এএফপির বিশ্লেষণ- পাকিস্তান এখনো বিদেশি জঙ্গিদের আশ্রয়স্থল
আল-কায়েদাপ্রধান ওসামা বিন লাদেনকে হত্যা কিংবা অসংখ্য মার্কিন ড্রোন হামলার পরও পাকিস্তানই এখনো ইসলামি জঙ্গিদের প্রধান গন্তব্যস্থল। অবশ্য জিহাদিদের লড়াইয়ের স্থান বদলেছে।
এখন লড়াই চলছে আফ্রিকা ও মধ্যপ্রাচ্যে। সেখানে বিভিন্ন দেশ থেকে ইসলামি জঙ্গিরা যাচ্ছে। আশির দশকে আফগানিস্তান থেকে তত্কালীন সোভিয়েত বাহিনীকে হটাতে সারা বিশ্ব থেকে মুসলিম যোদ্ধারা ‘জিহাদে’ অংশ নেয়। তখন জিহাদিরা আফগান-পাকিস্তান সীমান্তে ঘাঁটি গাড়ে। সেখানে তাদের প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়। আন্তর্জাতিক সন্ত্রাসী সংগঠন আল-কায়েদাসহ অন্যান্য জঙ্গি গোষ্ঠীর সঙ্গে তারা ঘনিষ্ঠতা গড়ে তোলে। এখনো ওই এলাকা ইসলামি জঙ্গিদের নিরাপদ ও শক্ত ঘাঁটি।আল-কায়েদাকে আশ্রয় দেওয়ার অভিযোগ এনে ২০০১ সালে মার্কিন নেতৃত্বাধীন বাহিনী আফগানিস্তানে অভিযান চালিয়ে তালেবানকে ক্ষমতাচ্যুত করে। তখন তালেবান জঙ্গিরা সীমান্ত পাড়ি দিয়ে পাকিস্তানে আশ্রয় নেয়।
ওয়াশিংটন ও ন্যাটো আগামী বছর আফগানিস্তান থেকে সেনা প্রত্যাহার করবে। তালেবান বলেছে, তাদের বিদেশি জিহাদিরা এখন অন্য দেশে ছড়িয়ে পড়ছে।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে পাকিস্তানের উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলে আত্মগোপনে থাকা একজন আফগান তালেবান বার্তা সংস্থাকে বলেন, আল-কায়েদা যোদ্ধারা এখন সিরিয়া, লিবিয়া, ইরাক কিংবা মালির দিকে ছুটছে।
স্থানীয় কর্তৃপক্ষের ধারণা, গত ১০ বছরে আরব যোদ্ধাদের সংখ্যা অর্ধেক কিংবা দুই-তৃতীয়াংশ কমে গেছে। পাকিস্তানে এখন বিদেশি জিহাদিদের সংখ্যা এক হাজারের কম।
তবে গবেষণাপ্রতিষ্ঠান ফাটা রিসার্চ সেন্টারের নির্বাহী পরিচালক সাইফুল্লাহ খান মেহসুদ বলেন, মধ্যপ্রাচ্যে আরব বসন্তের কারণে পাকিস্তানে আরব যোদ্ধাদের উপস্থিতির খুব একটা হেরফের হয়নি।
উত্তর ওয়াজিরিস্তানের মিরানশাহ শহরের এক বাসিন্দা বলেন, মএই শহরে বিদেশি জিহাদিদের সংখ্যা বরং দিন দিন বাড়ছে। গত দুই বছরে এই সংখ্যা যে বেড়েছে, এতে সন্দেহ নেই। প্রতি সপ্তাহে আমরা নতুন নতুন মুখ দেখি।
ধারণা করা হয়, এখন সীমান্ত এলাকায় দুই হাজার থেকে সাড়ে তিন হাজার বিদেশি জিহাদি রয়েছে। বিশ্বের প্রায় ৩০টি েদশ থেকে এসেছে তারা।
স্থানীয় এক কর্মকর্তা জানান, সবচেয়ে বেশি জিহাদি এসেছে তুর্কেমেনিস্তান ও উজবেকিস্তান থেকে। এ সংখ্যা এক হাজার থেকে তিন হাজার হবে।
লন্ডনভিত্তিক অনুসন্ধানী সাংবাদিকতা-বিষয়ক ব্যুরো জানায়, পাকিস্তানে ২০০৪ সাল থেকে এ পর্যন্ত ৩৬২ বার মার্কিন ড্রোন হামলা চালানো হয়েছে। এসব হামলায় আল-কায়েদার তুলনায় তালেবান জঙ্গি এবং অনেক বেসামরিক নাগরিকও নিহত হয়েছে।
No comments