‘ইরান বসন্ত’র স্বপ্নে বিভোর ইসরায়েল ইরানের আকাশ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের জন্য সম্পূর্ণ অনিরাপদ

ধ্যপ্রাচ্যে চলমান ‘আরব বসন্ত’ ইরানেও দেখা দেবে। আর তাতে উল্টে যাবে তেহরানের বর্তমান ক্ষমতাসীনদের মসনদ। ইসরায়েলের প্রতিরক্ষামন্ত্রী এহুদ বারাক এমন স্বপ্নই দেখছেন বলে জানিয়েছেন। গতকাল রোববার তিনি এ কথা বলেন বলে বার্তা সংস্থা রয়টার্স জানিয়েছে।

এহুদ বারাক জানান, ভূমধ্যসাগরীয় অঞ্চল থেকে ইরানে আরব বসন্তের স্থানান্তর দেখতে তাঁর ভালো লাগবে। এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘আমি বিশ্বাস করি, ইরানের এই শাসকেরা, আয়াতুল্লাহরা, আগামী ১০ থেকে ১৫ বছরের মধ্যে আর সেখানে থাকবেন না। বিষয়টি ইরানের জনগণের প্রকৃতি বিরোধী এবং সারা বিশ্বেই যখন এটা ঘটছে।’
একই সঙ্গে এহুদ বারাক বলেন, ইরানের ক্ষমতাসীনরা তাদের ক্ষমতা পাকাপোক্ত করতে পরমাণু অস্ত্র ব্যবহার করতে পারে। এ ধরনের অস্ত্র ব্যবহার থেকে বিরত রাখতে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের উচিত ইরানের এই উদ্যোগকে থামাতে সক্ষম এমন অবরোধ আরোপ করা।
আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের উদ্দেশে এহুদ বারাক বলেন, ইরানের তেল রপ্তানি ও এর কেন্দ্রীয় ব্যাংককে লক্ষ্য করে সমন্বিতভাবে শাস্তিমূলক পদক্ষেপ নেওয়া খুবই জরুরি।
ইরানের ওপর অবরোধ প্রসঙ্গে এহুদ বারাক বলেন, ‘এর চেয়ে ছোট অবরোধ কোনো কাজে আসবে না।’
ইসরায়েলের প্রতিরক্ষামন্ত্রী আরও জানান, আগামী কয়েক সপ্তাহের মধ্যে সিরিয়ার ক্ষমতাসীন আসাদ সরকারের পতন ঘটবে বলেই তিনি অনুমান করছেন। এবং তা হলে সেটা হবে মধ্যপ্রাচ্যের জন্য আশীর্বাদ স্বরূপ।


ইরানের আকাশ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের জন্য সম্পূর্ণ অনিরাপদঃ বিপ্লবী গার্ড বাহিনী

ইরানের ইসলামী বিপ্লবী গার্ড বাহিনী বা আইআরজিসি'র ডেপুটি কমান্ডার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল হোসেইন সালামি বলেছেন, বিশ্বে মাত্র যে কয়টি দেশ ড্রোন তৈরি করতে সক্ষম ইরান তার মধ্যে রয়েছে। ইরান এ ড্রোন প্রযুক্তির মাধ্যমে শত্রুর ওপর নজরদারি করতে পারে। তিনি সুস্পষ্ট ভাষায় ঘোষণা করেছেন, ইরানের আকাশ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের জন্য সম্পূর্ণ অনিরাপদ এবং মার্কিনীরা যদি আবারো এ ধরনের অবৈধ কাজ করে তাহলে তারা তথ্য পাওয়ার বদলে তথ্য হারাবে।
ইরানের টেলিভিশন চ্যানেল-২'কে দেয়া এক সাক্ষাতকারে ব্রিগেডিয়ার জেনারেল সালামি আরো বলেন, ভূপাতিত করা ড্রোনটি প্রযুক্তিগত দিক থেকে অনেক উন্নত এবং তা নামানোর ঘটনা ইরানের সামরিক বাহিনীর জন্য বিরাট সাফল্য। একই সঙ্গে এ ঘটনা মার্কিনীদের জন্য বড় ধরনের পরাজয় বলে উল্লেখ করেন তিনি। তবে, কৌশলগত কারণে তিনি এ ড্রোনের বিশেষত্ব সম্পর্কে বিস্তারিত কিছু বলতে অস্বীকার করেন। জেনারেল সালামি আরো জানান, ইরানের হাতে এমন পাইলটবিহীন বিমান রয়েছে যা রাডারের মাধ্যমে শনাক্ত করা সম্ভব নয়।
তিনি বলেন, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং ইহুদিবাদী ইসরাইলের কাছে যেসব প্রযুক্তি রয়েছে তার সঙ্গে ইরানের প্রযুক্তির খুব বেশি ব্যবধান নেই। এ কারণে মার্কিন আরকিউ-১৭০ ড্রোনকে বিশ্বের অনেক দেশ আশ্চর্যজনক কিছু মনে করলেও ইরান তা মনে করছে না।
ব্রিগেডিয়ার জেনারেল সালামি আরো বলেন, গোয়েন্দা ও সাইবার ক্ষেত্রে ইরানের হাত-পা বাঁধা নেই কিন্তু শত্রুরা তেহরানের এ ক্ষমতা সম্পর্কে ধারণা রাখে না। ইরানের ক্ষমতা সম্পর্কে ধারণা নেয়ার জন্য তিনি শত্রু দেশগুলোকে পরামর্শ দেন।
রাশিয়া ও চীন অত্যাধুনিক এ প্রযুক্তি হস্তগত করতে পারে বলে বিভিন্ন গণমাধ্যমে যে খবর বের হয়েছে সে সম্পর্কে এক প্রশ্নের জবাবে ব্রিগেডিয়ার জেনারেল সালামি বলেন, এখনো আনুষ্ঠানিকভাবে দেশ দু'টি কোনো অনুরোধ জানায়নি তবে, যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে গোয়েন্দা প্রতিযোগিতায় যারা জড়িত তারা সবাই মার্কিন এ ড্রোনের কারীগরি ও প্রযুক্তি যাচাই করে দেখতে আগ্রহী।
এদিকে, ইরানের সংসদের জাতীয় নিরাপত্তা ও পররাষ্ট্রনীতি বিষয়ক কমিটির সদস্য কাজেম জালালি বলেছেন, অত্যাধুনিক মার্কিন ড্রোন ভূপাতিত করায় ইরানের সামনে এখন নিজস্ব প্রযুক্তি উন্নয়নের সুযোগ এসেছে। ইরানের সামরিক বাহিনী এ সুযোগ কাজে লাগাবে বলে তিনি আশা প্রকাশ করেন। তিনি ড্রোন নামানোর ঘটনাকে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ উল্লেখ করেন, এতে পুরো বিশ্ব অবাক হয়ে গেছে। কাজেম জালালি বলেন, এ ঘটনার মাধ্যমে প্রমাণ হয়ে গেল- মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র বাস্তবিক অর্থেই ইসলামী প্রজাতন্ত্র ইরানের আকাশসীমা লংঘন করেছে।

No comments

Powered by Blogger.