চরাচর-সুন্দরবন : বিশ্ব ঐতিহ্যের অংশ
পাঁচ হাজার ৩০০ বছরের প্রাচীন বাংলাদেশ ও ভারতের ১০ হাজার বর্গকিলোমিটার ভূখণ্ডজুড়ে বিস্তৃত পৃথিবীর সর্ববৃহৎ অপরূপ ম্যানগ্রোভ বনাঞ্চল সুন্দরবন এখন বিশ্বের প্রাকৃতিক সপ্তাশ্চর্য প্রতিযোগিতার শীর্ষে রয়েছে। সুন্দরবনের অবস্থান বাংলাদেশ ভূখণ্ডের ছয় হাজার ১৭ বর্গকিলোমিটারজুড়ে, যা মোট আয়তনের ৪২ শতাংশ এবং দেশের সমগ্র বনভূমির ৪৪ শতাংশ। এ বনের স্থলভাগের পরিমাণ হচ্ছে চার হাজার ১৪৩ বর্গকিলোমিটার এবং
জলাভূমির পরিমাণ হচ্ছে এক হাজার ৮৭৪ বর্গকিলোমিটার অর্থাৎ বনের ৭০ ভাগ স্থল আর ৩০ ভাগ জল বা নদ-নদী, খাল-নালা-ডোবা ইত্যাদি। এতে ছোট-বড় মিলিয়ে প্রায় সাড়ে ৪০০ নদ-নদী, খাল-নালা রয়েছে। সুন্দরবনে রয়েছে জীববৈচিত্র্যের এক অপূর্ব সমাহার। এ বনে রয়েছে ৩৩৪ প্রজাতির বৃক্ষ-উদ্ভিদ-লতাগুল্ম, ৪৯ প্রজাতির স্তন্যপায়ী প্রাণী, ৫৩ প্রজাতির সরীসৃপ, ৩১৫ প্রজাতির পাখি, ৮ প্রজাতির উভচর প্রাণী। সুন্দরবনের জলজ জীববৈচিত্র্য উল্লেখ করার মতো তাৎপর্যপূর্ণ। এখানকার জলাভূমিতে ৫৪ প্রজাতির অগভীর পানির মাছ, ১২৪ প্রজাতির গভীর পানির মাছ, ২৪ প্রজাতির চিংড়ি, সাত প্রজাতির কাঁকড়া, দুই প্রজাতির শামুক, ছয় প্রজাতির ঝিনুক, চার প্রজাতির লবস্টার, তিন প্রজাতির কচ্ছপ, ১০ প্রজাতির সাপ, তিন প্রজাতির ব্যাঙ, দুই প্রজাতির কুমির এবং কয়েক প্রজাতির শুশুক রয়েছে। রয়েছে হাঙরও। জীববৈচিত্র্যে সমৃদ্ধ বনাঞ্চল হিসেবে আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত সুন্দরবন হচ্ছে বিশ্বের সবচেয়ে সুদর্শন, হিংস্র, ক্ষিপ্র ও ভয়ংকর সুন্দর রয়েল বেঙ্গল টাইগারের আবাসস্থল। উত্তর থেকে আসা গঙ্গাবাহিত পলিমিশ্রিত মিঠাপানি ও এর তাপমাত্রা আর দক্ষিণের সমুদ্রের লোনাপানি ও এর উষ্ণতা এ দুয়ের সংমিশ্রণে যে বৈশিষ্ট্যমণ্ডিত জলপ্রবাহের সৃষ্টি, তা থেকে সুন্দরবনে বিশেষ ধরনের নানা বৃক্ষ-উদ্ভিদের উদ্ভব হয়েছে। আর এই জলপ্রবাহ বনের বিভিন্ন প্রাণী ও জলজ প্রাণীর জীবন ধারণ এবং বংশবৃদ্ধির জন্য আদর্শ।
সুন্দরবন বিশ্বে গর্ব করার মতো একটি সম্পদ। ১৮৭৮ সাল থেকে সুন্দরবন সংরক্ষিত বনাঞ্চল হিসেবে ঘোষিত হয়েছে। সামুদ্রিক জলোচ্ছ্বাস ও ঝড়ঝঞ্ঝার আঘাত থেকে প্রাকৃতিক ঢাল হিসেবে এ বনাঞ্চল উপকূলীয় এলাকা রক্ষা করে আসছে। সুন্দরবন আমাদের বনজ ও প্রাণিজ সম্পদেরও এক বিশাল উৎস। একই সঙ্গে আমাদের পরিবেশগত ও অর্থনৈতিক স্বার্থও জড়িত রয়েছে এ বনের সঙ্গে। জাতিসংঘের শিক্ষা, বিজ্ঞান ও সাংস্কৃতিক সংস্থা ইউনেসকোর বিশ্ব সম্পদ ও ঐতিহ্য কমিটি ১৯৯৭ সালে সুন্দরবনকে ৫২২তম বিশ্ব ঐতিহ্য হিসেবে স্বীকৃতি দিয়েছে।
আজিজুর রহমান
সুন্দরবন বিশ্বে গর্ব করার মতো একটি সম্পদ। ১৮৭৮ সাল থেকে সুন্দরবন সংরক্ষিত বনাঞ্চল হিসেবে ঘোষিত হয়েছে। সামুদ্রিক জলোচ্ছ্বাস ও ঝড়ঝঞ্ঝার আঘাত থেকে প্রাকৃতিক ঢাল হিসেবে এ বনাঞ্চল উপকূলীয় এলাকা রক্ষা করে আসছে। সুন্দরবন আমাদের বনজ ও প্রাণিজ সম্পদেরও এক বিশাল উৎস। একই সঙ্গে আমাদের পরিবেশগত ও অর্থনৈতিক স্বার্থও জড়িত রয়েছে এ বনের সঙ্গে। জাতিসংঘের শিক্ষা, বিজ্ঞান ও সাংস্কৃতিক সংস্থা ইউনেসকোর বিশ্ব সম্পদ ও ঐতিহ্য কমিটি ১৯৯৭ সালে সুন্দরবনকে ৫২২তম বিশ্ব ঐতিহ্য হিসেবে স্বীকৃতি দিয়েছে।
আজিজুর রহমান
No comments