ইশারা মিলেছে, রাজনৈতিক বিবেচনায় এ সপ্তাহেই পদোন্নতি
দীন ইসলাম: প্রশাসনের ক্ষোভ ও অসন্তোষ ঠেকাতে এবং যৌক্তিক কারণ বিবেচনায় নিয়ে এ সপ্তাহেই প্রশাসনের তিনটি স্তরে পদোন্নতি দেবে পৃষ্ঠা ২০ কলাম ১
সরকার। পদগুলো উপসচিব, যুগ্ম সচিব ও অতিরিক্ত সচিবের। তবে অনিবার্য কারণে যুগ্ম সচিব ছাড়া বাকি দু’টি পদে শূন্য পদের বাইরে পদোন্নতি দেয়া হবে। ইতিমধ্যে সরকারের উচ্চ পর্যায় থেকে পদোন্নতির বিষয়ে ইশারা মিলেছে। তাই রাজনৈতিক বিবেচনায় সরকারের তিন বছর পর এ পদোন্নতি দেয়া হবে বলে মনে করা হচ্ছে। এজন্য সব প্রস্তুতি শেষ হয়। তিন স্তরে পদোন্নতিযোগ্য পদ ঠিক করা হয়েছে। এ কারণে এ সপ্তাহের দ্বিতীয় কার্যদিবস থেকেই তিন দিনের সুপিরিয়র সিলেকশন বোর্ড (এসএসবি)-এর সভা ডাকা হয়েছে। সভাটি আগামী সোমবার বিকাল চারটা, মঙ্গলবার বেলা ১১টা ও বুধবার বেলা ১১টায় মন্ত্রিপরিষদ সচিবের দপ্তরে অনুষ্ঠিত হবে। আগামীকাল এসএসবির বৈঠক সংক্রান্ত নোটিশ জারি করবে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়। ওদিকে প্রশাসনের উচ্চপর্যায়ে ক্যাডার পদের কয়েকটি ধাপে শ’ শ’ কর্মকর্তা পদোন্নতির যোগ্যতা অর্জন করে বসে আছেন। সময়মতো পদোন্নতি না হওয়ায় ক্রমেই ক্ষোভ-অসন্তোষ আর হতাশা বাড়ছে। সঙ্গে যোগ হয়েছে দফায় দফায় পদোন্নতিবঞ্চিত কর্মকর্তাদের অসন্তোষ। তাদের চাপে প্রশাসন কাঠামো বেসামাল হয়ে পড়ায় বিলম্বে হলেও সরকারের নীতি-নির্ধারক মহল পদোন্নতি দেয়ার বিষয়ে সিদ্ধান্তে পৌঁছেছে। প্রথমে উপসচিব ও যুগ্ম সচিব পদে পদোন্নতি দেয়ার সিদ্ধান্ত নেয়া হবে। এরপর ১৯৮৪ ব্যাচের পদোন্নতি প্রত্যাশী কর্মকর্তাদের যৌক্তিক দাবি বিবেচনায় নিয়ে অতিরিক্ত সচিব পদেও একযোগে পদোন্নতি হবে। ফলে তিন স্তরে পাঁচ শতাধিক কর্মকর্তার পদোন্নতি হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
অতিরিক্ত সচিব: অতিরিক্ত সচিব পদে সর্বশেষ পদোন্নতি দেয়া হয় ১০ই অক্টোবর। পদোন্নতি পান ৩১ জন। শূন্যপদ ছাড়াই পদোন্নতি দেয়া হয়। বর্তমানে অতিরিক্ত সচিবের সংখ্যা ১৪৮। এর মধ্যে ওএসডি আছেন ৪৫ জন। পদোন্নতিযোগ্য কর্মকর্তার সংখ্যা বেশি হওয়ায় পদ ছাড়াই পদোন্নতি দেয়া হয়। অতিরিক্ত সচিবের ডিউটি পদ ৬৮টি। অতিরিক্ত সচিব পদমর্যাদার প্রেষণ পদের সংখ্যা সর্বোচ্চ ৩৫টি। বিদ্যমান পরিস্থিতিতে প্রেষণ পদে নিয়োগ দেয়ার সুনির্দিষ্ট কোন নিয়ম অনুসরণ করা হয় না। যুগ্মসচিব পদমর্যাদার বেশির ভাগ পদে প্রেষণে অতিরিক্ত সচিব পদায়ন করা হয়েছে। পদোন্নতিবঞ্চিত কর্মকর্তা ছাড়াও অতিরিক্ত সচিব হিসেবে পদোন্নতি পাওয়ার জন্য এখন ১৬৩ জন যুগ্ম সচিব অপেক্ষার সারিতে বসে আছেন। এর মধ্যে ১৯৮৪ ব্যাচের প্রশাসন ক্যাডারের কর্মকর্তা ১২০ জন। এরা ২০০৯ সালের ৭ই সেপ্টেম্বর যুগ্ম সচিব হিসেবে পদোন্নতি পেয়েছিলেন। এখন অতিরিক্ত সচিব হওয়ার শর্ত হিসেবে যুগ্ম সচিব পদে দু’বছর পার করেও পদোন্নতির দেখা মিলছে না। মাঝখানে গত মাসে ৮২ ব্যাচের শেষ দিকের ৩১ জনকে পদোন্নতি দেয়ায় তাদের প্রত্যাশায় ভাটা পড়ে। অনেকে ক্ষোভ-অসন্তোষ প্রকাশ করেন। তারা চেয়েছিলেন, ১৯৮৪ ব্যাচসহ একযোগে অন্তত এক শ’জনের কাছাকাছি পদোন্নতি পেতে। অভিযোগ রয়েছে, ওই সময় এভাবে কমসংখ্যায় পদোন্নতি দিয়ে এসএসবির কোন কোন সদস্য ওই ব্যাচের সহসা অতিরিক্ত সচিব হওয়ার সুযোগের দরজা বন্ধ করে দিতে চেয়েছিলেন। এ অবস্থায় পদোন্নতি প্রত্যাশী এ ব্যাচের কিছু প্রভাবশালী কর্মকর্তা সম্প্রতি সরকারের নীতিনির্ধারণী পর্যায়ে পদোন্নতি পাওয়ার পক্ষে তাদের ‘লজিক পেপার’ উপস্থাপন করেন। এক পৃষ্ঠার এ পেপারে বলা হয়েছে, ডিসেম্বর মাসে সরকার পদোন্নতি দিলে কোন অজুহাত ছাড়াই অতিরিক্ত সচিব পদে ৬২ জনকে পদোন্নতি দিতে পারে। যুক্তি দেখিয়ে বলা হয়েছে, গত বছর ২১শে নভেম্বর ৬০ জনকে অতিরিক্ত সচিব পদে পদোন্নতি দেয়ার পর মোট অতিরিক্ত সচিবের সংখ্যা দাঁড়ায় ১৮৪। বর্তমানে অতিরিক্ত সচিবের সংখ্যা ১৪৮। এ হিসেবে ৩৬ জন এখনও কম আছে। বর্তমানে সচিবের ২টি পদ শূন্য। ৩১শে ডিসেম্বরের মধ্যে দু’জন সচিব ও ৮ জন অতিরিক্ত সচিব যাবেন অবসরে। একই ভাবে হিসাব দেখিয়ে বলা হয়েছে, ২০১২ সালের ৩০শে জুন পর্যন্ত হিসাব করলে ৮৪ এবং ২০১২ সালের ৩১শে ডিসেম্বর পর্যন্ত সময় হাতে রেখে একবারে পদোন্নতি দিলে ১১৯ জনকে অতিরিক্ত সচিব হিসেবে পদোন্নতি দেয়া সম্ভব। এ সারির কয়েকজন কর্মকর্তা মানজমনিকে জানিয়েছেন, অতিরিক্ত সচিব পদে ১৯৮৪ ব্যাচকে এখন পদোন্নতি না দিলে যুগ্ম সচিব পদে ১৯৮৫ ব্যাচের পদোন্নতির হিসাবও সহজে মেলানো যাবে না। কেননা, ৫ শতাধিক কর্মকর্তার এ ব্যাচের যেসব কর্মকর্তাকে সরকার পদোন্নতি দিতে চায় তাদের একটি বড় অংশের সিরিয়াল রয়েছে ব্যাচের ২০০ জনের পরে। আবার প্রচুরসংখ্যক কর্মকর্তাকে বাদ দিয়ে পদোন্নতি দিলে বঞ্চিত কর্মকর্তাদের ক্ষোভ সামাল দেয়াও কঠিন হবে।
যুগ্ম সচিব: এ পদে পদোন্নতি প্রত্যাশী কর্মকর্তাদের মধ্যে বর্তমানে ১৯৮৪ ব্যাচের (ইতিপূর্বে পদোন্নতিবঞ্চিত) উপসচিব আছেন ১৯৬ জন, নতুন করে পদোন্নতিযোগ্য ৮৫ ব্যাচের উপসচিবের সংখ্যা ৫০৯ এবং ১৯৮৬ ব্যাচের ২০৬ জন। ১৯৮৫ ও ১৯৮৬ ব্যাচের কর্মকর্তারা যুগ্ম সচিব পদে পদোন্নতির যোগ্যতা অর্জন করেছেন আরও দু’বছর আগে। উপসচিব পদে তিন বছর দায়িত্ব পালন করলেই একজন কর্মকর্তা যুগ্ম সচিব হওয়ার যোগ্যতা অর্জন করেন। এ ব্যাচ দু’টির বেশির ভাগ কর্মকর্তা পদোন্নতি পান ২০০৬ সালের ২৬শে জানুয়ারি, ১৫ই অক্টোবর ও ৪ঠা ডিসেম্বর। তবে একসঙ্গে এ বিপুলসংখ্যক কর্মকর্তাকে পদোন্নতির জন্য বিবেচনায় আনা সম্ভব হবে না। পদোন্নতি দেয়ার মতো তেমন কোন শূন্যপদও হাতে নেই। সম্প্রতি ৩১ জন যুগ্ম সচিবকে অতিরিক্ত সচিব পদে পদোন্নতি দেয়ায় এ পদগুলো খালি হয়েছে। বর্তমানে শুধু ৮৫ ব্যাচের চাপ সামাল দিতে হলেও সরকারকে যুগ্ম সচিব পদে কমপক্ষে ৩০০ জন কর্মকর্তাকে পদোন্নতি দিতে হবে। এর আগে পদোন্নতিবঞ্চিত কর্মকর্তাদের ওপর ন্যায়বিচার না করলে আরেক দফা অবিচার করা হবে। সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, একটু অস্বাভাবিক হলেও অতিরিক্ত সচিব পদে আবারও পদোন্নতি দিয়ে যুগ্ম সচিব পদে বেশি সংখ্যায় পদোন্নতির সুযোগ সৃষ্টি করার চিন্তাভাবনা চলছে। ওদিকে ১৯৮৫ ব্যাচের কর্মকর্তারা ব্যাচ ধরে পদোন্নতি পেতে চান। ব্যাচ ভেঙে পদোন্নতি দিলে তারা মেনে নেবেন না। এ ব্যাচের প্রভাবশালী কর্মকর্তারা আরও ৬ মাস আগে পদোন্নতি পাওয়ার জন্য চেষ্টা-তদবির করেন। তারা সরকারের ঊর্ধ্বতনদের কাছে বলাবলি করেন, এ সরকারের আমলে এখনও একটিও পদোন্নতি পাইনি আমরা। তাই আমাদের বিবেচনায় নেয়া উচিত সবচেয়ে আগে।
উপসচিব: উপসচিব পদে সর্বশেষ পদোন্নতি গত বছর ১৫ই ডিসেম্বর। পদোন্নতি পান ২৯৮ জন। লেফটআউটসহ ১১তম ব্যাচ এবং ১৩তম ব্যাচের ১৪ জনকে পদোন্নতি দেয়া হয়। বর্তমানে উপসচিবের সংখ্যা ১৫৪২। পদের তুলনায় প্রায় ৫০০ কর্মকর্তা বেশি। ইনসিটো, প্রেষণ নিয়োগ আর ওএসডি করে বর্ধিত উপসচিবদের সমন্বয় করা হয়েছে। এদিকে ১০ বছর চাকরি করার শর্ত পূরণ করে উপসচিব হওয়ার অপেক্ষায় বসে আছেন পাঁচটি ব্যাচের ৭৩৫ জন কর্মকর্তা। এসব ব্যাচের মধ্যে ১৩তম ব্যাচের অবশিষ্ট ১৯৮ জন, ১৫ তম ব্যাচের ১০৮ জন, ১৭তম ব্যাচের ৬৩ জন, ১৮তম ব্যাচের ৯২ জন এবং ২০তম ব্যাচের ২৭৪ জন কর্মকর্তা। ১৩তম ব্যাচ চাকরিতে যোগ দেয় ১৯৯৪ সালের ২৫শে এপ্রিল। তারা উপসচিব হওয়ার যোগ্যতা অর্জন করেন ২০০৪ সালে। ২০তম ব্যাচ চাকরিতে যোগ দেয় ২০০১ সালের ২৮শে মে। তারাও উপসচিব পদে এ বছর পদোন্নতির যোগ্যতা অর্জন করেছেন। সূত্র জানিয়েছে, যুগ্ম সচিব পদে ৩০০ কর্মকর্তাকে পদোন্নতি দেয়া সম্ভব হলে উপসচিব পদে সমসংখ্যক বা সাড়ে ৩০০ কর্মকর্তাকে পদোন্নতি দেয়া যাবে।
সরকার। পদগুলো উপসচিব, যুগ্ম সচিব ও অতিরিক্ত সচিবের। তবে অনিবার্য কারণে যুগ্ম সচিব ছাড়া বাকি দু’টি পদে শূন্য পদের বাইরে পদোন্নতি দেয়া হবে। ইতিমধ্যে সরকারের উচ্চ পর্যায় থেকে পদোন্নতির বিষয়ে ইশারা মিলেছে। তাই রাজনৈতিক বিবেচনায় সরকারের তিন বছর পর এ পদোন্নতি দেয়া হবে বলে মনে করা হচ্ছে। এজন্য সব প্রস্তুতি শেষ হয়। তিন স্তরে পদোন্নতিযোগ্য পদ ঠিক করা হয়েছে। এ কারণে এ সপ্তাহের দ্বিতীয় কার্যদিবস থেকেই তিন দিনের সুপিরিয়র সিলেকশন বোর্ড (এসএসবি)-এর সভা ডাকা হয়েছে। সভাটি আগামী সোমবার বিকাল চারটা, মঙ্গলবার বেলা ১১টা ও বুধবার বেলা ১১টায় মন্ত্রিপরিষদ সচিবের দপ্তরে অনুষ্ঠিত হবে। আগামীকাল এসএসবির বৈঠক সংক্রান্ত নোটিশ জারি করবে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়। ওদিকে প্রশাসনের উচ্চপর্যায়ে ক্যাডার পদের কয়েকটি ধাপে শ’ শ’ কর্মকর্তা পদোন্নতির যোগ্যতা অর্জন করে বসে আছেন। সময়মতো পদোন্নতি না হওয়ায় ক্রমেই ক্ষোভ-অসন্তোষ আর হতাশা বাড়ছে। সঙ্গে যোগ হয়েছে দফায় দফায় পদোন্নতিবঞ্চিত কর্মকর্তাদের অসন্তোষ। তাদের চাপে প্রশাসন কাঠামো বেসামাল হয়ে পড়ায় বিলম্বে হলেও সরকারের নীতি-নির্ধারক মহল পদোন্নতি দেয়ার বিষয়ে সিদ্ধান্তে পৌঁছেছে। প্রথমে উপসচিব ও যুগ্ম সচিব পদে পদোন্নতি দেয়ার সিদ্ধান্ত নেয়া হবে। এরপর ১৯৮৪ ব্যাচের পদোন্নতি প্রত্যাশী কর্মকর্তাদের যৌক্তিক দাবি বিবেচনায় নিয়ে অতিরিক্ত সচিব পদেও একযোগে পদোন্নতি হবে। ফলে তিন স্তরে পাঁচ শতাধিক কর্মকর্তার পদোন্নতি হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
অতিরিক্ত সচিব: অতিরিক্ত সচিব পদে সর্বশেষ পদোন্নতি দেয়া হয় ১০ই অক্টোবর। পদোন্নতি পান ৩১ জন। শূন্যপদ ছাড়াই পদোন্নতি দেয়া হয়। বর্তমানে অতিরিক্ত সচিবের সংখ্যা ১৪৮। এর মধ্যে ওএসডি আছেন ৪৫ জন। পদোন্নতিযোগ্য কর্মকর্তার সংখ্যা বেশি হওয়ায় পদ ছাড়াই পদোন্নতি দেয়া হয়। অতিরিক্ত সচিবের ডিউটি পদ ৬৮টি। অতিরিক্ত সচিব পদমর্যাদার প্রেষণ পদের সংখ্যা সর্বোচ্চ ৩৫টি। বিদ্যমান পরিস্থিতিতে প্রেষণ পদে নিয়োগ দেয়ার সুনির্দিষ্ট কোন নিয়ম অনুসরণ করা হয় না। যুগ্মসচিব পদমর্যাদার বেশির ভাগ পদে প্রেষণে অতিরিক্ত সচিব পদায়ন করা হয়েছে। পদোন্নতিবঞ্চিত কর্মকর্তা ছাড়াও অতিরিক্ত সচিব হিসেবে পদোন্নতি পাওয়ার জন্য এখন ১৬৩ জন যুগ্ম সচিব অপেক্ষার সারিতে বসে আছেন। এর মধ্যে ১৯৮৪ ব্যাচের প্রশাসন ক্যাডারের কর্মকর্তা ১২০ জন। এরা ২০০৯ সালের ৭ই সেপ্টেম্বর যুগ্ম সচিব হিসেবে পদোন্নতি পেয়েছিলেন। এখন অতিরিক্ত সচিব হওয়ার শর্ত হিসেবে যুগ্ম সচিব পদে দু’বছর পার করেও পদোন্নতির দেখা মিলছে না। মাঝখানে গত মাসে ৮২ ব্যাচের শেষ দিকের ৩১ জনকে পদোন্নতি দেয়ায় তাদের প্রত্যাশায় ভাটা পড়ে। অনেকে ক্ষোভ-অসন্তোষ প্রকাশ করেন। তারা চেয়েছিলেন, ১৯৮৪ ব্যাচসহ একযোগে অন্তত এক শ’জনের কাছাকাছি পদোন্নতি পেতে। অভিযোগ রয়েছে, ওই সময় এভাবে কমসংখ্যায় পদোন্নতি দিয়ে এসএসবির কোন কোন সদস্য ওই ব্যাচের সহসা অতিরিক্ত সচিব হওয়ার সুযোগের দরজা বন্ধ করে দিতে চেয়েছিলেন। এ অবস্থায় পদোন্নতি প্রত্যাশী এ ব্যাচের কিছু প্রভাবশালী কর্মকর্তা সম্প্রতি সরকারের নীতিনির্ধারণী পর্যায়ে পদোন্নতি পাওয়ার পক্ষে তাদের ‘লজিক পেপার’ উপস্থাপন করেন। এক পৃষ্ঠার এ পেপারে বলা হয়েছে, ডিসেম্বর মাসে সরকার পদোন্নতি দিলে কোন অজুহাত ছাড়াই অতিরিক্ত সচিব পদে ৬২ জনকে পদোন্নতি দিতে পারে। যুক্তি দেখিয়ে বলা হয়েছে, গত বছর ২১শে নভেম্বর ৬০ জনকে অতিরিক্ত সচিব পদে পদোন্নতি দেয়ার পর মোট অতিরিক্ত সচিবের সংখ্যা দাঁড়ায় ১৮৪। বর্তমানে অতিরিক্ত সচিবের সংখ্যা ১৪৮। এ হিসেবে ৩৬ জন এখনও কম আছে। বর্তমানে সচিবের ২টি পদ শূন্য। ৩১শে ডিসেম্বরের মধ্যে দু’জন সচিব ও ৮ জন অতিরিক্ত সচিব যাবেন অবসরে। একই ভাবে হিসাব দেখিয়ে বলা হয়েছে, ২০১২ সালের ৩০শে জুন পর্যন্ত হিসাব করলে ৮৪ এবং ২০১২ সালের ৩১শে ডিসেম্বর পর্যন্ত সময় হাতে রেখে একবারে পদোন্নতি দিলে ১১৯ জনকে অতিরিক্ত সচিব হিসেবে পদোন্নতি দেয়া সম্ভব। এ সারির কয়েকজন কর্মকর্তা মানজমনিকে জানিয়েছেন, অতিরিক্ত সচিব পদে ১৯৮৪ ব্যাচকে এখন পদোন্নতি না দিলে যুগ্ম সচিব পদে ১৯৮৫ ব্যাচের পদোন্নতির হিসাবও সহজে মেলানো যাবে না। কেননা, ৫ শতাধিক কর্মকর্তার এ ব্যাচের যেসব কর্মকর্তাকে সরকার পদোন্নতি দিতে চায় তাদের একটি বড় অংশের সিরিয়াল রয়েছে ব্যাচের ২০০ জনের পরে। আবার প্রচুরসংখ্যক কর্মকর্তাকে বাদ দিয়ে পদোন্নতি দিলে বঞ্চিত কর্মকর্তাদের ক্ষোভ সামাল দেয়াও কঠিন হবে।
যুগ্ম সচিব: এ পদে পদোন্নতি প্রত্যাশী কর্মকর্তাদের মধ্যে বর্তমানে ১৯৮৪ ব্যাচের (ইতিপূর্বে পদোন্নতিবঞ্চিত) উপসচিব আছেন ১৯৬ জন, নতুন করে পদোন্নতিযোগ্য ৮৫ ব্যাচের উপসচিবের সংখ্যা ৫০৯ এবং ১৯৮৬ ব্যাচের ২০৬ জন। ১৯৮৫ ও ১৯৮৬ ব্যাচের কর্মকর্তারা যুগ্ম সচিব পদে পদোন্নতির যোগ্যতা অর্জন করেছেন আরও দু’বছর আগে। উপসচিব পদে তিন বছর দায়িত্ব পালন করলেই একজন কর্মকর্তা যুগ্ম সচিব হওয়ার যোগ্যতা অর্জন করেন। এ ব্যাচ দু’টির বেশির ভাগ কর্মকর্তা পদোন্নতি পান ২০০৬ সালের ২৬শে জানুয়ারি, ১৫ই অক্টোবর ও ৪ঠা ডিসেম্বর। তবে একসঙ্গে এ বিপুলসংখ্যক কর্মকর্তাকে পদোন্নতির জন্য বিবেচনায় আনা সম্ভব হবে না। পদোন্নতি দেয়ার মতো তেমন কোন শূন্যপদও হাতে নেই। সম্প্রতি ৩১ জন যুগ্ম সচিবকে অতিরিক্ত সচিব পদে পদোন্নতি দেয়ায় এ পদগুলো খালি হয়েছে। বর্তমানে শুধু ৮৫ ব্যাচের চাপ সামাল দিতে হলেও সরকারকে যুগ্ম সচিব পদে কমপক্ষে ৩০০ জন কর্মকর্তাকে পদোন্নতি দিতে হবে। এর আগে পদোন্নতিবঞ্চিত কর্মকর্তাদের ওপর ন্যায়বিচার না করলে আরেক দফা অবিচার করা হবে। সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, একটু অস্বাভাবিক হলেও অতিরিক্ত সচিব পদে আবারও পদোন্নতি দিয়ে যুগ্ম সচিব পদে বেশি সংখ্যায় পদোন্নতির সুযোগ সৃষ্টি করার চিন্তাভাবনা চলছে। ওদিকে ১৯৮৫ ব্যাচের কর্মকর্তারা ব্যাচ ধরে পদোন্নতি পেতে চান। ব্যাচ ভেঙে পদোন্নতি দিলে তারা মেনে নেবেন না। এ ব্যাচের প্রভাবশালী কর্মকর্তারা আরও ৬ মাস আগে পদোন্নতি পাওয়ার জন্য চেষ্টা-তদবির করেন। তারা সরকারের ঊর্ধ্বতনদের কাছে বলাবলি করেন, এ সরকারের আমলে এখনও একটিও পদোন্নতি পাইনি আমরা। তাই আমাদের বিবেচনায় নেয়া উচিত সবচেয়ে আগে।
উপসচিব: উপসচিব পদে সর্বশেষ পদোন্নতি গত বছর ১৫ই ডিসেম্বর। পদোন্নতি পান ২৯৮ জন। লেফটআউটসহ ১১তম ব্যাচ এবং ১৩তম ব্যাচের ১৪ জনকে পদোন্নতি দেয়া হয়। বর্তমানে উপসচিবের সংখ্যা ১৫৪২। পদের তুলনায় প্রায় ৫০০ কর্মকর্তা বেশি। ইনসিটো, প্রেষণ নিয়োগ আর ওএসডি করে বর্ধিত উপসচিবদের সমন্বয় করা হয়েছে। এদিকে ১০ বছর চাকরি করার শর্ত পূরণ করে উপসচিব হওয়ার অপেক্ষায় বসে আছেন পাঁচটি ব্যাচের ৭৩৫ জন কর্মকর্তা। এসব ব্যাচের মধ্যে ১৩তম ব্যাচের অবশিষ্ট ১৯৮ জন, ১৫ তম ব্যাচের ১০৮ জন, ১৭তম ব্যাচের ৬৩ জন, ১৮তম ব্যাচের ৯২ জন এবং ২০তম ব্যাচের ২৭৪ জন কর্মকর্তা। ১৩তম ব্যাচ চাকরিতে যোগ দেয় ১৯৯৪ সালের ২৫শে এপ্রিল। তারা উপসচিব হওয়ার যোগ্যতা অর্জন করেন ২০০৪ সালে। ২০তম ব্যাচ চাকরিতে যোগ দেয় ২০০১ সালের ২৮শে মে। তারাও উপসচিব পদে এ বছর পদোন্নতির যোগ্যতা অর্জন করেছেন। সূত্র জানিয়েছে, যুগ্ম সচিব পদে ৩০০ কর্মকর্তাকে পদোন্নতি দেয়া সম্ভব হলে উপসচিব পদে সমসংখ্যক বা সাড়ে ৩০০ কর্মকর্তাকে পদোন্নতি দেয়া যাবে।
No comments