সেই খুদে শিশু বাড়ি গেছে
হাসপাতাল ছেড়েছে বিশ্বের তৃতীয় ক্ষুদ্রতম শিশু মেলিন্ডা স্টার গুইডো। গত শুক্রবার যুক্তরাষ্ট্রের লস অ্যাঞ্জেলেসের হাসপাতাল থেকে তাকে আনুষ্ঠানিকভাবে ছেড়ে দেওয়া হয়। মেলিন্ডার জন্ম হয় গত বছরের ৩০ আগস্ট। জন্মের পরই সে গণমাধ্যমের শিরোনাম হয়েছিল।
কারণ, তখন শিশুটির ওজন ছিল মাত্র সাড়ে নয় আউন্স! মেট্রিক ওজনে ২৭০ গ্রামের মতো। মেলিন্ডা এত পুঁচকে ছিল যে চিকিৎসকের হাতের তালুতেই ওর জায়গা হতো। ওর ওই খুদে শরীরের ছবি আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমে প্রচারিত হলে বেশ সাড়া পড়ে যায়।
মেলিন্ডার হাসপাতাল থেকে বাড়ি যাওয়ার মুহূর্তটিও গণমাধ্যমের নজর কাড়ে সমানভাবে। এ দৃশ্য ক্যামেরাবন্দী করতে হাসপাতালের বাইরে ভিড় জমান বহু সংবাদকর্মী।
মেলিন্ডাকে গত পাঁচ মাস ইনকিউবেটরে রেখে চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে। ওকে নিয়ে বাড়ি যাওয়ার সময় মা হাইডি ইবারা (২২) অনুভূতি প্রকাশ করতে গিয়ে বলেন, ‘ভালো লাগছে যে শেষমেশ ওকে বাড়ি নিতে পারছি। আমরা এই মুহূর্তটির জন্যই গত পাঁচ মাস প্রতীক্ষা করেছি। আমার সোনামণি বেঁচে আছে। একটু একটু করে ওর শরীরের উন্নতি হচ্ছে। এ জন্য আমরা কৃতজ্ঞ।’
এখন মেলিন্ডার ওজন প্রায় সাড়ে চার পাউন্ড বা দুই কিলোর মতো। সারা বিশ্বে জন্মের পর বেঁচে থাকা অতি খুদে শিশুদের মধ্যে ও রয়েছে তৃতীয় স্থানে; যুক্তরাষ্ট্রে দ্বিতীয়।
চিকিৎসকেরা বলছেন, গত কয়েক মাসে মেলিন্ডার শরীরের অনেক উন্নতি হয়েছে। তবে বাড়িতেও ওকে কৃত্রিম উপায়ে অক্সিজেন দিতে হবে। মস্তিষ্ক স্ক্যানসহ বেশ কিছু পরীক্ষায় মেলিন্ডার সবকিছু স্বাভাবিক পাওয়া গেছে। তবে ভবিষ্যতে ওর শারীরিক ও মানসিক বিকাশ কেমন হবে, সে সম্পর্কে এখনই নিশ্চিত করে বলতে পারছেন না চিকিৎসকেরা। ওকে আরও অন্তত ছয় বছর পর্যবেক্ষণ করবেন তাঁরা। চিকিৎসক রঙ্গস্বামী রামানাথন বলেছেন, ‘আমি তো আশাবাদী, শিশুটির স্বাস্থ্যের উন্নতি হবে। তবে কোনো নিশ্চয়তা দেওয়া যায় না।’
যুক্তরাষ্ট্রে প্রতিবছর এক পাউন্ডেরও কম ওজনের প্রায় সাড়ে সাত হাজার শিশু জন্ম নেয়। এদের মধ্যে বেঁচে থাকে মাত্র ১০ শতাংশ।
মেলিন্ডা গর্ভে থাকার সময় ওর মা ভুগছিলেন অতি উচ্চ রক্তচাপে। মা ও শিশু উভয়ের জন্য তা ছিল অত্যন্ত বিপজ্জনক। একপর্যায়ে ২৪ সপ্তাহের মাথায় অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে মেলিন্ডার জন্ম হয়। অনেক জটিলতা পেরিয়ে তাকে বাঁচিয়ে রাখতে পারাকে একটা বিরল সাফল্য হিসেবেই দেখছেন বিশেষজ্ঞরা। এএফপি ও এপি।
No comments