খুদে বিজ্ঞানীদের বিস্ময়কর আবিষ্কার by লাবনী খন্দকার

খন আর টাকা খরচ করে ব্যাটারি কিনতে হবে না। ঘরে বসেই যে কেউ ব্যাটারি বানাতে পারবেন। এর জন্য কাঁচামালও আছে হাতের কাছেই। গাছের পাতা ও পচা সবজি থেকে বানানো এই ব্যাটারির আয়ুও থাকবে অনেক দিন। চার্জ ফুরালে কেবল কষ্ট করে রিচার্জ করে নিতে হবে।


শিক্ষা ও সাংস্কৃতিক মিলনমেলার নবম দিনে গতকাল শনিবার রাজধানীর নটর ডেম কলেজে অনুষ্ঠিত হয় বিজ্ঞান প্রকল্প প্রদর্শনী। এ প্রদর্শনীতে এমনই এক ধরনের ব্যাটারি প্রদর্শন করেছে বাংলাদেশ বিজ্ঞান ও শিল্প গবেষণা পরিষদ (বিসিএসআইআর) স্কুলের নবম শ্রেণীর তিন খুদে বিজ্ঞানী। খুদে বিজ্ঞানীদের আবিষ্কার দেখে মুগ্ধ হয়েছেন প্রদর্শনীতে আসা শিক্ষার্থী ও শিক্ষকেরা। প্রদর্শনীতে ৬০০ শিক্ষার্থীর ২০০টি প্রকল্প স্থান পেয়েছে।
নটর ডেম কলেজের শিক্ষক ও অনুষ্ঠান আয়োজনে গঠিত উপকমিটির আহ্বায়ক সুশান্ত কুমার সরকার প্রথম আলোকে বলেন, খুদে বিজ্ঞানীর এই আবিষ্কার বিস্ময়কর! ব্যাটারিসহ আরও যেসব আবিষ্কার প্রদর্শিত হয়েছে, এর অনেকগুলোর মধ্যেই নতুনত্ব আছে। এগুলোতে কিছু কিছু সংস্কার করা গেলে ভালো আবিষ্কার হিসেবে বিবেচিত হবে।
রিচার্জেবল ব্যাটারির আবিষ্কারক মো. রাশেদ, নাবিল হাসান ও মো. ফাহিম জানায়, এক পর্দা পচা আলু, তার ওপর ভেজা কাগজ আবার পচা আলু, এরপর শুকনো কাগজ দিয়ে তৈরি এ ব্যাটারিতে ২০ মিনিট চার্জ দিলে ৭২ ঘণ্টা চলবে। তারা পরীক্ষামূলকভাবে একটি ঘড়িতে এ ব্যাটারি চালিয়েছে।
স্বল্পব্যয়ে সীমিত শক্তিতে অঞ্চলভিত্তিক বিদ্যুতায়ন এবং এর অপচয় রোধ প্রকল্প প্রদর্শন করে বীরশ্রেষ্ঠ নূর মোহাম্মদ পাবলিক কলেজের শিক্ষার্থীরা। প্রকল্প তৈরি করেছে ফেমিনা আলম, সোনিয়া আক্তার ও লিফাত রহমান।
প্রদর্শনী ঘিরে দর্শকদের আগ্রহ বাড়িয়ে দেয় তানজিমুল উম্মাহ ক্যাডেট মাদ্রাসার সপ্তম শ্রেণীর শিক্ষার্থীরা। ওই স্কুলের তিন শিক্ষার্থী সিরাজুল ইসলাম, মো. আনাস ও ইয়ামিন সহজ উপায়ে ডাবের পানি বের করার পদ্ধতি আবিষ্কার করে তা দর্শকদের দেখায়। তিনকোণ বিশিষ্ট একটা ধারালো দণ্ডে ডাব বসিয়ে নিচে জগ দিলেই সহজে ডাবের পানি বের করা যাবে এবং কোনো রকম অস্ত্র ছাড়াই দ্রুত পানি পাওয়া যাচ্ছে।
এ ছাড়া ভূমিকম্প থেকে রক্ষা পাওয়ার উপায়, আলু দিয়ে বিদ্যুৎ উৎপাদনের কৌশল ও কৃত্রিম কিডনি প্রতিস্থাপন-প্রক্রিয়া আবিষ্কারও করেছে খুদে বিজ্ঞানীরা। প্রতিযোগিতায় উপস্থিত নটর ডেম কলেজের অধ্যক্ষ এবং শিক্ষা ও সাংস্কৃতিক মিলনমেলা কমিটির আহ্বায়ক ফাদার বেঞ্জামিন ডি কস্তা বলেন, এটি খুবই আনন্দের বিস্ময় যে অনেক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান এই মেলায় অংশ নিচ্ছে।
শিক্ষার মান উন্নয়ন ও সহশিক্ষা কার্যক্রমে অংশ নিয়ে সুপ্ত প্রতিভা বিকাশের লক্ষ্যে ১২ জানুয়ারি শুরু হয়েছে দুই সপ্তাহব্যাপী এই মিলনমেলার। মেলায় সহযোগিতা করছে প্রথম আলো ও সময় টেলিভিশন। ২৬ জানুয়ারি সমাপনী অনুষ্ঠান ও বিজয়ীদের মধ্যে পুরস্কার বিতরণ করা হবে।

No comments

Powered by Blogger.