চসিকের আবাসিক প্রকল্প-'ভাবিয়া করিও কাজ...'
কথায় বলে, 'ভাবিয়া করিও কাজ, করিয়া ভাবিও না।' অর্থাৎ কোনো কাজ করার আগে শতবার অগ্র-পশ্চাৎ বিবেচনা করে তবেই কাজে হাত দিতে হয়। আর তা না হলে কী অবস্থার সৃষ্টি হয় তার প্রমাণ তো চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন গৃহীত বিভিন্ন আবাসিক প্রকল্প।
গতকাল সমকালে এক প্রতিবেদনে দেখা যায়, চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন গৃহীত লেকসিটি আবাসিক প্রকল্প, পোর্ট সিটি কমপ্লেক্স, কোবে সিটি হাউজিং ও ভিআইপি সোসাইটি নামের (একাংশ) প্রকল্পগুলো নানা জটিলতার কারণে সম্পূর্ণ করা যাচ্ছে না। আবার কোনো কোনোটির কাজ মাঝপথেই থমকে আছে আইনি ও দাম ঘটিত জটিলতার কারণে। লেকসিটি প্রকল্পের জন্য চসিক পাহাড় কাটা শুরু করলে পরিবেশ অধিদফতর এতে সঙ্গত কারণেই বাধা প্রদান করে। কারণ চট্টগ্রামে পরিবেশ রক্ষার জন্য পাহাড় কাটা নিষিদ্ধ। এই পাহাড় কেটে উজাড় করার কারণে চট্টগ্রাম শহরে বা শহরতলি এলাকায় বৃষ্টির মৌসুমে অনেক সময় আমরা পাহাড় ধসে মানুষের হতাহতের বিবরণ শুনে-দেখে শিউরে উঠি। কিন্তু চসিকের মতো নাগরিকদের দেখভালের দায়িত্বে নিয়োজিত সংস্থার এতে সম্বিত ফেরে না। অন্য প্রকল্পগুলোও সঠিক মূল্যায়নের ভিত্তিতে নিশ্চয়ই গ্রহণ করা হয়নি। কথা না হলে ওগুলো নিয়ে কারও সঙ্গে জায়গা সংক্রান্ত মোকদ্দমা, কোনো সংস্থার সঙ্গে দাম নিয়ে বনিবনা না হওয়াজনিত জটিলতা বা আর্থিক সংস্থান না থাকায় হাজার বিনিয়োগকারীর কাছ থেকে অর্থ নিয়ে তাদের প্লট পুরোপুরি বুঝিয়ে দেওয়া দূরে থাক, এগুলো আদৌ শেষ করা যাবে কি-না তার নিশ্চয়তা নেই। সিটি করপোরেশনসহ এ ধরনের বিধিবদ্ধ নাগরিক সেবা সংশ্লিষ্ট সংস্থাগুলোর অনুমোদন ও ছাড়পত্র ছাড়া কোনো প্রকল্প হাতে নেওয়া উচিত নয়। চসিকের তো পরিবেশ বিপর্যয়ের কারণ হতে পারে, এ ধরনের আবাসিক প্রকল্প গ্রহণ করা একেবারেই উচিত হয়নি। তবে এ জন্য যারা আবাসিক প্লটের জন্য অর্থ জমা দিয়ে প্রহর গুনছে তারা দায়ী নয়। অন্য প্রকল্পগুলোর জটিলতা জরুরি ভিত্তিতেই অবসান হওয়া দরকার। এ জন্য অপরের ঘাড়ে দোষ না চাপিয়ে চট্টগ্রাম পৌর করপোরেশনের উচিত প্রকল্প সম্পন্ন করার ব্যাপারে বুদ্ধি খাটানো ও কর্মকুশলতার পরিচয় দেওয়া।
No comments