বনপাড়া-হাটিকুমরুল মহাসড়ক- পাচার হচ্ছে অস্ত্র ও মাদক by আনিসুর রহমান
নাটোর ও সিরাজগঞ্জের বনপাড়া-হাটিকুমরুল মহাসড়ক দিয়ে পাচার করা হচ্ছে অবৈধ অস্ত্র ও মাদক। চোরাকারবারীরা নানা কৌশলে এসব অবৈধ অস্ত্র ও মাদক ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে সরবরাহ করছে।
গুরুদাসপুর ও বড়াইগ্রাম থানা সূত্রে জানা গেছে, ২০১১ সালের জানুয়ারি থেকে চলতি বছরের ১৫ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত এ সড়কের বিভিন্ন স্থান থেকে বিপুল পরিমাণ মাদক ও অস্ত্র জব্দ করা হয়েছে। এ সময়ে এই দুই থানা ও গোয়েন্দা বিভাগের (ডিবি) পুলিশ এক কেজি ৩৫৬ গ্রাম হিরোইন, ফেনসিডিলের চার হাজার ২১টি বোতল, আট হাজার ৩১২ লিটার চোলাই মদ, ৪৩ কেজি ৭৫০ গ্রাম গাঁজা এবং গুলিসহ ১০টি অস্ত্র উদ্ধার করেছে।
তবে চোরাকারবারীদের মতে, এ সময়ে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী এ সড়ক দিয়ে পাচার হওয়া অস্ত্র ও মাদকের মাত্র ২০ থেকে ৩০ শতাংশ আটক করতে পেরেছে। বাকি প্রায় ৭০ শতাংশ নানা কৌশলে চোরাকারবারীরা দেশের বিভিন্ন স্থানে সরবরাহ করেছে।
নাটোরের পুলিশ সুপার মো. কাইয়ুমুজ্জামান খান প্রথম আলোকে বলেন, জনবল, যানবাহনসংকটসহ নানা কারণে বনপাড়া-হাটিকুমরুল মহাসড়কে মাদক ও অস্ত্র পাচার রোধ কার্যক্রম সফল হচ্ছে না। তার পরও মহাসড়কটির কাছিকাটা টোলপ্লাজাসহ বিভিন্ন স্থানে তল্লাশি চৌকি বসিয়ে পাচার রোধে পুলিশ কাজ করে যাচ্ছে।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, ৫৫ কিলোমিটার দীর্ঘ বনপাড়া-হাটিকুমরুল মহাসড়কটি বড়াইগ্রাম উপজেলার বনপাড়া গোলচত্বর থেকে শুরু হয়েছে। পরে এটি গুরুদাসপুর ও সিরাজগঞ্জের তাড়াশ হয়ে একই জেলার উল্লাপাড়া উপজেলার হাটিকুমরুল মোড়ে গিয়ে শেষ হয়েছে। ২০০১ সালে সড়কটি চালু হয়। তখন থেকে এ সড়ক দিয়ে দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের ১৬টি জেলার যানবাহন চলাচল করছে। সড়কটির দক্ষিণ-পশ্চিমে ভারতীয় সীমান্তবর্তী কয়েকটি জেলা ও উপজেলা। এ কারণে চোরাকারবারীরা অস্ত্র ও মাদক পাচারের জন্য এই মহাসড়কটি ব্যবহার করছে।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, ভারতীয় সীমান্ত পার হয়ে নাটোরের লালপুর, পাবনার ঈশ্বরদী, রাজশাহীর বাঘা, চারঘাট, গোদাগাড়ী, মহিষালবাড়ি ও চাঁপাইনবাবগঞ্জের শিবগঞ্জ হয়ে মোটরসাইকেল, বাস, ট্রাক, কাভার্ড ভ্যান, অ্যাম্বুলেন্সসহ নানা যানবাহনে মাদক ও অস্ত্র নিয়ে আসা হয়। পরে এসব যানবাহন বড়াইগ্রামের বনপাড়া গোলচত্বর দিয়ে বনপাড়া-হাটিকুমরুল মহাসড়কে ঢোকে।
এই মহাসড়কের শেষ প্রান্ত হাটিকুমরুল মোড় দিয়ে সহজেই দেশের প্রায় সব স্থানে চলে যাওয়া যায়। কারণ এই মোড়ে তিনটি সড়ক রয়েছে। চোরাকারবারীরা মাদক ও অস্ত্র নিয়ে এ মোড়ের তিনটি সড়কের মধ্যে যমুনা সেতু পশ্চিম সড়ক দিয়ে ঢাকায় চলে যায়। আরেকটি সড়ক দিয়ে চলে যায় পাবনা। আর অপর সড়ক দিয়ে বগুড়া হয়ে দিনাজপুর, ঠাকুরগাঁও ও পঞ্চগড় চলে যায়।
বড়াইগ্রাম থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ ইব্রাহিম হোসেন জানান, ভারত থেকে চোরাকারবারীরা পদ্মা নদী পার হয়ে লালপুর সীমানায় ঢুকে পড়ে। পরে গ্রামীণ সড়ক ব্যবহার করে তারা বনপাড়া-হাটিকুমরুল মহাসড়কে ঢুকে সারা দেশে অস্ত্র ও মাদক সরবরাহ করে। পুলিশ চোরাকারবারীদের এই অপতৎপরতা বন্ধের চেষ্টা চালাচ্ছে।
গুরুদাসপুর থানার ওসি শফিকুল ইসলাম জানান, চোরাকারবারীরা বনপাড়া-হাটিকুমরুল মহাসড়কটি মাদক ও অস্ত্র পাচারের জন্য ব্যবহার করছে। তবে অস্ত্র ও মাদক পাচার বন্ধ করার জন্য এই সড়কের বিভিন্ন স্থানে তল্লাশি চৌকি বসানো হয়েছে। এসব চৌকিতে প্রায়ই মাদক ও অস্ত্রসহ চোরাকারবারীরা ধরা পড়ছে। বিশেষ করে গুরুদাসপুর উপজেলার কাছিকাটা টোলপ্লাজার চৌকিতে প্রায়ই মাদক ও অস্ত্রের চালান ধরা পড়ছে।
এলাকাবাসী সূত্রে জানা গেছে, চোরাকারবারীরা দরিদ্র তরুণ ও নারীদের অস্ত্র ও মাদক বহনের কাজে ব্যবহার করে। প্রত্যেক বহনকারীকে ৫০০ থেকে ১০ হাজার টাকা পর্যন্ত দেওয়া হয়।
গত ১১ আগস্ট কাছিকাটা টোলপ্লাজার কাছে একটি যাত্রীবাহী বাস তল্লাশি করে দুটি রিভলবার, চারটি ম্যাগাজিন ও আটটি গুলিসহ একজকে আটক করে গুরুদাসপুর থানার উপপরিদর্শক (এসআই) ওসমান গনি। আটক ওই তরুণের নাম হাবিবুর রহমান (২৮)। তাঁর বাড়ি চাঁপাইনবাবগঞ্জের শিবগঞ্জ উপজেলার পনেরছিরা গ্রামে।
হাবিবুর রহমান জানান, তিনি অস্ত্রের মালিককে চেনেন না। কোনো দিন তাঁকে দেখেননি। এগুলো বহন করার কাজ করে তিনি সাত হাজার টাকা পেতেন।
গত ১২ জুলাই রাতে ডিবি পুলিশ কাছিকাটা টোলপ্লাজায় একটি যাত্রীবাহী বাস তল্লাশি করে এক কেজি ২০০ গ্রাম হিরোইনসহ ফারুক আহম্মেদ (৩০) নামের এক তরুণকে আটক করে। তাঁর বাড়ি রাজশাহীর গোদাগাড়ী উপজেলার মহিষালবাড়ি গ্রামে। ফারুক জানান, হেরোইনের চালানটি ঢাকায় পৌঁছে দিলে তিনি ১৫ হাজার টাকা পেতেন।
তবে চোরাকারবারীদের মতে, এ সময়ে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী এ সড়ক দিয়ে পাচার হওয়া অস্ত্র ও মাদকের মাত্র ২০ থেকে ৩০ শতাংশ আটক করতে পেরেছে। বাকি প্রায় ৭০ শতাংশ নানা কৌশলে চোরাকারবারীরা দেশের বিভিন্ন স্থানে সরবরাহ করেছে।
নাটোরের পুলিশ সুপার মো. কাইয়ুমুজ্জামান খান প্রথম আলোকে বলেন, জনবল, যানবাহনসংকটসহ নানা কারণে বনপাড়া-হাটিকুমরুল মহাসড়কে মাদক ও অস্ত্র পাচার রোধ কার্যক্রম সফল হচ্ছে না। তার পরও মহাসড়কটির কাছিকাটা টোলপ্লাজাসহ বিভিন্ন স্থানে তল্লাশি চৌকি বসিয়ে পাচার রোধে পুলিশ কাজ করে যাচ্ছে।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, ৫৫ কিলোমিটার দীর্ঘ বনপাড়া-হাটিকুমরুল মহাসড়কটি বড়াইগ্রাম উপজেলার বনপাড়া গোলচত্বর থেকে শুরু হয়েছে। পরে এটি গুরুদাসপুর ও সিরাজগঞ্জের তাড়াশ হয়ে একই জেলার উল্লাপাড়া উপজেলার হাটিকুমরুল মোড়ে গিয়ে শেষ হয়েছে। ২০০১ সালে সড়কটি চালু হয়। তখন থেকে এ সড়ক দিয়ে দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের ১৬টি জেলার যানবাহন চলাচল করছে। সড়কটির দক্ষিণ-পশ্চিমে ভারতীয় সীমান্তবর্তী কয়েকটি জেলা ও উপজেলা। এ কারণে চোরাকারবারীরা অস্ত্র ও মাদক পাচারের জন্য এই মহাসড়কটি ব্যবহার করছে।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, ভারতীয় সীমান্ত পার হয়ে নাটোরের লালপুর, পাবনার ঈশ্বরদী, রাজশাহীর বাঘা, চারঘাট, গোদাগাড়ী, মহিষালবাড়ি ও চাঁপাইনবাবগঞ্জের শিবগঞ্জ হয়ে মোটরসাইকেল, বাস, ট্রাক, কাভার্ড ভ্যান, অ্যাম্বুলেন্সসহ নানা যানবাহনে মাদক ও অস্ত্র নিয়ে আসা হয়। পরে এসব যানবাহন বড়াইগ্রামের বনপাড়া গোলচত্বর দিয়ে বনপাড়া-হাটিকুমরুল মহাসড়কে ঢোকে।
এই মহাসড়কের শেষ প্রান্ত হাটিকুমরুল মোড় দিয়ে সহজেই দেশের প্রায় সব স্থানে চলে যাওয়া যায়। কারণ এই মোড়ে তিনটি সড়ক রয়েছে। চোরাকারবারীরা মাদক ও অস্ত্র নিয়ে এ মোড়ের তিনটি সড়কের মধ্যে যমুনা সেতু পশ্চিম সড়ক দিয়ে ঢাকায় চলে যায়। আরেকটি সড়ক দিয়ে চলে যায় পাবনা। আর অপর সড়ক দিয়ে বগুড়া হয়ে দিনাজপুর, ঠাকুরগাঁও ও পঞ্চগড় চলে যায়।
বড়াইগ্রাম থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ ইব্রাহিম হোসেন জানান, ভারত থেকে চোরাকারবারীরা পদ্মা নদী পার হয়ে লালপুর সীমানায় ঢুকে পড়ে। পরে গ্রামীণ সড়ক ব্যবহার করে তারা বনপাড়া-হাটিকুমরুল মহাসড়কে ঢুকে সারা দেশে অস্ত্র ও মাদক সরবরাহ করে। পুলিশ চোরাকারবারীদের এই অপতৎপরতা বন্ধের চেষ্টা চালাচ্ছে।
গুরুদাসপুর থানার ওসি শফিকুল ইসলাম জানান, চোরাকারবারীরা বনপাড়া-হাটিকুমরুল মহাসড়কটি মাদক ও অস্ত্র পাচারের জন্য ব্যবহার করছে। তবে অস্ত্র ও মাদক পাচার বন্ধ করার জন্য এই সড়কের বিভিন্ন স্থানে তল্লাশি চৌকি বসানো হয়েছে। এসব চৌকিতে প্রায়ই মাদক ও অস্ত্রসহ চোরাকারবারীরা ধরা পড়ছে। বিশেষ করে গুরুদাসপুর উপজেলার কাছিকাটা টোলপ্লাজার চৌকিতে প্রায়ই মাদক ও অস্ত্রের চালান ধরা পড়ছে।
এলাকাবাসী সূত্রে জানা গেছে, চোরাকারবারীরা দরিদ্র তরুণ ও নারীদের অস্ত্র ও মাদক বহনের কাজে ব্যবহার করে। প্রত্যেক বহনকারীকে ৫০০ থেকে ১০ হাজার টাকা পর্যন্ত দেওয়া হয়।
গত ১১ আগস্ট কাছিকাটা টোলপ্লাজার কাছে একটি যাত্রীবাহী বাস তল্লাশি করে দুটি রিভলবার, চারটি ম্যাগাজিন ও আটটি গুলিসহ একজকে আটক করে গুরুদাসপুর থানার উপপরিদর্শক (এসআই) ওসমান গনি। আটক ওই তরুণের নাম হাবিবুর রহমান (২৮)। তাঁর বাড়ি চাঁপাইনবাবগঞ্জের শিবগঞ্জ উপজেলার পনেরছিরা গ্রামে।
হাবিবুর রহমান জানান, তিনি অস্ত্রের মালিককে চেনেন না। কোনো দিন তাঁকে দেখেননি। এগুলো বহন করার কাজ করে তিনি সাত হাজার টাকা পেতেন।
গত ১২ জুলাই রাতে ডিবি পুলিশ কাছিকাটা টোলপ্লাজায় একটি যাত্রীবাহী বাস তল্লাশি করে এক কেজি ২০০ গ্রাম হিরোইনসহ ফারুক আহম্মেদ (৩০) নামের এক তরুণকে আটক করে। তাঁর বাড়ি রাজশাহীর গোদাগাড়ী উপজেলার মহিষালবাড়ি গ্রামে। ফারুক জানান, হেরোইনের চালানটি ঢাকায় পৌঁছে দিলে তিনি ১৫ হাজার টাকা পেতেন।
No comments