জন্মদিনে শ্রদ্ধাঞ্জলি-জয়তু আবদুল গাফ্ফার চৌধুরী
বাঙালির স্বাধিকার আন্দোলনের প্রথম সোপান বাহান্নর একুশে ফেব্রুয়ারি। এই একুশের সঙ্গে একই সমান্তরালে উচ্চারিত যে কয়জন বাঙালির নাম, তাঁদের একজন আবদুল গাফ্ফার চৌধুরী। অমর একুশের প্রভাতফেরির গানের রচয়িতা তিনি। মায়ের ভাষার মর্যাদা রক্ষায় সেদিন গর্জে ওঠা বাঙালি ছাত্র-জনতার ওপর গুলি চালিয়েছিল পাকিস্তানি শোষকদের অনুগত বাহিনী। রফিক, শফিক, জব্বার, বরকত, সালামের প্রাণের বিনিময়ে অর্জিত হয়েছিল বাঙালির
মাতৃভাষার দাবি। সেই ভাষা আন্দোলনের এক সৈনিক আবদুল গাফ্্ফার চৌধুরী। সেই থেকেই তিনি সেলিব্রিটি। একুশের ভাষা শহীদদের স্মরণে আবদুল গাফ্ফার চৌধুরী লিখেছিলেন এক অমর কবিতা_'আমার ভাইয়ের রক্তে রাঙানো একুশে ফেব্রুয়ারি/আমি কি ভুলিতে পারি'। সেই কবিতাই পরে গান হয়ে যায় প্রখ্যাত সুরকার শহীদ আলতাফ মাহমুদের দেওয়া সুরে। সেই থেকে এই গানটি একুশের প্রভাতফেরির গান। যত দিন বাংলাদেশ, বাংলা ভাষা থাকবে, থাকবে একুশের প্রভাতফেরি, তত দিন প্রজন্ম থেকে প্রজন্মান্তরে বাঙালির কণ্ঠে গীত হবে এই প্রভাতফেরির গান। ভুলে থাকা যাবে না এই অমর গানের গীতিকার আবদুল গাফ্্ফার চৌধুরীকেও।
আবদুল গাফ্্ফার চৌধুরী সাংবাদিক, কলামলেখক। বিশেষ করে বর্তমান প্রজন্ম কলামলেখক হিসেবেই জানে তাঁকে। কিন্তু শুধু এই পরিচয়ে তাঁকে সীমাবদ্ধ রাখা যাবে না। তাঁর আরেকটি পরিচয় আজকের প্রজন্মের অনেকেরই জানা নেই। নন্দিত কথাশিল্পী তিনি। অনেকের ধারণা, কথাসাহিত্যকেও পেশা হিসেবে নিতে পারতেন তিনি। একাধারে লিখেছেন ছোটগল্প, উপন্যাস, গান, কবিতা। তাঁর পাঠকনন্দিত ছোটগল্পের বই 'সম্রাটের ছবি' পায় ইউনেসকো পুরস্কার। শুধু এই এক পুরস্কার নয়, আবদুল গাফ্ফার চৌধুরী ভূষিত হয়েছেন বাংলা একাডেমী পুরস্কারেও। পেয়েছেন একুশে পদক ও স্বাধীনতা পুরস্কার। আবদুল গাফ্্ফার চৌধুরীর সবচেয়ে বড় পুরস্কার তাঁর পাঠকপ্রিয়তা। বিদেশে অবস্থান করেও বাংলাদেশের সবচেয়ে পাঠকপ্রিয় কলামলেখক তিনি। নিরলস লিখছেন। নিয়ম করে প্রতিদিন লেখেন। ঢাকা থেকে প্রকাশিত কালের কণ্ঠ, ইত্তেফাক, সমকাল, যুগান্তর, জনকণ্ঠ পত্রিকায় প্রতি সপ্তাহে নিয়মিত কলাম লিখছেন। লিখছেন ইংরেজি দৈনিক দ্য ইনডিপেনডেন্টে। কলকাতার দৈনিক বাংলা, স্টেটসম্যানসহ লন্ডনের বাংলা সাপ্তাহিক জনমতে নিয়মিত লেখেন তিনি। আবদুল গাফ্ফার চৌধুরীর কলামের বড় আকর্ষণ সমসাময়িকতা। বক্তব্য তীক্ষ্ন, কিন্তু সরল। পাঠকের সঙ্গে সহজেই যোগাযোগ স্থাপন হয়ে যায়। পাঠক পড়তে পড়তে তাঁর কলামের সঙ্গে একাত্ম হয়ে যায়। লন্ডনে থেকেই দেশের সব খবর রাখেন তিনি। নিয়মিত যোগাযোগ রাখেন দেশের সঙ্গে। তাঁর কলামে উঠে আসে ইতিহাস। মস্তিষ্কের তথ্যভাণ্ডারে থরে থরে যেন সাজানো আছে সব ইতিহাস। দিন-তারিখসহ সবিস্তারে বর্ণনা করে যান কোনো রকম বিচ্যুতি ছাড়াই। লিখেছেন নাটক 'পলাশী থেকে ধানমণ্ডি'। জাতির জনক বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে একটি আন্তর্জাতিক মানের চলচ্চিত্র নির্মাণের চেষ্টা করছেন। দূর প্রবাসেও নানা ধরনের কমিউনিটির উন্নয়নে আত্মনিয়োগ করেছেন তিনি। স্বীকৃতিস্বরূপ ফ্রিডম অব বারা (টাওয়ার হ্যামলেটস) উপাধিতে ভূষিত হয়েছেন।
বাহান্নর মতো একাত্তরেও প্রতিবাদী তিনি। একাত্তরের কীর্তিমান কলমযোদ্ধা আবদুল গাফ্ফার চৌধুরী মুজিবনগর সরকারের মুখপত্র 'জয়বাংলা' পত্রিকার সম্পাদক ছিলেন। পাশাপাশি মুক্তিযোদ্ধাদের বিভিন্ন ক্যাম্পে 'মোটিভেটর' হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। এখনো প্রতিবাদী তিনি। তাঁর কলামে প্রতিবাদ করেন সব অনিয়মের।
জন্ম ১৯৩৪ সালের ১২ ডিসেম্বর। সে অনুযায়ী ৭৮-এ পা রাখলেন তিনি। কিন্তু মনের দিক থেকে ২৮ কি পেরিয়েছেন গাফ্ফার ভাই! মনের দিক থেকে, এমনকি কাজেও কিন্তু এখনো যথেষ্ট তরুণ তিনি। যেভাবে এখনো নিরলস কাজ করেন, তাতে মনেই হয় না ৮০ ছুঁতে যাচ্ছেন তিনি! না, এখানেই থেমে থাকা দেখতে চাই না আমরা। গাফ্ফার ভাই, সেঞ্চুরিটা কিন্তু দেখতে চাই। এবং তার পরও...। জন্মদিনে, আজ সেই শুভ কামনা আপনার জন্য।
নার্গিস হোসনে আরা
আবদুল গাফ্্ফার চৌধুরী সাংবাদিক, কলামলেখক। বিশেষ করে বর্তমান প্রজন্ম কলামলেখক হিসেবেই জানে তাঁকে। কিন্তু শুধু এই পরিচয়ে তাঁকে সীমাবদ্ধ রাখা যাবে না। তাঁর আরেকটি পরিচয় আজকের প্রজন্মের অনেকেরই জানা নেই। নন্দিত কথাশিল্পী তিনি। অনেকের ধারণা, কথাসাহিত্যকেও পেশা হিসেবে নিতে পারতেন তিনি। একাধারে লিখেছেন ছোটগল্প, উপন্যাস, গান, কবিতা। তাঁর পাঠকনন্দিত ছোটগল্পের বই 'সম্রাটের ছবি' পায় ইউনেসকো পুরস্কার। শুধু এই এক পুরস্কার নয়, আবদুল গাফ্ফার চৌধুরী ভূষিত হয়েছেন বাংলা একাডেমী পুরস্কারেও। পেয়েছেন একুশে পদক ও স্বাধীনতা পুরস্কার। আবদুল গাফ্্ফার চৌধুরীর সবচেয়ে বড় পুরস্কার তাঁর পাঠকপ্রিয়তা। বিদেশে অবস্থান করেও বাংলাদেশের সবচেয়ে পাঠকপ্রিয় কলামলেখক তিনি। নিরলস লিখছেন। নিয়ম করে প্রতিদিন লেখেন। ঢাকা থেকে প্রকাশিত কালের কণ্ঠ, ইত্তেফাক, সমকাল, যুগান্তর, জনকণ্ঠ পত্রিকায় প্রতি সপ্তাহে নিয়মিত কলাম লিখছেন। লিখছেন ইংরেজি দৈনিক দ্য ইনডিপেনডেন্টে। কলকাতার দৈনিক বাংলা, স্টেটসম্যানসহ লন্ডনের বাংলা সাপ্তাহিক জনমতে নিয়মিত লেখেন তিনি। আবদুল গাফ্ফার চৌধুরীর কলামের বড় আকর্ষণ সমসাময়িকতা। বক্তব্য তীক্ষ্ন, কিন্তু সরল। পাঠকের সঙ্গে সহজেই যোগাযোগ স্থাপন হয়ে যায়। পাঠক পড়তে পড়তে তাঁর কলামের সঙ্গে একাত্ম হয়ে যায়। লন্ডনে থেকেই দেশের সব খবর রাখেন তিনি। নিয়মিত যোগাযোগ রাখেন দেশের সঙ্গে। তাঁর কলামে উঠে আসে ইতিহাস। মস্তিষ্কের তথ্যভাণ্ডারে থরে থরে যেন সাজানো আছে সব ইতিহাস। দিন-তারিখসহ সবিস্তারে বর্ণনা করে যান কোনো রকম বিচ্যুতি ছাড়াই। লিখেছেন নাটক 'পলাশী থেকে ধানমণ্ডি'। জাতির জনক বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে একটি আন্তর্জাতিক মানের চলচ্চিত্র নির্মাণের চেষ্টা করছেন। দূর প্রবাসেও নানা ধরনের কমিউনিটির উন্নয়নে আত্মনিয়োগ করেছেন তিনি। স্বীকৃতিস্বরূপ ফ্রিডম অব বারা (টাওয়ার হ্যামলেটস) উপাধিতে ভূষিত হয়েছেন।
বাহান্নর মতো একাত্তরেও প্রতিবাদী তিনি। একাত্তরের কীর্তিমান কলমযোদ্ধা আবদুল গাফ্ফার চৌধুরী মুজিবনগর সরকারের মুখপত্র 'জয়বাংলা' পত্রিকার সম্পাদক ছিলেন। পাশাপাশি মুক্তিযোদ্ধাদের বিভিন্ন ক্যাম্পে 'মোটিভেটর' হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। এখনো প্রতিবাদী তিনি। তাঁর কলামে প্রতিবাদ করেন সব অনিয়মের।
জন্ম ১৯৩৪ সালের ১২ ডিসেম্বর। সে অনুযায়ী ৭৮-এ পা রাখলেন তিনি। কিন্তু মনের দিক থেকে ২৮ কি পেরিয়েছেন গাফ্ফার ভাই! মনের দিক থেকে, এমনকি কাজেও কিন্তু এখনো যথেষ্ট তরুণ তিনি। যেভাবে এখনো নিরলস কাজ করেন, তাতে মনেই হয় না ৮০ ছুঁতে যাচ্ছেন তিনি! না, এখানেই থেমে থাকা দেখতে চাই না আমরা। গাফ্ফার ভাই, সেঞ্চুরিটা কিন্তু দেখতে চাই। এবং তার পরও...। জন্মদিনে, আজ সেই শুভ কামনা আপনার জন্য।
নার্গিস হোসনে আরা
No comments