কোম্পানিগুলোও বাজার হারাতে চায় না। ওপর থেকে আন্তঃনগর হাইওয়েগুলো দেখলে মনে হয় যেন পিঁপড়ার সারি দল বেঁধে চলছে। 'ওল্ডম্যান ইন দ্য সি'র নির্জন বন্দরও এখন আর নেই। নদী ও সমুদ্রপথগুলো এখন ব্যস্ত মহাসড়কের মতোই।
সংখ্যায় যাই হোক, গুণগত দিক থেকে অবশ্য বিপরীত মেরুতে। আমাদের যাত্রাপথের বিড়ম্বনা নিয়ে নতুন কিছু আর বলার নেই। আর উন্নত বিশ্বে চলছে ভ্রমণ আনন্দদায়ক করার প্রতিযোগিতা। কীভাবে উড়োজাহাজ, জাহাজ, রেল, বাস ঘরে থাকার আনন্দ দিতে পারে, তা নিয়ে নানা উদ্ভাবনী শক্তির পরিচয় দিচ্ছে বহুজাতিক পরিবহন কোম্পানিগুলো। কোনো কোনোটি ঘরের চেয়েও আরামদায়ক। পরিবহন কর্মীদের অর্থের বিনিময়ে সেবা অনেক সময় ঘরের আন্তরিকতাকেও ছাড়িয়ে যায়। কে কত জোরে ছুটতে পারে, কে কত বেশি আনন্দময় করে তুলতে পারে তারই এক বৈশ্বিক প্রতিযোগিতা চলছে।
এ নিয়ে গবেষণাও বিস্তর হচ্ছে। আমাদের দেশেও দেখছি, কীভাবে 'মবিলিটি' বাড়ানো যায়, তার নানা কসরত। প্রতিদিন নতুন নতুন গাড়ি নামছে, লেন বাড়ছে, বাইপাস বাড়ছে, নতুন নতুন হাইওয়ে হচ্ছে, ওভারপাস হচ্ছে, ফ্লাইওভার হচ্ছে। দেশে বিস্তর সমস্যা_ শিক্ষা, স্বাস্থ্য, কর্মসংস্থান, বাসস্থান, খাদ্য নিরাপত্তা, পরিবেশ-প্রতিবেশ, সুশাসন, মূল্যবোধ, গণতন্ত্র, মানবাধিকার ইত্যাদি ক্ষেত্রে দশকের পর দশক স্থবিরতা নিয়ে বসে আছে বাংলাদেশ। কিন্তু সড়ক থাকতে হবে মসৃণ। রাস্তার পাশে উদ্বাস্তুর ভিড় বাড়বে, বন ও পাহাড় কেটে কংক্রিটের অজগর ছুটবে, ধানের চারা বিটুমিনে প্রলেপের নিচে চিরস্থায়ী চাপা পড়ে যাবে, নদীর বুক চিড়ে সড়ক ছুটবে; বিল ভরাট করে নতুন বিমানবন্দর হবে। পেটে ভাত, পিঠে কাপড় না থাক, গাড়ি হাঁকানোর রাস্তা থাকতে হবে। 'আমারই পথ চলাতে আনন্দ'।
কেন এত ছোটাছুটি? হোয়াই দিস ফ্লাইং, ট্রেইনিং, ড্রাইভিং? যেখানে ছোটাছুটি অবারিত, যেখানে 'পথেই ঠিকানা' গড়ার জন্য বিলিয়ন বিলিয়ন ডলার খরচ হচ্ছে, প্রশ্নটা সেখানেই উঠেছে। যুক্তরাজ্যের ডিপার্টমেন্ট ফর ট্রান্সপোর্ট একটি সমীক্ষা চালিয়েছে যে ভ্রমণের বিকল্প কী হতে পারে। ওই সমীক্ষায় বলা হচ্ছে জীবন ও কর্মের মধ্যে ভারসাম্য আনতে। বলা হচ্ছে, খুব প্রয়োজন না হলে দৌড়ানোর দরকার কী? ছোটাছুটি কমলে জ্বালানি-যন্ত্রণায় ক্ষত-বিক্ষত ভূমি আর কার্বন-লাঞ্ছিত আকাশও অনেকখানি স্বস্তি পায়।
ছোটাছুটি কমানোর সম্ভাব্য উপায় হিসেবে বলা হয়েছে, যুক্তরাজ্যের ৯০ শতাংশ বাড়িতে ২০১৫ সালের মধ্যে ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট সুবিধা দিতে হবে। কর্মক্ষেত্রের বর্তমান চেহারাও বদলানো দরকার। লোকজন যাতে ঘরে বসেই ফোনালাপ, ই-মেইল, ভিডিও কনফারেন্স, অনলাইনে ব্যাংকিং, কেনাকাটা করতে পারে। তাতে করে রাস্তার হাঙ্গামা কমে আসবে। আসবে মানসিক প্রশান্তিও।
বাংলাদেশের কথা যদি বলি, যানজটে কেবল রাজধানী নাকাল নয়। কর্মঘণ্টা নষ্টের মহোৎসব হাইওয়ে ধরে ছড়িয়ে যাচ্ছে বিভাগীয় শহরগুলোতে। স্থবিরতা সারাদেশ ছেয়ে ফেলার আগেই 'ভ্রমণের বিকল্প' চেষ্টা করে দেখা যায় কি-না?
সংখ্যায় যাই হোক, গুণগত দিক থেকে অবশ্য বিপরীত মেরুতে। আমাদের যাত্রাপথের বিড়ম্বনা নিয়ে নতুন কিছু আর বলার নেই। আর উন্নত বিশ্বে চলছে ভ্রমণ আনন্দদায়ক করার প্রতিযোগিতা। কীভাবে উড়োজাহাজ, জাহাজ, রেল, বাস ঘরে থাকার আনন্দ দিতে পারে, তা নিয়ে নানা উদ্ভাবনী শক্তির পরিচয় দিচ্ছে বহুজাতিক পরিবহন কোম্পানিগুলো। কোনো কোনোটি ঘরের চেয়েও আরামদায়ক। পরিবহন কর্মীদের অর্থের বিনিময়ে সেবা অনেক সময় ঘরের আন্তরিকতাকেও ছাড়িয়ে যায়। কে কত জোরে ছুটতে পারে, কে কত বেশি আনন্দময় করে তুলতে পারে তারই এক বৈশ্বিক প্রতিযোগিতা চলছে।
এ নিয়ে গবেষণাও বিস্তর হচ্ছে। আমাদের দেশেও দেখছি, কীভাবে 'মবিলিটি' বাড়ানো যায়, তার নানা কসরত। প্রতিদিন নতুন নতুন গাড়ি নামছে, লেন বাড়ছে, বাইপাস বাড়ছে, নতুন নতুন হাইওয়ে হচ্ছে, ওভারপাস হচ্ছে, ফ্লাইওভার হচ্ছে। দেশে বিস্তর সমস্যা_ শিক্ষা, স্বাস্থ্য, কর্মসংস্থান, বাসস্থান, খাদ্য নিরাপত্তা, পরিবেশ-প্রতিবেশ, সুশাসন, মূল্যবোধ, গণতন্ত্র, মানবাধিকার ইত্যাদি ক্ষেত্রে দশকের পর দশক স্থবিরতা নিয়ে বসে আছে বাংলাদেশ। কিন্তু সড়ক থাকতে হবে মসৃণ। রাস্তার পাশে উদ্বাস্তুর ভিড় বাড়বে, বন ও পাহাড় কেটে কংক্রিটের অজগর ছুটবে, ধানের চারা বিটুমিনে প্রলেপের নিচে চিরস্থায়ী চাপা পড়ে যাবে, নদীর বুক চিড়ে সড়ক ছুটবে; বিল ভরাট করে নতুন বিমানবন্দর হবে। পেটে ভাত, পিঠে কাপড় না থাক, গাড়ি হাঁকানোর রাস্তা থাকতে হবে। 'আমারই পথ চলাতে আনন্দ'।
কেন এত ছোটাছুটি? হোয়াই দিস ফ্লাইং, ট্রেইনিং, ড্রাইভিং? যেখানে ছোটাছুটি অবারিত, যেখানে 'পথেই ঠিকানা' গড়ার জন্য বিলিয়ন বিলিয়ন ডলার খরচ হচ্ছে, প্রশ্নটা সেখানেই উঠেছে। যুক্তরাজ্যের ডিপার্টমেন্ট ফর ট্রান্সপোর্ট একটি সমীক্ষা চালিয়েছে যে ভ্রমণের বিকল্প কী হতে পারে। ওই সমীক্ষায় বলা হচ্ছে জীবন ও কর্মের মধ্যে ভারসাম্য আনতে। বলা হচ্ছে, খুব প্রয়োজন না হলে দৌড়ানোর দরকার কী? ছোটাছুটি কমলে জ্বালানি-যন্ত্রণায় ক্ষত-বিক্ষত ভূমি আর কার্বন-লাঞ্ছিত আকাশও অনেকখানি স্বস্তি পায়।
ছোটাছুটি কমানোর সম্ভাব্য উপায় হিসেবে বলা হয়েছে, যুক্তরাজ্যের ৯০ শতাংশ বাড়িতে ২০১৫ সালের মধ্যে ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট সুবিধা দিতে হবে। কর্মক্ষেত্রের বর্তমান চেহারাও বদলানো দরকার। লোকজন যাতে ঘরে বসেই ফোনালাপ, ই-মেইল, ভিডিও কনফারেন্স, অনলাইনে ব্যাংকিং, কেনাকাটা করতে পারে। তাতে করে রাস্তার হাঙ্গামা কমে আসবে। আসবে মানসিক প্রশান্তিও।
বাংলাদেশের কথা যদি বলি, যানজটে কেবল রাজধানী নাকাল নয়। কর্মঘণ্টা নষ্টের মহোৎসব হাইওয়ে ধরে ছড়িয়ে যাচ্ছে বিভাগীয় শহরগুলোতে। স্থবিরতা সারাদেশ ছেয়ে ফেলার আগেই 'ভ্রমণের বিকল্প' চেষ্টা করে দেখা যায় কি-না?
No comments