শিক্ষা প্রতিষ্ঠান এমপিওভুক্তি-নীতিমালা অনুসরণই শ্রেয়

জাতীয় সংসদে মন্ত্রীদের প্রশ্নবাণে জর্জরিত করবেন সংসদ সদস্যরা, এটাই প্রত্যাশিত। দলমত নির্বিশেষে সবারই এটা করা উচিত। সরকার পরিচালনার কাজে কোনো ভুল হলে সংসদ সদস্যদের তা ধরিয়ে দিতে হবে। বিরোধীদলীয় সদস্যরাও তো এটা করবেনই, সরকারি দলের সদস্যদেরও এটাই করা উচিত। তাতে সরকারের জনপ্রিয়তা কমে না, দলেরও ক্ষতি হয় না। এটাও মনে রাখতে হবে যে, সংসদ সদস্যরা কিন্তু জবাবদিহিতার ঊধর্ে্ব নন।


তারা আইন প্রণেতা, কিন্তু একই সঙ্গে আইনের রক্ষক। তাদেরও দেশের আইন-কানুন ও বিধিবিধান মেনে চলতে হবে। তারা যখন নিজ নিজ নির্বাচনী এলাকায় বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের এমপিওভুক্তির দাবি উত্থাপন করেন তখনও এটা মনে রাখা চাই। কিন্তু সোমবার জাতীয় সংসদে প্রশ্নোত্তর পর্বে কয়েকজন সদস্য তা বিস্মৃত হয়েছেন বলেই প্রতীয়মান হয়। তারা চলতি অর্থবছরে নিজেদের নির্বাচনী এলাকার জন্য ১৫টি করে প্রতিষ্ঠান এমপিওভুক্ত করার দাবি জানান। এ দাবিতে যৌক্তিকতা থাকতে পারে, না-ও পারে। বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক ও কর্মচারীদের সরকারি তহবিল থেকে বেতন-ভাতা প্রদানের জন্য নির্দিষ্ট নীতিমালা রয়েছে। এ ক্ষেত্রে পঞ্চম ও অষ্টম শ্রেণীর সমাপনী পরীক্ষা এবং এসএসসি পরীক্ষার ফলসহ নানা বিষয় বিবেচনায় নিতে হয়। শিক্ষায় পিছিয়ে থাকা এলাকার প্রতিও নজর রাখতে হয়। অতীতে অন্যায়ের শিকার হয়েছে, এমন এলাকার প্রতিও অগ্রাধিকার দিতে হয়। সরকারের আর্থিক সামর্থ্যেরও প্রশ্ন রয়েছে। সংসদ সদস্যদের প্রথম নজর রাখতে হবে যাতে সরকারি নীতিমালা লঙ্ঘন নয়, বরং হুবহু অনুসরণ করে সেটা নিশ্চিত করা। নীতিমালায় কোনো পরিবর্তন আনতে হলে সে প্রস্তাবও সংসদে উপস্থাপন করা যায়। কিন্তু এর পরিবর্তে নিজ নিজ এলাকার স্কুল-কলেজকে ঢালাওভাবে এমপিওভুক্তির জন্য দাবি উপস্থাপন করা অযৌক্তিক মনে হতে পারে। সংসদ সদস্য সুপারিশ করলেই তা মানতে হবে, এমন কথা নেই। অযৌক্তিক সুপারিশ পরিহার করা চাই। বরং দেখতে হবে যে, নির্দিষ্ট প্রতিষ্ঠানটি নীতিমালা অনুযায়ী সরকারি খাত থেকে বেতন-ভাতা পাওয়ার উপযুক্ত কি-না। অতীতে সংসদ সদস্যরা প্রভাব খাটিয়ে অনেক প্রতিষ্ঠানকে এমপিওভুক্ত করে নিয়েছেন। কিন্তু মন্দ ধারা চলতে না দেওয়াই ভালো।

No comments

Powered by Blogger.