'দামিনী'র সম্মানে ভারতে নববর্ষের উৎসব বন্ধ
কেউ তাঁর নাম দিয়েছে 'দামিনী' কেউ বা 'আমানাত'। এ রকম অনেক প্রতীকী নামের সেই ছাত্রীর স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধা জানাতেই এবার খ্রিস্টীয় বা ইংরেজি নববর্ষ বরণ উৎসবের জোয়ারে ভাসছে না ভারত।
দিল্লিতে চলন্ত বাসে গণধর্ষণের শিকার ওই ছাত্রীর মৃত্যুতে শোক প্রকাশ করে নববর্ষ উদ্যাপনের অনুষ্ঠান বাতিল করেছেন প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিং ও কংগ্রেস সভানেত্রী সোনিয়া গান্ধী। এ ছাড়া বিভিন্ন ব্যক্তি, ক্লাব, অভিজাত হোটেল, ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান এমনকি বিভিন্ন সামাজিক-সাংস্কৃতিক ও পেশাজীবী প্রতিষ্ঠান বর্ষবরণের অনুষ্ঠান করা থেকে বিরত থাকার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। 'থার্টিফার্স্ট নাইট'-এর জাঁকজমকপূর্ণ পার্টি বাদ দিয়ে গত রাতে অনেকেই বাড়ির আঙিনায় জ্বালান সারি সারি মোমবাতি। প্রার্থনায়ও বসেন অনেকে। উন্মাতাল আনন্দ-উল্লাসের বদলে এবার ভারতজুড়ে দিনটি অতিবাহিত হচ্ছে অশ্রু, ক্ষোভ আর অন্য রকম নীরবতায়।
শোকগ্রস্ত ভারতে এবার নববর্ষের কোনো ধরনের আনুষ্ঠানিকতা না করতে দেশবাসীর প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন কংগ্রেস সভানেত্রী সোনিয়া গান্ধী। দেশটির সেনাবাহিনীর পক্ষ থেকেও করা হয়েছে একই ধরনের অনুরোধ। কংগ্রেসের সাধারণ সম্পাদক জনার্ধন ত্রিবেদী জানিয়েছেন, নতুন বছরের শুভেচ্ছা সোনিয়া নিচ্ছেন না এবং জানাচ্ছেনও না। তিনি তাঁর দলের লোকজন ও শুভাকাঙ্ক্ষীদের শুভেচ্ছা জানাতে তাঁর কাছে আসতে নিষেধও করেছেন।
এদিকে ওই ছাত্রীর মৃত্যুর জন্য দায়ী ধর্ষকদের উপযুক্ত শাস্তি এবং নারীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে সব ধরনের পদক্ষেপ নেওয়ার জন্য ভারত সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন জাতিসংঘের মহাসচিব বান কি মুন। দেশটির বিরোধী দলগুলো বলছে, জরুরি ভিত্তিতে পার্লামেন্টের বিশেষ অধিবেশন ডেকে ধর্ষণবিরোধী শক্ত আইন পাস করতে হবে এবং দায়ীদের উপযুক্ত শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে।
বিভিন্ন বার্তা সংস্থার খবরে বলা হয়, ওই ছাত্রীর মৃত্যুর পর থেকে আবারও ভারতজুড়ে ফুঁসে উঠছে বিক্ষোভকারীরা। গতকালও দিল্লিসহ বিভিন্ন রাজ্যের শহরে বিক্ষোভ হয়েছে। দিল্লির কেন্দ্রস্থল জন্তর-মন্তরে অনুষ্ঠিত হয়েছে এক শোকসভা। গণধর্ষণের খবরের পর থেকে বিক্ষোভে নামা ছাত্রছাত্রী ও নারীরা গতকালও সমাবেশ করেছেন। তাঁরা বলছেন, ওই ছাত্রীর ধর্ষকদের শাস্তি এবং নারীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার জন্য কঠোর আইনের দাবিতে এই সমাবেশের আয়োজন করা হয়েছে। সন্ধ্যায় মোমবাতি জ্বালিয়ে ওই ছাত্রীর মৃত্যুতে শোক প্রকাশ এবং অভিযুক্তদের শাস্তি দাবি করা হয়। যেকোনো ধরনের সহিংসতা এড়াতে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করেছে সরকার। অনেক সড়ক, বিপণিবিতান ও মেট্রো রেলস্টেশন বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে।
বিক্ষোভকারীদের মতো ওই ছাত্রীর পরিবারের সদস্যরাও দোষী ব্যক্তিদের মৃত্যুদণ্ড দাবি করেছেন। তাঁর ভাই গণমাধ্যমকে বলেন, 'লড়াই মাত্র শুরু হয়েছে। আমরা দায়ী ব্যক্তিদের ফাঁসি চাই। এ জন্য শেষ পর্যন্ত লড়াই করে যাব।'
ভারতীয় গণমাধ্যম ওই ছাত্রীকে অভিহিত করেছে 'ব্রেভহার্ট' বলে। ধর্ষণ ও নির্যাতনের পর হাসপাতালে মৃত্যুর সঙ্গে লড়াইয়ের সময়ও তিনি মনোবল না হারানোয় এই উপাধি দেওয়া হয় বলে জানানো হয়েছে।
গত ১৬ ডিসেম্বর সন্ধ্যায় দিল্লিতে সিনেমা দেখে ফেরার পথে বাসে গণধর্ষণের শিকার হন ওই মেডিক্যাল ছাত্রী। এ সময় তাঁর সঙ্গে থাকা এক বন্ধুকেও মারধর করে ধর্ষকরা। গণধর্ষণের পর ব্যাপক মারধর করে বন্ধুসহ মেয়েটিকে ধর্ষকরা চলন্ত বাস থেকে ছুড়ে ফেলে দেয়। পরে মুমূর্ষু অবস্থায় তাঁদের ভর্তি করা হয় দিল্লির সফদারজঙ্গ হাসপাতালে। তিনটি বড় অস্ত্রোপচারের পরও ক্রমেই সংকটাপন্ন হয়ে ওঠায় গত ২৭ ডিসেম্বর মেয়েটিকে নেওয়া হয় সিঙ্গাপুরের মাউন্ট এলিজাবেথ হাসপাতালে। সেখানে গত শনিবার ভোররাতে মৃত্যু হয় তাঁর। পরে রবিবার ভোরে দিল্লির ইন্দিরা গান্ধী বিমানবন্দরে বিশেষ বিমানে করে আসা তাঁর মরদেহ গ্রহণ করেন প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিং ও কংগ্রেস সভানেত্রী সোনিয়া গান্ধী। এর ঘণ্টাখানেক পরই কঠোর নিরাপত্তার মধ্য দিয়ে তাঁর শেষকৃত্য সম্পন্ন করা হয়।
ধর্ষণের সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে এ পর্যন্ত ছয়জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। সাময়িকভাবে বহিষ্কার করা হয়েছে দুই পুলিশ কর্মকর্তাকে। অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে হত্যার অভিযোগও আনা হয়েছে। বিচারে দোষী সাব্যস্ত হলে তাদের মৃত্যুদণ্ড হতে পারে।
ওই ছাত্রীর মৃত্যুতে গভীর শোক প্রকাশ করেছেন প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিং। তিনি দায়ীদের উপযুক্ত শাস্তির আশ্বাস দিয়ে জনগণকে শান্ত থাকার আহ্বান জানিয়েছেন। কংগ্রেস নেত্রী সোনিয়া গান্ধী বলেছেন, 'ধর্ষকদের উপযুক্ত শাস্তি দিতে হবে। আমরা ও আমাদের প্রশাসন সর্বোচ্চ দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির ব্যবস্থা করব।'
অভিযোগপত্র দিয়েছে পুলিশ : ছাত্রীকে গণধর্ষণ ও হত্যার ঘটনায় গতকাল অভিযোগপত্র জমা দিয়েছে পুলিশ। পুলিশের এক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা জানিয়েছেন, এক হাজার পৃষ্ঠার অভিযোগপত্রে ৩০ জনকে সাক্ষী করা হয়েছে। আগামী বৃহস্পতিবার এটি আদালতে উপস্থাপনের কথা রয়েছে বলে ওই কর্মকর্তা জানান।
১৫ লাখ রুপি সহায়তার ঘোষণা : ওই ছাত্রীর পরিবারকে ১৫ লাখ রুপি আর্থিক সহায়তা এবং পরিবারের একজন সদস্যকে চাকরি দেওয়ার ঘোষণা দিয়েছে রাজ্য সরকার। গতকাল দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী শিলা দীক্ষিতের সভাপতিত্বে মন্ত্রিসভার এক বৈঠকে এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
এদিকে বিপর্যস্ত নারীদের সহায়তায় টেলিফোনের একটি নতুন হেল্পলাইন খোলার পরিকল্পনা নিয়েছে নগর কর্তৃপক্ষ। ২৪ ঘণ্টা খোলা থাকবে নম্বরটি (১৮১)। এটি দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী শিলা দীক্ষিতের কার্যালয় থেকে শুরু হয়ে নগরের ১৮৫টি পুলিশ স্টেশনে এর সংযোগ থাকবে। সূত্র : এএফপি, টাইমস অব ইন্ডিয়া, হিন্দুস্তান টাইমস ও দ্য হিন্দু অনলাইন।
শোকগ্রস্ত ভারতে এবার নববর্ষের কোনো ধরনের আনুষ্ঠানিকতা না করতে দেশবাসীর প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন কংগ্রেস সভানেত্রী সোনিয়া গান্ধী। দেশটির সেনাবাহিনীর পক্ষ থেকেও করা হয়েছে একই ধরনের অনুরোধ। কংগ্রেসের সাধারণ সম্পাদক জনার্ধন ত্রিবেদী জানিয়েছেন, নতুন বছরের শুভেচ্ছা সোনিয়া নিচ্ছেন না এবং জানাচ্ছেনও না। তিনি তাঁর দলের লোকজন ও শুভাকাঙ্ক্ষীদের শুভেচ্ছা জানাতে তাঁর কাছে আসতে নিষেধও করেছেন।
এদিকে ওই ছাত্রীর মৃত্যুর জন্য দায়ী ধর্ষকদের উপযুক্ত শাস্তি এবং নারীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে সব ধরনের পদক্ষেপ নেওয়ার জন্য ভারত সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন জাতিসংঘের মহাসচিব বান কি মুন। দেশটির বিরোধী দলগুলো বলছে, জরুরি ভিত্তিতে পার্লামেন্টের বিশেষ অধিবেশন ডেকে ধর্ষণবিরোধী শক্ত আইন পাস করতে হবে এবং দায়ীদের উপযুক্ত শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে।
বিভিন্ন বার্তা সংস্থার খবরে বলা হয়, ওই ছাত্রীর মৃত্যুর পর থেকে আবারও ভারতজুড়ে ফুঁসে উঠছে বিক্ষোভকারীরা। গতকালও দিল্লিসহ বিভিন্ন রাজ্যের শহরে বিক্ষোভ হয়েছে। দিল্লির কেন্দ্রস্থল জন্তর-মন্তরে অনুষ্ঠিত হয়েছে এক শোকসভা। গণধর্ষণের খবরের পর থেকে বিক্ষোভে নামা ছাত্রছাত্রী ও নারীরা গতকালও সমাবেশ করেছেন। তাঁরা বলছেন, ওই ছাত্রীর ধর্ষকদের শাস্তি এবং নারীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার জন্য কঠোর আইনের দাবিতে এই সমাবেশের আয়োজন করা হয়েছে। সন্ধ্যায় মোমবাতি জ্বালিয়ে ওই ছাত্রীর মৃত্যুতে শোক প্রকাশ এবং অভিযুক্তদের শাস্তি দাবি করা হয়। যেকোনো ধরনের সহিংসতা এড়াতে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করেছে সরকার। অনেক সড়ক, বিপণিবিতান ও মেট্রো রেলস্টেশন বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে।
বিক্ষোভকারীদের মতো ওই ছাত্রীর পরিবারের সদস্যরাও দোষী ব্যক্তিদের মৃত্যুদণ্ড দাবি করেছেন। তাঁর ভাই গণমাধ্যমকে বলেন, 'লড়াই মাত্র শুরু হয়েছে। আমরা দায়ী ব্যক্তিদের ফাঁসি চাই। এ জন্য শেষ পর্যন্ত লড়াই করে যাব।'
ভারতীয় গণমাধ্যম ওই ছাত্রীকে অভিহিত করেছে 'ব্রেভহার্ট' বলে। ধর্ষণ ও নির্যাতনের পর হাসপাতালে মৃত্যুর সঙ্গে লড়াইয়ের সময়ও তিনি মনোবল না হারানোয় এই উপাধি দেওয়া হয় বলে জানানো হয়েছে।
গত ১৬ ডিসেম্বর সন্ধ্যায় দিল্লিতে সিনেমা দেখে ফেরার পথে বাসে গণধর্ষণের শিকার হন ওই মেডিক্যাল ছাত্রী। এ সময় তাঁর সঙ্গে থাকা এক বন্ধুকেও মারধর করে ধর্ষকরা। গণধর্ষণের পর ব্যাপক মারধর করে বন্ধুসহ মেয়েটিকে ধর্ষকরা চলন্ত বাস থেকে ছুড়ে ফেলে দেয়। পরে মুমূর্ষু অবস্থায় তাঁদের ভর্তি করা হয় দিল্লির সফদারজঙ্গ হাসপাতালে। তিনটি বড় অস্ত্রোপচারের পরও ক্রমেই সংকটাপন্ন হয়ে ওঠায় গত ২৭ ডিসেম্বর মেয়েটিকে নেওয়া হয় সিঙ্গাপুরের মাউন্ট এলিজাবেথ হাসপাতালে। সেখানে গত শনিবার ভোররাতে মৃত্যু হয় তাঁর। পরে রবিবার ভোরে দিল্লির ইন্দিরা গান্ধী বিমানবন্দরে বিশেষ বিমানে করে আসা তাঁর মরদেহ গ্রহণ করেন প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিং ও কংগ্রেস সভানেত্রী সোনিয়া গান্ধী। এর ঘণ্টাখানেক পরই কঠোর নিরাপত্তার মধ্য দিয়ে তাঁর শেষকৃত্য সম্পন্ন করা হয়।
ধর্ষণের সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে এ পর্যন্ত ছয়জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। সাময়িকভাবে বহিষ্কার করা হয়েছে দুই পুলিশ কর্মকর্তাকে। অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে হত্যার অভিযোগও আনা হয়েছে। বিচারে দোষী সাব্যস্ত হলে তাদের মৃত্যুদণ্ড হতে পারে।
ওই ছাত্রীর মৃত্যুতে গভীর শোক প্রকাশ করেছেন প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিং। তিনি দায়ীদের উপযুক্ত শাস্তির আশ্বাস দিয়ে জনগণকে শান্ত থাকার আহ্বান জানিয়েছেন। কংগ্রেস নেত্রী সোনিয়া গান্ধী বলেছেন, 'ধর্ষকদের উপযুক্ত শাস্তি দিতে হবে। আমরা ও আমাদের প্রশাসন সর্বোচ্চ দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির ব্যবস্থা করব।'
অভিযোগপত্র দিয়েছে পুলিশ : ছাত্রীকে গণধর্ষণ ও হত্যার ঘটনায় গতকাল অভিযোগপত্র জমা দিয়েছে পুলিশ। পুলিশের এক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা জানিয়েছেন, এক হাজার পৃষ্ঠার অভিযোগপত্রে ৩০ জনকে সাক্ষী করা হয়েছে। আগামী বৃহস্পতিবার এটি আদালতে উপস্থাপনের কথা রয়েছে বলে ওই কর্মকর্তা জানান।
১৫ লাখ রুপি সহায়তার ঘোষণা : ওই ছাত্রীর পরিবারকে ১৫ লাখ রুপি আর্থিক সহায়তা এবং পরিবারের একজন সদস্যকে চাকরি দেওয়ার ঘোষণা দিয়েছে রাজ্য সরকার। গতকাল দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী শিলা দীক্ষিতের সভাপতিত্বে মন্ত্রিসভার এক বৈঠকে এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
এদিকে বিপর্যস্ত নারীদের সহায়তায় টেলিফোনের একটি নতুন হেল্পলাইন খোলার পরিকল্পনা নিয়েছে নগর কর্তৃপক্ষ। ২৪ ঘণ্টা খোলা থাকবে নম্বরটি (১৮১)। এটি দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী শিলা দীক্ষিতের কার্যালয় থেকে শুরু হয়ে নগরের ১৮৫টি পুলিশ স্টেশনে এর সংযোগ থাকবে। সূত্র : এএফপি, টাইমস অব ইন্ডিয়া, হিন্দুস্তান টাইমস ও দ্য হিন্দু অনলাইন।
No comments