সার, বায়োগ্যাস-আবর্জনাও ফেলনা নয়
গৃহস্থালির ময়লা-আবর্জনাও হতে পারে অর্থকরী বায়োগ্যাস ও সার উৎপাদনের কাঁচামাল। আবর্জনা ব্যবহার করে অনেক দেশেই পুনঃউৎপাদন প্রক্রিয়ার মাধ্যমে সম্পদ সৃষ্টি করা হচ্ছে। আমাদের এখানেও এ প্রচেষ্টা চলছে।
সম্প্রতি নারায়ণগঞ্জের ১৩নং ওয়ার্ডকে পাইলট প্রজেক্ট হিসেবে নিয়ে এখানকার ময়লা-আবর্জনা ব্যবহার করে বায়োগ্যাস ও সার উৎপাদন করার কৌশল প্রয়োগ করার জন্য গবেষণাকর্ম হাতে নেওয়া হয়েছে। বলা হচ্ছে, এ গবেষণা সফল হলে পর্যায়ক্রমে নগরীর অন্যান্য ওয়ার্ডেও এটা ছড়িয়ে দেওয়া হবে। এতে ময়লা-আবর্জনা আর যত্রতত্র ছুড়ে ফেলার প্রবণতা যেমন কমবে, তেমনি এ থেকে উৎপাদিত সার ও বায়োগ্যাস বাবদ আয়ও দারিদ্র্য বিমোচনে ব্যয় করা হবে। এই প্রকল্পটির পেছনে যে সুদূরপ্রসারী একটি উন্নয়ন ভাবনা এবং তার সঙ্গে সাধারণ মানুষের অভাব ঘোচানোর উদ্দেশ্য রয়েছে, সেটাই বড় আশার কথা। আমাদের দেশে সাধারণত পৌর বা সরকারি কর্মকর্তারা ব্যয় করার ব্যাপারে যতটা আগ্রহী সামষ্টিক উন্নয়ন ভাবনায়, ততটা মাথা ঘামান না বলে একটি নেতিবাচক ধারণা রয়েছে। যেহেতু এই গবেষণাকর্মের সঙ্গে কয়েকজন কর্মকর্তা পর্যায়ের ব্যক্তি জড়িত রয়েছেন, তাই এটি সফল হলে সে ধারণাকে বাসি ধারণা বলা যাবে। আমরা আশা করব, এ প্রকল্পটি যাতে নির্ধারিত সময়ের আগেই সাফল্যের মুখ দেখতে পারে_ কর্মকর্তারা আপ্রাণ প্রচেষ্টার মাধ্যমে সেটি নিশ্চিত করবেন। তদুপরি আধুনিক দুনিয়ায় আবর্জনাকে ব্যবহার করে বা পুনঃউৎপাদন প্রক্রিয়ায় সাফল্যজনকভাবে সম্পদ সৃষ্টি করা নতুন নয়। প্রয়োজন হলো প্রযুক্তির সঠিক ব্যবহার এবং আবর্জনার গুণমান যাচাই করে এ থেকে প্রয়োজনীয় উপাদানটি বের করে নেওয়া। এ ক্ষেত্রে নির্দিষ্ট এলাকার জনস্বাস্থ্য সুরক্ষার বিষয়টি অবশ্যই খেয়াল রাখতে হবে। ১৩নং ওয়ার্ডের পাইলট প্রকল্পটি সফল হলে এর উদ্যোক্তারা এটি অন্যান্য ওয়ার্ডেও প্রসারিত করবেন বলে জানান দিয়ে রেখেছেন। উদ্যোক্তারা তাদের দীর্ঘমেয়াদি উদ্দেশ্যের গুরুত্বও বস্তুত এভাবে সবার কাছে তুলে ধরেছেন। আমরা আবর্জনা থেকে জৈব সার ও বায়োগ্যাস উৎপাদন প্রকল্পের সাফল্য কামনা করি। কোনো অবস্থাতেই যাতে এ গবেষণাকর্ম মাঝপথে থেমে না যায় সেটা অবশ্যই ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে নিশ্চিত করতে হবে।
No comments