আসছে নতুন বই, লোকসমাগম ও বিক্রি কম- বই মেলায় প্রাণের উৎসব by শফিকুল ইসলাম
অমর একুশে গ্রন্থমেলার চতুর্থ দিন ছিল গতকাল সোমবার। প্রতিদিনই
গ্রন্থমেলায় নতুন নতুন বইয়ের সংখ্যা বাড়ছে। এ দিন মেলায় নতুন ১১০টি বই
এসেছে। তবে লোকসমাগম হ্রাস পাওয়ায় বিক্রিতে কিছুটা ভাটা পড়েছে।
এর
কারণ হিসেবে অনেকেই রাজনৈতিক পরিস্থিতিকে দায়ী করছেন। এ জন্য আজ
মঙ্গলবারও একই পরিস্থিতি হতে পারে বলে অনেকেই মনে করছেন। কেউ কেউ মনে করছেন
মেলা কেবল শুরু। সামনে বেচাবিক্রি বেশি হবে। এ দিকে বিকেলে মেলাঙ্গনে
লোকসমাগম বাড়লেও পড়ন্ত বিকেলে মেলায় ক্রেতা-দর্শকের উপস্থিতি কমতে থাকে।
সন্ধ্যায় অনেকটা ফাঁকা হয়ে পড়ে মেলাঙ্গন। গতকাল গ্রন্থমেলায় গিয়ে এসব
জানা ও দেখা গেছে।
এগিয়ে যেতে হবে বহুদূর : বাংলা একাডেমীর অমর একুশে গ্রন্থমেলায় এসেছিলেন বিশিষ্ট সঙ্গীতশিল্পী মুস্তাফা জামান আব্বাসী। বই কিনেছেন নাতনির জন্য। এবার বইমেলায় তার তিনটি বই বের হবে এবং স্ত্রী আসমা আব্বাসীর দু’টি বই বের হয়েছে। নানা বিষয়ে কথা হয় তার সাথে। তিনি বলেন, এবারের মেলার আয়োজন খুবই ভালো। পরিবেশ ভালো লাগছে। যারা মেলায় আসছে তারা বইও কিনছে বলে তিনি মন্তব্য করেন। তবে তারা সিরিয়াস অর্থাৎ গবেষণাধর্মী বই কিনছে না বলে তিনি অভিযোগ করেন। তিনি বলেন, বিশেষ করে আমাদের দেশের সঙ্কট-সমাধান এবং সংস্কৃতি নিয়ে রচিত এমন বইয়ের সংখ্যাও কম, ক্রেতাও কম।
বিক্রি কম : গতকাল মেলায় লোকসমাগম কম থাকায় বিক্রি তেমন একটা হয়নি বলে জানালেন বিক্রেতা ও প্রকাশকেরা। তারা বলছেন, দেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতি ভালো না হওয়ায় মেলায় লোকজন কম আসছে। যারা আসছে এদের অনেকেই ঘুরতে আসছে। এ ছাড়া দু-একটি বই কিনছে মাত্র। তবে হাতেগোনা কয়েকটি স্টলে কিছু বিক্রি হয়েছে। ঐতিহ্য প্রকাশনীর স্টল ইনচার্জ আমজাদ হোসেন কাজল জানালেন, শুরুতে গ্রন্থমেলায় লোকসমাগম ভালোই ছিল। কিন্তু হঠাৎ করেই আজ (সোমবার) ক্রেতা-দর্শকের উপস্থিতি কমে গেছে। প্রত্যাশা অনুযায়ী বিক্রি হচ্ছে না। একই কথা জানালেন, প্রান্ত প্রকাশনীর আমিনুর রহমান বলেন, মেলার পরিবেশ ভালো। কিন্তু লোকসমাগম হঠাৎ করেই কমে গেল। তবে পরিস্থিতি ভালো হবে বলে তিনি আশা করেন। আরো বিভিন্ন স্টল মালিক ও প্রকাশক এ ব্যাপারে একই অনুভূতি ব্যক্ত করেন।
মোড়ক উন্মোচন : গতকাল সন্ধ্যা পর্যন্ত গ্রন্থমেলায় পাঁচটি নতুন বইয়ের মোড়ক উন্মোচন করা হয়। এসবের মধ্যে ভাষা প্রকাশ থেকে দিলদার হোসেনের কৃষকের কাব্য শ্রমিকের গান, আজকাল থেকে রাবেয়া বসরী রাত্রির জনপ্রিয় হুমায়ুন, সিঁড়ি প্রকাশন থেকে নাসরনি রুবির মেঘের পালক।
মেলার নতুন বই : গতকাল একুশে গ্রন্থমেলায় ১১০টি নতুন বই প্রকাশিত হয়েছে। এর মধ্যে গল্প ১১টি, উপন্যাস ১৯টি, প্রবন্ধ ২২টি, কবিতা ১৯টি, গবেষণা দু’টি, জীবনী তিনটি, ইতিহাস দু’টি, অনুবাদ দু’টি, রম্যরচনা তিনটি ও ভ্রমণ দু’টি। নতুন বইয়ের মধ্যে অনন্যা এনেছে আসমা আব্বাসী রচিত গল্পের বই উচাটন মন ঘরে রয় না, মহিউদ্দীন খান আলমগীরের জেল থেকে লেখা বাংলাদেশ, অনিন্দ্য এনেছে সুরমা জাহিদের সম্পাদিত বহির্বিশ্বে গণমাধ্যমে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ, মঈনুল আহসান সাবের রচিত বই এখন পরিমল, আহমদ রফিকের কবিতাসমগ্র, হাসান হাফিজ সম্পাদিত বহুমাত্রিক রবীন্দ্রনাথ, শ্রাবণ প্রকাশনী এনেছে এ এন এম নূরুল হক রচিত ধর্ম অধর্ম, ঐতিহ্য এনেছে অথির শেরপার কাব্যগ্রন্থ কোকিলের রাগতস্বর, কামাল পাশার ভূমিকম্প সহনীয় ও পরিবেশ বান্ধব দালান নির্মাণ, অন্য প্রকাশ এনেছে সুমন্ত আসলামের মহা বিপদে পাঁচ গোয়েন্দা, আহমদ রফিকের ইতিহাস গ্রন্থ বাঙালির স্বাধীনতা যুদ্ধ, আগামী এনেছে বশীর আল হেলালের কিশোর সাহিত্য আনারসের হাসি, তসলিমা নাসরিনের কলাম নষ্ট মেয়ের নষ্ট গদ্য ইত্যাদি।
মেলামঞ্চের অনুষ্ঠান : গতকাল বিকেল ৪টায় মেলার মূল মঞ্চে ‘প্রযুক্তি বিপ্লব ও মুদ্রিত বইয়ের ভবিষ্যৎ’ শীর্ষক সেমিনার অনুষ্ঠিত হয়। এতে প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন প্রকাশক করুণাংশু বড়–য়া। আলোচনায় অংশ নেন তথ্যপ্রযুক্তি বিশেষজ্ঞ মোস্তাফা জব্বার, কবি অসীম সাহা ও কবি মজিদ মাহমুদ। এতে সভাপতিত্ব করেন মিনেসেটো ও শিকাগো বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক অধ্যাপক ড. শামসুল বারি।
প্রাবন্ধিক বলেন, নানা বিবর্তনের মধ্য দিয়ে বই বর্তমান আদল পেয়েছে। ভূর্জপত্র থেকে ই-বুকে উত্তরণ এলে মানবসভ্যতার অগ্রগতিরই স্মারক। তবে ই-বুকের বিকাশ যে মুদ্রিত বইয়ের জগৎকে সঙ্কুচিত করে দিয়েছে তা নয় বরং সাম্প্রতিক বিভিন্ন জরিপে দেখা গেছে বইয়ের ই-ভার্সন যাচাই করে পাঠকের মধ্যে মুদ্রিত সংস্করণের চাহিদা সৃষ্টি হয়।
আলোচকেরা বলেন, মুদ্রিত বই ও প্রযুক্তিগত বিপ্লবের মধ্যে আদতে কোনো বিরোধ নেই। কারণ প্রযুক্তি বইয়ের প্রচলিত কাঠামোকে ভিন্নরূপ দান করেছে মাত্র। ই-বুকের সম্প্রসারণ বইকে দেশের সীমানা ভেঙে বিশ্বের সব প্রান্তে পৌঁছে দিয়েছে।
সভাপতির বক্তব্যে শামসুল বারি বলেন, প্রযুক্তিগত পরিবর্তন আত্মস্থ করার মানসিকতা আমাদের সমাজে দুর্লভ। মূলত অজ্ঞতা থেকে প্রযুক্তিবিমুখতার জন্ম।
সন্ধ্যায় সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে আবৃত্তি পরিবেশন করেন আবৃত্তিশিল্পী মুস্তফা ওয়ালীদ ও ডালিয়া আহমেদ। সঙ্গীত পরিবেশন করেন কণ্ঠশিল্পী নাশিদ কামাল, ইয়াকুব আলী খান, ইয়াসমিন মুশতারী, এ কে এম শাহীদ কবীর পলাশ, প্রিয়াংকা গোপ, নাসিমা শাহীন ফেন্সী ও রাজিয়া সুলতানা মুক্তি।
মেলায় আজ : আজ মঙ্গলবার গ্রন্থমেলার মূলমঞ্চে বিকেল ৪টায় ‘স্বারস্বত ড. মুহম্মদ এনামুল হকের সারাৎসার’ শীর্ষক আলোচনা অনুষ্ঠিত হবে। এতে প্রবন্ধ উপস্থাপন করবেন মহাম্মদ দানীউল হক। আলোচনায় অংশ নেবেন মনসুর মুসা, জীনাত ইমতিয়াজ আলী ও রহমান হাবিব। সভাপতিত্ব করবেন মুস্তাফা নূরউল ইসলাম। সন্ধ্যায় থাকছে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান।
এগিয়ে যেতে হবে বহুদূর : বাংলা একাডেমীর অমর একুশে গ্রন্থমেলায় এসেছিলেন বিশিষ্ট সঙ্গীতশিল্পী মুস্তাফা জামান আব্বাসী। বই কিনেছেন নাতনির জন্য। এবার বইমেলায় তার তিনটি বই বের হবে এবং স্ত্রী আসমা আব্বাসীর দু’টি বই বের হয়েছে। নানা বিষয়ে কথা হয় তার সাথে। তিনি বলেন, এবারের মেলার আয়োজন খুবই ভালো। পরিবেশ ভালো লাগছে। যারা মেলায় আসছে তারা বইও কিনছে বলে তিনি মন্তব্য করেন। তবে তারা সিরিয়াস অর্থাৎ গবেষণাধর্মী বই কিনছে না বলে তিনি অভিযোগ করেন। তিনি বলেন, বিশেষ করে আমাদের দেশের সঙ্কট-সমাধান এবং সংস্কৃতি নিয়ে রচিত এমন বইয়ের সংখ্যাও কম, ক্রেতাও কম।
বিক্রি কম : গতকাল মেলায় লোকসমাগম কম থাকায় বিক্রি তেমন একটা হয়নি বলে জানালেন বিক্রেতা ও প্রকাশকেরা। তারা বলছেন, দেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতি ভালো না হওয়ায় মেলায় লোকজন কম আসছে। যারা আসছে এদের অনেকেই ঘুরতে আসছে। এ ছাড়া দু-একটি বই কিনছে মাত্র। তবে হাতেগোনা কয়েকটি স্টলে কিছু বিক্রি হয়েছে। ঐতিহ্য প্রকাশনীর স্টল ইনচার্জ আমজাদ হোসেন কাজল জানালেন, শুরুতে গ্রন্থমেলায় লোকসমাগম ভালোই ছিল। কিন্তু হঠাৎ করেই আজ (সোমবার) ক্রেতা-দর্শকের উপস্থিতি কমে গেছে। প্রত্যাশা অনুযায়ী বিক্রি হচ্ছে না। একই কথা জানালেন, প্রান্ত প্রকাশনীর আমিনুর রহমান বলেন, মেলার পরিবেশ ভালো। কিন্তু লোকসমাগম হঠাৎ করেই কমে গেল। তবে পরিস্থিতি ভালো হবে বলে তিনি আশা করেন। আরো বিভিন্ন স্টল মালিক ও প্রকাশক এ ব্যাপারে একই অনুভূতি ব্যক্ত করেন।
মোড়ক উন্মোচন : গতকাল সন্ধ্যা পর্যন্ত গ্রন্থমেলায় পাঁচটি নতুন বইয়ের মোড়ক উন্মোচন করা হয়। এসবের মধ্যে ভাষা প্রকাশ থেকে দিলদার হোসেনের কৃষকের কাব্য শ্রমিকের গান, আজকাল থেকে রাবেয়া বসরী রাত্রির জনপ্রিয় হুমায়ুন, সিঁড়ি প্রকাশন থেকে নাসরনি রুবির মেঘের পালক।
মেলার নতুন বই : গতকাল একুশে গ্রন্থমেলায় ১১০টি নতুন বই প্রকাশিত হয়েছে। এর মধ্যে গল্প ১১টি, উপন্যাস ১৯টি, প্রবন্ধ ২২টি, কবিতা ১৯টি, গবেষণা দু’টি, জীবনী তিনটি, ইতিহাস দু’টি, অনুবাদ দু’টি, রম্যরচনা তিনটি ও ভ্রমণ দু’টি। নতুন বইয়ের মধ্যে অনন্যা এনেছে আসমা আব্বাসী রচিত গল্পের বই উচাটন মন ঘরে রয় না, মহিউদ্দীন খান আলমগীরের জেল থেকে লেখা বাংলাদেশ, অনিন্দ্য এনেছে সুরমা জাহিদের সম্পাদিত বহির্বিশ্বে গণমাধ্যমে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ, মঈনুল আহসান সাবের রচিত বই এখন পরিমল, আহমদ রফিকের কবিতাসমগ্র, হাসান হাফিজ সম্পাদিত বহুমাত্রিক রবীন্দ্রনাথ, শ্রাবণ প্রকাশনী এনেছে এ এন এম নূরুল হক রচিত ধর্ম অধর্ম, ঐতিহ্য এনেছে অথির শেরপার কাব্যগ্রন্থ কোকিলের রাগতস্বর, কামাল পাশার ভূমিকম্প সহনীয় ও পরিবেশ বান্ধব দালান নির্মাণ, অন্য প্রকাশ এনেছে সুমন্ত আসলামের মহা বিপদে পাঁচ গোয়েন্দা, আহমদ রফিকের ইতিহাস গ্রন্থ বাঙালির স্বাধীনতা যুদ্ধ, আগামী এনেছে বশীর আল হেলালের কিশোর সাহিত্য আনারসের হাসি, তসলিমা নাসরিনের কলাম নষ্ট মেয়ের নষ্ট গদ্য ইত্যাদি।
মেলামঞ্চের অনুষ্ঠান : গতকাল বিকেল ৪টায় মেলার মূল মঞ্চে ‘প্রযুক্তি বিপ্লব ও মুদ্রিত বইয়ের ভবিষ্যৎ’ শীর্ষক সেমিনার অনুষ্ঠিত হয়। এতে প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন প্রকাশক করুণাংশু বড়–য়া। আলোচনায় অংশ নেন তথ্যপ্রযুক্তি বিশেষজ্ঞ মোস্তাফা জব্বার, কবি অসীম সাহা ও কবি মজিদ মাহমুদ। এতে সভাপতিত্ব করেন মিনেসেটো ও শিকাগো বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক অধ্যাপক ড. শামসুল বারি।
প্রাবন্ধিক বলেন, নানা বিবর্তনের মধ্য দিয়ে বই বর্তমান আদল পেয়েছে। ভূর্জপত্র থেকে ই-বুকে উত্তরণ এলে মানবসভ্যতার অগ্রগতিরই স্মারক। তবে ই-বুকের বিকাশ যে মুদ্রিত বইয়ের জগৎকে সঙ্কুচিত করে দিয়েছে তা নয় বরং সাম্প্রতিক বিভিন্ন জরিপে দেখা গেছে বইয়ের ই-ভার্সন যাচাই করে পাঠকের মধ্যে মুদ্রিত সংস্করণের চাহিদা সৃষ্টি হয়।
আলোচকেরা বলেন, মুদ্রিত বই ও প্রযুক্তিগত বিপ্লবের মধ্যে আদতে কোনো বিরোধ নেই। কারণ প্রযুক্তি বইয়ের প্রচলিত কাঠামোকে ভিন্নরূপ দান করেছে মাত্র। ই-বুকের সম্প্রসারণ বইকে দেশের সীমানা ভেঙে বিশ্বের সব প্রান্তে পৌঁছে দিয়েছে।
সভাপতির বক্তব্যে শামসুল বারি বলেন, প্রযুক্তিগত পরিবর্তন আত্মস্থ করার মানসিকতা আমাদের সমাজে দুর্লভ। মূলত অজ্ঞতা থেকে প্রযুক্তিবিমুখতার জন্ম।
সন্ধ্যায় সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে আবৃত্তি পরিবেশন করেন আবৃত্তিশিল্পী মুস্তফা ওয়ালীদ ও ডালিয়া আহমেদ। সঙ্গীত পরিবেশন করেন কণ্ঠশিল্পী নাশিদ কামাল, ইয়াকুব আলী খান, ইয়াসমিন মুশতারী, এ কে এম শাহীদ কবীর পলাশ, প্রিয়াংকা গোপ, নাসিমা শাহীন ফেন্সী ও রাজিয়া সুলতানা মুক্তি।
মেলায় আজ : আজ মঙ্গলবার গ্রন্থমেলার মূলমঞ্চে বিকেল ৪টায় ‘স্বারস্বত ড. মুহম্মদ এনামুল হকের সারাৎসার’ শীর্ষক আলোচনা অনুষ্ঠিত হবে। এতে প্রবন্ধ উপস্থাপন করবেন মহাম্মদ দানীউল হক। আলোচনায় অংশ নেবেন মনসুর মুসা, জীনাত ইমতিয়াজ আলী ও রহমান হাবিব। সভাপতিত্ব করবেন মুস্তাফা নূরউল ইসলাম। সন্ধ্যায় থাকছে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান।
No comments