রপ্তানি বাড়াতে লাতিন আমেরিকায় মিশন খুলবে সরকার-দুটির অনুমোদন দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী

তৈরি পোশাক রপ্তানিসহ বাণিজ্য বাড়ানোর জন্য লাতিন আমেরিকার দুটি দেশে দুটি আবাসিক মিশন খুলবে সরকার। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এর অনুমোদন দিয়েছেন বলে জানিয়েছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডা. দীপু মনি। তিনি মনে করেন, এর মাধ্যমে ওই অঞ্চলে বাংলাদেশের রপ্তানি বাড়ানো সম্ভব হবে। গত শনিবার রাজধানীর হোটেল র‌্যাডিশনে লাতিন আমেরিকায় বাজার সম্প্রসারণ নিয়ে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা জানান।


অনুষ্ঠানটির আয়োজন করে বাজার সম্প্রসারণে বিজিএমইএকে সহায়তাদানকারী জার্মানভিত্তিক প্রতিষ্ঠান জিআইজেড। অনুষ্ঠানে ব্রাজিলের রাষ্ট্রদূত রিকার্ডো এল ভিয়েনা দ্য কার্ভালহো, জিআইজেডের কান্ট্রি ডিরেক্টর ওলাফ হ্যান্ডলোটেন, বিজিএমইএর সভাপতি শফিউল ইসলাম মহিউদ্দিন, সহসভাপতি সিদ্দিকুর রহমান, ফারুক হাসানসহ লাতিন আমেরিকার বিভিন্ন দেশের প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন। লাতিন আমেরিকার উদীয়মান অর্থনীতির দেশগুলো বাংলাদেশের পোশাক খাতের বড় বাজার হতে পারে বলে বিবেচনা করা হচ্ছে। ওই সব দেশে রপ্তানি বাড়ানোর জন্য কাজ করছে বিজিএমইএ ও বাংলাদেশ সরকার। এ জন্য জিআইজেডের সঙ্গে 'প্রমোশন অব সোশ্যাল অ্যান্ড এনভায়রনমেন্টাল স্ট্যান্ডার্ড ইন দ্য ইন্ডাস্ট্রি (পিএসইএস)' নামের একটি প্রকল্প নেওয়া হয়েছে। ওই প্রকল্পের একটি অংশ হলো বাজার সম্প্রসারণ।
২০১০-১১ অর্থবছরে আগের বছরের তুলনায় ব্রাজিলে ১১১ শতাংশ, চিলিতে ৬৩ শতাংশ ও মেঙ্েিকাতে ৩৩ শতাংশ প্রবৃদ্ধি হয়েছে। গত অর্থবছরে ব্রাজিলে রপ্তানি হয় ৯৪.৬৪ মিলিয়ন ডলারের পোশাক। আর চিলিতে রপ্তানি হয় ১২.৯৪ মিলিয়ন ডলারের পোশাক। দীপু মনি বলেন, 'একসময় বাংলাদেশের মানুষ বিশ্বের সেরা কাপড় মসলিন তৈরি করত। এখন তারা পোশাক রপ্তানিতে দ্বিতীয় অবস্থান দখল করেছে। বিশ্বের মোট পোশাক রপ্তানির ৪.৫ শতাংশ বাংলাদেশের দখলে। এ দেশের বেশির ভাগ পোশাক রপ্তানি হয় যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপীয় ইউনিয়নে। তবে আমরা এখন অন্য দেশেও যাচ্ছি। লাতিন আমেরিকা আমাদের জন্য সম্ভাবনাময় বাজার।'
পররাষ্ট্রমন্ত্রী জানান, সরকার ব্রাজিল ও মেঙ্েিকাতে দুটি আবাসিক মিশন খোলার উদ্যোগ নিয়েছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এর অনুমোদন দিয়েছেন। পাশাপাশি ওই দেশগুলোর সঙ্গে বাণিজ্যের ক্ষেত্রে ভাষাগত বাধা দূর করতে কাজ করা হচ্ছে। কয়েকটি দেশের সরকার বাংলাদেশ থেকে সরকারি ও বেসরকারি খাতের লোকদের বৃত্তি দেওয়ার আগ্রহ দেখিয়েছে।
১৯৭৪ থেকে ১৯৯৮ সাল পর্যন্ত বাংলাদেশে ব্রাজিলের দূতাবাস ছিল। এখন নতুন করে তা চালু করা হয়েছে। এ কথা জানিয়ে রাষ্ট্রদূত রিকার্ডো এল ভিয়েনা দ্য কার্ভালহো বলেন, 'এটি নতুন সম্পর্কের সূচনা করেছে। ব্রাজিল ও বাংলাদেশ ভালো বন্ধু। আমরা এখন আরো ঘনিষ্ঠভাবে কাজ করতে পারব।' ফারুক হাসান বলেন, 'লাতিন আমেরিকা নিশ্চিতভাবে বাংলাদেশের পোশাকের একটি বড় বাজার। কারণ ওই সব দেশের অর্থনীতি উন্নত হচ্ছে। তারা আমাদের জন্য বেশি গুরুত্বপূর্ণ। কারণ বাংলাদেশের পোশাকের মূল ক্রেতা রাষ্ট্রগুলোর অর্থনীতির অবস্থা ভালো নয়।'

No comments

Powered by Blogger.