বিশেষ সাক্ষাৎকার-যুদ্ধাপরাধের বিচার প্রক্রিয়ায় কোনো অস্বচ্ছতা নেই by এ কে খন্দকার
এ কে খন্দকারের (আবদুল করিম খন্দকার) জন্ম ৩ মার্চ ১৯৩০ সালে। বাবার কর্মস্থল রংপুরে। পৈতৃক বাড়ি পাবনার বেড়া উপজেলায়। পড়াশোনা করেছেন মালদহ (পশ্চিমবঙ্গ), নওগাঁ ও রাজশাহীতে। পাকিস্তান বিমানবাহিনীতে জিডি পাইলট পদে যোগ দেন এবং ১৯৫১ সালে কমিশন লাভ করেন। ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধে তিনি ছিলেন বাংলাদেশ সশস্ত্র বাহিনীর উপপ্রধান। স্বাধীনতার পর বিমানবাহিনীর প্রধানের দায়িত্ব পালন করেন।
১৯৭৫ সালের রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পর তিনি কূটনীতিতে যোগ দেন এবং বিভিন্ন দেশে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। ১৯৯৬ ও ২০০৮ সালের নির্বাচনে এ কে খন্দকার পাবনার-২ আসন থেকে সাংসদ নির্বাচিত হন। ২০০৯ সালের জানুয়ারি থেকে তিনি সরকারের পরিকল্পনামন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করছেন। এ ছাড়া তিনি মুক্তিযুদ্ধের সেক্টর কমান্ডার্স ফোরামেরও প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি।
সাক্ষাৎকার নিয়েছেন সোহরাব হাসান ও তারা রহমান
প্রথম আলো আমরা এখন স্বাধীনতার চল্লিশ বছর উদ্যাপন করছি। এই বিজয়ের মাসে আপনার অনুভূতি জানতে চাইছি। কি উদ্দেশ্য ও লক্ষ নিয়ে আপনি মুক্তিযুদ্ধে গিয়েছিলেন?
এ কে খন্দকার আমি মুক্তিযুদ্ধে অংশ নিয়েছিলাম দেশকে স্বাধীন করার জন্য। পাকিস্তানি দখলদার বাহিনীর কবল থেকে মুক্ত করার উদ্দেশ্য নিয়ে। দেশটি কেমন হবে, তখন হয়ত সে বিষয়ে বিস্তারিত চিন্তা করিনি। আমাদের প্রথম লক্ষ্য ছিল বাংলাদেশ স্বাধীন করতে হবে। কেননা আমরা বুঝেছিলাম, পাকিস্তানিদের সঙ্গে থাকা যাবে না। অবশ্য পরে ধীরে ধীরে চিন্তা আসে, স্বাধীন তো হব, তারপর কী হবে। অনেকে মুক্তিযুদ্ধের চেতনার কথা বলেন। আবার অনেকে বলেন, আমাদের সংবিধানে যেসব মূলনীতির কথা রয়েছে, যেমন বাঙালি জাতীয়তাবাদ, গণতন্ত্র, সমাজতন্ত্র ও ধর্মনিরপেক্ষতা—এগুলোই মুক্তিযুদ্ধের চেতনা। এক অর্থে তা সত্যও। আমি মনে করি, মানুষে মানুষে কোনো ভেদাভেদ থাকবে না; প্রতিটি নাগরিক রাষ্ট্রের সমান সুযোগ পাবে, সমান অধিকার পাবে—সেটাই মুক্তিযুদ্ধের লক্ষ্য ছিল। অর্থাৎ একজন ধনী লোকের সন্তান লেখাপড়ায় তেমন ভালো না হয়ে ভালো শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে পড়বে আর একজন গরিব লোকের সন্তান অসাধারণ মেধাবী হওয়া সত্ত্বেও ভালো শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে পড়ার সুযোগ থেকে বঞ্চিত হবে—এ ধরনের বৈষম্য আমরা চাইনি।
প্রথম আলো কিন্তু বৈষম্য তো কমেনি। সব নাগরিকের সমানাধিকারও আমরা প্রতিষ্ঠা করতে পারিনি।
এ কে খন্দকার স্বাধীনতার ৪০ বছরে বৈষম্য আরও প্রকট হয়েছে। ধনী লোকেরা সন্তানদের জন্য যে টাকা-পয়সা খরচ করে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ান, সাধারণ মানুষের সন্তানেরা তা চিন্তাও করতে পারে না। আমরা এমন একটি দেশ চেয়েছিলাম, যেখানে মানুষ দু-মুঠো অন্নের জন্য হাহাকার করবে না। এমন ব্যবস্থা থাকবে যেখানে খেয়েপরে বেঁচে থাকা কঠিন হবে না। সবাই হয়তো প্রচুর সম্পদের মালিক হবে না, কিন্তু খাদ্য, বস্ত্র, বাসস্থান ন্যূনতম মৌলিক চাহিদাগুলো মেটাতে পারবে। এমন শিক্ষাব্যবস্থা হবে মেধাবীরা যেকোনো শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে পড়তে পারবে, উচ্চ ডিগ্রি নিতে পারবে। অর্থ বাধা হয়ে দাঁড়াবে না। প্রত্যেক নাগরিক ন্যূনতম স্বাস্থ্যসেবা পাবে, অর্থের অভাবে কারও চিকিৎসা বন্ধ থাকবে না। কিন্তু বাস্তব ভিন্ন। এখন ধনী লোকেরা যেসব সুযোগ পায়, সাধারণ মানুষ তার ধারেকাছেও চিন্তা করতে পারে না।
কিন্তু আমরা এমন একটি দেশ চেয়েছিলাম, যেখানে যোগ্যতা, দক্ষতা ও মেধার ভিত্তিতে নিজ নিজ ভাগ্য গড়তে পারবে।
প্রথম আলো গত ৪০ বছরে বাংলাদেশের উল্লেখযোগ্য অর্জন কী?
এ কে খন্দকার আমাদের অনেক অর্জন আছে। আবার অনেক কিছু অর্জন করতে পারিনি, সে কথাও সত্য। এখন কিন্তু মানুষ দুই বেলা খেতে পারছে। না খেয়ে কেউ মারা গেছে—সে রকম খবর কোথাও দেখিনি। প্রায় সব ছেলেমেয়েই প্রাথমিক বিদ্যালয়ে যাওয়ার সুযোগ পাচ্ছে। যাদের অবস্থা একটু ভালো তাদের ছেলেমেয়েরা উচ্চশিক্ষা নিচ্ছে। অষ্টম শ্রেণীতে ছেলেদের চেয়ে মেয়েদের সংখ্যা বেশি। মেয়েরা স্নাতক পর্যন্ত বিনা বেতনে পড়তে পারছে। এটাও কম অগ্রগতি নয়। তুলনামূলকভাবে কৃষিক্ষেত্রে আমাদের অর্জন অনেক বেশি। ১৯৭১ সালে আমাদের লোকসংখ্যা ছিল সাড়ে সাত কোটি। তখনো প্রচুর খাদ্যঘাটতি ছিল। অন্যদের ওপর নির্ভর করতে হতো। এখন আমাদের লোকসংখ্যা দ্বিগুণ হয়েছে, অথচ খাদ্যে আমরা স্বনির্ভর। এটি একটি বড় অর্জন বলেই মনে করি। তৈরি পোশাকশিল্পে প্রথম তিনটি দেশের মধ্যে বাংলাদেশ আছে। এটিও কম সাফল্যের কথা নয়। আজ আমাদের দেশের তৈরি সিরামিক পণ্য, ওষুধ বিভিন্ন দেশে রপ্তানি হচ্ছে। আমরা জাহাজ তৈরি করছি এবং জার্মানি ও নরওয়ের মতো দেশে রপ্তানি করছি। আরেকটি অর্জন হলো দারিদ্র্য আমরা অনেকটা কমিয়ে আনতে পেরেছি। ১৯৭১ সালে দারিদ্র্যসীমার নিচের মানুষের সংখ্যা ছিল ৭৫ শতাংশ, বর্তমানে সেটি ৩০ শতাংশে নেমে এসেছে। তখন দারিদ্র্যের মাত্রাও ছিল চরম। এখন অন্তত প্রত্যেকের গায়ে কাপড় ও পায়ে এক জোড়া স্যান্ডেল আছে। আমরা আশা করি, ২০৩০ সালের মধ্যে দরিদ্র-অবস্থা থেকে বেরিয়ে আসতে পারব। সেই সঙ্গে মানুষে মানুষে বৈষম্যও কমিয়ে আনতে হবে।
প্রথম আলো আপনি পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বে আছেন। এই পর্বতপ্রমাণ বৈষম্য কমাতে কি পরিকল্পনা আছে?
এ কে খন্দকার আপনারা জানেন, দেশের খ্যাতনামা অর্থনীতিবিদদের পরামর্শক্রমে আমরা একটি পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনা প্রণয়ন করেছি। এতে দারিদ্র্য বিমোচন থেকে উন্নয়ন সবকিছুই আছে। পরিকল্পনাটি তাত্ত্বিক বা সাধারণ আলোচনায় সীমাবদ্ধ নয়। যেখানে যা দরকার সুনির্দিষ্টভাবে বলা হয়েছে। কী পরিমাণ বরাদ্দের প্রয়োজন হবে, কর্মসূচি বাস্তবায়িত হলে আমরা কী সুবিধা পাব—সবকিছু পরিকল্পনায় আছে। উদাহরণ হিসেবে আমি কৃষির কথা উল্লেখ করব। বর্তমানে দেশে যে জনসংখ্যা আছে, তা আরও বাড়বে। তখন আমাদের খাদ্য উৎপাদনও বাড়াতে হবে এবং সে জন্য কী পরিমাণ বিনিয়োগ প্রয়োজন, কী পরিমাণ বীজ, সার ও সেচ সুবিধা প্রয়োজন হবে তার বছরভিত্তিক হিসাব আছে। একইভাবে আগামী বছরে শিক্ষা খাতে কত শিক্ষার্থী বাড়বে, তাদের জন্য বাড়তি কী পরিমাণ বই ও শিক্ষা উপকরণ দরকার হবে—সবকিছুই এ পরিকল্পনায় আছে।
প্রথম আলো শিল্পের উন্নয়নে আপনাদের কী পরিকল্পনা?
এ কে খন্দকার আগামী পাঁচ বছরে কী কী শিল্প গড়ে উঠতে পারে তার জন্য কী পরিমাণ বৈদেশিক মুদ্রা ব্যয় হবে সেসবও আমাদের পরিকল্পনায় আছে। আমরা চাই বেসরকারি উদ্যোগে শিল্পকারখানা গড়ে উঠুক। সরকার শিল্প করবেনা, তবে আনুসঙ্গিক সহায়তা দেবে।
প্রথম আলো এসব পরিকল্পনা বাস্তবায়নে যে দক্ষ ব্যবস্থাপনার প্রয়োজন তা কি সরকার বা প্রশাসনের আছে? অভিযোগ আছে সরকার অনেক ভালো পরিকল্পনা নিলেও তা ঠিকমতো বাস্তবায়িত হয় না।
এ কে খন্দকার এ অভিযোগের হয়তো কিছু ভিত্তি আছে। আবার পুরোপুরি সত্য তাও বলব না। এখানে একটি কথা মনে রাখা প্রয়োজন, যারা উন্নয়ন কাজের সঙ্গে সম্পৃক্ত তাঁরা সমগ্র দেশ ও দেশের মানুষের সেবা করছেন। এ সম্মান ও সুযোগ কজন পায়? সংশ্লিষ্ট সবাইকে কাজটি করতে হবে সততা, নিষ্ঠা ও আন্তরিকতার সঙ্গে।
প্রথম আলো যথাসময়ে অর্থ ব্যয় করতে না পারার জন্য অনেক সময়ে বিদেশি সহায়তা ফেরত যায়। এর কারণ কি?
এ কে খন্দকার হয়তো আমাদেরও কিছু ঘাটতি আছে। আবার দাতা সংস্থাগুলোর আমলাতান্ত্রিক জটিলতার কারণেও এটি হয়ে থাকে। যে কোনো উন্নয়ন প্রকল্পে পরামর্শক নিয়োগ করতে হলে তাঁর নামধাম দাতা সংস্থার কাছে পাঠাতে হবে। অনুমোদন আসতে হবে। একই নিয়ম দরপত্রের ক্ষেত্রেও। দরপত্রদাতা প্রতিষ্ঠানগুলোর নামধাম পাঠাতে হবে। সেখানে যাচাই বাছাই হবে। এই বাস্তবতার মধ্যেই আমাদের কাজ করতে হয়। এ সমস্যা নিয়ে আমরা প্রকল্প পরিচালকদের সঙ্গে বসেছি।
প্রথম আলো একই সঙ্গে আপনি সেক্টর কমান্ডারস ফোরামেরও সভাপতি, এই সংগঠনটি যুদ্ধাপরাধীদের বিচার দ্রুত শেষ করার দাবি জানিয়েছে। দ্রুত কি হচ্ছে?
এ কে খন্দকার প্রথম দিকে ধীরগতি থাকলেও যুদ্ধাপরাধের বিচারপ্রক্রিয়া এখন ঠিকভাবেই এগোচ্ছে । আমাদের সেক্টর কমান্ডারস ফোরামেরও সেই দাবি ছিল। অনেকে মনে করেন, দুই বছরের মধ্যে যুদ্ধাপরাধের বিচার শেষ করা যাবে। কিন্তু বাস্তবে সেটি সম্ভব নয়। পত্রিকায় দেখেছি, কয়েক মাস আগে ইতালিতে নাৎসি বাহিনীর এক সদস্যকে আটক করা হয়েছে যুদ্ধাপরাধের দায়ে। তারা যদি ৬০-৬৫ বছর পর দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময়ে সংঘটিত অপরাধের বিচার করতে পারে, বাংলাদেশের যুদ্ধাপরাধের বিচার দুই বছরেই শেষ হয়ে যাবে তা কী করে আশা করা যায়। এ বিচার চলতে থাকবে। সমগ্র দেশবাসী এই বিচার চায়; কেবল কতিপয় অপরাধপ্রবণ মানসিকতার অমানবিক ব্যক্তিই এর বিরোধিতা করতে পারে।
প্রথম আলো প্রধান বিরোধী দল বিচারের ব্যাপারে আপত্তি জানিয়েছে। সম্প্রতি আনুষ্ঠানিকভাবে তারা দলীয় অবস্থান ব্যাখ্যা করেছে এবং বিচারপ্রক্রিয়া স্বচ্ছ নয় বলে দাবি করেছে। আপনি কী বলেন?
এ কে খন্দকার আমি বলব, বিরোধী দলের এই দাবিরও কোনো ভিত্তি নেই। কোনো দেশপ্রেমিক মানুষ তাদের এ আপত্তি সমর্থন করবে না। দেশের মানুষকে যারা হত্যা করেছে, মেয়েদের ওপর নির্যাতন চালিয়েছে, হাজার হাজার ঘরবাড়ি লুটপাট ও অগ্নিসংযোগ করেছে তাদের বিচার হবে না—এটি কী ধরনের আবদার? আমরা কি সভ্য জাতি নই? যুদ্ধাপরাধের যে গ্লানি জাতি ৪০ বছর ধরে বহন করছে, তা থেকে বেরিয়ে আসতে হবে। বিচারপ্রক্রিয়া স্বচ্ছ করার ব্যাপারে সরকার দৃঢ় প্রতিজ্ঞ। এখানে কোনো অস্বচ্ছতা নেই।
প্রথম আলো একজন মার্কিন নাগরিক একাধিকবার বাংলাদেশে এসে যুদ্ধাপরাধীদের বিচারপ্রক্রিয়া নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন। বিষয়টি কি হস্তক্ষেপ বলে মনে করেন?
এ কে খন্দকার আমি তো মনে করি এটি হস্তক্ষেপ। জামায়াতে ইসলামী প্রচুর টাকা ব্যয় করছে যুদ্ধাপরাধের বিচারের বিরুদ্ধে প্রচারণা চালানোর জন্য। বিদেশ থেকে আইনজীবী নিয়ে এসে কিংবা বিদেশে এমন সব কথা বলানো হচ্ছে যার ভিত্তি নেই। এসব প্রচারণা অগ্রাহ্য করা ছাড়া আমাদের কী করার আছে?
প্রথম আলো এই যে যুদ্ধাপরাধের বিচারের বিরুদ্ধে প্রচারণা, এর জবাবে এ সরকার কী করছে?
এ কে খন্দকার সরকার তার কাজ করছে। অপপ্রচারের বিরুদ্ধে সেক্টর কমান্ডারস ফোরাম সারা দেশে বিচারের পক্ষে জনমত গড়ে তুলছে, সভা-সমাবেশ করছে। আমরা যা বলছি তা সত্য। তবে অর্থের বিনিময়ে কেউ যদি কতিপয় লোককে ভাড়া করে আনে এবং তারা যদি উল্টো কথা বলে মানুষ তা গ্রহণ করবে না।
প্রথম আলো বিরোধী দল থেকে দাবি করা হচ্ছে সরকারি দলেও যুদ্ধাপরাধী আছে। কিন্তু তাদের ধরা হচ্ছে না।
এ কে খন্দকার সরকারি ছত্রচ্ছায়ায় যদি কোনো যুদ্ধাপরাধী থেকে থাকে তারা তথ্য প্রমাণ দিক। তারপর সরকার ব্যবস্থা নেবে। কিন্তু সেই যুক্তিতে তো বিচারকাজ বন্ধ থাকতে পারে না।
প্রথম আলো মহাজোট সরকারের মেয়াদ তিন বছর প্রায় শেষ হতে চলেছে। ২০০৮ সালে যে প্রত্যাশা নিয়ে সরকার গঠন করা হয়েছিল তার কতটা আপনারা পূরণ করতে পেরেছেন বলে মনে করেন?
এ কে খন্দকার আমি বলব, সরকার দেশ ও জনগণের উন্নয়নের ব্যাপারে আন্তরিক। প্রথম দিন থেকে তারা কাজ করছে। সরকারের মন্ত্রী হিসেবে নয়, একজন নাগরিক হিসেবে আমি তাই মনে করি।
ধারণা করি, অচিরেই আমরা একটি মধ্য আয়ের দেশে পরিণত হতে পারব। এটি কম কথা নয়। ৪০ বছর আগে বাংলাদেশ অতি দরিদ্র দেশ ছিল। সেই দারিদ্র্য ছিল দুঃসহ। গ্রামাঞ্চলে মানুষের গায়ে শীতের দিনেও একটি গরম কাপড় থাকত না। আজ তারা অন্তত কাপড়টি পরতে পারছে। একজন জনপ্রতিনিধি হিসেবে এলাকায় সাধারণ মানুষের সঙ্গে মেলামেশার সুযোগ হয়। তাদের আগের অবস্থা ও এখনকার অবস্থা দেখেছি। এই দুইয়ের মধ্যে পার্থক্য তো আছে। আমরা অনেক দূর এগিয়েছি, তবে আরও অনেক দূর যেতে হবে।
প্রথম আলো আপনাকে ধন্যবাদ।
এ কে খন্দকার ধন্যবাদ।
সাক্ষাৎকার নিয়েছেন সোহরাব হাসান ও তারা রহমান
প্রথম আলো আমরা এখন স্বাধীনতার চল্লিশ বছর উদ্যাপন করছি। এই বিজয়ের মাসে আপনার অনুভূতি জানতে চাইছি। কি উদ্দেশ্য ও লক্ষ নিয়ে আপনি মুক্তিযুদ্ধে গিয়েছিলেন?
এ কে খন্দকার আমি মুক্তিযুদ্ধে অংশ নিয়েছিলাম দেশকে স্বাধীন করার জন্য। পাকিস্তানি দখলদার বাহিনীর কবল থেকে মুক্ত করার উদ্দেশ্য নিয়ে। দেশটি কেমন হবে, তখন হয়ত সে বিষয়ে বিস্তারিত চিন্তা করিনি। আমাদের প্রথম লক্ষ্য ছিল বাংলাদেশ স্বাধীন করতে হবে। কেননা আমরা বুঝেছিলাম, পাকিস্তানিদের সঙ্গে থাকা যাবে না। অবশ্য পরে ধীরে ধীরে চিন্তা আসে, স্বাধীন তো হব, তারপর কী হবে। অনেকে মুক্তিযুদ্ধের চেতনার কথা বলেন। আবার অনেকে বলেন, আমাদের সংবিধানে যেসব মূলনীতির কথা রয়েছে, যেমন বাঙালি জাতীয়তাবাদ, গণতন্ত্র, সমাজতন্ত্র ও ধর্মনিরপেক্ষতা—এগুলোই মুক্তিযুদ্ধের চেতনা। এক অর্থে তা সত্যও। আমি মনে করি, মানুষে মানুষে কোনো ভেদাভেদ থাকবে না; প্রতিটি নাগরিক রাষ্ট্রের সমান সুযোগ পাবে, সমান অধিকার পাবে—সেটাই মুক্তিযুদ্ধের লক্ষ্য ছিল। অর্থাৎ একজন ধনী লোকের সন্তান লেখাপড়ায় তেমন ভালো না হয়ে ভালো শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে পড়বে আর একজন গরিব লোকের সন্তান অসাধারণ মেধাবী হওয়া সত্ত্বেও ভালো শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে পড়ার সুযোগ থেকে বঞ্চিত হবে—এ ধরনের বৈষম্য আমরা চাইনি।
প্রথম আলো কিন্তু বৈষম্য তো কমেনি। সব নাগরিকের সমানাধিকারও আমরা প্রতিষ্ঠা করতে পারিনি।
এ কে খন্দকার স্বাধীনতার ৪০ বছরে বৈষম্য আরও প্রকট হয়েছে। ধনী লোকেরা সন্তানদের জন্য যে টাকা-পয়সা খরচ করে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ান, সাধারণ মানুষের সন্তানেরা তা চিন্তাও করতে পারে না। আমরা এমন একটি দেশ চেয়েছিলাম, যেখানে মানুষ দু-মুঠো অন্নের জন্য হাহাকার করবে না। এমন ব্যবস্থা থাকবে যেখানে খেয়েপরে বেঁচে থাকা কঠিন হবে না। সবাই হয়তো প্রচুর সম্পদের মালিক হবে না, কিন্তু খাদ্য, বস্ত্র, বাসস্থান ন্যূনতম মৌলিক চাহিদাগুলো মেটাতে পারবে। এমন শিক্ষাব্যবস্থা হবে মেধাবীরা যেকোনো শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে পড়তে পারবে, উচ্চ ডিগ্রি নিতে পারবে। অর্থ বাধা হয়ে দাঁড়াবে না। প্রত্যেক নাগরিক ন্যূনতম স্বাস্থ্যসেবা পাবে, অর্থের অভাবে কারও চিকিৎসা বন্ধ থাকবে না। কিন্তু বাস্তব ভিন্ন। এখন ধনী লোকেরা যেসব সুযোগ পায়, সাধারণ মানুষ তার ধারেকাছেও চিন্তা করতে পারে না।
কিন্তু আমরা এমন একটি দেশ চেয়েছিলাম, যেখানে যোগ্যতা, দক্ষতা ও মেধার ভিত্তিতে নিজ নিজ ভাগ্য গড়তে পারবে।
প্রথম আলো গত ৪০ বছরে বাংলাদেশের উল্লেখযোগ্য অর্জন কী?
এ কে খন্দকার আমাদের অনেক অর্জন আছে। আবার অনেক কিছু অর্জন করতে পারিনি, সে কথাও সত্য। এখন কিন্তু মানুষ দুই বেলা খেতে পারছে। না খেয়ে কেউ মারা গেছে—সে রকম খবর কোথাও দেখিনি। প্রায় সব ছেলেমেয়েই প্রাথমিক বিদ্যালয়ে যাওয়ার সুযোগ পাচ্ছে। যাদের অবস্থা একটু ভালো তাদের ছেলেমেয়েরা উচ্চশিক্ষা নিচ্ছে। অষ্টম শ্রেণীতে ছেলেদের চেয়ে মেয়েদের সংখ্যা বেশি। মেয়েরা স্নাতক পর্যন্ত বিনা বেতনে পড়তে পারছে। এটাও কম অগ্রগতি নয়। তুলনামূলকভাবে কৃষিক্ষেত্রে আমাদের অর্জন অনেক বেশি। ১৯৭১ সালে আমাদের লোকসংখ্যা ছিল সাড়ে সাত কোটি। তখনো প্রচুর খাদ্যঘাটতি ছিল। অন্যদের ওপর নির্ভর করতে হতো। এখন আমাদের লোকসংখ্যা দ্বিগুণ হয়েছে, অথচ খাদ্যে আমরা স্বনির্ভর। এটি একটি বড় অর্জন বলেই মনে করি। তৈরি পোশাকশিল্পে প্রথম তিনটি দেশের মধ্যে বাংলাদেশ আছে। এটিও কম সাফল্যের কথা নয়। আজ আমাদের দেশের তৈরি সিরামিক পণ্য, ওষুধ বিভিন্ন দেশে রপ্তানি হচ্ছে। আমরা জাহাজ তৈরি করছি এবং জার্মানি ও নরওয়ের মতো দেশে রপ্তানি করছি। আরেকটি অর্জন হলো দারিদ্র্য আমরা অনেকটা কমিয়ে আনতে পেরেছি। ১৯৭১ সালে দারিদ্র্যসীমার নিচের মানুষের সংখ্যা ছিল ৭৫ শতাংশ, বর্তমানে সেটি ৩০ শতাংশে নেমে এসেছে। তখন দারিদ্র্যের মাত্রাও ছিল চরম। এখন অন্তত প্রত্যেকের গায়ে কাপড় ও পায়ে এক জোড়া স্যান্ডেল আছে। আমরা আশা করি, ২০৩০ সালের মধ্যে দরিদ্র-অবস্থা থেকে বেরিয়ে আসতে পারব। সেই সঙ্গে মানুষে মানুষে বৈষম্যও কমিয়ে আনতে হবে।
প্রথম আলো আপনি পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বে আছেন। এই পর্বতপ্রমাণ বৈষম্য কমাতে কি পরিকল্পনা আছে?
এ কে খন্দকার আপনারা জানেন, দেশের খ্যাতনামা অর্থনীতিবিদদের পরামর্শক্রমে আমরা একটি পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনা প্রণয়ন করেছি। এতে দারিদ্র্য বিমোচন থেকে উন্নয়ন সবকিছুই আছে। পরিকল্পনাটি তাত্ত্বিক বা সাধারণ আলোচনায় সীমাবদ্ধ নয়। যেখানে যা দরকার সুনির্দিষ্টভাবে বলা হয়েছে। কী পরিমাণ বরাদ্দের প্রয়োজন হবে, কর্মসূচি বাস্তবায়িত হলে আমরা কী সুবিধা পাব—সবকিছু পরিকল্পনায় আছে। উদাহরণ হিসেবে আমি কৃষির কথা উল্লেখ করব। বর্তমানে দেশে যে জনসংখ্যা আছে, তা আরও বাড়বে। তখন আমাদের খাদ্য উৎপাদনও বাড়াতে হবে এবং সে জন্য কী পরিমাণ বিনিয়োগ প্রয়োজন, কী পরিমাণ বীজ, সার ও সেচ সুবিধা প্রয়োজন হবে তার বছরভিত্তিক হিসাব আছে। একইভাবে আগামী বছরে শিক্ষা খাতে কত শিক্ষার্থী বাড়বে, তাদের জন্য বাড়তি কী পরিমাণ বই ও শিক্ষা উপকরণ দরকার হবে—সবকিছুই এ পরিকল্পনায় আছে।
প্রথম আলো শিল্পের উন্নয়নে আপনাদের কী পরিকল্পনা?
এ কে খন্দকার আগামী পাঁচ বছরে কী কী শিল্প গড়ে উঠতে পারে তার জন্য কী পরিমাণ বৈদেশিক মুদ্রা ব্যয় হবে সেসবও আমাদের পরিকল্পনায় আছে। আমরা চাই বেসরকারি উদ্যোগে শিল্পকারখানা গড়ে উঠুক। সরকার শিল্প করবেনা, তবে আনুসঙ্গিক সহায়তা দেবে।
প্রথম আলো এসব পরিকল্পনা বাস্তবায়নে যে দক্ষ ব্যবস্থাপনার প্রয়োজন তা কি সরকার বা প্রশাসনের আছে? অভিযোগ আছে সরকার অনেক ভালো পরিকল্পনা নিলেও তা ঠিকমতো বাস্তবায়িত হয় না।
এ কে খন্দকার এ অভিযোগের হয়তো কিছু ভিত্তি আছে। আবার পুরোপুরি সত্য তাও বলব না। এখানে একটি কথা মনে রাখা প্রয়োজন, যারা উন্নয়ন কাজের সঙ্গে সম্পৃক্ত তাঁরা সমগ্র দেশ ও দেশের মানুষের সেবা করছেন। এ সম্মান ও সুযোগ কজন পায়? সংশ্লিষ্ট সবাইকে কাজটি করতে হবে সততা, নিষ্ঠা ও আন্তরিকতার সঙ্গে।
প্রথম আলো যথাসময়ে অর্থ ব্যয় করতে না পারার জন্য অনেক সময়ে বিদেশি সহায়তা ফেরত যায়। এর কারণ কি?
এ কে খন্দকার হয়তো আমাদেরও কিছু ঘাটতি আছে। আবার দাতা সংস্থাগুলোর আমলাতান্ত্রিক জটিলতার কারণেও এটি হয়ে থাকে। যে কোনো উন্নয়ন প্রকল্পে পরামর্শক নিয়োগ করতে হলে তাঁর নামধাম দাতা সংস্থার কাছে পাঠাতে হবে। অনুমোদন আসতে হবে। একই নিয়ম দরপত্রের ক্ষেত্রেও। দরপত্রদাতা প্রতিষ্ঠানগুলোর নামধাম পাঠাতে হবে। সেখানে যাচাই বাছাই হবে। এই বাস্তবতার মধ্যেই আমাদের কাজ করতে হয়। এ সমস্যা নিয়ে আমরা প্রকল্প পরিচালকদের সঙ্গে বসেছি।
প্রথম আলো একই সঙ্গে আপনি সেক্টর কমান্ডারস ফোরামেরও সভাপতি, এই সংগঠনটি যুদ্ধাপরাধীদের বিচার দ্রুত শেষ করার দাবি জানিয়েছে। দ্রুত কি হচ্ছে?
এ কে খন্দকার প্রথম দিকে ধীরগতি থাকলেও যুদ্ধাপরাধের বিচারপ্রক্রিয়া এখন ঠিকভাবেই এগোচ্ছে । আমাদের সেক্টর কমান্ডারস ফোরামেরও সেই দাবি ছিল। অনেকে মনে করেন, দুই বছরের মধ্যে যুদ্ধাপরাধের বিচার শেষ করা যাবে। কিন্তু বাস্তবে সেটি সম্ভব নয়। পত্রিকায় দেখেছি, কয়েক মাস আগে ইতালিতে নাৎসি বাহিনীর এক সদস্যকে আটক করা হয়েছে যুদ্ধাপরাধের দায়ে। তারা যদি ৬০-৬৫ বছর পর দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময়ে সংঘটিত অপরাধের বিচার করতে পারে, বাংলাদেশের যুদ্ধাপরাধের বিচার দুই বছরেই শেষ হয়ে যাবে তা কী করে আশা করা যায়। এ বিচার চলতে থাকবে। সমগ্র দেশবাসী এই বিচার চায়; কেবল কতিপয় অপরাধপ্রবণ মানসিকতার অমানবিক ব্যক্তিই এর বিরোধিতা করতে পারে।
প্রথম আলো প্রধান বিরোধী দল বিচারের ব্যাপারে আপত্তি জানিয়েছে। সম্প্রতি আনুষ্ঠানিকভাবে তারা দলীয় অবস্থান ব্যাখ্যা করেছে এবং বিচারপ্রক্রিয়া স্বচ্ছ নয় বলে দাবি করেছে। আপনি কী বলেন?
এ কে খন্দকার আমি বলব, বিরোধী দলের এই দাবিরও কোনো ভিত্তি নেই। কোনো দেশপ্রেমিক মানুষ তাদের এ আপত্তি সমর্থন করবে না। দেশের মানুষকে যারা হত্যা করেছে, মেয়েদের ওপর নির্যাতন চালিয়েছে, হাজার হাজার ঘরবাড়ি লুটপাট ও অগ্নিসংযোগ করেছে তাদের বিচার হবে না—এটি কী ধরনের আবদার? আমরা কি সভ্য জাতি নই? যুদ্ধাপরাধের যে গ্লানি জাতি ৪০ বছর ধরে বহন করছে, তা থেকে বেরিয়ে আসতে হবে। বিচারপ্রক্রিয়া স্বচ্ছ করার ব্যাপারে সরকার দৃঢ় প্রতিজ্ঞ। এখানে কোনো অস্বচ্ছতা নেই।
প্রথম আলো একজন মার্কিন নাগরিক একাধিকবার বাংলাদেশে এসে যুদ্ধাপরাধীদের বিচারপ্রক্রিয়া নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন। বিষয়টি কি হস্তক্ষেপ বলে মনে করেন?
এ কে খন্দকার আমি তো মনে করি এটি হস্তক্ষেপ। জামায়াতে ইসলামী প্রচুর টাকা ব্যয় করছে যুদ্ধাপরাধের বিচারের বিরুদ্ধে প্রচারণা চালানোর জন্য। বিদেশ থেকে আইনজীবী নিয়ে এসে কিংবা বিদেশে এমন সব কথা বলানো হচ্ছে যার ভিত্তি নেই। এসব প্রচারণা অগ্রাহ্য করা ছাড়া আমাদের কী করার আছে?
প্রথম আলো এই যে যুদ্ধাপরাধের বিচারের বিরুদ্ধে প্রচারণা, এর জবাবে এ সরকার কী করছে?
এ কে খন্দকার সরকার তার কাজ করছে। অপপ্রচারের বিরুদ্ধে সেক্টর কমান্ডারস ফোরাম সারা দেশে বিচারের পক্ষে জনমত গড়ে তুলছে, সভা-সমাবেশ করছে। আমরা যা বলছি তা সত্য। তবে অর্থের বিনিময়ে কেউ যদি কতিপয় লোককে ভাড়া করে আনে এবং তারা যদি উল্টো কথা বলে মানুষ তা গ্রহণ করবে না।
প্রথম আলো বিরোধী দল থেকে দাবি করা হচ্ছে সরকারি দলেও যুদ্ধাপরাধী আছে। কিন্তু তাদের ধরা হচ্ছে না।
এ কে খন্দকার সরকারি ছত্রচ্ছায়ায় যদি কোনো যুদ্ধাপরাধী থেকে থাকে তারা তথ্য প্রমাণ দিক। তারপর সরকার ব্যবস্থা নেবে। কিন্তু সেই যুক্তিতে তো বিচারকাজ বন্ধ থাকতে পারে না।
প্রথম আলো মহাজোট সরকারের মেয়াদ তিন বছর প্রায় শেষ হতে চলেছে। ২০০৮ সালে যে প্রত্যাশা নিয়ে সরকার গঠন করা হয়েছিল তার কতটা আপনারা পূরণ করতে পেরেছেন বলে মনে করেন?
এ কে খন্দকার আমি বলব, সরকার দেশ ও জনগণের উন্নয়নের ব্যাপারে আন্তরিক। প্রথম দিন থেকে তারা কাজ করছে। সরকারের মন্ত্রী হিসেবে নয়, একজন নাগরিক হিসেবে আমি তাই মনে করি।
ধারণা করি, অচিরেই আমরা একটি মধ্য আয়ের দেশে পরিণত হতে পারব। এটি কম কথা নয়। ৪০ বছর আগে বাংলাদেশ অতি দরিদ্র দেশ ছিল। সেই দারিদ্র্য ছিল দুঃসহ। গ্রামাঞ্চলে মানুষের গায়ে শীতের দিনেও একটি গরম কাপড় থাকত না। আজ তারা অন্তত কাপড়টি পরতে পারছে। একজন জনপ্রতিনিধি হিসেবে এলাকায় সাধারণ মানুষের সঙ্গে মেলামেশার সুযোগ হয়। তাদের আগের অবস্থা ও এখনকার অবস্থা দেখেছি। এই দুইয়ের মধ্যে পার্থক্য তো আছে। আমরা অনেক দূর এগিয়েছি, তবে আরও অনেক দূর যেতে হবে।
প্রথম আলো আপনাকে ধন্যবাদ।
এ কে খন্দকার ধন্যবাদ।
No comments