না’গঞ্জসহ কয়েক জেলায় পুলিশের ওপর শিবির কর্মীদের হামলা- শিবিরকে জনতার ধাওয়া ॥ চাষাঢ়া রণক্ষেত্র
নারায়ণগঞ্জ, বগুড়া, নীলফামারী, হবিগঞ্জ ও
দিনাজপুরসহ কয়েকটি জেলায় শনিবার দায়িত্বপালনরত পুলিশের ওপর মারমুখী
জামায়াত-শিবির কর্মীরা হামলা চালিয়েছে।
এ সময় ধাওয়া
পাল্টাধাওয়া ও সংঘর্ষের ঘটনাও ঘটে। জামায়াত-শিবিরের হামলা ও সংঘর্ষে প্রায়
অর্ধশত আহত হয়েছে। পুলিশ অন্তত ৩৭ জনকে আটক করেছে। বগুড়ায় জামায়াতের ডাকা
শনিবারের হরতালের সমর্থনে বিভিন্ন জেলায় মিছিল সমাবেশ করে জামায়াত-শিবির।
এসব মিছিল সমাবেশ থেকেই পুলিশের ওপর হামলা চালায় তারা। তবে নারায়ণগঞ্জে
পুলিশের উপর পরিকল্পিত ও সংঘবদ্ধ হামলা চালানো হয়। এখানে শিবির চক্রের
হামলায় এক এএসআইসহ ১০ পুলিশ আহত হয়। তবে কয়েকটি স্থানে হামলা চালাতে গিয়ে
জামায়াত শিবির জনতার রোষে পড়েছে। দিনাজপুর ও নীলফামারীতে হামলার সময়
শিবিরকে জনতা ধাওয়া করে। খবর স্টাফ রিপোর্টার ও নিজস্ব সংবাদদাতার।
নারায়ণগঞ্জ ॥ শনিবার সকালে নারায়ণগঞ্জ শহরের প্রাণকেন্দ্র চাষাঢ়ায় পুলিশের উপর অতর্কিত হামলা চালায় শিবিরের ক্যাডাররা। লাঠি দিয়ে প্রকাশ্যে রাস্তায় ফেলে পুলিশকে নির্মমভাবে পেটায় তারা। শিবিরের দ্বিমুখী হামলায় পুলিশের এক এএসআইসহ ১০ পুলিশ সদস্য আহত হয়েছে। আহতদের মধ্যে এএসআই আবু জাফরের (৫০) অবস্থা আশঙ্কাজনক। তাঁকে রাজারবাগ পুলিশ লাইনস হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। খবর পেয়ে অতিরিক্ত পুলিশ এসে শিবিরের হামলার শিকার পুলিশ সদস্যদের উদ্ধার করতে শর্টগানের গুলি ছোড়ে। গুলিবিদ্ধ ৬ শিবিরকর্মী রাস্তায় লুটিয়ে পড়লে সহযোগীরা তাদের কাঁধে তুলে নিয়ে পালিয়ে যায়। পুলিশ আত্মরক্ষার্থে ৩৩ রাউ- শর্টগান ও টিয়ারশেল নিক্ষেপ করেছে। ওই সময় শিবিরের ক্যাডাররা চাষাঢ়া গোলচত্বরে ৩টি টায়ারে আগুন জ্বালিয়ে আতঙ্কের সৃষ্টি করে। ঘটনার সময় পুরো চাষাঢ়া গোলচত্বর রণক্ষেত্রে পরিণত হয়। আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে শহীদ মিনারের আশপাশে অবস্থিত ব্যাংক এবং বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে।
হামলার শিকার পুলিশ সদস্য ও প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, চাষাঢ়া শহীদ মিনারে একজন এএসআইয়ের নেতৃত্বে ২ মহিলাসহ ১১ পুলিশ সদস্য নিরাপত্তার দায়িত্ব পালন করছিল। সকাল সোয়া ১০টায় শহীদ মিনারের উল্টো দিকের এলাকা প্রেসিডেন্ট রোডের গলি থেকে শতাধিক শিবির ক্যাডার লাঠিসোঁটা এবং স্কুল ব্যাগে ইটপাটকেল নিয়ে অতর্কিতে বঙ্গবন্ধু সড়কে বেরিয়ে মিছিল শুরু করে। হঠাৎ করেই শহীদ মিনারে দায়িত্ব পালনরত পুলিশ সদস্যদের উপর ইটপাটকেল নিক্ষেপ শুরু করে। তারা অবস্থা বেগতিক দেখে পুলিশ প্রথমে টিয়ারশেল এবং পরে তাদের উপর শর্টগানের গুলি ছোড়ে। ঠিক ওই মুহূর্তে ঢাকা-নারায়ণগঞ্জ লিঙ্ক রোড থেকে শিবিরের অপর একটি গ্রুপ পেছন দিক থেকে শহীদ মিনারে অবস্থানরত পুলিশের উপর হামলা চালায় এবং পুলিশকে লাঠিপেটা করে। ওই সময় কিছু শিবিরকর্মী তাদের ব্যাগে বহন করে আনা জ্বালানি তেল দিয়ে ৩টি টায়ারে আগুন জ্বালিয়ে দেয়। শিবির ক্যাডারদের লাঠিপেটায় এএসআই আবু জাফর, কনস্টেবল আমিনুল হক, মামুনুর রশিদ মামুন এবং আবদুল আলীমসহ ১০ জন আহত হয়।
পুলিশের উপর শিবিরকর্মীদের হামলার ঘটনায় জেলায় দায়িত্ব পালনরত বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থার সদস্যদের ব্যর্থতা স্পষ্ট হয়ে উঠেছে। প্রশ্ন উঠেছে তাদের ভূমিকা নিয়েও। এ কারণে জেলার শীর্ষ বেশ কয়েকজন পুলিশ কর্মকর্তা ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন।
নীলফামারী ॥ নীলফামারী জেলা শহরে পুলিশের ওপর হামলা চালিয়েছে জামায়াত শিবিরের ক্যাডাররা। লাঠিসোঁটা ও ইটপাটকেল দিয়ে তারা পুলিশের ওপর চড়াও হয়। এতে মহিলা পুলিশসহ ৫ পুলিশ সদস্য আহত হয়। শনিবার বিকেলে ঠিক আছরের আযানের সময় এ ঘটনায় পুলিশ ১৩ রাউন্ড টিয়ালশেল নিক্ষেপ করে। এ সময় সাধারণ মানুষ একজোট হয়ে জামায়াত শিবিরের ক্যাডারদের ধাওয়া করে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়, শনিবার বিকেলে মার্কাস মসজিদের সামনে সড়ক অবরোধ করে পথসভা করে জামায়াত শিবির। পথসভায় জেলা জামায়াতের আমির আজিজুল ইসলাম পুলিশের ওপর হামলা চালানোর ঘোষণা দিলে শিবির ক্যাডাররা লাঠিসোঁটা নিয়ে পুলিশের ওপর হামলা চালায়। এ সময় ৩ মহিলা পুলিশসহ ৫ পুলিশ ইটের আঘাতে আহত হয়। পরিস্থিতি খারাপের দিকে গেলে পুলিশ ১৩ রাউন্ড টিয়ালশেল নিক্ষেপ করেও কোন কূলকিনারা পাচ্ছিল না। তখন সাধারণ মানুষজন একজোট হয়ে জামায়াত শিবিরকে ধাওয়া করে। এ সময় জনতার সঙ্গে জামায়াত-শিবির কর্মীদের সংঘর্ষ হয়।
হবিগঞ্জ ॥ হবিগঞ্জের নবীগঞ্জ শহরে মিছিল করার সময় জামায়াত-শিবির নেতাকর্মীদের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষে ১০ জন আহত হয়েছে। এ সময় ৩ জনকে আটক করে পুলিশ। পুলিশ জানায়, জামায়াত-শিবির কর্মীরা পুলিশকে লক্ষ্য করে ইটপাটকেল নিক্ষেপ করলে সংঘর্ষ বেধে যায়। এ সময় পুলিশ শিবিরের ৩ কর্মীকে আটক করে।
দিনাজপুর ॥ যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের জন্য গঠিত ট্রাইব্যুনাল বাতিলের দাবিতে শনিবার সকালে শহরে জামায়াত-শিবির সশস্ত্র মিছিল করলে পুলিশ-জনতা ধাওয়া করে। উভয় পক্ষের সংঘর্ষে ২০ জন আহত হয়। পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে ৩ জন জামায়াত-শিবির কর্মীকে গ্রেফতার করেছে।
দিনাজপুর কোতোয়ালি থানার অফিসার ইনচার্জ আব্দুল কাদের জিলানী জানান, শনিবার সকাল সাড়ে ১০টায় শহরের বড়বন্দরে জামায়াত-শিবিরের সশস্ত্র ক্যাডাররা আকস্মিকভাবে বিক্ষোভ মিছিল বের করলে জনতা তাদের ধাওয়া করে। এক পর্যায়ে জামায়াত-শিবিরের ক্যাডাররা লাঠিসোঁটা ও ইট-পাথর নিয়ে পুলিশ-জনতার ওপর হামলা চালালে সংঘর্ষ বেধে যায়। এ সময় ২০ জন আহত হয়। এদের অধিকাংশই জামায়াত-শিবিরকর্মী। পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে ৩ জনকে গ্রেফতার করে।
বগুড়া ॥ শনিবার বগুড়ায় জামায়াত শিবিরের ডাকে সকাল-সন্ধ্যা হরতাল চলাকালে পুলিশের গাড়ি লক্ষ্য করে ককটেল হামলা ও বেশ কয়েকটি যানবাহন ভাংচুর হয়েছে। হরতাল চলাকালে লাঠিসোঁটা নিয়ে শিবির ঝটিকা মিছিল করে। বগুড়ার শেরপুর উপজেলায় যানবাহন ভাংচুরের সময় পুলিশের সঙ্গে শিবিরের ধাওয়া হয়েছে। এ সময় পুলিশ ১ শিবির কর্মীকে আটক করে। এছাড়া শিবির ক্যাডাররা বগুড়া-নওগাঁ সড়কে গাছের গুঁড়ি ফেলে সড়ক অবরোধ করে রাখে।
সকাল ৮টার দিকে বগুড়া বাইপাস সড়কের ছিলিমপুরে শিবির হরতালের সর্মথনে ঝটিকা মিছিল বের করে। লাঠিসোঁটা রড ও ধারালো অস্ত্র নিয়ে মিছিল চলাকালে পুলিশের গাড়ি লক্ষ্য করে শিবির ক্যাডাররা ৪/৫টি ককটেল এবং ইটপাটকেল নিক্ষেপ করে। সকাল সাড়ে ৮টার দিকে বগুড়া-ঢাকা মহাসড়কে শেরপুর উপজেলার হামছাপুর কাঁঠালতলা এলাকায় শিবির ক্যডাররা হামলা চালিয়ে ৬/৭টি যানবাহন ভাংচুর করে। সেখানে পুলিশের সঙ্গে শিবিরকর্মীদের সঙ্গে ধাওয়া পাল্টাধাওয়া হয়। এখান থেকে পুলিশ ১ শিবির কর্মীকে আটক করে। হরতাল চলাকালে দূরপাল্লার যানবাহন চলাচল বন্ধ থাকলেও ট্রেন চলাচল ছিল স্বাভাবিক।
ভোলা ॥ ভোলার লালমোহনে শিবির সন্দেহে ১০ জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। শুক্রবার রাতে লালমোহন হক সুপার মার্কেটে একটি ছাত্রাবাস থেকে তাদের গ্রেফতার করা হয়। শনিবার গ্রেফতারকৃতদের ১৫১ ধারায় গ্রেফতার দেখিয়ে আদালতে প্রেরণ করলে আদালত তাদের জেলে পাঠানোর নির্দেশ দেয়।
এদিকে জেলার বোরহানউদ্দিন উপজেলায় শিবিরের মিছিল থেকে ৭ নেতাকর্মীকে আটক করেছে পুলিশ।
মংলা ॥ শনিবার মংলা থানা পুলিশ জামায়াত শিবিরের ৪ সমর্থককে আটক করেছে। জামায়াতের কর্মসূচীর সমর্থনে মিছিল করার সময় শিবিরকর্মীরা একটি মোটরসাইকেল পুড়িয়ে দেয়। এ সময় পুলিশ ৩ জনকে আটক করে।
পিরোজপুর ॥ শনিবার শহিদুল ইসলাম নামে এক জামায়াত কর্মীকে জিয়ানগর ডিগ্রী কলেজের সামনে থেকে আটক করে ইন্দুরকানী থানা পুলিশ ।
গাজীপুর ॥ জামায়াতের কর্মসূচীর সমর্থনে গাজীপুরের শ্রীপুর শহরে মিছিল সমবেশ করে শিবির। এ সময় পুলিশ ২ জনকে আটক করে।
ঠাকুরগাঁও ॥ ঠাকুরগাঁওয়ে শিবিরের মিছিল থেকে এক কর্মীকে আটকের পর পুলিশের হাত থেকে পালিয়ে যাওয়ার ঘটনা ঘটেছে। শনিবার সকাল ৯টায় ঠাকুরগাঁও পুরাতন বাসস্ট্যান্ড এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।
বগুড়ায় তিন শিবিরকর্মী নিহত হওয়ার প্রতিবাদে ঠাকুরগাঁওয়ে শিবিরকর্মীরা শনিবার সকালে ঝটিকা বিক্ষোভ মিছিল বের করে।
নারায়ণগঞ্জ ॥ শনিবার সকালে নারায়ণগঞ্জ শহরের প্রাণকেন্দ্র চাষাঢ়ায় পুলিশের উপর অতর্কিত হামলা চালায় শিবিরের ক্যাডাররা। লাঠি দিয়ে প্রকাশ্যে রাস্তায় ফেলে পুলিশকে নির্মমভাবে পেটায় তারা। শিবিরের দ্বিমুখী হামলায় পুলিশের এক এএসআইসহ ১০ পুলিশ সদস্য আহত হয়েছে। আহতদের মধ্যে এএসআই আবু জাফরের (৫০) অবস্থা আশঙ্কাজনক। তাঁকে রাজারবাগ পুলিশ লাইনস হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। খবর পেয়ে অতিরিক্ত পুলিশ এসে শিবিরের হামলার শিকার পুলিশ সদস্যদের উদ্ধার করতে শর্টগানের গুলি ছোড়ে। গুলিবিদ্ধ ৬ শিবিরকর্মী রাস্তায় লুটিয়ে পড়লে সহযোগীরা তাদের কাঁধে তুলে নিয়ে পালিয়ে যায়। পুলিশ আত্মরক্ষার্থে ৩৩ রাউ- শর্টগান ও টিয়ারশেল নিক্ষেপ করেছে। ওই সময় শিবিরের ক্যাডাররা চাষাঢ়া গোলচত্বরে ৩টি টায়ারে আগুন জ্বালিয়ে আতঙ্কের সৃষ্টি করে। ঘটনার সময় পুরো চাষাঢ়া গোলচত্বর রণক্ষেত্রে পরিণত হয়। আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে শহীদ মিনারের আশপাশে অবস্থিত ব্যাংক এবং বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে।
হামলার শিকার পুলিশ সদস্য ও প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, চাষাঢ়া শহীদ মিনারে একজন এএসআইয়ের নেতৃত্বে ২ মহিলাসহ ১১ পুলিশ সদস্য নিরাপত্তার দায়িত্ব পালন করছিল। সকাল সোয়া ১০টায় শহীদ মিনারের উল্টো দিকের এলাকা প্রেসিডেন্ট রোডের গলি থেকে শতাধিক শিবির ক্যাডার লাঠিসোঁটা এবং স্কুল ব্যাগে ইটপাটকেল নিয়ে অতর্কিতে বঙ্গবন্ধু সড়কে বেরিয়ে মিছিল শুরু করে। হঠাৎ করেই শহীদ মিনারে দায়িত্ব পালনরত পুলিশ সদস্যদের উপর ইটপাটকেল নিক্ষেপ শুরু করে। তারা অবস্থা বেগতিক দেখে পুলিশ প্রথমে টিয়ারশেল এবং পরে তাদের উপর শর্টগানের গুলি ছোড়ে। ঠিক ওই মুহূর্তে ঢাকা-নারায়ণগঞ্জ লিঙ্ক রোড থেকে শিবিরের অপর একটি গ্রুপ পেছন দিক থেকে শহীদ মিনারে অবস্থানরত পুলিশের উপর হামলা চালায় এবং পুলিশকে লাঠিপেটা করে। ওই সময় কিছু শিবিরকর্মী তাদের ব্যাগে বহন করে আনা জ্বালানি তেল দিয়ে ৩টি টায়ারে আগুন জ্বালিয়ে দেয়। শিবির ক্যাডারদের লাঠিপেটায় এএসআই আবু জাফর, কনস্টেবল আমিনুল হক, মামুনুর রশিদ মামুন এবং আবদুল আলীমসহ ১০ জন আহত হয়।
পুলিশের উপর শিবিরকর্মীদের হামলার ঘটনায় জেলায় দায়িত্ব পালনরত বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থার সদস্যদের ব্যর্থতা স্পষ্ট হয়ে উঠেছে। প্রশ্ন উঠেছে তাদের ভূমিকা নিয়েও। এ কারণে জেলার শীর্ষ বেশ কয়েকজন পুলিশ কর্মকর্তা ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন।
নীলফামারী ॥ নীলফামারী জেলা শহরে পুলিশের ওপর হামলা চালিয়েছে জামায়াত শিবিরের ক্যাডাররা। লাঠিসোঁটা ও ইটপাটকেল দিয়ে তারা পুলিশের ওপর চড়াও হয়। এতে মহিলা পুলিশসহ ৫ পুলিশ সদস্য আহত হয়। শনিবার বিকেলে ঠিক আছরের আযানের সময় এ ঘটনায় পুলিশ ১৩ রাউন্ড টিয়ালশেল নিক্ষেপ করে। এ সময় সাধারণ মানুষ একজোট হয়ে জামায়াত শিবিরের ক্যাডারদের ধাওয়া করে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়, শনিবার বিকেলে মার্কাস মসজিদের সামনে সড়ক অবরোধ করে পথসভা করে জামায়াত শিবির। পথসভায় জেলা জামায়াতের আমির আজিজুল ইসলাম পুলিশের ওপর হামলা চালানোর ঘোষণা দিলে শিবির ক্যাডাররা লাঠিসোঁটা নিয়ে পুলিশের ওপর হামলা চালায়। এ সময় ৩ মহিলা পুলিশসহ ৫ পুলিশ ইটের আঘাতে আহত হয়। পরিস্থিতি খারাপের দিকে গেলে পুলিশ ১৩ রাউন্ড টিয়ালশেল নিক্ষেপ করেও কোন কূলকিনারা পাচ্ছিল না। তখন সাধারণ মানুষজন একজোট হয়ে জামায়াত শিবিরকে ধাওয়া করে। এ সময় জনতার সঙ্গে জামায়াত-শিবির কর্মীদের সংঘর্ষ হয়।
হবিগঞ্জ ॥ হবিগঞ্জের নবীগঞ্জ শহরে মিছিল করার সময় জামায়াত-শিবির নেতাকর্মীদের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষে ১০ জন আহত হয়েছে। এ সময় ৩ জনকে আটক করে পুলিশ। পুলিশ জানায়, জামায়াত-শিবির কর্মীরা পুলিশকে লক্ষ্য করে ইটপাটকেল নিক্ষেপ করলে সংঘর্ষ বেধে যায়। এ সময় পুলিশ শিবিরের ৩ কর্মীকে আটক করে।
দিনাজপুর ॥ যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের জন্য গঠিত ট্রাইব্যুনাল বাতিলের দাবিতে শনিবার সকালে শহরে জামায়াত-শিবির সশস্ত্র মিছিল করলে পুলিশ-জনতা ধাওয়া করে। উভয় পক্ষের সংঘর্ষে ২০ জন আহত হয়। পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে ৩ জন জামায়াত-শিবির কর্মীকে গ্রেফতার করেছে।
দিনাজপুর কোতোয়ালি থানার অফিসার ইনচার্জ আব্দুল কাদের জিলানী জানান, শনিবার সকাল সাড়ে ১০টায় শহরের বড়বন্দরে জামায়াত-শিবিরের সশস্ত্র ক্যাডাররা আকস্মিকভাবে বিক্ষোভ মিছিল বের করলে জনতা তাদের ধাওয়া করে। এক পর্যায়ে জামায়াত-শিবিরের ক্যাডাররা লাঠিসোঁটা ও ইট-পাথর নিয়ে পুলিশ-জনতার ওপর হামলা চালালে সংঘর্ষ বেধে যায়। এ সময় ২০ জন আহত হয়। এদের অধিকাংশই জামায়াত-শিবিরকর্মী। পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে ৩ জনকে গ্রেফতার করে।
বগুড়া ॥ শনিবার বগুড়ায় জামায়াত শিবিরের ডাকে সকাল-সন্ধ্যা হরতাল চলাকালে পুলিশের গাড়ি লক্ষ্য করে ককটেল হামলা ও বেশ কয়েকটি যানবাহন ভাংচুর হয়েছে। হরতাল চলাকালে লাঠিসোঁটা নিয়ে শিবির ঝটিকা মিছিল করে। বগুড়ার শেরপুর উপজেলায় যানবাহন ভাংচুরের সময় পুলিশের সঙ্গে শিবিরের ধাওয়া হয়েছে। এ সময় পুলিশ ১ শিবির কর্মীকে আটক করে। এছাড়া শিবির ক্যাডাররা বগুড়া-নওগাঁ সড়কে গাছের গুঁড়ি ফেলে সড়ক অবরোধ করে রাখে।
সকাল ৮টার দিকে বগুড়া বাইপাস সড়কের ছিলিমপুরে শিবির হরতালের সর্মথনে ঝটিকা মিছিল বের করে। লাঠিসোঁটা রড ও ধারালো অস্ত্র নিয়ে মিছিল চলাকালে পুলিশের গাড়ি লক্ষ্য করে শিবির ক্যাডাররা ৪/৫টি ককটেল এবং ইটপাটকেল নিক্ষেপ করে। সকাল সাড়ে ৮টার দিকে বগুড়া-ঢাকা মহাসড়কে শেরপুর উপজেলার হামছাপুর কাঁঠালতলা এলাকায় শিবির ক্যডাররা হামলা চালিয়ে ৬/৭টি যানবাহন ভাংচুর করে। সেখানে পুলিশের সঙ্গে শিবিরকর্মীদের সঙ্গে ধাওয়া পাল্টাধাওয়া হয়। এখান থেকে পুলিশ ১ শিবির কর্মীকে আটক করে। হরতাল চলাকালে দূরপাল্লার যানবাহন চলাচল বন্ধ থাকলেও ট্রেন চলাচল ছিল স্বাভাবিক।
ভোলা ॥ ভোলার লালমোহনে শিবির সন্দেহে ১০ জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। শুক্রবার রাতে লালমোহন হক সুপার মার্কেটে একটি ছাত্রাবাস থেকে তাদের গ্রেফতার করা হয়। শনিবার গ্রেফতারকৃতদের ১৫১ ধারায় গ্রেফতার দেখিয়ে আদালতে প্রেরণ করলে আদালত তাদের জেলে পাঠানোর নির্দেশ দেয়।
এদিকে জেলার বোরহানউদ্দিন উপজেলায় শিবিরের মিছিল থেকে ৭ নেতাকর্মীকে আটক করেছে পুলিশ।
মংলা ॥ শনিবার মংলা থানা পুলিশ জামায়াত শিবিরের ৪ সমর্থককে আটক করেছে। জামায়াতের কর্মসূচীর সমর্থনে মিছিল করার সময় শিবিরকর্মীরা একটি মোটরসাইকেল পুড়িয়ে দেয়। এ সময় পুলিশ ৩ জনকে আটক করে।
পিরোজপুর ॥ শনিবার শহিদুল ইসলাম নামে এক জামায়াত কর্মীকে জিয়ানগর ডিগ্রী কলেজের সামনে থেকে আটক করে ইন্দুরকানী থানা পুলিশ ।
গাজীপুর ॥ জামায়াতের কর্মসূচীর সমর্থনে গাজীপুরের শ্রীপুর শহরে মিছিল সমবেশ করে শিবির। এ সময় পুলিশ ২ জনকে আটক করে।
ঠাকুরগাঁও ॥ ঠাকুরগাঁওয়ে শিবিরের মিছিল থেকে এক কর্মীকে আটকের পর পুলিশের হাত থেকে পালিয়ে যাওয়ার ঘটনা ঘটেছে। শনিবার সকাল ৯টায় ঠাকুরগাঁও পুরাতন বাসস্ট্যান্ড এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।
বগুড়ায় তিন শিবিরকর্মী নিহত হওয়ার প্রতিবাদে ঠাকুরগাঁওয়ে শিবিরকর্মীরা শনিবার সকালে ঝটিকা বিক্ষোভ মিছিল বের করে।
No comments