আবদুর রাজ্জাকের স্মরণসভায় বক্তারা- যুদ্ধাপরাধীদের বিচার সম্পন্ন হলে রাজ্জাকের আত্মা শান্তি পাবে
আবদুর রাজ্জাক বড় নেতা হলেও তাঁর কোনো দম্ভ ও অহংকার ছিল না। তিনি সেই বিরল মানুষের অন্যতম, যাঁকে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান স্নেহ করতেন।
বাংলাদেশের মানুষও তাঁকে মনে স্থান দিয়েছে। তিনি মনে-প্রাণে যুদ্ধাপরাধীদের বিচার চেয়েছিলেন। এ বিচার সম্পন্ন হলেই তাঁর আত্মা শান্তি পাবে।মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম সংগঠক ও আওয়ামী লীগের প্রয়াত নেতা আবদুর রাজ্জাকের প্রথম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশনে আয়োজিত স্মরণসভায় বক্তারা এসব কথা বলেন। আবদুর রাজ্জাক স্মৃতি সংসদ এ স্মরণসভার আয়োজন করে।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে জাতীয় সংসদের উপনেতা সৈয়দা সাজেদা চৌধুরী বলেন, আবদুর রাজ্জাকের জন্য স্থায়ী কিছু করা দরকার, যার মধ্যে তিনি বেঁচে থাকবেন। এ সময় শ্রোতাদের মধ্য থেকে প্রস্তাবিত পদ্মা সেতু রাজ্জাকের নামে করার দাবি জানানো হয়।
জ্যেষ্ঠ রাজনীতিক তোফায়েল আহমেদ হতাশা প্রকাশ করে বলেন, আবদুর রাজ্জাক অনেককে নেতা বানিয়েছেন। কিন্তু বিপদের দিনে অনেকেই তাঁর পাশে এসে দাঁড়ায়নি। ব্যস্ততার কথা বলে অসুস্থ রাজ্জাককে যুক্তরাজ্যে নিযুক্ত বাংলাদেশের হাইকমিশনার দেখতে যাননি। অথচ রাজ্জাক শুধু আওয়ামী লীগের নেতা নন, মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম সংগঠক। তিনি বলেন, ‘মৃত্যুর সময় তিনি মন্ত্রী ছিলেন না। আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্যও ছিলেন না। কিন্তু লাখ লাখ মানুষের যে সম্মান তিনি মৃত্যুর পর পেয়েছেন, তা অনেকেই হয়তো পাবেন না।’
ঘনিষ্ঠ এ সহকর্মীর স্মৃতির উদ্দেশে তোফায়েল আহমেদ আরও বলেন, ‘রাজ্জাক ভাইয়ের ভাগ্য ভালো। আপনি বঙ্গবন্ধুর স্নেহ পেয়েছেন। মানুষের ভালোবাসা পেয়েছেন। অতৃপ্তি নেই কোনো। আপনাকে অনেক কিছু দেখতে হবে না। আমরা হয়তো অনেক কিছু দেখব।’
আওয়ামী লীগের নেতা আবদুল জলিল বলেন, ‘রাজ্জাক হাসপাতালে শুয়ে আমাকে বলেছিলেন, আমি হয়তো পারব না। তোরা সবাই মিলে যুদ্ধাপরাধীদের বিচার বাস্তবায়ন করবি।’
স্থানীয় সরকারমন্ত্রী সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম বলেন, ‘ছাত্ররাজনীতি করেছি আবদুর রাজ্জাককে আদর্শ মেনে। আমি এবং আবদুর রাজ্জাক একই সেক্টরে মুক্তিযুদ্ধ করেছি। উনি একজন দুঃসাহসিক লোক ছিলেন।’
বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি রাশেদ খান মেনন বলেন, যুদ্ধাপরাধীদের বিচারে আজীবন সোচ্চার ছিলেন রাজ্জাক। নতুন বছরের প্রথমার্ধে বিচার সম্পন্ন করতে পারলে রাজ্জাকের আত্মা শান্তি পাবে।
অধ্যাপক আনিসুজ্জামানের সভাপতিত্বে স্মরণসভায় আরও বক্তব্য দেন দপ্তরবিহীন মন্ত্রী সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত, তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনু, আওয়ামী লীগের নেতা শেখ ফজলুল করিম সেলিম, সাবেক কেন্দ্রীয় নেতা মোজাফফর হোসেন, বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টির সভাপতি মুজাহিদুল ইসলাম সেলিম, সাংবাদিক আবেদ খান প্রমুখ।
No comments