ভারতে পোশাক রপ্তানি বাড়ছে-চার মাসে প্রবৃদ্ধি ১০৪ শতাংশ by রাজীব আহমেদ
শুল্ক ও কোটামুক্ত সুবিধার পর ভারতে বাংলাদেশের তৈরি পোশাক রপ্তানি বাড়ছে। চলতি অর্থবছরের প্রথম চার মাসে ভারতে যে পরিমাণ পোশাক রপ্তানি হয়েছে তা আগের বছরের একই সময়ের তুলনায় দ্বিগুণেরও বেশি। প্রবৃদ্ধির হার ১০৪ শতাংশ। ভবিষ্যতে আরো বেশি পোশাক রপ্তানির আশা করছেন তৈরি পোশাক শিল্পমালিকরা। বাংলাদেশের পোশাক রপ্তানিকারকদের মতে, ভারতে ২৮-২৯ বিলিয়ন ডলারের পোশাকের বাজার রয়েছে।
এ বাজারের প্রবৃদ্ধি বছরে ১০ শতাংশের বেশি। বাংলাদেশ গত অর্থবছরে ১৭ বিলিয়ন ডলারের তৈরি পোশাক রপ্তানি করেছে। এর বেশির ভাগ যায় যুক্তরাষ্ট্র, ইউরোপ, অস্ট্রেলিয়া ও তুরস্কে। তবে শুল্কমুক্ত সুবিধা পাওয়ায় ভারত একটি বড় বাজার হবে বলে আশা করা হচ্ছে।
৬ ও ৭ সেপ্টেম্বর বাংলাদেশ সফরকালে ভারতের প্রধানমন্ত্রী ড. মনমোহন সিং বাংলাদেশকে ৪৬টি পণ্যের শুল্কমুক্ত প্রবেশাধিকার দেওয়ার ঘোষণা দেন। ওই ঘোষণার পর পরই ভারত সরকার এ বিষয়ে নোটিফিকেশন জারি করে। ভারত ৪৬ পণ্যে শুল্কমুক্ত সুবিধা দেওয়ায় বাংলাদেশের পোশাক খাতের ৮০ শতাংশ পণ্য শুল্কমুক্ত সুবিধা পেয়েছে বলে জানিয়েছে পোশাক শিল্পমালিকদের সংগঠন বিজিএমইএ। তবে এর পরও শুল্ক রয়ে গেছে। কারণ শুল্ক ও কোটামুক্ত সুবিধা দেওয়ার আগে ভারত ২০০৯ সাল থেকে বাংলাদেশকে ৮০ লাখ পিস পোশাক শুল্কমুক্ত সুবিধায় রপ্তানি করতে দিত। চলতি বছরের শুরুর দিকে এই কোটা বাড়িয়ে এক কোটি পিস করে ভারত। তবে একই বছর শুল্ক ও কোটামুক্ত সুবিধা দেওয়ায় ওই কোটার কোনো গুরুত্ব থাকল না। রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) তথ্যানুযায়ী, চলতি ২০১১-১২ অর্থবছরের প্রথম চার মাসে বাংলাদেশ থেকে ভারতে দুই কোটি ২১ লাখ ডলারের পোশাক রপ্তানি হয়েছে। আগের বছর একই সময়ে রপ্তানি হয়েছিল এক কোটি আট লাখ ডলারের পোশাক। ওই সময় বেশি রপ্তানি হয়েছে ওভেন গার্মেন্ট। তবে নিটওয়্যার রপ্তানি বেড়েছে ব্যাপক হারে। চার মাসে ওভেন গার্মেন্ট রপ্তানি হয় এক কোটি ৫৪ লাখ ডলারের। রপ্তানির প্রবৃদ্ধি ৮৫ দশমিক ৪৩। আর নিটওয়্যার রপ্তানি হয় প্রায় ৬৭ লাখ ডলারের। প্রবৃদ্ধি প্রায় ১৬৫ দশমিক ৬৮। বাকিটা রপ্তানি হয়েছে পোশাকের অন্যান্য আইটেম।
রপ্তানি বাড়ার পাশাপাশি ভারত থেকে রপ্তানি আদেশও বাড়ছে। দেশের পোশাক শিল্পমালিকরা আগের চেয়ে অনেক বেশি হারে রপ্তানির আদেশ পাচ্ছেন দেশটি থেকে। ভারত থেকে পাওয়া রপ্তানি আদেশের হারকে 'ভালো' বলে উল্লেখ করছেন তাঁরা। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, পিটার ইংল্যান্ড, টারটেল, প্যান্টালুন, রিলায়েন্স ট্রেন্ডজ, গ্রিন হেরিটেজ, শপার্স স্টপ, গ্লোবাস, অরেঞ্জসহ ভারতের নামকরা পোশাক ব্র্যান্ডগুলো বাংলাদেশে আসছে। তাদের অনেকে বাংলাদেশে কার্যালয় খোলার পরিকল্পনা করছে। অনেকে রপ্তানি আদেশও দেওয়া শুরু করেছে।
সম্প্রতি ভারত সফর করেন বিজিএমইএর সভাপতি শফিউল ইসলাম মহিউদ্দিন ও সহসভাপতি ফারুক হাসান। তাঁরা সেখানে ভারতের টেঙ্টাইল-সচিবের সঙ্গে বৈঠক করে। ফারুক হাসান কালের কণ্ঠকে বলেন, 'আমরা ভারত গিয়ে ভালো সাড়া পেয়েছি। ভারত থেকে সরবরাহ আদেশ বাড়ছে। ফলে সেখানে রপ্তানি বাড়বে। ইতিমধ্যে ভারতে রিটেইল ব্র্যান্ডগুলো বাংলাদেশে তাদের কাজ শুরু করেছে।'
চলতি বছর ভারতে কী পরিমাণ পোশাক রপ্তানি হতে পারে জানতে চাইলে তিনি বলেন, 'গত বছর আমরা মাত্র ৩৯ মিলিয়ন ডলারের পোশাক রপ্তানি করেছি। এ বছর তা বেড়ে ২০০ মিলিয়ন ডলারের কাছাকাছি যেতে পারে। তবে বিলিয়ন ডলার হতে প্রায় তিন বছর সময় লাগবে।'
ইউরোপ ও আমেরিকায় অর্থনৈতিক মন্দার কারণে বাংলাদেশের পোশাক খাতের ওপর চাপ তৈরি হচ্ছে বলে উল্লেখ করে তিনি বলেন, 'ভারতে রপ্তানি বাড়লে আমরা এই চাপ কিছুটা কাটিয়ে উঠতে পারব। ভারতের পাশাপাশি লাতিন আমেরিকা, কোরিয়া, মালয়েশিয়া ও চীনে আমরা রপ্তানি বাড়াতে পারব বলে আশা করি।'
ভারতে বাংলাদেশের ব্যবসায়ীরা অনেক কম দামে পোশাক দিতে পারছেন। ভারতে রপ্তানিতে সময় ও পরিবহন খরচ কম লাগছে। ফলে ইউরোপের মানের পোশাকই ভারতে রপ্তানি করা সম্ভব হচ্ছে অনেক কম খরচে। পাশাপাশি কাছাকাছি ভাষা ও সাংস্কৃতিক মিল রপ্তানি বাড়াতে ভূমিকা রাখছে। তবে এ ক্ষেত্রে ভিসা পাওয়া একটা বড় সমস্যা বলে দাবি করেন বিজিএমইএর দ্বিতীয় সহসভাপতি সিদ্দিকুর রহমান। তিনি কালের কণ্ঠকে বলেন, ভারতের ভিসা পেতে বেশ সময় লাগে। এ সমস্যা দূর করা যায় মাল্টিপল ভিসা দেওয়ার মাধ্যমে।
ফারুক হাসানও পোশাক খাতের আমদানি ও রপ্তানিকারকদের মাল্টিপল ভিসা দেওয়া উচিত বলে মনে করে। তিনি বলেন, যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্য এখন মাল্টিপল ভিসা দিচ্ছে। ভারত অন্তত দুই বছরের জন্যও মাল্টিপল ভিসা দিলে তাদের দূতাবাসের ওপর চাপ কমত।
৬ ও ৭ সেপ্টেম্বর বাংলাদেশ সফরকালে ভারতের প্রধানমন্ত্রী ড. মনমোহন সিং বাংলাদেশকে ৪৬টি পণ্যের শুল্কমুক্ত প্রবেশাধিকার দেওয়ার ঘোষণা দেন। ওই ঘোষণার পর পরই ভারত সরকার এ বিষয়ে নোটিফিকেশন জারি করে। ভারত ৪৬ পণ্যে শুল্কমুক্ত সুবিধা দেওয়ায় বাংলাদেশের পোশাক খাতের ৮০ শতাংশ পণ্য শুল্কমুক্ত সুবিধা পেয়েছে বলে জানিয়েছে পোশাক শিল্পমালিকদের সংগঠন বিজিএমইএ। তবে এর পরও শুল্ক রয়ে গেছে। কারণ শুল্ক ও কোটামুক্ত সুবিধা দেওয়ার আগে ভারত ২০০৯ সাল থেকে বাংলাদেশকে ৮০ লাখ পিস পোশাক শুল্কমুক্ত সুবিধায় রপ্তানি করতে দিত। চলতি বছরের শুরুর দিকে এই কোটা বাড়িয়ে এক কোটি পিস করে ভারত। তবে একই বছর শুল্ক ও কোটামুক্ত সুবিধা দেওয়ায় ওই কোটার কোনো গুরুত্ব থাকল না। রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) তথ্যানুযায়ী, চলতি ২০১১-১২ অর্থবছরের প্রথম চার মাসে বাংলাদেশ থেকে ভারতে দুই কোটি ২১ লাখ ডলারের পোশাক রপ্তানি হয়েছে। আগের বছর একই সময়ে রপ্তানি হয়েছিল এক কোটি আট লাখ ডলারের পোশাক। ওই সময় বেশি রপ্তানি হয়েছে ওভেন গার্মেন্ট। তবে নিটওয়্যার রপ্তানি বেড়েছে ব্যাপক হারে। চার মাসে ওভেন গার্মেন্ট রপ্তানি হয় এক কোটি ৫৪ লাখ ডলারের। রপ্তানির প্রবৃদ্ধি ৮৫ দশমিক ৪৩। আর নিটওয়্যার রপ্তানি হয় প্রায় ৬৭ লাখ ডলারের। প্রবৃদ্ধি প্রায় ১৬৫ দশমিক ৬৮। বাকিটা রপ্তানি হয়েছে পোশাকের অন্যান্য আইটেম।
রপ্তানি বাড়ার পাশাপাশি ভারত থেকে রপ্তানি আদেশও বাড়ছে। দেশের পোশাক শিল্পমালিকরা আগের চেয়ে অনেক বেশি হারে রপ্তানির আদেশ পাচ্ছেন দেশটি থেকে। ভারত থেকে পাওয়া রপ্তানি আদেশের হারকে 'ভালো' বলে উল্লেখ করছেন তাঁরা। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, পিটার ইংল্যান্ড, টারটেল, প্যান্টালুন, রিলায়েন্স ট্রেন্ডজ, গ্রিন হেরিটেজ, শপার্স স্টপ, গ্লোবাস, অরেঞ্জসহ ভারতের নামকরা পোশাক ব্র্যান্ডগুলো বাংলাদেশে আসছে। তাদের অনেকে বাংলাদেশে কার্যালয় খোলার পরিকল্পনা করছে। অনেকে রপ্তানি আদেশও দেওয়া শুরু করেছে।
সম্প্রতি ভারত সফর করেন বিজিএমইএর সভাপতি শফিউল ইসলাম মহিউদ্দিন ও সহসভাপতি ফারুক হাসান। তাঁরা সেখানে ভারতের টেঙ্টাইল-সচিবের সঙ্গে বৈঠক করে। ফারুক হাসান কালের কণ্ঠকে বলেন, 'আমরা ভারত গিয়ে ভালো সাড়া পেয়েছি। ভারত থেকে সরবরাহ আদেশ বাড়ছে। ফলে সেখানে রপ্তানি বাড়বে। ইতিমধ্যে ভারতে রিটেইল ব্র্যান্ডগুলো বাংলাদেশে তাদের কাজ শুরু করেছে।'
চলতি বছর ভারতে কী পরিমাণ পোশাক রপ্তানি হতে পারে জানতে চাইলে তিনি বলেন, 'গত বছর আমরা মাত্র ৩৯ মিলিয়ন ডলারের পোশাক রপ্তানি করেছি। এ বছর তা বেড়ে ২০০ মিলিয়ন ডলারের কাছাকাছি যেতে পারে। তবে বিলিয়ন ডলার হতে প্রায় তিন বছর সময় লাগবে।'
ইউরোপ ও আমেরিকায় অর্থনৈতিক মন্দার কারণে বাংলাদেশের পোশাক খাতের ওপর চাপ তৈরি হচ্ছে বলে উল্লেখ করে তিনি বলেন, 'ভারতে রপ্তানি বাড়লে আমরা এই চাপ কিছুটা কাটিয়ে উঠতে পারব। ভারতের পাশাপাশি লাতিন আমেরিকা, কোরিয়া, মালয়েশিয়া ও চীনে আমরা রপ্তানি বাড়াতে পারব বলে আশা করি।'
ভারতে বাংলাদেশের ব্যবসায়ীরা অনেক কম দামে পোশাক দিতে পারছেন। ভারতে রপ্তানিতে সময় ও পরিবহন খরচ কম লাগছে। ফলে ইউরোপের মানের পোশাকই ভারতে রপ্তানি করা সম্ভব হচ্ছে অনেক কম খরচে। পাশাপাশি কাছাকাছি ভাষা ও সাংস্কৃতিক মিল রপ্তানি বাড়াতে ভূমিকা রাখছে। তবে এ ক্ষেত্রে ভিসা পাওয়া একটা বড় সমস্যা বলে দাবি করেন বিজিএমইএর দ্বিতীয় সহসভাপতি সিদ্দিকুর রহমান। তিনি কালের কণ্ঠকে বলেন, ভারতের ভিসা পেতে বেশ সময় লাগে। এ সমস্যা দূর করা যায় মাল্টিপল ভিসা দেওয়ার মাধ্যমে।
ফারুক হাসানও পোশাক খাতের আমদানি ও রপ্তানিকারকদের মাল্টিপল ভিসা দেওয়া উচিত বলে মনে করে। তিনি বলেন, যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্য এখন মাল্টিপল ভিসা দিচ্ছে। ভারত অন্তত দুই বছরের জন্যও মাল্টিপল ভিসা দিলে তাদের দূতাবাসের ওপর চাপ কমত।
No comments