আর্জেন্টিনা-নাইজেরিয়া প্রীতি ম্যাচ-বিশ্বসভায় বাংলাদেশের মর্যাদা বাড়বে

সাম্প্রতিক সময়ে বিশ্ব ফুটবল অঙ্গনে লিওনেল মেসি এক আলোচিত নাম। বিশ্বনন্দিত এই ফুটবল তারকা ফুটবলপ্রেমীদের কাছে আরাধ্য। ফুটবলের গত বিশ্বকাপ আসরে মেসি আরো বেশি করে ক্রীড়ামোদীদের অন্তরে ঠাঁই পান। বিশ্ব ফুটবলের অন্যতম পরাশক্তি আর্জেন্টিনা। এই আর্জেন্টিনা বাংলাদেশের বিপুলসংখ্যক মানুষের প্রিয় দল।


আর্জেন্টাইন ও নাইজেরীয় জাতীয় দল আজ বঙ্গবন্ধু জাতীয় স্টেডিয়ামে খেলবে প্রীতি ম্যাচ। আন্তর্জাতিক ফুটবল ফেডারেশন (ফিফা) এই ম্যাচটাকে অফিশিয়াল ম্যাচ হিসেবে স্বীকৃতি দিয়েছে। আমরা উভয় দলকে অভিনন্দন জানাই। অভিনন্দন জানাই ফিফাকেও। এই বড় আয়োজনের সঙ্গে যুক্ত বাংলাদেশের ফুটবল ফেডারেশনসহ সংশ্লিষ্ট সবাইকেও অভিনন্দন।
দীর্ঘ অপেক্ষার প্রহর শেষ হবে আজ এক বর্ণাঢ্য অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে। দুই-দুইবার বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন আর্জেন্টিনা ও সুপার ঈগল খ্যাত নাইজেরিয়ার এই প্রীতি ম্যাচটি বাংলাদেশের মাটিতে অনুষ্ঠিত হচ্ছে ২০১৪ বিশ্বকাপ বাছাই পর্বের প্রস্তুতিস্বরূপ। ২০১৪ সালে ব্রাজিলে অনুষ্ঠেয় বিশ্বকাপ আয়োজনকে আরো মোহনীয়-আকর্ষণীয় করে তোলাই এর লক্ষ্য। বাংলাদেশে প্রীতি ম্যাচ অনুষ্ঠানের যে অনুমোদন ফিফা দিয়েছে তা আমাদের জন্য অত্যন্ত গর্বের, সম্মানের। আমাদের ফুটবল অঙ্গনকে নতুনভাবে জাগিয়ে তুলতে এই অনুষ্ঠান সন্দেহাতীতভাবেই ব্যাপক ইতিবাচক প্রভাব ফেলবে। আমরা আশা করছি, এই প্রীতি ম্যাচটি হবে যথেষ্ট জমজমাট ও প্রাণবন্ত। এখানে কয়েকটি বিষয় উল্লেখ করা যেতে পারে। ১৯৭৭ সালে কলকাতায় বিশ্ব ফুটবলের আরেক কিংবদন্তি পেলে এসেছিলেন। ২০০৬ বিশ্বকাপের পর বাংলাদেশে এসেছিলেন ফ্রান্সের ফুটবল তারকা জিনেদিন জিদান। তাঁদের সফরের ইতিবাচক প্রভাব উপমহাদেশের ফুটবলে লক্ষণীয় হয়ে উঠেছিল। এবার আর্জেন্টিনা ও নাইজেরিয়ার তারকা ফুটবলারদের আগমন ও খেলা প্রদর্শন দেশের ক্রীড়ামোদী ও খেলোয়াড়রা সরাসরি উপভোগ করার সুযোগ পেয়েছেন। এ অবস্থায় আশা করা যায়, বিষয়টি আমাদের ফুটবলের সার্বিক উন্নয়নে ব্যাপক প্রভাব ফেলবে। ক্রীড়া কিংবা সংস্কৃতির যেকোনো আয়োজন এমনিতেই যথেষ্ট উদ্দীপনা জাগায়, সামাজিক অস্থিরতা তথা অশুভ সব কিছু নির্মূলে শক্তি জোগায়। আমরা বলছি না, বিশ্বখ্যাত খেলোয়াড় কিংবা এক বা একাধিক বড় দল বাংলাদেশের মাঠে খেলে গেলেই রাতারাতি আমাদের ফুটবলের বিবর্ণ চিত্র পাল্টে যাবে। কিন্তু এটা তো সত্য, এর ফলে বিশ্ব দরবারে জাতির মর্যাদা ও পরিচিতি বাড়ে এবং উৎসাহবোধটাও চাঙ্গা হয়। এও তো অনেক বড় প্রাপ্তি।
শান্তিপূর্ণভাবে এই আয়োজন সম্পন্ন করার সব রকম প্রস্তুতি বাংলাদেশের তরফে রয়েছে। সবার উচিত এ ক্ষেত্রে যার যার অবস্থান থেকে সহযোগিতা করা, কোনো ধরনের বিশৃঙ্খলা যাতে না হয়, সে ব্যাপারে সতর্ক থাকা। বাংলাদেশের মাটিতে ফুটবলের বিশ্ব তারকাদের পায়ের জাদুকরী, নান্দনিক কারুকাজ দেখার বিরল সৌভাগ্য ক্রীড়াপ্রেমীদের জন্য এবারই প্রথম। বিশ্বকাপ ক্রিকেটসহ বিভিন্ন আন্তর্জাতিক ক্রীড়া প্রতিযোগিতা সুষ্ঠু ও সুন্দরভাবে আয়োজনের ব্যবস্থা করে আয়োজক দেশ হিসেবে বাংলাদেশ ইতিমধ্যে যে সুনাম অর্জন করেছে, এবারও তা অক্ষুণ্ন থাকবে বলেই আমাদের বিশ্বাস। সরকার এ ব্যাপারে যথেষ্ট সজাগ রয়েছে বলেই মনে হচ্ছে। জয় হোক ফুটবলের।

No comments

Powered by Blogger.