সরকার উৎখাতের চক্রান্ত-জড়িতদের শনাক্ত করার চেষ্টা
সেনাবাহিনীতে অভ্যুত্থান ও সরকার উৎখাতের চেষ্টার সঙ্গে জড়িত সবাইকে শনাক্ত করার চেষ্টা চালানো হচ্ছে। জড়িতদের মধ্যে পলাতক মেজর সৈয়দ জিয়াউল হককে ধরতে সব সেনানিবাস ও বন্দরে ছবিসহ বিস্তারিত তথ্য পাঠানো হয়েছে। সেনাসূত্র এ তথ্য নিশ্চিত করেছে।
সূত্র জানায়, অভ্যুত্থান-চেষ্টার সঙ্গে জড়িত ১১ জনের ফোনালাপ গোয়েন্দা সংস্থার হাতে রয়েছে। তাঁরা জিয়াউলের সঙ্গে ফোনে অভ্যুত্থান-পরিকল্পনা নিয়ে কথা বলেছেন। গত বৃহস্পতিবার সেনাসদরের সংবাদ সম্মেলনে এ পরিকল্পনার সঙ্গে ১৪ থেকে ১৬ জন কর্মকর্তার জড়িত থাকার তথ্য দেওয়া হয়।
এ ঘটনায় গ্রেপ্তার হওয়া সাবেক সেনা কর্মকর্তা এহসান ইউসুফের ব্যবহূত ল্যাপটপ উদ্ধার করেছে গোয়েন্দারা। দায়িত্বশীল সেনাসূত্র প্রথম আলোকে জানায়, এহসানের ল্যাপটপ ঘেঁটে অভ্যুত্থান-পরিকল্পনা সম্পর্কে অনেক তথ্য জানা যায়। এতে দেখা যায়, তাঁরা একটি কল্পিত সরকারব্যবস্থার ছক তৈরি করেছিলেন। এ অনুযায়ী পছন্দের জ্যেষ্ঠ সেনা কর্মকর্তাদের মন্ত্রী পদে বসানোর কথা বলা হয়েছে।
অভ্যুত্থান-পরিকল্পনা ফাঁস হওয়ার দুই দিন পর ১৫ ডিসেম্বর রাতে এহসান ইউসুফকে সেনানিবাসের মাটিকাটা এলাকার বাসা থেকে গ্রেপ্তার করা হয়। ওই সময় তাঁর বাসা থেকে ল্যাপটপটি উদ্ধার করে সেনাবাহিনী।
সেনাসদরের সংবাদ সম্মেলনে সেনাবাহিনীর পার্সোনেল সার্ভিসেস পরিদপ্তরের (পিএস পরিদপ্তর) পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. মাসুদ রাজ্জাক জানান, গত ১৩ ডিসেম্বর এহসান ইউসুফ এ পরিকল্পনার কথা মেজর পদের একজন কর্মকর্তাকে জানান। এরপর ওই কর্মকর্তা বিষয়টি কর্তৃপক্ষের নজরে দেন।
এহসান ইউসুফের পারিবারিক সূত্র জানায়, চারদলীয় জোট সরকারের আমলে মেজর পদে কর্মরত থাকা অবস্থায় এহসান ইউসুফকে অকালীন বাধ্যতামূলক অবসর দেওয়া হয়। আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় আসার পর তিনি ভূতাপেক্ষা পদোন্নতি পেয়ে লে. কর্নেল হন। ২০০৮ সালের ৩১ ডিসেম্বর এ-সংক্রান্ত গেজেট প্রকাশিত হয়। গেজেট অনুযায়ী, ২০০৯ সালের ৫ মার্চ তাঁর চাকরির মেয়াদ শেষ হয়ে যায়। এরপর থেকে তিনি পরিবার নিয়ে মাটিকাটায় নিজেদের বাসাতেই থাকেন। এলাকার লোকজন জানান, এহসান ইউসুফ সাবেক রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের হত্যার ঘটনায় নিহত মেজর জেনারেল মঞ্জুরের ভাগনে।
মাটিকাটার ওই বাসায় গিয়ে যোগাযোগ করা হলে একজন নারী দরজা খুলে দেন। তিনি এহসান ইউসুফের বড় বোন বলে পরিচয় দেন। তবে এ ঘটনা নিয়ে কোনো কথা বলতে চাননি তিনি।
সূত্র জানায়, এহসান ইউসুফকে জিজ্ঞাসাবাদের সূত্র থেকে মেজর জিয়াউল ও মেজর জাকিরের সংশ্লিষ্টতা পান তদন্তকারীরা। এরপর সাবেক মেজর জাকিরকে গ্রেপ্তার করা হয়। শৃঙ্খলাবহির্ভূত কাজের জন্য মেজর জাকিরকে ২০০৯ সালের নভেম্বর মাসে অকালীন অবসর দেওয়া হয়।
সেনাসূত্র জানায়, এখন পর্যন্ত পাওয়া তথ্য অনুযায়ী, বিদেশে বসবাসকারী ইশরাক আহমেদ এই অভ্যুত্থান-পরিকল্পনাকারীদের একজন। এহসানের সঙ্গে প্রথম যোগাযোগ করেন ইশরাক।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, ইশরাকের বাবার নাম এম রাকিব। নওগাঁ জেলার বারশাইল ইউনিয়নে তাঁর বাড়ি। ইশরাক বিদেশে থাকলেও তাঁর পরিবার থাকে রাজধানীর উত্তরায়। তিনি বিদ্যুৎ প্রকল্পের ব্যবসা করেন। তাঁর দুই মেয়ে ও তিন ছেলে। দুই ছেলে বিদেশে থাকেন। ফৌজদারহাট ক্যাডেট কলেজের ছাত্র হিসেবে অনেক সেনা কর্মকর্তার সঙ্গে তাঁর পরিচয় রয়েছে।
সেনাসূত্র জানায়, প্রবাসী ও অবসরপ্রাপ্ত সেনা কর্মকর্তারা এর সঙ্গে জড়িত থাকলেও কর্মরত কর্মকর্তাদের সঙ্গে যোগাযোগের কাজটি করেছিলেন মিলিটারি বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি ইনস্টিটিউটে (এমআইএসটি) কম্পিউটার সায়েন্সে অধ্যয়নরত মেজর সৈয়দ জিয়াউল হক। তিনি ফোনে অনেক কর্মকর্তার সঙ্গে যোগাযোগ করেন।
সূত্র জানায়, ১০ জানুয়ারি রাতে মেজর জিয়াউল অজ্ঞাত স্থানে বসে এসব কর্মকর্তার সঙ্গে ফোনালাপ করেন। ফোনে কয়েকজন কর্মকর্তাকে তিনি গোলাবারুদ নিয়ে বের হয়ে আসার কথা বলেন। কথোপকথনে তিনি সরকারের শীর্ষ পর্যায়ের ব্যক্তি ও পদস্থ সেনা কর্মকর্তাদের ব্যাপারে করণীয় নিয়েও আলাপ করেন।
গোয়েন্দা সূত্র জানায়, জিয়াউলের সঙ্গে নিষিদ্ধ জঙ্গি সংগঠন হিযবুত তাহ্রীরের ঘনিষ্ঠ যোগাযোগের তথ্য পেয়েছেন তাঁরা। এ মাসের শুরুতে সেনানিবাস এলাকায় হিযবুত তাহ্রীর একটি প্রচারপত্র বিতরণ করে। এতে শেখ হাসিনার সরকারকে অপসারণের আহ্বান জানানো হয়। ১৫ জানুয়ারি হিযবুত তাহ্রীর একই বিষয়ে রাজধানীর বিভিন্ন স্থানে দেয়ালে পোস্টার সাঁটায়।
প্রথম আলোর মৌলভীবাজার প্রতিনিধি জানান, খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, জিয়াউল হকের বাবার নাম সৈয়দ জিল্লুল হক। বাড়ি মৌলভীবাজারের মোস্তফাপুরে। পরিবার থাকে বারিধারা ডিওএইচএসে।
গতকাল শুক্রবার গ্রামের বাড়িতে তালা ঝুলতে দেখা যায়। পাশের বাড়ির লোকজন জানান, মেজর জিয়াউল প্রায় দুই বছর ধরে বাড়িতে আসেননি। তবে তাঁর বাবা সৈয়দ জিল্লুল হক নিয়মিত বাড়িতে আসা-যাওয়া করেন।
মেজর জিয়াউল হকের চাচাতো ভাই সৈয়দ মাহবুবুর রব গতকাল প্রথম আলোকে বলেন, ‘গত ২৬ ডিসেম্বর থেকে জিয়াকে পাওয়া যাচ্ছে না। ওই দিন চাচা (জিয়ার বাবা) বাড়িতে ছিলেন। তিনি মাঝে মাঝে বাড়িতে আসেন। তাঁর আরও দু-এক দিন বাড়িতে থাকার কথা ছিল, কিন্তু জিয়ার খবর শুনে তিনি ঢাকায় চলে যান।’
ঢাকায় যোগাযোগ করা হলে জিয়াউলের বাবা বলেন, ‘সেনাসদরের বক্তব্যের সঙ্গে আমি দ্বিমত পোষণ করি না। সরকার কোনো কারণ ছাড়া কেন তাঁকে জড়াবে। আমি মনে করি, প্রতিটি নাগরিকের উচিত আইনকে শ্রদ্ধা করা। জিয়া আমার সন্তান হলেও তারও সেটা করা উচিত।’
এ ঘটনায় গ্রেপ্তার হওয়া সাবেক সেনা কর্মকর্তা এহসান ইউসুফের ব্যবহূত ল্যাপটপ উদ্ধার করেছে গোয়েন্দারা। দায়িত্বশীল সেনাসূত্র প্রথম আলোকে জানায়, এহসানের ল্যাপটপ ঘেঁটে অভ্যুত্থান-পরিকল্পনা সম্পর্কে অনেক তথ্য জানা যায়। এতে দেখা যায়, তাঁরা একটি কল্পিত সরকারব্যবস্থার ছক তৈরি করেছিলেন। এ অনুযায়ী পছন্দের জ্যেষ্ঠ সেনা কর্মকর্তাদের মন্ত্রী পদে বসানোর কথা বলা হয়েছে।
অভ্যুত্থান-পরিকল্পনা ফাঁস হওয়ার দুই দিন পর ১৫ ডিসেম্বর রাতে এহসান ইউসুফকে সেনানিবাসের মাটিকাটা এলাকার বাসা থেকে গ্রেপ্তার করা হয়। ওই সময় তাঁর বাসা থেকে ল্যাপটপটি উদ্ধার করে সেনাবাহিনী।
সেনাসদরের সংবাদ সম্মেলনে সেনাবাহিনীর পার্সোনেল সার্ভিসেস পরিদপ্তরের (পিএস পরিদপ্তর) পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. মাসুদ রাজ্জাক জানান, গত ১৩ ডিসেম্বর এহসান ইউসুফ এ পরিকল্পনার কথা মেজর পদের একজন কর্মকর্তাকে জানান। এরপর ওই কর্মকর্তা বিষয়টি কর্তৃপক্ষের নজরে দেন।
এহসান ইউসুফের পারিবারিক সূত্র জানায়, চারদলীয় জোট সরকারের আমলে মেজর পদে কর্মরত থাকা অবস্থায় এহসান ইউসুফকে অকালীন বাধ্যতামূলক অবসর দেওয়া হয়। আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় আসার পর তিনি ভূতাপেক্ষা পদোন্নতি পেয়ে লে. কর্নেল হন। ২০০৮ সালের ৩১ ডিসেম্বর এ-সংক্রান্ত গেজেট প্রকাশিত হয়। গেজেট অনুযায়ী, ২০০৯ সালের ৫ মার্চ তাঁর চাকরির মেয়াদ শেষ হয়ে যায়। এরপর থেকে তিনি পরিবার নিয়ে মাটিকাটায় নিজেদের বাসাতেই থাকেন। এলাকার লোকজন জানান, এহসান ইউসুফ সাবেক রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের হত্যার ঘটনায় নিহত মেজর জেনারেল মঞ্জুরের ভাগনে।
মাটিকাটার ওই বাসায় গিয়ে যোগাযোগ করা হলে একজন নারী দরজা খুলে দেন। তিনি এহসান ইউসুফের বড় বোন বলে পরিচয় দেন। তবে এ ঘটনা নিয়ে কোনো কথা বলতে চাননি তিনি।
সূত্র জানায়, এহসান ইউসুফকে জিজ্ঞাসাবাদের সূত্র থেকে মেজর জিয়াউল ও মেজর জাকিরের সংশ্লিষ্টতা পান তদন্তকারীরা। এরপর সাবেক মেজর জাকিরকে গ্রেপ্তার করা হয়। শৃঙ্খলাবহির্ভূত কাজের জন্য মেজর জাকিরকে ২০০৯ সালের নভেম্বর মাসে অকালীন অবসর দেওয়া হয়।
সেনাসূত্র জানায়, এখন পর্যন্ত পাওয়া তথ্য অনুযায়ী, বিদেশে বসবাসকারী ইশরাক আহমেদ এই অভ্যুত্থান-পরিকল্পনাকারীদের একজন। এহসানের সঙ্গে প্রথম যোগাযোগ করেন ইশরাক।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, ইশরাকের বাবার নাম এম রাকিব। নওগাঁ জেলার বারশাইল ইউনিয়নে তাঁর বাড়ি। ইশরাক বিদেশে থাকলেও তাঁর পরিবার থাকে রাজধানীর উত্তরায়। তিনি বিদ্যুৎ প্রকল্পের ব্যবসা করেন। তাঁর দুই মেয়ে ও তিন ছেলে। দুই ছেলে বিদেশে থাকেন। ফৌজদারহাট ক্যাডেট কলেজের ছাত্র হিসেবে অনেক সেনা কর্মকর্তার সঙ্গে তাঁর পরিচয় রয়েছে।
সেনাসূত্র জানায়, প্রবাসী ও অবসরপ্রাপ্ত সেনা কর্মকর্তারা এর সঙ্গে জড়িত থাকলেও কর্মরত কর্মকর্তাদের সঙ্গে যোগাযোগের কাজটি করেছিলেন মিলিটারি বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি ইনস্টিটিউটে (এমআইএসটি) কম্পিউটার সায়েন্সে অধ্যয়নরত মেজর সৈয়দ জিয়াউল হক। তিনি ফোনে অনেক কর্মকর্তার সঙ্গে যোগাযোগ করেন।
সূত্র জানায়, ১০ জানুয়ারি রাতে মেজর জিয়াউল অজ্ঞাত স্থানে বসে এসব কর্মকর্তার সঙ্গে ফোনালাপ করেন। ফোনে কয়েকজন কর্মকর্তাকে তিনি গোলাবারুদ নিয়ে বের হয়ে আসার কথা বলেন। কথোপকথনে তিনি সরকারের শীর্ষ পর্যায়ের ব্যক্তি ও পদস্থ সেনা কর্মকর্তাদের ব্যাপারে করণীয় নিয়েও আলাপ করেন।
গোয়েন্দা সূত্র জানায়, জিয়াউলের সঙ্গে নিষিদ্ধ জঙ্গি সংগঠন হিযবুত তাহ্রীরের ঘনিষ্ঠ যোগাযোগের তথ্য পেয়েছেন তাঁরা। এ মাসের শুরুতে সেনানিবাস এলাকায় হিযবুত তাহ্রীর একটি প্রচারপত্র বিতরণ করে। এতে শেখ হাসিনার সরকারকে অপসারণের আহ্বান জানানো হয়। ১৫ জানুয়ারি হিযবুত তাহ্রীর একই বিষয়ে রাজধানীর বিভিন্ন স্থানে দেয়ালে পোস্টার সাঁটায়।
প্রথম আলোর মৌলভীবাজার প্রতিনিধি জানান, খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, জিয়াউল হকের বাবার নাম সৈয়দ জিল্লুল হক। বাড়ি মৌলভীবাজারের মোস্তফাপুরে। পরিবার থাকে বারিধারা ডিওএইচএসে।
গতকাল শুক্রবার গ্রামের বাড়িতে তালা ঝুলতে দেখা যায়। পাশের বাড়ির লোকজন জানান, মেজর জিয়াউল প্রায় দুই বছর ধরে বাড়িতে আসেননি। তবে তাঁর বাবা সৈয়দ জিল্লুল হক নিয়মিত বাড়িতে আসা-যাওয়া করেন।
মেজর জিয়াউল হকের চাচাতো ভাই সৈয়দ মাহবুবুর রব গতকাল প্রথম আলোকে বলেন, ‘গত ২৬ ডিসেম্বর থেকে জিয়াকে পাওয়া যাচ্ছে না। ওই দিন চাচা (জিয়ার বাবা) বাড়িতে ছিলেন। তিনি মাঝে মাঝে বাড়িতে আসেন। তাঁর আরও দু-এক দিন বাড়িতে থাকার কথা ছিল, কিন্তু জিয়ার খবর শুনে তিনি ঢাকায় চলে যান।’
ঢাকায় যোগাযোগ করা হলে জিয়াউলের বাবা বলেন, ‘সেনাসদরের বক্তব্যের সঙ্গে আমি দ্বিমত পোষণ করি না। সরকার কোনো কারণ ছাড়া কেন তাঁকে জড়াবে। আমি মনে করি, প্রতিটি নাগরিকের উচিত আইনকে শ্রদ্ধা করা। জিয়া আমার সন্তান হলেও তারও সেটা করা উচিত।’
No comments