তেলা ভূত

নেক দিনের ঘটনা। আমি তখন ছোট ছিলাম। ফোর কিংবা ফাইভে পড়ি। একদিন আমার এক বন্ধু আমাকে বলল, ‘নেপাল, ভূত দেখবা?’ আমি একটু ভেবে, সাহস করে হ্যাঁ বলে দিলাম। তারপর জিজ্ঞেস করলাম, ‘কোথায়’, ‘কীভাবে?’ বন্ধুটি মৃদুস্বরে উত্তর দিল, ‘অন্ধকার বদ্ধ ঘরে, ফুঁ-দেওয়া তেল মাখতে হবে।’ তখন কয়েকজন বন্ধু মিলে ভূত দেখতে গেলাম। যেভাবেই হোক, আমরা সাহস করে ভূত দেখব।


কথামতো আমাদের এক অন্ধকার বদ্ধ ঘরে একটা বাটির মধ্যে তেল দিল। অন্ধকার ঘরে কিছু দেখা যাচ্ছিল না। আমরা তেলটা মুখসহ সম্পূর্ণ শরীরে মাখছি আর মাখছি। আর অন্ধকার ঘরের এক কোণে দৃষ্টি দিচ্ছি, যেখানে ভূত দেখা যাবে। একসময় তেলটা প্রায় শেষ কিন্তু আমরা ভূতের দেখা পাচ্ছি না। ভূতের দেখা না পেয়ে রাগে ঘর থেকে বের হলাম। আলোতে এসে কাউকেই চিনতে পারলাম না আমরা! আমাদের সবার মুখসহ সম্পূর্ণ শরীর লাল-কালো রঙে ভরা, যেন আমরাই একেকটা ভূত। আসল ভূত তো দেখা হলো না, কিন্তু নকল ভূত দেখে আমাদের রাগটা বেশি না হলেও একটু কমে গেল। আর যে বন্ধুটি আমাদের সঙ্গে চালাকি করেছে, সে তখন এক দৌড়ে পগারপার!
 নেপাল চন্দ্র রায়
সারালী, শিবগঞ্জ, ঠাকুরগাঁও।

No comments

Powered by Blogger.