বিবিসিকে খালেদা জিয়া-যুদ্ধাপরাধীদের বিচার চাই, তবে হতে হবে আন্তর্জাতিক মানের
সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও বিএনপি চেয়ারপাসন খালেদা জিয়া বলেছেন, আমরাও যুদ্ধাপরাধীদের বিচার চাই, তবে সে বিচার হতে হবে আন্তর্জাতিক মানের। তিনি আরও বলেন, আওয়ামী লীগের নেতৃত্বে ক্ষমতাসীন মহাজোট সরকার দেশের স্বার্থ রক্ষা করছে না। বিবিসিকে দেওয়া টেলিফোন সাক্ষাৎকারে বিরোধীদলীয় নেতা খালেদা জিয়া এসব কথা বলেন। গতকাল বিবিসির সান্ধ্যকালীন অধিবেশনে তার সাক্ষাৎকারটি প্রচার করা হয়।
খালেদা জিয়া যুদ্ধাপরাধের বিচার, তারেক রহমান এবং টিপাইমুখ বাঁধসহ গুরুত্বপূর্ণ বিভিন্ন ইস্যুতে তার অবস্থান নিয়ে খোলাখুলি কথাবার্তা বলেন। যুদ্ধাপরাধের বিচারে তার দল সরাসরি একটি পক্ষ নিচ্ছে_ সরকারি দলের এ অভিযোগ প্রসঙ্গে খালেদা জিয়া বলেন, যুদ্ধাপরাধের বিচার প্রক্রিয়ায় পূর্ণ স্বচ্ছতা চান তিনি। তিনি বলেন, আমরা কোনো পক্ষ নিচ্ছি না। আমরাও যুদ্ধাপরাধের বিচার চাই। তবে এ বিচার হতে হবে আন্তর্জাতিক মান বজায় রেখে। বিতর্কিত ব্যক্তিকে বিচারক করে বিচার হয় না। খালেদা জিয়া বলেন, প্রথমেই প্রমাণ করার দরকার ছিল যে যুদ্ধাপরাধী কারা? যুদ্ধাপরাধী ছিল ১৩৫ জন। তাদের তো তারা ছেড়ে দিয়েছেন। তাদের সঙ্গে আন্ডারস্ট্যান্ডিং করেছেন। তারা যদি আজকে জেলখানায় থাকত, তারা তো বলতে পারত যে অমুক অমুক আমার সঙ্গে ছিল। আমাদের সহযোগিতা করেছে। অমুক দলের অমুক নেতা, তমুক নেতারা করেছে। আমরা বলেছি, যুদ্ধাপরাধীদের বিচার আমরা চাই, যে দলেরই হোক না কেন। সে সময়ে যে মুক্তিযুদ্ধের বিরুদ্ধে ছিল বা যারা অপরাধ করেছে তাদের বিচার আমরা চাই। কিন্তু সেটা হতে হবে স্বচ্ছ। সেটা হতে হবে আন্তর্জাতিক মানের। বিচারক হতে হবে নিরপেক্ষ। ট্রাইব্যুনালের বিচারক সম্পর্কে নানা অভিযোগ আছে। একজন ঘাদানিকে ছিল। নানাভাবে বিতর্কিত ব্যক্তি। তিনি আরও বলেন, যারা সে সময়ে রাজাকার, আলবদরদের সহযোগিতা করেছে, তাদের কেউ কি আওয়ামী লীগে নেই? তাদের দলের লোকজনকে কেন ধরা হয়নি?
আমরা বলেছি, বিচার হতে হবে নিরপেক্ষ। স্টিভেন র্যাপও বলে গেছেন বিচার আন্তর্জাতিক মানের হতে হবে। সেটাই আমাদের প্রশ্ন। এখন নিজেদের ব্যর্থতাকে ঢাকার জন্য এসব নানারকম আবোল-তাবোল কথা বলা হচ্ছে। মানুষের দৃষ্টি অন্যদিকে ফেরাতে চায় সরকার। বাংলাদেশের জনগণ অত্যন্ত সচেতন, সহজ সরল এবং তারা সবকিছু বোঝে।
ভারতের প্রস্তাবিত টিপাইমুখ বাঁধ এবং তিস্তা নদীর পানি বণ্টন প্রসঙ্গে এক প্রশ্নে খালেদা জিয়া তীব্র ভাষায় সরকারের সমালোচনা করেন। তিনি বলেন, এ সরকার ভারতবান্ধব হিসেবে পরিচিত। একতরফা বিভিন্ন সুবিধা তারা ভারতকে দিয়ে যাচ্ছে। আমরা ভেবেছিলাম এতে করেও যদি আমরা তিস্তার ন্যায্য হিস্যা পাই। প্রতিশ্রুতিও দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু কিছুই হলো না। দেশের যেটুকু আছে, তা তলে তলে ভারতের হাতে তুলে দেওয়া হচ্ছে।
খালেদা জিয়া বলেন, দেশ ও জনগণের স্বার্থে কাজ না করে অন্য দেশের হয়ে কাজ করছে সরকার।
প্রস্তাবিত টিপাইমুখ বাঁধে বাংলাদেশের ক্ষতি হবে না বলে ভারতের প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিংয়ের আশ্বাসের প্রসঙ্গে খালেদা জিয়া বলেন, এ আশ্বাসে তার ভরসা নেই। ফারাক্কার কারণে কী হয়েছে দেখুন। টিপাইমুখ হলে পূর্বাঞ্চলও স্থায়ীভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হবে। বিরোধীদলীয় নেতা বলেন, টিপাইমুখ বাঁধ এবং তিস্তার পানির ন্যায্য হিস্যার দায়িত্ব সরকারকে নিতে হবে।
তিনি আরও বলেন, টিপাইমুখ নিয়ে সংসদ এবং বাইরে সব জায়গায় আলোচনা হওয়া উচিত। আমি মনে করি সরকারকে দায়িত্ব নিতে হবে, টিপাইমুখ বাঁধ এবং তিস্তার পানির ন্যায্য হিস্যা আমাদের দিতে হবে। বর্তমান সরকার গোপনে যেসব চুক্তি করেছে সেগুলোতে পার্লামেন্টে কোনো আলোচনা হয়নি। আমাদের আগের সংবিধান অনুযায়ী সেটা পার্লামেন্টে উত্থাপন করার কথা। সেগুলো পার্লামেন্টে উত্থাপন, আলোচনা করেনি। কোনো আলোচনা ছাড়াই মাত্র চার মিনিটে ডিসিসিকে দু'ভাগের মতো এত বড় একটা বিল পাস করা হলো। তাহলে বুঝতে পারছেন, বর্তমান সরকার দেশ ও জনগণের পক্ষে কোনো কথা বলছে না। কোনো কাজও করছে না। বরং দেশের স্বার্থবিরোধী কাজ করছে। অন্য দেশের হয়ে এ সরকার কাজ করছে। এ সরকার যতদিন থাকবে দেশের তত ক্ষতি হবে, সর্বনাশ হবে।
তারেক রহমান কবে দেশে ফিরে আবার বিএনপির রাজনীতির সঙ্গে প্রত্যক্ষভাবে জড়িত হবেন_ এ প্রশ্নে খালেদা জিয়া বলেন, বন্দি অবস্থায় নির্যাতনে তারেক রহমানের মেরুদণ্ডের হাড় এখনও বাঁকা হয়ে রয়েছে। তিনি বলেন, তার ছেলের মেরুদণ্ডের চিকিৎসা স্থগিত রাখার কোনো সুযোগ নেই।
তারেক রহমানের বিরুদ্ধে দুর্নীতির বিভিন্ন মামলা প্রসঙ্গে খালেদা জিয়া বলেন, এসব মামলা সম্পূর্ণ মিথ্যা এবং বানোয়াট। তিনি বলেন, তত্ত্বাবধায়ক সরকার এসব প্রমাণ করতে ব্যর্থ হয়েছে, এ সরকারও ব্যর্থ হবে।
২০০৭ সালের ১১ জানুয়ারির পূর্বাপর ঘটনাপ্রবাহ এবং বিএনপির অব্যাহত সংসদ বর্জনের সমস্ত দায় সরকারি দলের ওপর চাপিয়েছেন খালেদা জিয়া। তিনি বলেন, সরকারি দলের ক্রমাগত উস্কানির কারণেই তারা সংসদে থাকতে পারেননি। তিনি বলেন, প্রথম থেকেই বলেছিলাম সরকারকে সহযোগিতা দেব, কিন্তু সরকার প্রথম দিন থেকে অসহযোগিতা দেখিয়ে চলেছে। তিনি বলেন, নির্বাচন নিরপেক্ষ হবে না জেনেও ২০০৮ সালে নির্বাচন করেছিলাম। ভেবেছিলাম অগণতান্ত্রিক কোনো সরকারের চেয়ে যে কোনো গণতান্ত্রিক সরকারই ভালো। প্রথম থেকেই বলেছিলাম সরকারকে সহযোগিতা দেব। কিন্তু সরকার প্রথম দিন থেকেই অসহযোগিতা দেখিয়ে চলেছে।
উদাহরণ দিতে গিয়ে খালেদা জিয়া বলেন, অতীতের সমস্ত ঐতিহ্য অগ্রাহ্য করে সরকার বিএনপির সদস্যদের সংসদে শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠান টিভিতে সরাসরি দেখায়নি। তিনি দাবি করেন, তিন হাজারেরও বেশি নোটিশ দিলেও তার একটিও সরকার গ্রহণ করেনি। বিরোধী দলের নেতা হিসেবে আমি কথা বললে সেটাও টিভিতে প্রচার করা হতো না। অশ্লীল ভাষায় গালাগাল করা হয়েছে।
আমরা কথা দিয়েছিলাম, আমরা সরকারকে সহযোগিতা করব, গণতন্ত্রকে রক্ষা করব, একসঙ্গে কাজ করব। আমাদের তা করতে দেওয়া হচ্ছে না। ২০০৭ সালের ১১ জানুয়ারি-পরবর্তী ঘটনার জন্য আওয়ামী লীগকে দায়ী করেন খালেদা জিয়া।
আমরা বলেছি, বিচার হতে হবে নিরপেক্ষ। স্টিভেন র্যাপও বলে গেছেন বিচার আন্তর্জাতিক মানের হতে হবে। সেটাই আমাদের প্রশ্ন। এখন নিজেদের ব্যর্থতাকে ঢাকার জন্য এসব নানারকম আবোল-তাবোল কথা বলা হচ্ছে। মানুষের দৃষ্টি অন্যদিকে ফেরাতে চায় সরকার। বাংলাদেশের জনগণ অত্যন্ত সচেতন, সহজ সরল এবং তারা সবকিছু বোঝে।
ভারতের প্রস্তাবিত টিপাইমুখ বাঁধ এবং তিস্তা নদীর পানি বণ্টন প্রসঙ্গে এক প্রশ্নে খালেদা জিয়া তীব্র ভাষায় সরকারের সমালোচনা করেন। তিনি বলেন, এ সরকার ভারতবান্ধব হিসেবে পরিচিত। একতরফা বিভিন্ন সুবিধা তারা ভারতকে দিয়ে যাচ্ছে। আমরা ভেবেছিলাম এতে করেও যদি আমরা তিস্তার ন্যায্য হিস্যা পাই। প্রতিশ্রুতিও দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু কিছুই হলো না। দেশের যেটুকু আছে, তা তলে তলে ভারতের হাতে তুলে দেওয়া হচ্ছে।
খালেদা জিয়া বলেন, দেশ ও জনগণের স্বার্থে কাজ না করে অন্য দেশের হয়ে কাজ করছে সরকার।
প্রস্তাবিত টিপাইমুখ বাঁধে বাংলাদেশের ক্ষতি হবে না বলে ভারতের প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিংয়ের আশ্বাসের প্রসঙ্গে খালেদা জিয়া বলেন, এ আশ্বাসে তার ভরসা নেই। ফারাক্কার কারণে কী হয়েছে দেখুন। টিপাইমুখ হলে পূর্বাঞ্চলও স্থায়ীভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হবে। বিরোধীদলীয় নেতা বলেন, টিপাইমুখ বাঁধ এবং তিস্তার পানির ন্যায্য হিস্যার দায়িত্ব সরকারকে নিতে হবে।
তিনি আরও বলেন, টিপাইমুখ নিয়ে সংসদ এবং বাইরে সব জায়গায় আলোচনা হওয়া উচিত। আমি মনে করি সরকারকে দায়িত্ব নিতে হবে, টিপাইমুখ বাঁধ এবং তিস্তার পানির ন্যায্য হিস্যা আমাদের দিতে হবে। বর্তমান সরকার গোপনে যেসব চুক্তি করেছে সেগুলোতে পার্লামেন্টে কোনো আলোচনা হয়নি। আমাদের আগের সংবিধান অনুযায়ী সেটা পার্লামেন্টে উত্থাপন করার কথা। সেগুলো পার্লামেন্টে উত্থাপন, আলোচনা করেনি। কোনো আলোচনা ছাড়াই মাত্র চার মিনিটে ডিসিসিকে দু'ভাগের মতো এত বড় একটা বিল পাস করা হলো। তাহলে বুঝতে পারছেন, বর্তমান সরকার দেশ ও জনগণের পক্ষে কোনো কথা বলছে না। কোনো কাজও করছে না। বরং দেশের স্বার্থবিরোধী কাজ করছে। অন্য দেশের হয়ে এ সরকার কাজ করছে। এ সরকার যতদিন থাকবে দেশের তত ক্ষতি হবে, সর্বনাশ হবে।
তারেক রহমান কবে দেশে ফিরে আবার বিএনপির রাজনীতির সঙ্গে প্রত্যক্ষভাবে জড়িত হবেন_ এ প্রশ্নে খালেদা জিয়া বলেন, বন্দি অবস্থায় নির্যাতনে তারেক রহমানের মেরুদণ্ডের হাড় এখনও বাঁকা হয়ে রয়েছে। তিনি বলেন, তার ছেলের মেরুদণ্ডের চিকিৎসা স্থগিত রাখার কোনো সুযোগ নেই।
তারেক রহমানের বিরুদ্ধে দুর্নীতির বিভিন্ন মামলা প্রসঙ্গে খালেদা জিয়া বলেন, এসব মামলা সম্পূর্ণ মিথ্যা এবং বানোয়াট। তিনি বলেন, তত্ত্বাবধায়ক সরকার এসব প্রমাণ করতে ব্যর্থ হয়েছে, এ সরকারও ব্যর্থ হবে।
২০০৭ সালের ১১ জানুয়ারির পূর্বাপর ঘটনাপ্রবাহ এবং বিএনপির অব্যাহত সংসদ বর্জনের সমস্ত দায় সরকারি দলের ওপর চাপিয়েছেন খালেদা জিয়া। তিনি বলেন, সরকারি দলের ক্রমাগত উস্কানির কারণেই তারা সংসদে থাকতে পারেননি। তিনি বলেন, প্রথম থেকেই বলেছিলাম সরকারকে সহযোগিতা দেব, কিন্তু সরকার প্রথম দিন থেকে অসহযোগিতা দেখিয়ে চলেছে। তিনি বলেন, নির্বাচন নিরপেক্ষ হবে না জেনেও ২০০৮ সালে নির্বাচন করেছিলাম। ভেবেছিলাম অগণতান্ত্রিক কোনো সরকারের চেয়ে যে কোনো গণতান্ত্রিক সরকারই ভালো। প্রথম থেকেই বলেছিলাম সরকারকে সহযোগিতা দেব। কিন্তু সরকার প্রথম দিন থেকেই অসহযোগিতা দেখিয়ে চলেছে।
উদাহরণ দিতে গিয়ে খালেদা জিয়া বলেন, অতীতের সমস্ত ঐতিহ্য অগ্রাহ্য করে সরকার বিএনপির সদস্যদের সংসদে শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠান টিভিতে সরাসরি দেখায়নি। তিনি দাবি করেন, তিন হাজারেরও বেশি নোটিশ দিলেও তার একটিও সরকার গ্রহণ করেনি। বিরোধী দলের নেতা হিসেবে আমি কথা বললে সেটাও টিভিতে প্রচার করা হতো না। অশ্লীল ভাষায় গালাগাল করা হয়েছে।
আমরা কথা দিয়েছিলাম, আমরা সরকারকে সহযোগিতা করব, গণতন্ত্রকে রক্ষা করব, একসঙ্গে কাজ করব। আমাদের তা করতে দেওয়া হচ্ছে না। ২০০৭ সালের ১১ জানুয়ারি-পরবর্তী ঘটনার জন্য আওয়ামী লীগকে দায়ী করেন খালেদা জিয়া।
No comments