জীবিকার তাগিদে মুম্বাইয়ে বাংলাদেশি নারীরা
বোম্বে কলোনি। ভারতের চলচ্চিত্রের রাজধানী
মুম্বাই নয় এটি। চাকচিক্যের মুম্বাইয়ের দুই হাজার কিলোমিটার দূরে অবস্থিত
এই ‘বোম্বে কলোনি’।
বাংলাদেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলীয় জেলা যশোরের বসতপুরে ওই বোম্বে কলোনি। কেন এ নামে ডাকা হয়?
এই
নামের প্রেক্ষাপট বাংলাদেশের জন্য কলঙ্কের। সীমান্ত পার হয়ে মুম্বাইয়ে
পাড়ি জমান বসতপুরের নারীরা। শিকারিদের মতো খুঁজে খুঁজে বের করে মুম্বাইয়ের
পানশালা। ‘পানশালা’য় নেচে রুটি রোজগার করেন তারা। প্রায় দুই দশক ধরে এভাবে
মুম্বাইয়ে পাড়ি জমাচ্ছে দারিদ্র্যপীড়িত বাসাতপুরে গ্রামের অভাগা নারীরা।
যুক্তরাজ্যভিত্তিক সংবাদ মাধ্যম দ্য গার্ডিয়ানের এক প্রতিবেদনে যশোরের বসতপুরের এ চিত্র তুলে ধরা হয়েছে।
প্রতিবেদনটি উল্লেখ করা হয়, আঞ্জুমান আরা বেগম বসতপুরের বাসিন্দা। ৪৫ বছর বয়সী এই নারীও নেচেছিলেন মুম্বাইয়ের পানশালায়। অভাব-অনাটনই তাকে ওই পথে নিয়ে যায়। তিনি বলেন, “মেয়েরা (মুম্বাইয়ে) যায় কেননা এখানে খাওয়ার কিছু নেই।”
আধাপাকা টিনের ছাউনির ঘরের দিকে আঙ্গুল দেখিয়ে বলেন, “এসব কিছু হয়েছে বোম্বেতে গিয়ে অর্জিত অর্থে। আমি দুই ছেলেকে কলেজে পাঠিয়েছি, মেয়ের বিয়ে দিয়েছি।”
১৯৯৫ সালে মুম্বাইয়ে যান আঞ্জুমান। অন্য দুই নারী সঙ্গীকে নিয়ে পায়ে হেঁটে সীমান্ত পার হন। এরপর বাসে করে কলকাতার হাওড়া স্টেশনে পৌঁছান। স্টেশন থেকে ট্রেনে করে মুম্বাইয়ে যান।
মুম্বাইয়ের পানশালায় মদ দেওয়ার টেবিলে কাজ করতেন । কিন্তু দেখলেন ‘নৃত্যে’ই আসে টাকা। তিনি জানান, অনেকে বাড়তি অর্থের জন্য ক্রেতাদের সঙ্গে যৌনকাজে লিপ্ত হয়। বাংলাদেশের সমাজ-সংস্কৃতি কখনো অনুমোদন দেয় না এধরনের কাজের। স্থানীয়রা মুম্বাইয়ে নারীদের পাড়ি জমানো থামানোর চেষ্টা করে আসছে।
এমন বাধার মুখোমুখি হয়েছিলেন আঞ্জুমানও। তাকে অনেকবার বাধাও দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু সবকিছু উপেক্ষা করে মুম্বাইয়ে গেছেন তিনি। অনড় অবস্থানের কারণ হিসেবে তিনি উল্লেখ করেছেন, “যখন আমি না খেয়ে ছিলাম তখন কেউ আমাকে খাওয়ায়নি। শরীর আর আত্মাকে একত্রে রাখতে যা করতে হয়েছে তাই করেছি।”
বসতপুরের রাস্তা দিয়ে হেঁটে গেলে বোঝা যায়, কারা যায় আর কারা যায় না মুম্বাইয়ে। দারিদ্র্য যাদের সঙ্গী তারাই মুম্বাইয়ের পথে পাঁ বাড়ায়। স্বাধীনতা আর নগদ কিছু অর্থ উপার্জনের আশায় তরুণীরা সমাজের সব প্রথা মাড়িয়ে অবৈধভাবে মুম্বাইয়ে যাচ্ছে। পাসপোর্ট, ভিসা বা বিমানের টিকিটের কোনো ঝামেলার মধ্যে জড়ায় না তারা।
আঞ্জুমানের প্রতিবেশী শামীমা সুলতানা। পাঁচ বছর আগে মুম্বাই থেকে যশোরে ফিরে এসেছেন এই ৩৩ বছর বয়সী নারী। দেশে কাজ পেলে সীমান্ত পার হতো না শামীমা।
তিনি বলেন, “আমি অসহায় ছিলাম। আমরা যে কাজ করেছি কোনো মেয়েই সে কাজ করতে চাইবে না।”
সরকার ও বেসরকারি সংগঠনগুলোকে নারীদের মুম্বাই যাওয়াকে পাচার হিসেবে দাবি করে । কিন্তু আরিফ হাসান নামে স্থানীয় এক সাংবাদিক বলেন, “নারীরা নিজের ইচ্ছায় ওই পথে পা বাড়ায়, আর তাদের স্বামীরাই এক্ষেত্রে সহায়তা করে।”
মুম্বাইয়ের পানশালা ফেরত নারীদের নিয়ে কাজ করেছেন তিনি। তিনি বলেন, “কোনো কোনো গ্রামের দুই-তৃতীয়াংশ পরিবার তাদের সদস্যকে মুম্বাইয়ে পাঠায়।”
২০০৫ সাল থেকে মুম্বাইয়ের পানশালাগুলোতে নাচ নিষিদ্ধ করা হয়। কিন্তু অবৈধভাবে কোথাও কোথাও এখন রয়েছে।
বিশ্বব্যাংকের তথ্যানুসারে, দেশের ৭৫ শতাংশের বেশি মানুষের দৈনিক আয় দুই মার্কিন ডলারের নিচে। ১১ হাজার ৯০০ কোটি মার্কিন ডলারের অর্থনীতির বাংলাদেশের দ্রুত উন্নয়ন এবং দারিদ্য কমানোর পথে বাধা অব্যাহত রাজনৈতিক অস্থিতিশীলতা ও দুর্নীতি।
যুক্তরাজ্যভিত্তিক সংবাদ মাধ্যম দ্য গার্ডিয়ানের এক প্রতিবেদনে যশোরের বসতপুরের এ চিত্র তুলে ধরা হয়েছে।
প্রতিবেদনটি উল্লেখ করা হয়, আঞ্জুমান আরা বেগম বসতপুরের বাসিন্দা। ৪৫ বছর বয়সী এই নারীও নেচেছিলেন মুম্বাইয়ের পানশালায়। অভাব-অনাটনই তাকে ওই পথে নিয়ে যায়। তিনি বলেন, “মেয়েরা (মুম্বাইয়ে) যায় কেননা এখানে খাওয়ার কিছু নেই।”
আধাপাকা টিনের ছাউনির ঘরের দিকে আঙ্গুল দেখিয়ে বলেন, “এসব কিছু হয়েছে বোম্বেতে গিয়ে অর্জিত অর্থে। আমি দুই ছেলেকে কলেজে পাঠিয়েছি, মেয়ের বিয়ে দিয়েছি।”
১৯৯৫ সালে মুম্বাইয়ে যান আঞ্জুমান। অন্য দুই নারী সঙ্গীকে নিয়ে পায়ে হেঁটে সীমান্ত পার হন। এরপর বাসে করে কলকাতার হাওড়া স্টেশনে পৌঁছান। স্টেশন থেকে ট্রেনে করে মুম্বাইয়ে যান।
মুম্বাইয়ের পানশালায় মদ দেওয়ার টেবিলে কাজ করতেন । কিন্তু দেখলেন ‘নৃত্যে’ই আসে টাকা। তিনি জানান, অনেকে বাড়তি অর্থের জন্য ক্রেতাদের সঙ্গে যৌনকাজে লিপ্ত হয়। বাংলাদেশের সমাজ-সংস্কৃতি কখনো অনুমোদন দেয় না এধরনের কাজের। স্থানীয়রা মুম্বাইয়ে নারীদের পাড়ি জমানো থামানোর চেষ্টা করে আসছে।
এমন বাধার মুখোমুখি হয়েছিলেন আঞ্জুমানও। তাকে অনেকবার বাধাও দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু সবকিছু উপেক্ষা করে মুম্বাইয়ে গেছেন তিনি। অনড় অবস্থানের কারণ হিসেবে তিনি উল্লেখ করেছেন, “যখন আমি না খেয়ে ছিলাম তখন কেউ আমাকে খাওয়ায়নি। শরীর আর আত্মাকে একত্রে রাখতে যা করতে হয়েছে তাই করেছি।”
বসতপুরের রাস্তা দিয়ে হেঁটে গেলে বোঝা যায়, কারা যায় আর কারা যায় না মুম্বাইয়ে। দারিদ্র্য যাদের সঙ্গী তারাই মুম্বাইয়ের পথে পাঁ বাড়ায়। স্বাধীনতা আর নগদ কিছু অর্থ উপার্জনের আশায় তরুণীরা সমাজের সব প্রথা মাড়িয়ে অবৈধভাবে মুম্বাইয়ে যাচ্ছে। পাসপোর্ট, ভিসা বা বিমানের টিকিটের কোনো ঝামেলার মধ্যে জড়ায় না তারা।
আঞ্জুমানের প্রতিবেশী শামীমা সুলতানা। পাঁচ বছর আগে মুম্বাই থেকে যশোরে ফিরে এসেছেন এই ৩৩ বছর বয়সী নারী। দেশে কাজ পেলে সীমান্ত পার হতো না শামীমা।
তিনি বলেন, “আমি অসহায় ছিলাম। আমরা যে কাজ করেছি কোনো মেয়েই সে কাজ করতে চাইবে না।”
সরকার ও বেসরকারি সংগঠনগুলোকে নারীদের মুম্বাই যাওয়াকে পাচার হিসেবে দাবি করে । কিন্তু আরিফ হাসান নামে স্থানীয় এক সাংবাদিক বলেন, “নারীরা নিজের ইচ্ছায় ওই পথে পা বাড়ায়, আর তাদের স্বামীরাই এক্ষেত্রে সহায়তা করে।”
মুম্বাইয়ের পানশালা ফেরত নারীদের নিয়ে কাজ করেছেন তিনি। তিনি বলেন, “কোনো কোনো গ্রামের দুই-তৃতীয়াংশ পরিবার তাদের সদস্যকে মুম্বাইয়ে পাঠায়।”
২০০৫ সাল থেকে মুম্বাইয়ের পানশালাগুলোতে নাচ নিষিদ্ধ করা হয়। কিন্তু অবৈধভাবে কোথাও কোথাও এখন রয়েছে।
বিশ্বব্যাংকের তথ্যানুসারে, দেশের ৭৫ শতাংশের বেশি মানুষের দৈনিক আয় দুই মার্কিন ডলারের নিচে। ১১ হাজার ৯০০ কোটি মার্কিন ডলারের অর্থনীতির বাংলাদেশের দ্রুত উন্নয়ন এবং দারিদ্য কমানোর পথে বাধা অব্যাহত রাজনৈতিক অস্থিতিশীলতা ও দুর্নীতি।
No comments