দেশের অন্যান্য স্থানে
আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল বাতিল, তত্ত্বাবাধয়ক সরকার পুনর্বহাল ও
জামায়াত-শিবিরের আটক নেতাকর্মীদের মুক্তির দাবিতে সারা দেশে জামায়াতের
কেন্দ্র ঘোষিত বিক্ষোভ সমাবেশ ও মিছিল শান্তিপূর্ণভাবে পালিত হয়েছে।
তবে
লক্ষ্মীপুরে জামায়াতের শান্তিপূর্ণ মিছিলে ছাত্রলীগের হামলায় ১৫ জন আহত
হয়েছেন। ফরিদপুরে ছাত্রশিবিরের মিছিলে ছাত্রলীগ-যুবলীগের হামলায় জামায়াত
ও শিবিরের ২৫ নেতাকর্মী আহত হয়েছেন।
লক্ষ্মীপুর ও রামগঞ্জ সংবাদদাতা জানান, কেন্দ্র ঘোষিত কর্মসূচির অংশ হিসেবে জেলার রামগঞ্জ উপজেলা জামায়াতের শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভ মিছিলে ছাত্রলীগের হামলায় ও সংঘর্ষে দুই পুলিশসহ ১৫ জন আহত হয়েছেন। আহতদের রামগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সসহ বিভিন্ন কিনিকে চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে। এ সময় ছাত্রলীগ কর্মীরা জামায়াত-শিবিরের মালিকানাধীন কয়েকটি হাসপাতাল, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও কয়েকটি ব্যবসায়প্রতিষ্ঠানে ব্যাপক ভাঙচুরসহ লুটপাট চালায়। প্রতিবাদে শিবিরকর্মীরা সাতটি সিএনজি ভাঙচুর করে। এ সময় সোনাপুর চৌরাস্তা থেকে ছাত্রলীগ কর্মীরা জামায়াতের কর্মী সন্দেহে একজনকে মারধর করে পুলিশের হাতে তুলে দেয়। ছাত্রলীগ ও শিবিরের সংঘর্ষে এ সময় শিবিরের সাইফুল ইসলাম আজগর, ফয়েজ আহম্মেদ, জামাল উদ্দীন, রায়হান উদ্দীন, ছাত্রলীগের দেলোয়ার, আলমগীর, আনোয়ার, মনির ও জুয়েল আহত হয়েছেন।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, গতকাল বেলা পৌনে ২টায় রামগঞ্জ নুর প্লাজা চত্বর থেকে উপজেলা জামায়াত-শিবিরের একটি বিশাল মিছিল সোনাপুর ইসলাম মার্কেটের কাছাকাছি যাওয়া মাত্র পশ্চিম দিক থেকে রামগঞ্জ উপজেলা ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা ধারালো অস্ত্র নিয়ে জামায়াত-শিবিরের মিছিলে হামলা করে ছাত্রশিবির নেতা সাইফুল ইসলামকে মারধর করে। এ সময় শিবিরকর্মীরা ছাত্রলীগকে পাল্টা ধাওয়া করে।
পরে শিবির নেতা সাইফুল ইসলামকে মারধরের প্রতিবাদে রামগঞ্জ সোনাপুর চৌরাস্তায় শিবিরকর্মীরা অবস্থান নিলে ছাত্রলীগ কর্মীরা ধারালো অস্ত্র নিয়ে শিবিরকর্মীদের ধাওয়া করে। এ সময় ছাত্রলীগ কর্মীরা রামগঞ্জ সোনাপুর চৌরাস্তাসংলগ্ন আধুনিক হাসপাতাল, আল হেলাল হাসপাতাল, এশিয়ান কিন্ডারগার্টেনে ব্যাপক ভাঙচুর ও লুট করে। কিছুক্ষণ পর একই গ্রুপ রামগঞ্জ উপজেলা জামায়াতের আমির মাস্টার আবুল হোসেনের ব্যবসায়প্রতিষ্ঠান বাটার শোরুমে হামলা ও ভাঙচুর করে তালা লাগিয়ে দেয়, সোনাপুর বড় মসজিদসংলগ্ন আল জামান গার্মেন্টে ভাঙচুর চালায়। বেলা ৩টায় রামগঞ্জ সরকারি কলেজ রোডে সিটি ল্যাব ডায়াগনস্টিক, রামগঞ্জ পৌর জামায়াতের আমির দেওয়ান মো: ইউসুফের মালিকানাধীন দেওয়ান গার্মেন্ট, রামগঞ্জ স্টেশন মডেল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়সংলগ্ন আকাবা হোল্ডিংস, কলাবাগান রোডে ইসলামী ব্যাংক ভবনের নিচে টিসিএল (টিভি ফ্রিজের) শোরুমে ব্যাপক ভাঙচুর করে।
ফরিদপুর অফিস জানায়, ফরিদপুরে ইসলামী ছাত্রশিবিরের মিছিলে হামলার পর ছত্রভঙ্গ করে দিয়ে জামায়াতের অফিস ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করেছে পুলিশ ও যুবলীগ-ছাত্রলীগ। এ সময় পুলিশ দুই রাউন্ড টিয়ার শেল ও দুই রাউন্ড ফাঁকা গুলিবর্ষণ করে। এতে জামায়াত ও শিবিরের ২৫ নেতাকর্মী আহত হন। এ সময় পুলিশ ছাত্রশিবিরের পাঁচজনকে আটক করেছে। গতকাল দুপুরে এ ঘটনা ঘটে।
বেলা ২টার দিকে শহরের গোলপুকুর মার্কেটের সামনে থেকে শ’ দুয়েক জামাতের কর্মীরা লাঠি নিয়ে মিছিল বের করে। মিছিলটি জনতা ব্যাংকের মোড়ের দিকে অগ্রসর হলে পুলিশ তাদের বাধা দেয়। পুলিশের ব্যারিকেড উপো করে কর্মীরা মিছিল করতে চাইলে পুলিশ লাঠিচার্জ শুরু করে তাদের ধাওয়া করে। এ সময় পুলিশ শটগানের দুই রাউন্ড ফাঁকা গুলি ছোড়ে ও দুই রাউন্ড টিয়ার শেল নিপে করে মিছিলকারীদের ছত্রভঙ্গ করে দেয়। এরপর জামায়াত ও শিবিরকর্মীদের পেয়ে বেদম পেটায় পুলিশ। এতে কমপে ৯ জামায়াত-শিবিরকর্মী আহত হন। পুলিশের ধাওয়া খেয়ে জামায়াতকর্মীরা বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান ও মসজিদে ঢুকে আত্মরা করে। এ সময় পুলিশ বিভিন্ন স্থান থেকে পাঁচ শিবিরকর্মীকে আটক করে বেধড়ক পিটুনি দেয়। তাদের মধ্যে এক শিবিরকর্মীকে থানায় আনার পথে ছাত্রলীগের কর্মীরা পুলিশের হাত থেকে ছিনিয়ে নিয়ে পিটিয়ে গুরুতর আহত করে। সংঘর্ষের পর অতিরিক্ত পুলিশ সুপার বিজয় বসাকের নেতৃত্বে কয়েক শ’ পুলিশ স্থানীয় চকবাজার জামে মসজিদে ঢুকে পড়ে। পুলিশ সেখান থেকে রুহুল আমিন নামে এক শিবিরকর্মীকে আটক করে। সংঘর্ষ চলাকালীন শহরের বেশির ভাগ দোকান বন্ধ হয়ে যায়। বেলা আড়াইটার দিকে পুলিশ স্থানীয় চকবাজারের জামায়াত কার্যালয়ে তালা ভেঙে পুলিশ ভেতরে প্রবেশ করে কুরআন শরিফ ও বইপত্র তছনছ করে। পুলিশ বের হয়ে আসার পর যুবলীগ ও ছাত্রলীগের কর্মীরা জামায়াত অফিসে আগুন ধরিয়ে দেয়। এ দিকে দুপুরের পর থেকে আওয়ামী লীগ, যুবলীগ ও ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা দফায় দফায় মিছিল করে। পুলিশ শহরের বিভিন্ন স্থান থেকে পাঁচ জামায়াত-শিবিরকর্মীকে আটক করেছে বলে জানা গেছে। তবে পুলিশের প থেকে তিনজনকে আটক করার কথা বলা হয়েছে। আটককৃতরা হলেনÑ রুহুল আমিন, আনোয়ার হোসেন ও শহিদুল পাল। বর্তমানে শহরে থমথমে পরিস্থিতি বিরাজ করছে। ছাত্রশিবিরের প থেকে দাবি করা হয়, তাদের শান্তিপূর্ণ মিছিলে পুলিশ ব্যাপক হামলা চালিয়ে তাদের ২০-২৫ নেতাকর্মীকে আহত করা হয়েছে। পুলিশের উপস্থিতিতে জামায়াত কার্যালয়ে আগুন দেয় ছাত্রলীগ।
রাজশাহী ব্যুরো জানায়, রাজশাহীতে বিশাল বিােভ মিছিল ও সমাবেশ করেছে জামায়াতে ইসলামী। মিছিলে মিছিলে প্রকম্পিত হয়ে ওঠে রাজশাহী মহানগরী। দলটির নেতারা জানান, প্রায় ৪০ হাজার নেতাকর্মী এ কর্মসূচিতে অংশ নেন। মিছিল শুরুর আধা ঘণ্টা আগে থেকেই নগরীর সাহেববাজার, মনিচত্বর, জিরোপয়েন্ট, গণকপাড়া সোনাদীঘি মোড়, হেতেম খাঁ, মালোপাড়া সড়কে যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। রাস্তায় লোকজনের চলাচল কমতে শুরু করে। তবে শান্তিপূর্ণভাবে মিছিল-সমাবেশ শেষ হওয়ার পরে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়। রাস্তায় যান চলাচল পুরোদমে শুরু হয়। আবার লোক সমাগম বাড়তে থাকে।
কেন্দ্র ঘোষিত কর্মসূচির অংশ হিসেবে গতকাল সোমবার বিকেল সাড়ে ৪টায় নগরীর সাহেববাজারে বিােভ-সমাবেশের আয়োজন করে রাজশাহী মহানগর জামায়াত। সমাবেশের পরে বিশাল মিছিলটি শুরু হয়ে বিভিন্ন সড়ক প্রদণি করে হেতেম খাঁ বড় মসজিদের কাছে গিয়ে শেষ হয়। মিছিলের আগে ও পেছনে কয়েক শ’ পুলিশ সদস্য নিরাপত্তার দায়িত্বে ছিলেন। জামায়াতের মিছিল-সমাবেশকে কেন্দ্র করে পুলিশের রণপ্রস্তুতিতে পথচারীসহ সাধারণ মানুষের মধ্যে আতঙ্ক দেখা দেয়। জামায়াতের হাজার হাজার নেতাকর্মীর গগনবিদারী সেøাগানে প্রকম্পিত হয়ে ওঠে নগরী। তারা নেতাদের মুক্তির দাবিতে মিছিলে বিভিন্ন ধরনের সেøাগান দেন। কোনো অনাকাক্সিত ঘটনা ছাড়াই মিছিল-সমাবেশ শেষ হয়। এ কর্মসূচিতে পুলিশের ভূমিকা ছিল সহযোগিতামূলক। ফলে কোনো অনাকাক্সিত ঘটনা ঘটেনি।
খুলনা ব্যুরো জানায়, জামায়াতে ইসলামী খুলনা মহানগরী শাখা গতকাল সোমবার সকালে নগরীতে বিক্ষোভ-সমাবেশ ও মিছিল করে। নগরীর ডাকবাংলোর বেবিস্ট্যান্ড চত্বরে অনুষ্ঠিত সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন মহানগরী আমির মাওলানা আবুল কালাম আজাদ। অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেনÑ নায়েবে আমির অধ্যাপক আবদুল মতিন ও মাস্টার শফিকুল আলম, সেক্রেটারি অধ্যাপক মাহফুজুর রহমান, সহকারী সেক্রেটারি অ্যাডভোকেট মুহাম্মদ শাহ আলম, মহানগর ছাত্রশিবির সভাপতি মু. সাইদুর রহমান সাইদ, খুলনা উত্তর জেলা জামায়াতের সহকারী সেক্রেটারি অধ্যাপক মিয়া গোলাম কুদ্দুস ও অধ্যাপক স ম এনামুল হক, ছাত্রশিবির উত্তর জেলা সভাপতি মো: শাহাদাত হোসেন সোহেল, খুলনা সদর থানা আমির অধ্যাপক জি এম শফিকুল ইসলাম, খানজাহান আলী থানা আমির মো: আজিজুর রহমান স্বপন, মহানগর ছাত্রশিবির সেক্রেটারি মো: আজিজুল ইসলাম ফারাজী ও সাংগঠনিক সম্পাদক মিম মিরাজ হুসাইন ও বিএল কলেজ ছাত্রশিবির সভাপতি এ কে এম তানজিম।
সিলেট ব্যুরো জানায়, সিলেট নগরীতে গতকাল বিকেলে জামায়াতের মিছিল চলাকালে পুলিশ সদস্যদের ফুল দিয়ে শুভেচ্ছা জানালো ছাত্রশিবির কর্মীরা। তারা মিছিলে সেøাগানও দিয়েছে ‘পুলিশ-শিবির ভাই ভাই, ছাত্রলীগের রা নাই’। এই সেøাগান সংবলিত ফেস্টুন নিয়ে মিছিলে অংশ নেয় তাদের বেশ ক’জন কর্মীও।
বর্তমান সরকার গত সাড়ে তিন বছরে প্রথমবারের মতো গতকাল সিলেটে সমাবেশ ও বিােভ মিছিল করার অনুমতি দেয় মেট্রোপলিটন পুলিশ। কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দের মুক্তির দাবিতে নগরীর কোর্ট পয়েন্টে বিােভ-সমাবেশ করার অনুমতি চেয়ে গত শনিবার সিলেট মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনার বরাবরে আবেদন করে সিলেট মহানগর জামায়াত। কিন্তু তাদেরকে সমাবেশের অনুমতি দেয়নি পুলিশ। পরে জামায়াতকে জানানো হয়, তারা কোর্ট পয়েন্টের পরিবর্তে রেজিস্ট্রারি মাঠে সমাবেশ ও চৌহাট্টা পর্যন্ত মিছিল করতে পারে। সে অনুযায়ী বেলা ৩টা থেকে রেজিস্ট্রারি মাঠে সমাবেশ করে জামায়াত-শিবির। বর্তমান সরকারের আমলে সর্ববৃহৎ এই সমাবেশে পুরো সিলেটের বিভিন্ন স্থান থেকে জামায়াত-শিবিরের আনুমানিক ২০ হাজার নেতাকর্মী যোগ দেন। পরে বিশাল মিছিল চৌহাট্টায় শেষ না হয়ে আম্বরখানায় গিয়ে শেষ হয়।
বরিশাল ব্যুরো জানায়, কেন্দ্রীয় কর্মসূচির অংশ হিসেবে বরিশালে বিক্ষোভ-সমাবেশ ও মিছিলের মাধ্যমে ব্যাপক শোডাউন করেছে মহানগর জামায়াত। গতকাল বেলা ৩টায় বরিশাল নগরীর অশ্বিনী কুমার টাউন হল চত্বরে আয়োজিত সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন মহানগর জামায়াতের আমির অ্যাডভোকেট মুয়াযযম হোসাইন হেলাল।
বক্তব্য রাখেনÑ বরিশাল পূর্ব জেলা জামায়াতের আমির অধ্যাপক আবদুল জব্বার, পশ্চিম জেলা জামায়াতের আমির অধ্যাপক হাবিবুর রহমান, মহানগর জামায়াতের ভারপ্রাপ্ত সেক্রেটারি মাওলানা মতিউর রহমান, মহানগর শিবিরের সভাপতি আবদুল্লাহ আল নাহিয়ান, সেক্রেটারি রহমত উল্যাহ সেলিমসহ বরিশাল মহানগর জামায়াত-শিবির নেতৃবৃন্দ।
রংপুর অফিস জানায়, বগুড়া শিবির নেতাদের হত্যাকাণ্ডের সাথে জড়িত পুলিশ, ছাত্রলীগ, যুবলীগ ও আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীদের অবিলম্বে গ্রেফতার ও ফাঁসি এবং অবৈধ ট্রাইব্যুনাল বাতিল ও আটক জামায়াত নেতাকর্মীদের নিঃশর্ত মুক্তির দাবিতে গতকাল সোমবার বিকেলে রংপুর মহানগরীতে বিক্ষোভ-মিছিল ও সমাবেশ করেছে জামায়াত।
পুলিশের মৌখিক অনুমতি সাপেক্ষে বিকেল ৫টায় নগরীর আশরাফিয়া জামে মসজিদের সামনে থেকে একটি বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে শাপলা চত্বরে সমাবেশ করে জামায়াত। এ সময় বক্তব্য রাখেনÑ জেলা আমির এ টি এম আজম খান, সেক্রেটারি ওবায়দুল্লাহ সালাফি ও থানা আমির অ্যাডভোকেট কাওসার আলী।
ফেনী অফিস জানায়, কেন্দ্র ঘোষিত কর্মসূচি অনুযায়ী গতকাল সোমবার বিকেলে ফেনীর ঐতিহাসিক মিজান ময়দানে জামায়াতে ইসলামীর বিােভ-সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। নির্ধারিত সময়ের আগে দুপুর থেকে জেলা শহর ছাড়াও বিভিন্ন উপজেলা থেকে খণ্ড খণ্ড মিছিল এসে বিশাল সমাবেশে রূপ নেয়। কানায় কানায় ভরে যায় মিজান ময়দান। সমাবেশে বক্তারা অবিলম্বে যুদ্ধাপরাধ ট্রাইব্যুনাল বাতিল করে জাতীয় নেতৃবৃন্দকে মুক্তি দিয়ে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচন দেয়ার দাবি জানান।
লোহাগাড়া (চট্টগ্রাম) সংবাদদাতা জানান, তিন বছর পর অনুমতি পেয়েই চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়কের কেরানীহাট এলাকায় ২০ সহস্রাধিক নেতাকর্মী নিয়ে মিছিল-সমাবেশ করেছে চট্টগ্রাম দণি জেলা জামায়াত। দীর্ঘ দিন পর এত বেশি উপস্থিতি নিয়ে মিছিল-সমাবেশ করাকে শোডাউন হিসেবেই দেখছেন রাজনৈতিক মহল। বেলা ৩টায় কেরানীহাট এলাকায় ট্রাইব্যুনাল বাতিল করে শীর্ষ নেতৃবৃন্দের মুক্তির দাবিতে অনুষ্ঠিত সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন সাতকানিয়া উপজেলা জামায়াতের আমির মাওলানা আবুল ফয়েজ।
লক্ষ্মীপুর সংবাদদাতা জানান, লক্ষ্মীপুর শহর জামায়াতের উদ্যোগে লক্ষ্মীপুর সমাদ হাইস্কুল মাঠে বিােভ-সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। শহর জামায়াতের আমির ফারুক হোসাইন মু. নুরনবীর সভাপতিত্বে সমাবেশে বক্তব্য রাখেনÑ নায়েবে আমির ডা: ফয়েজ আহম্মদ, অ্যাডভোকেট নজির আহম্মদ, জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক সাহাবুদ্দিন সাবু, জেলা সেক্রেটারি মাওলানা মফিজুল ইসলাম প্রমুখ।
কিশোরগঞ্জ সংবাদদাতা জানান, জামায়াতে ইসলামী কিশোরগঞ্জ শহর শাখার উদ্যোগে গতকাল বিকেলে বিােভ-মিছিল অনুষ্ঠিত হয়েছে। জামায়াতে ইসলামী কিশোরগঞ্জ শহর শাখার সভাপতি মো: সানাউল্লাহ ও কিশোরগঞ্জ সদর থানা শাখা জামায়াতের সভাপতি মাওলানা লোকমান হোসেন মিছিলে নেতৃত্ব দেন।
বান্দরবান সংবাদদাতা জানান, বান্দরবানে পুলিশ প্রহরায় গতকাল সোমবার বিকেলে জামায়াতে ইসলামীর নেতাকর্মীরা শহরে বিক্ষোভ মিছিল বের করেন। কেন্দ্রীয় জামে মসজিদ এলাকা থেকে মিছিলটি শুরু হয়ে শহরের গুরুত্বপূর্ণ সড়ক প্রদক্ষিণ করে। এ সময় শহরের বিভিন্ন জায়গায় পুলিশ-দাঙ্গা পুলিশ মোতায়েন করা হয়। মিছিলটি পরে মসজিদ এলাকায় গিয়ে বিক্ষোভ-সমাবেশের মাধ্যমে শেষ হয়। জেলা জামায়াতের আমির মাওলানা আবদুস সামাদ আজাদের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সভায় বক্তব্য রাখেনÑ জামায়াত নেতা অ্যাডভোকেট আবুল কালাম, পৌর জামায়াত নেতা তাজউদ্দিন, রেজাউল করিম, আবদুল হামিদ, জেলা ছাত্রশিবির সভাপতি হারপনুর রশিদ প্রমুখ।
চাঁপাইনবাবগঞ্জ সংবাদদাতা জানান, গতকাল চাঁপাইনবাবগঞ্জ বড়ইন্দারা মোড়ে ট্রাইব্যুনাল বাতিল, শীর্ষ নেতৃবৃন্দের মুক্তি ও কেয়ারটেকার সরকার পুনর্বহালের দাবিতে জামায়াতের এক নজিরবিহীন বিশাল বিক্ষোভ-সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। জামায়াতের জেলা আমির অধ্যক্ষ নজরুল ইসলামের সভাপতিত্বে এই বিক্ষোভ-সমাবেশে বক্তব্য রাখেনÑ জামায়াতের সাবেক আমির অধ্যাপক রফিকুল ইসলাম, জেলা নায়েবে আমির সাবেক এমপি অধ্যাপক লতিফুর রহমান, জেলা সেক্রেটারি মাওলানা আবু জার গিফারি, পৌর আমির অধ্যাপক মোখলেসুর রহমান, উপজেলা আমির অধ্যাপক আবু বকর, ইসলামী ছাত্রশিবিরের শহর সভাপতি মো: শফিক এনায়েতউল্লাহ প্রমুখ।
কুষ্টিয়া সংবাদদাতা জানান, বগুড়ায় চার জামায়াত-শিবিরের নেতাকর্মীকে হত্যা ও সব রাজবন্দীর মুক্তি দাবি ও হরতালের সমর্থনে গতকাল কুষ্টিয়া জেলা জামায়াতের উদ্যোগে বিােভ মিছিল বের করে। বিােভ মিছিলে উপস্থিত ছিলেন জেলা জামায়াতের সহকারী সম্পাদক মাওলানা আবুল হাশেম, শিবিরের শহর শাখার সভাপতি সোহেল রানা ও সাধারণ সম্পাদক মোস্তাফিজুর রহমান পলাশ প্রমুখ।
সাতকানিয়া (চট্টগ্রাম) সংবাদদাতা জানান, গতকাল দুপুরে সাতকানিয়া উপজেলা জামায়াতের উদ্যোগে কেরানীহাট চত্বরে সমাবেশ ও বিােভ মিছিল অনুষ্ঠিত হয়। উপজেলা জামায়াতের আমির মৌলানা আবুল ফয়েজের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সমাবেশে প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন দণি জেলা জামায়াত আমির মো: ইছহাক।
পাবনা সংবাদদাতা জানান, গতকাল কেন্দ্রর ঘোষিত এ কর্মসূচি দলীয় কার্যালয় চত্বর থেকে শুরু করে শহরের প্রধান প্রধান সড়ক প্রদণি করে। মিছিলে নেতৃত্ব দেন পাবনা জেলা জামায়াতের ভারপ্রাপ্ত আমির মাওলানা জহুরুল ইসলাম, নায়েবে আমির মাওলানা আবদুস সামাদ, সেক্রেটারি অধ্যাপক আবু তালেব মণ্ডল, পৌর আমির অধ্য ইকবাল হুসাইন, সদর আমির অধ্যাপক আবদুল গাফফার খান, সেক্রেটারি মাওলানা আবদুর রব, পৌর সেক্রেটারি মো: ফজলুর রহমান, শিবির শহর সভাপতি আরিফুল ইসলাম, সেক্রেটারি মিনহাজ উদ্দিন, জেলা সভাপতি আবু ইসহাক প্রমুখ।
চৌদ্দগ্রাম (কুমিল্লা) সংবাদদাতা জানান, ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের চৌদ্দগ্রাম বাজারে বিশাল বিােভ মিছিল ও সমাবেশ করেছে উপজেলা জামায়াত। মিছিলে নেতৃত্ব দেন জামায়াতের উপজেলা আমির সাহাব উদ্দিন, সেক্রেটারি শাহ মো: মিজানুর রহমান, সহকারী সেক্রেটারি ও পৌর আমির মাহফুজুর রহমান, শিবিরের কুমিল্লা দণি জেলা সেক্রেটারি আবদুর রব ফারুকী প্রমুখ।
ময়মনসিংহ অফিস জানায়, বিকেলে শহরের ত্রিশাল বাসস্ট্যান্ডে শহর শাখার আমির মাওলানা মোজাম্মেল হক আকন্দের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সমাবেশে প্রধান অতিথি ছিলেন জামায়াতে ইসলামী জেলা সেক্রেটারি আব্দুল করিম। বক্তব্য রাখেন ইসলামী ছাত্রশিবিরের শহর সেক্রেটারি সাজিবুর রহমান, শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশনের শহর সভাপতি শহীদুল্লাহ কায়সার ও শিবির নেতা কামরুল আহসান ইমরুল।
ভোলা সংবাদদাতা জানান, ট্রাইবুনাল বাতিল, দেলাওয়ার হোসাইন সাইদীসহ সব কেন্দ্রীয় নেতার মুক্তির দাবিতে গতকাল সোমবার বিকেলে ভোলায় জামায়াতে ইসলামীর নেতাকর্মীরা বিক্ষোভ মিছিল করেছে।
মিছিল শেষে সংক্ষিপ্ত সমাবেশে বক্তব্য রাখেন জেলা জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি অধ্যক্ষ জিয়াউল মোর্শেদ। মিছিলের শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত বিপুলসংখ্যক পুলিশ মোতায়েন ছিল।
মুন্সীগঞ্জ সংবাদদাতা জানান, গতকাল সোমবার বিকেল ৪টায় মুন্সীগঞ্জের মুক্তারপুর এলাকায় বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ করেছে জেলা জামায়াত। মিছিলটি মুক্তারপুর পেট্রলপাম্প থেকে শুরু হয়ে ব্রিজের ঢালে গিয়ে সংক্ষিপ্ত সমাবেশের মধ্য দিয়ে শেষ হয়।
যশোর অফিস জানায়, গতকাল বিকেলে বিক্ষোভ সমাবেশ করেছে জামায়াতে ইসলামী যশোর জেলা শাখা। সমাবেশটি শহরের প্রাণকেন্দ্র দড়াটানার ভৈরব চত্বরে হওয়ার কথা থাকলেও সেখানে ছাত্রলীগ সমাবেশ করার ঘোষণা দিলে প্রশাসন ১৪৪ ধারা জারি করে।
জেলা জামায়াতের আমির অধ্যাপক আব্দুর রশিদের সভাতিত্বে সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন জামায়াতের কেন্দ্রীয় নেতা মাওলানা আজীজুর রহমান।
হবিগঞ্জ সংবাদদাতা জানান, জেলা আমির মাওলানা মুখলিছুর রহমানের সভাপতিত্বে ও সেক্রেটারি মাওলানা মুশাহিদ আলীর পরিচালনায় জামায়াতের সমাবেশে বক্তব্য রাখেন জেলা জামায়াতের জয়েন্ট সেক্রেটারি মাওলানা লুৎফুর রহমান, বিশিষ্ট আইনজীবী অ্যাডভোকেট রহমতে এলাহী, জেলা শিবির সভাপতি খলিলুর রহমান, সেক্রেটারি আতিকুল ইসলাম সোহাগ প্রমুখ।
সাঁথিয়া (পাবনা) সংবাদদাতা জানান, জামায়াতের উপজেলা শাখা আমির অধ্যা মোহাম্মদ আলীর সভাপতিত্বে ও নেতৃত্বে দলীয় কার্যালয় থেকে বিােভ মিছিলটি উপজেলা সদরের প্রধান প্রধান সড়ক প্রদণি করে।
নোয়াখালী সংবাদদাতা জানান, গতকাল বিকেলে জামায়াতে ইসলামীর উদ্যোগে নোয়াখালীর প্রধান বাণিজ্য শহর চৌমুহনী রেলওয়ে চত্বরে এক সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। চৌমুহনী পৌর আমির নাসিমুলগনি মহল চৌধুরীর সভাপতিত্বে সমাবেশে বক্তব্য রাখেনÑ বেগমগঞ্জ উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান বোরহান উদ্দিন, জামায়াতের উপজেলা আমির মাওলানা দেলোয়ার হোসেনের শিবিরের (উত্তর) জেলা সভাপতি মাসুমবিল্লাহ মোবাশ্বের হোসাইন প্রমুখ।
ব্রাহ্মণবাড়িয়া সংবাদদাতা জানান, অবশেষে স্থানীয় কর্তৃপক্ষের অনুমতি নিয়ে গতকাল সোমবার বিকেলে ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা শাখা শান্তিপূর্ণ সমাবেশ করেছে।
জেলা জামায়াতের প্রচার সম্পাদক কাজী সিরাজুল ইসলাম এতে সভাপতিত্ব করেন।
মাগুরা সংবাদদাতা জানান, মাগুরায় জামায়াতের বিক্ষোভ-মিছিল ও সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়েছে।
শহরের দরিমাগুরা এলাকা থেকে মিছিল শুরু হয়ে আল-আমিন কমপ্লেক্স চত্বরে গিয়ে শেষ হয়। এ সময় সংক্ষিপ্ত সমাবেশে বক্তব্য রাখেনÑ জেলা সেক্রেটারি মারুফ কারকী, লিয়াকত হোসেন, রবিউল ইসলাম প্রমুখ।
মৌলভীবাজার সংবাদদাতা জানান, গতকাল সোমবার বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী মৌলভীবাজার জেলা শাখার উদ্যোগে শহরের চৌমুহনী থেকে একটি বিরাট বিােভ মিছিল বের হয়ে কুসুমবাগ গিয়ে সমাবেশের মধ্য দিয়ে শেষ হয়। সমাবেশে বক্তব্য রাখেনÑ জেলা জামায়াতের আমির আবদুল মান্নান, জেলা সেক্রেটারি মো: শাহেদ আলী, সদর আমির আলাউদ্দিন শাহ, ছাত্র শিবিরের শহর সভাপতি হাফেজ তাজুল ইসলাম প্রমুখ।
নাটোর সংবাদদাতা জানান, বিকেলে শহরের বড় হরিশপুর বাইপাস মোড়ে নাটোর জেলা জামায়াত আয়োজিত জনসভায় সভাপতিত্ব করেন জেলা আমির অধ্যাপক মো: ইউনুস আলী।
টাঙ্গাইল সংবাদদাতা জানান, শহরের সাবালিয়ায় দলীয় কার্যালয়ের সামনে টাঙ্গাইল সদর ও পৌর জামায়াত এই কর্মসূচি পালন করে। সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন পৌর আমির আহসান হাবীব মাসুদ। প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেনÑ জামায়াতের জেলা আমির অধ্যাপক মাওলানা আবদুল হামিদ।
বাগেরহাট সংবাদদাতা জানান, জামায়াত বিকেলে বিােভ-মিছিল ও সমাবেশ করেছে। মিছিল শেষে দশানী ট্রাফিক স্ট্যান্ডে সমাবেশে বক্তৃতা করেনÑ জেলা জামায়াতের নায়েবে আমির মাওলানা রেজাউল করিম, জেলা সেক্রেটারি অ্যাডভোকেট শেখ আব্দুল ওয়াদুদ, শেখ মো: ইউনুস, অধ্যাপক ইকবাল হুসাইন, ডা: আব্দুল লতিফ, শিবির সভাপতি আজমল হুসাইন প্রমুখ।
কুমিল্লা সংবাদদাতা জানান, গতকাল কুমিল্লা মহানগরীর জামায়াত নগরীর চকবাজার বাস টার্মিনালে এক বিশাল সমাবেশের আয়োজন করে। সমাবেশ শেষে দেশব্যাপী আজ মঙ্গলবার সকাল-সন্ধ্যা হরতালের সমর্থনে বিােভ মিছিল বের করা হয়। সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন কুমিল্লা মহানগর জামায়াতের নায়েবে আমির আমিনুল হক।
এ দিকে আজকের হরতালের সমর্থনে টঙ্গী, জামালপুর ও গাজীপুরে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। গাজীপুরে ভাঙচুর ও দু’টি গাড়িতে অগ্নিসংযোগ করা হয়েছে।
দোহার থানা জামায়াত আমির গ্রেফতার
দোহার নবাবগঞ্জ (ঢাকা) সংবাদদাতা জানান, দোহার থানার জামায়াতে ইসলামীর আমির মাওলানা মোহাম্মদ সাইফুল্লাহকে (৪০) গ্রেফতার করেছে দোহার থানা পুলিশ। গতকাল সোমবার সন্ধ্যা ৭টায় উপজেলার নারিশা ইউনিয়নের পশ্চিমচর এলাকার নিজ বাড়ি থেকে তাকে গ্রেফতার করা হয়। মাওলানা মোহাম্মদ সাইফুল্লাহ ওই গ্রামের মো: আজহার আলীর ছেলে।
তার বিরুদ্ধে দোহার থানায় পুলিশ দ্রুত বিচার আইন ২০০২ ৪(১) ধারা মোতাবেক মামলা করে। যার নম্বর ৭(৯)১২। এ মামলার আরো ৭ আসামি জামিনে থাকলেও মাওলানা মোহাম্মদ সাইফুল্লাহ হজে থাকায় আদালতে উপস্থিত হতে পারেননি। আদালত তার অনুপস্থিতিতে ওয়ারেন্ট জারি করলে থানা পুলিশ তাকে গতকাল সোমবার উপজেলার নারিশা ইউনিয়নের পশ্চিমচর এলাকার নিজ বসতবাড়ি থেকে গ্রেফতার করে।
দোহার থানার উপপরিদর্শক (এসআই) অজয় কুমার চক্রবর্তী জানায়, তার বিরুদ্ধে আদালতের গ্রেফতারি পরোয়ানা ছিল।
লক্ষ্মীপুর ও রামগঞ্জ সংবাদদাতা জানান, কেন্দ্র ঘোষিত কর্মসূচির অংশ হিসেবে জেলার রামগঞ্জ উপজেলা জামায়াতের শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভ মিছিলে ছাত্রলীগের হামলায় ও সংঘর্ষে দুই পুলিশসহ ১৫ জন আহত হয়েছেন। আহতদের রামগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সসহ বিভিন্ন কিনিকে চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে। এ সময় ছাত্রলীগ কর্মীরা জামায়াত-শিবিরের মালিকানাধীন কয়েকটি হাসপাতাল, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও কয়েকটি ব্যবসায়প্রতিষ্ঠানে ব্যাপক ভাঙচুরসহ লুটপাট চালায়। প্রতিবাদে শিবিরকর্মীরা সাতটি সিএনজি ভাঙচুর করে। এ সময় সোনাপুর চৌরাস্তা থেকে ছাত্রলীগ কর্মীরা জামায়াতের কর্মী সন্দেহে একজনকে মারধর করে পুলিশের হাতে তুলে দেয়। ছাত্রলীগ ও শিবিরের সংঘর্ষে এ সময় শিবিরের সাইফুল ইসলাম আজগর, ফয়েজ আহম্মেদ, জামাল উদ্দীন, রায়হান উদ্দীন, ছাত্রলীগের দেলোয়ার, আলমগীর, আনোয়ার, মনির ও জুয়েল আহত হয়েছেন।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, গতকাল বেলা পৌনে ২টায় রামগঞ্জ নুর প্লাজা চত্বর থেকে উপজেলা জামায়াত-শিবিরের একটি বিশাল মিছিল সোনাপুর ইসলাম মার্কেটের কাছাকাছি যাওয়া মাত্র পশ্চিম দিক থেকে রামগঞ্জ উপজেলা ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা ধারালো অস্ত্র নিয়ে জামায়াত-শিবিরের মিছিলে হামলা করে ছাত্রশিবির নেতা সাইফুল ইসলামকে মারধর করে। এ সময় শিবিরকর্মীরা ছাত্রলীগকে পাল্টা ধাওয়া করে।
পরে শিবির নেতা সাইফুল ইসলামকে মারধরের প্রতিবাদে রামগঞ্জ সোনাপুর চৌরাস্তায় শিবিরকর্মীরা অবস্থান নিলে ছাত্রলীগ কর্মীরা ধারালো অস্ত্র নিয়ে শিবিরকর্মীদের ধাওয়া করে। এ সময় ছাত্রলীগ কর্মীরা রামগঞ্জ সোনাপুর চৌরাস্তাসংলগ্ন আধুনিক হাসপাতাল, আল হেলাল হাসপাতাল, এশিয়ান কিন্ডারগার্টেনে ব্যাপক ভাঙচুর ও লুট করে। কিছুক্ষণ পর একই গ্রুপ রামগঞ্জ উপজেলা জামায়াতের আমির মাস্টার আবুল হোসেনের ব্যবসায়প্রতিষ্ঠান বাটার শোরুমে হামলা ও ভাঙচুর করে তালা লাগিয়ে দেয়, সোনাপুর বড় মসজিদসংলগ্ন আল জামান গার্মেন্টে ভাঙচুর চালায়। বেলা ৩টায় রামগঞ্জ সরকারি কলেজ রোডে সিটি ল্যাব ডায়াগনস্টিক, রামগঞ্জ পৌর জামায়াতের আমির দেওয়ান মো: ইউসুফের মালিকানাধীন দেওয়ান গার্মেন্ট, রামগঞ্জ স্টেশন মডেল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়সংলগ্ন আকাবা হোল্ডিংস, কলাবাগান রোডে ইসলামী ব্যাংক ভবনের নিচে টিসিএল (টিভি ফ্রিজের) শোরুমে ব্যাপক ভাঙচুর করে।
ফরিদপুর অফিস জানায়, ফরিদপুরে ইসলামী ছাত্রশিবিরের মিছিলে হামলার পর ছত্রভঙ্গ করে দিয়ে জামায়াতের অফিস ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করেছে পুলিশ ও যুবলীগ-ছাত্রলীগ। এ সময় পুলিশ দুই রাউন্ড টিয়ার শেল ও দুই রাউন্ড ফাঁকা গুলিবর্ষণ করে। এতে জামায়াত ও শিবিরের ২৫ নেতাকর্মী আহত হন। এ সময় পুলিশ ছাত্রশিবিরের পাঁচজনকে আটক করেছে। গতকাল দুপুরে এ ঘটনা ঘটে।
বেলা ২টার দিকে শহরের গোলপুকুর মার্কেটের সামনে থেকে শ’ দুয়েক জামাতের কর্মীরা লাঠি নিয়ে মিছিল বের করে। মিছিলটি জনতা ব্যাংকের মোড়ের দিকে অগ্রসর হলে পুলিশ তাদের বাধা দেয়। পুলিশের ব্যারিকেড উপো করে কর্মীরা মিছিল করতে চাইলে পুলিশ লাঠিচার্জ শুরু করে তাদের ধাওয়া করে। এ সময় পুলিশ শটগানের দুই রাউন্ড ফাঁকা গুলি ছোড়ে ও দুই রাউন্ড টিয়ার শেল নিপে করে মিছিলকারীদের ছত্রভঙ্গ করে দেয়। এরপর জামায়াত ও শিবিরকর্মীদের পেয়ে বেদম পেটায় পুলিশ। এতে কমপে ৯ জামায়াত-শিবিরকর্মী আহত হন। পুলিশের ধাওয়া খেয়ে জামায়াতকর্মীরা বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান ও মসজিদে ঢুকে আত্মরা করে। এ সময় পুলিশ বিভিন্ন স্থান থেকে পাঁচ শিবিরকর্মীকে আটক করে বেধড়ক পিটুনি দেয়। তাদের মধ্যে এক শিবিরকর্মীকে থানায় আনার পথে ছাত্রলীগের কর্মীরা পুলিশের হাত থেকে ছিনিয়ে নিয়ে পিটিয়ে গুরুতর আহত করে। সংঘর্ষের পর অতিরিক্ত পুলিশ সুপার বিজয় বসাকের নেতৃত্বে কয়েক শ’ পুলিশ স্থানীয় চকবাজার জামে মসজিদে ঢুকে পড়ে। পুলিশ সেখান থেকে রুহুল আমিন নামে এক শিবিরকর্মীকে আটক করে। সংঘর্ষ চলাকালীন শহরের বেশির ভাগ দোকান বন্ধ হয়ে যায়। বেলা আড়াইটার দিকে পুলিশ স্থানীয় চকবাজারের জামায়াত কার্যালয়ে তালা ভেঙে পুলিশ ভেতরে প্রবেশ করে কুরআন শরিফ ও বইপত্র তছনছ করে। পুলিশ বের হয়ে আসার পর যুবলীগ ও ছাত্রলীগের কর্মীরা জামায়াত অফিসে আগুন ধরিয়ে দেয়। এ দিকে দুপুরের পর থেকে আওয়ামী লীগ, যুবলীগ ও ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা দফায় দফায় মিছিল করে। পুলিশ শহরের বিভিন্ন স্থান থেকে পাঁচ জামায়াত-শিবিরকর্মীকে আটক করেছে বলে জানা গেছে। তবে পুলিশের প থেকে তিনজনকে আটক করার কথা বলা হয়েছে। আটককৃতরা হলেনÑ রুহুল আমিন, আনোয়ার হোসেন ও শহিদুল পাল। বর্তমানে শহরে থমথমে পরিস্থিতি বিরাজ করছে। ছাত্রশিবিরের প থেকে দাবি করা হয়, তাদের শান্তিপূর্ণ মিছিলে পুলিশ ব্যাপক হামলা চালিয়ে তাদের ২০-২৫ নেতাকর্মীকে আহত করা হয়েছে। পুলিশের উপস্থিতিতে জামায়াত কার্যালয়ে আগুন দেয় ছাত্রলীগ।
রাজশাহী ব্যুরো জানায়, রাজশাহীতে বিশাল বিােভ মিছিল ও সমাবেশ করেছে জামায়াতে ইসলামী। মিছিলে মিছিলে প্রকম্পিত হয়ে ওঠে রাজশাহী মহানগরী। দলটির নেতারা জানান, প্রায় ৪০ হাজার নেতাকর্মী এ কর্মসূচিতে অংশ নেন। মিছিল শুরুর আধা ঘণ্টা আগে থেকেই নগরীর সাহেববাজার, মনিচত্বর, জিরোপয়েন্ট, গণকপাড়া সোনাদীঘি মোড়, হেতেম খাঁ, মালোপাড়া সড়কে যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। রাস্তায় লোকজনের চলাচল কমতে শুরু করে। তবে শান্তিপূর্ণভাবে মিছিল-সমাবেশ শেষ হওয়ার পরে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়। রাস্তায় যান চলাচল পুরোদমে শুরু হয়। আবার লোক সমাগম বাড়তে থাকে।
কেন্দ্র ঘোষিত কর্মসূচির অংশ হিসেবে গতকাল সোমবার বিকেল সাড়ে ৪টায় নগরীর সাহেববাজারে বিােভ-সমাবেশের আয়োজন করে রাজশাহী মহানগর জামায়াত। সমাবেশের পরে বিশাল মিছিলটি শুরু হয়ে বিভিন্ন সড়ক প্রদণি করে হেতেম খাঁ বড় মসজিদের কাছে গিয়ে শেষ হয়। মিছিলের আগে ও পেছনে কয়েক শ’ পুলিশ সদস্য নিরাপত্তার দায়িত্বে ছিলেন। জামায়াতের মিছিল-সমাবেশকে কেন্দ্র করে পুলিশের রণপ্রস্তুতিতে পথচারীসহ সাধারণ মানুষের মধ্যে আতঙ্ক দেখা দেয়। জামায়াতের হাজার হাজার নেতাকর্মীর গগনবিদারী সেøাগানে প্রকম্পিত হয়ে ওঠে নগরী। তারা নেতাদের মুক্তির দাবিতে মিছিলে বিভিন্ন ধরনের সেøাগান দেন। কোনো অনাকাক্সিত ঘটনা ছাড়াই মিছিল-সমাবেশ শেষ হয়। এ কর্মসূচিতে পুলিশের ভূমিকা ছিল সহযোগিতামূলক। ফলে কোনো অনাকাক্সিত ঘটনা ঘটেনি।
খুলনা ব্যুরো জানায়, জামায়াতে ইসলামী খুলনা মহানগরী শাখা গতকাল সোমবার সকালে নগরীতে বিক্ষোভ-সমাবেশ ও মিছিল করে। নগরীর ডাকবাংলোর বেবিস্ট্যান্ড চত্বরে অনুষ্ঠিত সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন মহানগরী আমির মাওলানা আবুল কালাম আজাদ। অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেনÑ নায়েবে আমির অধ্যাপক আবদুল মতিন ও মাস্টার শফিকুল আলম, সেক্রেটারি অধ্যাপক মাহফুজুর রহমান, সহকারী সেক্রেটারি অ্যাডভোকেট মুহাম্মদ শাহ আলম, মহানগর ছাত্রশিবির সভাপতি মু. সাইদুর রহমান সাইদ, খুলনা উত্তর জেলা জামায়াতের সহকারী সেক্রেটারি অধ্যাপক মিয়া গোলাম কুদ্দুস ও অধ্যাপক স ম এনামুল হক, ছাত্রশিবির উত্তর জেলা সভাপতি মো: শাহাদাত হোসেন সোহেল, খুলনা সদর থানা আমির অধ্যাপক জি এম শফিকুল ইসলাম, খানজাহান আলী থানা আমির মো: আজিজুর রহমান স্বপন, মহানগর ছাত্রশিবির সেক্রেটারি মো: আজিজুল ইসলাম ফারাজী ও সাংগঠনিক সম্পাদক মিম মিরাজ হুসাইন ও বিএল কলেজ ছাত্রশিবির সভাপতি এ কে এম তানজিম।
সিলেট ব্যুরো জানায়, সিলেট নগরীতে গতকাল বিকেলে জামায়াতের মিছিল চলাকালে পুলিশ সদস্যদের ফুল দিয়ে শুভেচ্ছা জানালো ছাত্রশিবির কর্মীরা। তারা মিছিলে সেøাগানও দিয়েছে ‘পুলিশ-শিবির ভাই ভাই, ছাত্রলীগের রা নাই’। এই সেøাগান সংবলিত ফেস্টুন নিয়ে মিছিলে অংশ নেয় তাদের বেশ ক’জন কর্মীও।
বর্তমান সরকার গত সাড়ে তিন বছরে প্রথমবারের মতো গতকাল সিলেটে সমাবেশ ও বিােভ মিছিল করার অনুমতি দেয় মেট্রোপলিটন পুলিশ। কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দের মুক্তির দাবিতে নগরীর কোর্ট পয়েন্টে বিােভ-সমাবেশ করার অনুমতি চেয়ে গত শনিবার সিলেট মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনার বরাবরে আবেদন করে সিলেট মহানগর জামায়াত। কিন্তু তাদেরকে সমাবেশের অনুমতি দেয়নি পুলিশ। পরে জামায়াতকে জানানো হয়, তারা কোর্ট পয়েন্টের পরিবর্তে রেজিস্ট্রারি মাঠে সমাবেশ ও চৌহাট্টা পর্যন্ত মিছিল করতে পারে। সে অনুযায়ী বেলা ৩টা থেকে রেজিস্ট্রারি মাঠে সমাবেশ করে জামায়াত-শিবির। বর্তমান সরকারের আমলে সর্ববৃহৎ এই সমাবেশে পুরো সিলেটের বিভিন্ন স্থান থেকে জামায়াত-শিবিরের আনুমানিক ২০ হাজার নেতাকর্মী যোগ দেন। পরে বিশাল মিছিল চৌহাট্টায় শেষ না হয়ে আম্বরখানায় গিয়ে শেষ হয়।
বরিশাল ব্যুরো জানায়, কেন্দ্রীয় কর্মসূচির অংশ হিসেবে বরিশালে বিক্ষোভ-সমাবেশ ও মিছিলের মাধ্যমে ব্যাপক শোডাউন করেছে মহানগর জামায়াত। গতকাল বেলা ৩টায় বরিশাল নগরীর অশ্বিনী কুমার টাউন হল চত্বরে আয়োজিত সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন মহানগর জামায়াতের আমির অ্যাডভোকেট মুয়াযযম হোসাইন হেলাল।
বক্তব্য রাখেনÑ বরিশাল পূর্ব জেলা জামায়াতের আমির অধ্যাপক আবদুল জব্বার, পশ্চিম জেলা জামায়াতের আমির অধ্যাপক হাবিবুর রহমান, মহানগর জামায়াতের ভারপ্রাপ্ত সেক্রেটারি মাওলানা মতিউর রহমান, মহানগর শিবিরের সভাপতি আবদুল্লাহ আল নাহিয়ান, সেক্রেটারি রহমত উল্যাহ সেলিমসহ বরিশাল মহানগর জামায়াত-শিবির নেতৃবৃন্দ।
রংপুর অফিস জানায়, বগুড়া শিবির নেতাদের হত্যাকাণ্ডের সাথে জড়িত পুলিশ, ছাত্রলীগ, যুবলীগ ও আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীদের অবিলম্বে গ্রেফতার ও ফাঁসি এবং অবৈধ ট্রাইব্যুনাল বাতিল ও আটক জামায়াত নেতাকর্মীদের নিঃশর্ত মুক্তির দাবিতে গতকাল সোমবার বিকেলে রংপুর মহানগরীতে বিক্ষোভ-মিছিল ও সমাবেশ করেছে জামায়াত।
পুলিশের মৌখিক অনুমতি সাপেক্ষে বিকেল ৫টায় নগরীর আশরাফিয়া জামে মসজিদের সামনে থেকে একটি বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে শাপলা চত্বরে সমাবেশ করে জামায়াত। এ সময় বক্তব্য রাখেনÑ জেলা আমির এ টি এম আজম খান, সেক্রেটারি ওবায়দুল্লাহ সালাফি ও থানা আমির অ্যাডভোকেট কাওসার আলী।
ফেনী অফিস জানায়, কেন্দ্র ঘোষিত কর্মসূচি অনুযায়ী গতকাল সোমবার বিকেলে ফেনীর ঐতিহাসিক মিজান ময়দানে জামায়াতে ইসলামীর বিােভ-সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। নির্ধারিত সময়ের আগে দুপুর থেকে জেলা শহর ছাড়াও বিভিন্ন উপজেলা থেকে খণ্ড খণ্ড মিছিল এসে বিশাল সমাবেশে রূপ নেয়। কানায় কানায় ভরে যায় মিজান ময়দান। সমাবেশে বক্তারা অবিলম্বে যুদ্ধাপরাধ ট্রাইব্যুনাল বাতিল করে জাতীয় নেতৃবৃন্দকে মুক্তি দিয়ে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচন দেয়ার দাবি জানান।
লোহাগাড়া (চট্টগ্রাম) সংবাদদাতা জানান, তিন বছর পর অনুমতি পেয়েই চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়কের কেরানীহাট এলাকায় ২০ সহস্রাধিক নেতাকর্মী নিয়ে মিছিল-সমাবেশ করেছে চট্টগ্রাম দণি জেলা জামায়াত। দীর্ঘ দিন পর এত বেশি উপস্থিতি নিয়ে মিছিল-সমাবেশ করাকে শোডাউন হিসেবেই দেখছেন রাজনৈতিক মহল। বেলা ৩টায় কেরানীহাট এলাকায় ট্রাইব্যুনাল বাতিল করে শীর্ষ নেতৃবৃন্দের মুক্তির দাবিতে অনুষ্ঠিত সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন সাতকানিয়া উপজেলা জামায়াতের আমির মাওলানা আবুল ফয়েজ।
লক্ষ্মীপুর সংবাদদাতা জানান, লক্ষ্মীপুর শহর জামায়াতের উদ্যোগে লক্ষ্মীপুর সমাদ হাইস্কুল মাঠে বিােভ-সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। শহর জামায়াতের আমির ফারুক হোসাইন মু. নুরনবীর সভাপতিত্বে সমাবেশে বক্তব্য রাখেনÑ নায়েবে আমির ডা: ফয়েজ আহম্মদ, অ্যাডভোকেট নজির আহম্মদ, জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক সাহাবুদ্দিন সাবু, জেলা সেক্রেটারি মাওলানা মফিজুল ইসলাম প্রমুখ।
কিশোরগঞ্জ সংবাদদাতা জানান, জামায়াতে ইসলামী কিশোরগঞ্জ শহর শাখার উদ্যোগে গতকাল বিকেলে বিােভ-মিছিল অনুষ্ঠিত হয়েছে। জামায়াতে ইসলামী কিশোরগঞ্জ শহর শাখার সভাপতি মো: সানাউল্লাহ ও কিশোরগঞ্জ সদর থানা শাখা জামায়াতের সভাপতি মাওলানা লোকমান হোসেন মিছিলে নেতৃত্ব দেন।
বান্দরবান সংবাদদাতা জানান, বান্দরবানে পুলিশ প্রহরায় গতকাল সোমবার বিকেলে জামায়াতে ইসলামীর নেতাকর্মীরা শহরে বিক্ষোভ মিছিল বের করেন। কেন্দ্রীয় জামে মসজিদ এলাকা থেকে মিছিলটি শুরু হয়ে শহরের গুরুত্বপূর্ণ সড়ক প্রদক্ষিণ করে। এ সময় শহরের বিভিন্ন জায়গায় পুলিশ-দাঙ্গা পুলিশ মোতায়েন করা হয়। মিছিলটি পরে মসজিদ এলাকায় গিয়ে বিক্ষোভ-সমাবেশের মাধ্যমে শেষ হয়। জেলা জামায়াতের আমির মাওলানা আবদুস সামাদ আজাদের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সভায় বক্তব্য রাখেনÑ জামায়াত নেতা অ্যাডভোকেট আবুল কালাম, পৌর জামায়াত নেতা তাজউদ্দিন, রেজাউল করিম, আবদুল হামিদ, জেলা ছাত্রশিবির সভাপতি হারপনুর রশিদ প্রমুখ।
চাঁপাইনবাবগঞ্জ সংবাদদাতা জানান, গতকাল চাঁপাইনবাবগঞ্জ বড়ইন্দারা মোড়ে ট্রাইব্যুনাল বাতিল, শীর্ষ নেতৃবৃন্দের মুক্তি ও কেয়ারটেকার সরকার পুনর্বহালের দাবিতে জামায়াতের এক নজিরবিহীন বিশাল বিক্ষোভ-সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। জামায়াতের জেলা আমির অধ্যক্ষ নজরুল ইসলামের সভাপতিত্বে এই বিক্ষোভ-সমাবেশে বক্তব্য রাখেনÑ জামায়াতের সাবেক আমির অধ্যাপক রফিকুল ইসলাম, জেলা নায়েবে আমির সাবেক এমপি অধ্যাপক লতিফুর রহমান, জেলা সেক্রেটারি মাওলানা আবু জার গিফারি, পৌর আমির অধ্যাপক মোখলেসুর রহমান, উপজেলা আমির অধ্যাপক আবু বকর, ইসলামী ছাত্রশিবিরের শহর সভাপতি মো: শফিক এনায়েতউল্লাহ প্রমুখ।
কুষ্টিয়া সংবাদদাতা জানান, বগুড়ায় চার জামায়াত-শিবিরের নেতাকর্মীকে হত্যা ও সব রাজবন্দীর মুক্তি দাবি ও হরতালের সমর্থনে গতকাল কুষ্টিয়া জেলা জামায়াতের উদ্যোগে বিােভ মিছিল বের করে। বিােভ মিছিলে উপস্থিত ছিলেন জেলা জামায়াতের সহকারী সম্পাদক মাওলানা আবুল হাশেম, শিবিরের শহর শাখার সভাপতি সোহেল রানা ও সাধারণ সম্পাদক মোস্তাফিজুর রহমান পলাশ প্রমুখ।
সাতকানিয়া (চট্টগ্রাম) সংবাদদাতা জানান, গতকাল দুপুরে সাতকানিয়া উপজেলা জামায়াতের উদ্যোগে কেরানীহাট চত্বরে সমাবেশ ও বিােভ মিছিল অনুষ্ঠিত হয়। উপজেলা জামায়াতের আমির মৌলানা আবুল ফয়েজের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সমাবেশে প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন দণি জেলা জামায়াত আমির মো: ইছহাক।
পাবনা সংবাদদাতা জানান, গতকাল কেন্দ্রর ঘোষিত এ কর্মসূচি দলীয় কার্যালয় চত্বর থেকে শুরু করে শহরের প্রধান প্রধান সড়ক প্রদণি করে। মিছিলে নেতৃত্ব দেন পাবনা জেলা জামায়াতের ভারপ্রাপ্ত আমির মাওলানা জহুরুল ইসলাম, নায়েবে আমির মাওলানা আবদুস সামাদ, সেক্রেটারি অধ্যাপক আবু তালেব মণ্ডল, পৌর আমির অধ্য ইকবাল হুসাইন, সদর আমির অধ্যাপক আবদুল গাফফার খান, সেক্রেটারি মাওলানা আবদুর রব, পৌর সেক্রেটারি মো: ফজলুর রহমান, শিবির শহর সভাপতি আরিফুল ইসলাম, সেক্রেটারি মিনহাজ উদ্দিন, জেলা সভাপতি আবু ইসহাক প্রমুখ।
চৌদ্দগ্রাম (কুমিল্লা) সংবাদদাতা জানান, ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের চৌদ্দগ্রাম বাজারে বিশাল বিােভ মিছিল ও সমাবেশ করেছে উপজেলা জামায়াত। মিছিলে নেতৃত্ব দেন জামায়াতের উপজেলা আমির সাহাব উদ্দিন, সেক্রেটারি শাহ মো: মিজানুর রহমান, সহকারী সেক্রেটারি ও পৌর আমির মাহফুজুর রহমান, শিবিরের কুমিল্লা দণি জেলা সেক্রেটারি আবদুর রব ফারুকী প্রমুখ।
ময়মনসিংহ অফিস জানায়, বিকেলে শহরের ত্রিশাল বাসস্ট্যান্ডে শহর শাখার আমির মাওলানা মোজাম্মেল হক আকন্দের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সমাবেশে প্রধান অতিথি ছিলেন জামায়াতে ইসলামী জেলা সেক্রেটারি আব্দুল করিম। বক্তব্য রাখেন ইসলামী ছাত্রশিবিরের শহর সেক্রেটারি সাজিবুর রহমান, শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশনের শহর সভাপতি শহীদুল্লাহ কায়সার ও শিবির নেতা কামরুল আহসান ইমরুল।
ভোলা সংবাদদাতা জানান, ট্রাইবুনাল বাতিল, দেলাওয়ার হোসাইন সাইদীসহ সব কেন্দ্রীয় নেতার মুক্তির দাবিতে গতকাল সোমবার বিকেলে ভোলায় জামায়াতে ইসলামীর নেতাকর্মীরা বিক্ষোভ মিছিল করেছে।
মিছিল শেষে সংক্ষিপ্ত সমাবেশে বক্তব্য রাখেন জেলা জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি অধ্যক্ষ জিয়াউল মোর্শেদ। মিছিলের শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত বিপুলসংখ্যক পুলিশ মোতায়েন ছিল।
মুন্সীগঞ্জ সংবাদদাতা জানান, গতকাল সোমবার বিকেল ৪টায় মুন্সীগঞ্জের মুক্তারপুর এলাকায় বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ করেছে জেলা জামায়াত। মিছিলটি মুক্তারপুর পেট্রলপাম্প থেকে শুরু হয়ে ব্রিজের ঢালে গিয়ে সংক্ষিপ্ত সমাবেশের মধ্য দিয়ে শেষ হয়।
যশোর অফিস জানায়, গতকাল বিকেলে বিক্ষোভ সমাবেশ করেছে জামায়াতে ইসলামী যশোর জেলা শাখা। সমাবেশটি শহরের প্রাণকেন্দ্র দড়াটানার ভৈরব চত্বরে হওয়ার কথা থাকলেও সেখানে ছাত্রলীগ সমাবেশ করার ঘোষণা দিলে প্রশাসন ১৪৪ ধারা জারি করে।
জেলা জামায়াতের আমির অধ্যাপক আব্দুর রশিদের সভাতিত্বে সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন জামায়াতের কেন্দ্রীয় নেতা মাওলানা আজীজুর রহমান।
হবিগঞ্জ সংবাদদাতা জানান, জেলা আমির মাওলানা মুখলিছুর রহমানের সভাপতিত্বে ও সেক্রেটারি মাওলানা মুশাহিদ আলীর পরিচালনায় জামায়াতের সমাবেশে বক্তব্য রাখেন জেলা জামায়াতের জয়েন্ট সেক্রেটারি মাওলানা লুৎফুর রহমান, বিশিষ্ট আইনজীবী অ্যাডভোকেট রহমতে এলাহী, জেলা শিবির সভাপতি খলিলুর রহমান, সেক্রেটারি আতিকুল ইসলাম সোহাগ প্রমুখ।
সাঁথিয়া (পাবনা) সংবাদদাতা জানান, জামায়াতের উপজেলা শাখা আমির অধ্যা মোহাম্মদ আলীর সভাপতিত্বে ও নেতৃত্বে দলীয় কার্যালয় থেকে বিােভ মিছিলটি উপজেলা সদরের প্রধান প্রধান সড়ক প্রদণি করে।
নোয়াখালী সংবাদদাতা জানান, গতকাল বিকেলে জামায়াতে ইসলামীর উদ্যোগে নোয়াখালীর প্রধান বাণিজ্য শহর চৌমুহনী রেলওয়ে চত্বরে এক সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। চৌমুহনী পৌর আমির নাসিমুলগনি মহল চৌধুরীর সভাপতিত্বে সমাবেশে বক্তব্য রাখেনÑ বেগমগঞ্জ উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান বোরহান উদ্দিন, জামায়াতের উপজেলা আমির মাওলানা দেলোয়ার হোসেনের শিবিরের (উত্তর) জেলা সভাপতি মাসুমবিল্লাহ মোবাশ্বের হোসাইন প্রমুখ।
ব্রাহ্মণবাড়িয়া সংবাদদাতা জানান, অবশেষে স্থানীয় কর্তৃপক্ষের অনুমতি নিয়ে গতকাল সোমবার বিকেলে ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা শাখা শান্তিপূর্ণ সমাবেশ করেছে।
জেলা জামায়াতের প্রচার সম্পাদক কাজী সিরাজুল ইসলাম এতে সভাপতিত্ব করেন।
মাগুরা সংবাদদাতা জানান, মাগুরায় জামায়াতের বিক্ষোভ-মিছিল ও সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়েছে।
শহরের দরিমাগুরা এলাকা থেকে মিছিল শুরু হয়ে আল-আমিন কমপ্লেক্স চত্বরে গিয়ে শেষ হয়। এ সময় সংক্ষিপ্ত সমাবেশে বক্তব্য রাখেনÑ জেলা সেক্রেটারি মারুফ কারকী, লিয়াকত হোসেন, রবিউল ইসলাম প্রমুখ।
মৌলভীবাজার সংবাদদাতা জানান, গতকাল সোমবার বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী মৌলভীবাজার জেলা শাখার উদ্যোগে শহরের চৌমুহনী থেকে একটি বিরাট বিােভ মিছিল বের হয়ে কুসুমবাগ গিয়ে সমাবেশের মধ্য দিয়ে শেষ হয়। সমাবেশে বক্তব্য রাখেনÑ জেলা জামায়াতের আমির আবদুল মান্নান, জেলা সেক্রেটারি মো: শাহেদ আলী, সদর আমির আলাউদ্দিন শাহ, ছাত্র শিবিরের শহর সভাপতি হাফেজ তাজুল ইসলাম প্রমুখ।
নাটোর সংবাদদাতা জানান, বিকেলে শহরের বড় হরিশপুর বাইপাস মোড়ে নাটোর জেলা জামায়াত আয়োজিত জনসভায় সভাপতিত্ব করেন জেলা আমির অধ্যাপক মো: ইউনুস আলী।
টাঙ্গাইল সংবাদদাতা জানান, শহরের সাবালিয়ায় দলীয় কার্যালয়ের সামনে টাঙ্গাইল সদর ও পৌর জামায়াত এই কর্মসূচি পালন করে। সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন পৌর আমির আহসান হাবীব মাসুদ। প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেনÑ জামায়াতের জেলা আমির অধ্যাপক মাওলানা আবদুল হামিদ।
বাগেরহাট সংবাদদাতা জানান, জামায়াত বিকেলে বিােভ-মিছিল ও সমাবেশ করেছে। মিছিল শেষে দশানী ট্রাফিক স্ট্যান্ডে সমাবেশে বক্তৃতা করেনÑ জেলা জামায়াতের নায়েবে আমির মাওলানা রেজাউল করিম, জেলা সেক্রেটারি অ্যাডভোকেট শেখ আব্দুল ওয়াদুদ, শেখ মো: ইউনুস, অধ্যাপক ইকবাল হুসাইন, ডা: আব্দুল লতিফ, শিবির সভাপতি আজমল হুসাইন প্রমুখ।
কুমিল্লা সংবাদদাতা জানান, গতকাল কুমিল্লা মহানগরীর জামায়াত নগরীর চকবাজার বাস টার্মিনালে এক বিশাল সমাবেশের আয়োজন করে। সমাবেশ শেষে দেশব্যাপী আজ মঙ্গলবার সকাল-সন্ধ্যা হরতালের সমর্থনে বিােভ মিছিল বের করা হয়। সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন কুমিল্লা মহানগর জামায়াতের নায়েবে আমির আমিনুল হক।
এ দিকে আজকের হরতালের সমর্থনে টঙ্গী, জামালপুর ও গাজীপুরে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। গাজীপুরে ভাঙচুর ও দু’টি গাড়িতে অগ্নিসংযোগ করা হয়েছে।
দোহার থানা জামায়াত আমির গ্রেফতার
দোহার নবাবগঞ্জ (ঢাকা) সংবাদদাতা জানান, দোহার থানার জামায়াতে ইসলামীর আমির মাওলানা মোহাম্মদ সাইফুল্লাহকে (৪০) গ্রেফতার করেছে দোহার থানা পুলিশ। গতকাল সোমবার সন্ধ্যা ৭টায় উপজেলার নারিশা ইউনিয়নের পশ্চিমচর এলাকার নিজ বাড়ি থেকে তাকে গ্রেফতার করা হয়। মাওলানা মোহাম্মদ সাইফুল্লাহ ওই গ্রামের মো: আজহার আলীর ছেলে।
তার বিরুদ্ধে দোহার থানায় পুলিশ দ্রুত বিচার আইন ২০০২ ৪(১) ধারা মোতাবেক মামলা করে। যার নম্বর ৭(৯)১২। এ মামলার আরো ৭ আসামি জামিনে থাকলেও মাওলানা মোহাম্মদ সাইফুল্লাহ হজে থাকায় আদালতে উপস্থিত হতে পারেননি। আদালত তার অনুপস্থিতিতে ওয়ারেন্ট জারি করলে থানা পুলিশ তাকে গতকাল সোমবার উপজেলার নারিশা ইউনিয়নের পশ্চিমচর এলাকার নিজ বসতবাড়ি থেকে গ্রেফতার করে।
দোহার থানার উপপরিদর্শক (এসআই) অজয় কুমার চক্রবর্তী জানায়, তার বিরুদ্ধে আদালতের গ্রেফতারি পরোয়ানা ছিল।
No comments