নতুন বছর নতুন আশা by আজিজুল পারভেজ
ভরা পৌষে কুয়াশার হিমেল চাদর ফুঁড়ে উদ্ভাসিত একটি নতুন বছরের সূচনা ঘটল। গ্রেগরিয়ান পঞ্জিকার হিসাবে খ্রিস্টীয় নববর্ষের শুরু হলো আজ মঙ্গলবার। স্বাগত ২০১৩। শুভ নববর্ষ।মহাকালের গর্ভে হারাল ২০১২। সমস্যা-সংকট-সম্ভাবনা আর দুঃখ-বেদনায় কাটল একটি বছর।
নতুন বছর আবাহনে ফিরে তাকাতে হয় পুরনো বছরের দিকে। অভিজ্ঞতার সঞ্চয় বাড়িয়ে যেতে হয় এগিয়ে।
অনায়াসে বলা যায়, নতুন বছরটি হবে রাজনৈতিক অঙ্গনে চ্যালেঞ্জের বছর। বর্তমান সরকারের মেয়াদকালে এ বছরটি হচ্ছে বিদায়ী বছর। ক্ষমতাসীনরা চাইবে অসম্পূর্ণ কাজ সম্পন্ন করে ভালোয় ভালোয় সময়টা পার করে দিতে। আর বিরোধী দল চাইবে সর্বশক্তি নিয়োগ করে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবি আদায় করে নিতে। এ কারণে রাজনৈতিক কলহ-সংঘাতে উত্তপ্ত থাকতে পারে নতুন বছরটি।
জাতীয় জীবনে নানা উত্থান-পতনের মধ্য দিয়ে গেছে ২০১২ সাল। নিজ বাসায় সাংবাদিক দম্পতি সাগর সরওয়ার-মেহেরুন রুনি হত্যাকাণ্ড দেশে আলোড়ন তুলেছে। ঘাতকদের গ্রেপ্তার কিংবা হত্যার রহস্য উন্মোচনে পুলিশ-র্যাবের ভূমিকা ও সরকারের আন্তরিকতা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। বছরজুড়ে রাজনীতিতে উত্তাপ ছড়িয়েছে পদ্মা সেতু প্রকল্পে দুর্নীতির অভিযোগ। বিশ্বব্যাংকের সঙ্গে বিবাদ বেড়েছে। পদ ছাড়তে হয়েছে যোগাযোগমন্ত্রী আবুল হোসেনকে। সর্বশেষ দুদকের মামলা দায়ের নিয়েও ঘটে গেছে অনেক নাটকীয়তা। সংকটের সুরাহা এখনো হয়নি। নতুন বছরেও এ প্রসঙ্গটিকে কেন্দ্র করে পানি ঘোলা হবে নিশ্চিত।
রেলমন্ত্রীর পিএসের ঘুষ কেলেঙ্কারি এবং পরিণতিতে রেল মন্ত্রণালয় থেকে সুরঞ্জিত সেনগুপ্তের বিদায়, মধ্যরাতে বনানীর রাজপথ থেকে বিএনপি নেতা ইলিয়াস আলীর রহস্যজনক নিখোঁজের ঘটনা, কক্সবাজারের রামু-উখিয়ায় বৌদ্ধবিহারে সাম্প্রদায়িক হামলা, হরতালের দিনে ছাত্রলীগকর্মীদের হাতে বিশ্বজিতের মতো নিরীহ যুবকের লোমহর্ষক নিহত হওয়ার ঘটনা দেশজুড়ে তোলপাড় ফেলে, যা সরকারের জন্য ছিল বিব্রতকর। ডেসটিনির ঘটনা, হলমার্ক-সোনালী ব্যাংক কেলেঙ্কারি, মায়ের বুকে গুলি করে শিশু পরাগকে অপহরণ প্রভৃতি ঘটনাও ব্যাপক আলোচিত-সমালোচিত হয়েছে। এসব ঘটনায় সরকারও শেষ পর্যন্ত দৃঢ় অবস্থান দেখাতে পেরেছে। দ্রব্যমূল্য কিংবা বিদ্যুতের ক্ষেত্রে বছরটি অন্যান্য বছরের তুলনায় সহনীয় ছিল। এ ছাড়া সমুদ্রসীমা নির্ধারণে আন্তর্জাতিক আদালতের রায় আদায়কে সরকার বড় সাফল্য এবং 'সমুদ্রজয়' হিসেবে দেখছে।
প্রধান বিরোধীদল বিএনপি যথারীতি সংসদ বর্জন অব্যাহত রাখলেও রাজপথে গা ঝাড়া দিয়ে ওঠার চেষ্টা করেছে। তবে মামলার মুখে মহাসচিবের আত্মগোপন, অতঃপর নতুন মামলায় গ্রেপ্তার, তাদের আন্দোলনে ছন্দপতন ঘটিয়েছে। বিরোধীদলীয় নেতার ভারত সফর এবং ভারতের সঙ্গে সম্পর্ক উন্নয়নে সাফল্য দাবি রাজনৈতিক অঙ্গনে নতুন মাত্রা যোগ করে।
২০১২ সালে বেশ কিছু ঘটনা-দুর্ঘটনা দেশজুড়ে বিষাদের ছায়া ফেলে। আশুলিয়ার তাজরীন ফ্যাশনসে আগুনে পুড়ে শতাধিক শ্রমিকের মৃত্যু এবং চট্টগ্রামে উড়াল সড়কের গার্ডার ধসে সাধারণ মানুষের মৃত্যুর ঘটনায় জাতীয় শোক ঘোষণা করা হয়। অনেক বরেণ্য মানুষের মৃত্যুও নাড়া দিয়েছে মানুষকে। চলে গেছেন নন্দিত কথাশিল্পী হুমায়ূন আহমেদ। চিরবিদায় নিয়েছেন শিল্পগুরু সফিউদ্দিন আহমেদ, স্থপতি মাজহারুল ইসলাম, অর্থনীতিবিদ অধ্যাপক মোজাফ্ফর আহমদ, সাংবাদিক ফয়েজ আহমেদ, চলচ্চিত্রকার সুভাষ দত্ত, শিক্ষাবিদ খান সারওয়ার মুরশিদ, নজরুলসংগীতজ্ঞ সোহরাব হোসেন, অভিনেতা হুমায়ুন ফরীদি প্রমুখ গুণীজন।
জাতিকে আলোড়িত, পুলকিত করার মতো ঘটনাও ঘটেছে অনেক। নিশাত মজুমদার ও ওয়াসফিয়া নাজরীনের এভারেস্ট চূড়া বিজয় নারীদের এগিয়ে যাওয়ার প্রমাণ দিয়েছে। বিজ্ঞানী মাকসুদুল আলমের নেতৃত্বে দেশের বিজ্ঞানীদের ছত্রাকের জীবনরহস্য উন্মোচন নতুন সম্ভাবনার জন্ম দিয়েছে। জাতীয় ক্রিকেট দল জাতিকে উদ্বেলিত করার মতো বেশ কিছু মুহূর্ত উপহার দিয়েছে। তরুণ ক্রিকেটারদের ব্যক্তিগত নৈপুণ্য মানুষকে আশাবাদী করে তুলেছে।
যুদ্ধাপরাধের বিচার প্রসঙ্গটি একটি জলন্ত ইস্যুতে পরিণত হয়েছে। বিচার সম্পন্ন করার ক্ষেত্রে সরকার দৃঢ় প্রতিজ্ঞ। কিন্তু প্রধান বিরোধী দলের দোদুল্যমানতা আর বিচারপ্রক্রিয়া নস্যাৎ করতে স্বাধীনতাবিরোধী চক্রের ধ্বংসাত্মক তৎপরতা নানা শঙ্কার জন্ম দিয়েছে। চলমান বিচারপ্রক্রিয়া নতুন বছরে সম্পন্ন হওয়ার কথা রয়েছে। স্বাভাবিক প্রক্রিয়ায় এ বিচার শেষ হলে বিচারহীনতার অভিশাপ থেকে মুক্ত হবে বাঙালি।
স্বজাতি সম্পর্কে বাঙালি কবি বলেছেন, জ্বলে পুড়ে মরে ছারখার তবু মাথা নোয়াবার নয়। বাঙালি মাথা নোয়ায় না। এগিয়ে যায় এবং এগিয়ে যাবেই। বছর শেষের একটি আন্তর্জাতিক খবরও সে ইঙ্গিতই দিয়েছে। আন্তর্জাতিক অর্থনৈতিক সংস্থা প্রাইসওয়াটার হাউস কুপারসের সমীক্ষা উদ্ধৃত করে যুক্তরাজ্যের প্রভাবশালী পত্রিকা দ্য গার্ডিয়ান খবর ছেপেছে, ২০৫০ সাল নাগাদ বাংলাদেশের অর্থনীতি পশ্চিমা দেশগুলোকেও ছাড়িয়ে যেতে পারে। অমিত প্রাণশক্তি নিয়ে জাতি সেই পথেই এগোবে- নতুন বছরে এটাই প্রত্যাশা।
অনায়াসে বলা যায়, নতুন বছরটি হবে রাজনৈতিক অঙ্গনে চ্যালেঞ্জের বছর। বর্তমান সরকারের মেয়াদকালে এ বছরটি হচ্ছে বিদায়ী বছর। ক্ষমতাসীনরা চাইবে অসম্পূর্ণ কাজ সম্পন্ন করে ভালোয় ভালোয় সময়টা পার করে দিতে। আর বিরোধী দল চাইবে সর্বশক্তি নিয়োগ করে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবি আদায় করে নিতে। এ কারণে রাজনৈতিক কলহ-সংঘাতে উত্তপ্ত থাকতে পারে নতুন বছরটি।
জাতীয় জীবনে নানা উত্থান-পতনের মধ্য দিয়ে গেছে ২০১২ সাল। নিজ বাসায় সাংবাদিক দম্পতি সাগর সরওয়ার-মেহেরুন রুনি হত্যাকাণ্ড দেশে আলোড়ন তুলেছে। ঘাতকদের গ্রেপ্তার কিংবা হত্যার রহস্য উন্মোচনে পুলিশ-র্যাবের ভূমিকা ও সরকারের আন্তরিকতা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। বছরজুড়ে রাজনীতিতে উত্তাপ ছড়িয়েছে পদ্মা সেতু প্রকল্পে দুর্নীতির অভিযোগ। বিশ্বব্যাংকের সঙ্গে বিবাদ বেড়েছে। পদ ছাড়তে হয়েছে যোগাযোগমন্ত্রী আবুল হোসেনকে। সর্বশেষ দুদকের মামলা দায়ের নিয়েও ঘটে গেছে অনেক নাটকীয়তা। সংকটের সুরাহা এখনো হয়নি। নতুন বছরেও এ প্রসঙ্গটিকে কেন্দ্র করে পানি ঘোলা হবে নিশ্চিত।
রেলমন্ত্রীর পিএসের ঘুষ কেলেঙ্কারি এবং পরিণতিতে রেল মন্ত্রণালয় থেকে সুরঞ্জিত সেনগুপ্তের বিদায়, মধ্যরাতে বনানীর রাজপথ থেকে বিএনপি নেতা ইলিয়াস আলীর রহস্যজনক নিখোঁজের ঘটনা, কক্সবাজারের রামু-উখিয়ায় বৌদ্ধবিহারে সাম্প্রদায়িক হামলা, হরতালের দিনে ছাত্রলীগকর্মীদের হাতে বিশ্বজিতের মতো নিরীহ যুবকের লোমহর্ষক নিহত হওয়ার ঘটনা দেশজুড়ে তোলপাড় ফেলে, যা সরকারের জন্য ছিল বিব্রতকর। ডেসটিনির ঘটনা, হলমার্ক-সোনালী ব্যাংক কেলেঙ্কারি, মায়ের বুকে গুলি করে শিশু পরাগকে অপহরণ প্রভৃতি ঘটনাও ব্যাপক আলোচিত-সমালোচিত হয়েছে। এসব ঘটনায় সরকারও শেষ পর্যন্ত দৃঢ় অবস্থান দেখাতে পেরেছে। দ্রব্যমূল্য কিংবা বিদ্যুতের ক্ষেত্রে বছরটি অন্যান্য বছরের তুলনায় সহনীয় ছিল। এ ছাড়া সমুদ্রসীমা নির্ধারণে আন্তর্জাতিক আদালতের রায় আদায়কে সরকার বড় সাফল্য এবং 'সমুদ্রজয়' হিসেবে দেখছে।
প্রধান বিরোধীদল বিএনপি যথারীতি সংসদ বর্জন অব্যাহত রাখলেও রাজপথে গা ঝাড়া দিয়ে ওঠার চেষ্টা করেছে। তবে মামলার মুখে মহাসচিবের আত্মগোপন, অতঃপর নতুন মামলায় গ্রেপ্তার, তাদের আন্দোলনে ছন্দপতন ঘটিয়েছে। বিরোধীদলীয় নেতার ভারত সফর এবং ভারতের সঙ্গে সম্পর্ক উন্নয়নে সাফল্য দাবি রাজনৈতিক অঙ্গনে নতুন মাত্রা যোগ করে।
২০১২ সালে বেশ কিছু ঘটনা-দুর্ঘটনা দেশজুড়ে বিষাদের ছায়া ফেলে। আশুলিয়ার তাজরীন ফ্যাশনসে আগুনে পুড়ে শতাধিক শ্রমিকের মৃত্যু এবং চট্টগ্রামে উড়াল সড়কের গার্ডার ধসে সাধারণ মানুষের মৃত্যুর ঘটনায় জাতীয় শোক ঘোষণা করা হয়। অনেক বরেণ্য মানুষের মৃত্যুও নাড়া দিয়েছে মানুষকে। চলে গেছেন নন্দিত কথাশিল্পী হুমায়ূন আহমেদ। চিরবিদায় নিয়েছেন শিল্পগুরু সফিউদ্দিন আহমেদ, স্থপতি মাজহারুল ইসলাম, অর্থনীতিবিদ অধ্যাপক মোজাফ্ফর আহমদ, সাংবাদিক ফয়েজ আহমেদ, চলচ্চিত্রকার সুভাষ দত্ত, শিক্ষাবিদ খান সারওয়ার মুরশিদ, নজরুলসংগীতজ্ঞ সোহরাব হোসেন, অভিনেতা হুমায়ুন ফরীদি প্রমুখ গুণীজন।
জাতিকে আলোড়িত, পুলকিত করার মতো ঘটনাও ঘটেছে অনেক। নিশাত মজুমদার ও ওয়াসফিয়া নাজরীনের এভারেস্ট চূড়া বিজয় নারীদের এগিয়ে যাওয়ার প্রমাণ দিয়েছে। বিজ্ঞানী মাকসুদুল আলমের নেতৃত্বে দেশের বিজ্ঞানীদের ছত্রাকের জীবনরহস্য উন্মোচন নতুন সম্ভাবনার জন্ম দিয়েছে। জাতীয় ক্রিকেট দল জাতিকে উদ্বেলিত করার মতো বেশ কিছু মুহূর্ত উপহার দিয়েছে। তরুণ ক্রিকেটারদের ব্যক্তিগত নৈপুণ্য মানুষকে আশাবাদী করে তুলেছে।
যুদ্ধাপরাধের বিচার প্রসঙ্গটি একটি জলন্ত ইস্যুতে পরিণত হয়েছে। বিচার সম্পন্ন করার ক্ষেত্রে সরকার দৃঢ় প্রতিজ্ঞ। কিন্তু প্রধান বিরোধী দলের দোদুল্যমানতা আর বিচারপ্রক্রিয়া নস্যাৎ করতে স্বাধীনতাবিরোধী চক্রের ধ্বংসাত্মক তৎপরতা নানা শঙ্কার জন্ম দিয়েছে। চলমান বিচারপ্রক্রিয়া নতুন বছরে সম্পন্ন হওয়ার কথা রয়েছে। স্বাভাবিক প্রক্রিয়ায় এ বিচার শেষ হলে বিচারহীনতার অভিশাপ থেকে মুক্ত হবে বাঙালি।
স্বজাতি সম্পর্কে বাঙালি কবি বলেছেন, জ্বলে পুড়ে মরে ছারখার তবু মাথা নোয়াবার নয়। বাঙালি মাথা নোয়ায় না। এগিয়ে যায় এবং এগিয়ে যাবেই। বছর শেষের একটি আন্তর্জাতিক খবরও সে ইঙ্গিতই দিয়েছে। আন্তর্জাতিক অর্থনৈতিক সংস্থা প্রাইসওয়াটার হাউস কুপারসের সমীক্ষা উদ্ধৃত করে যুক্তরাজ্যের প্রভাবশালী পত্রিকা দ্য গার্ডিয়ান খবর ছেপেছে, ২০৫০ সাল নাগাদ বাংলাদেশের অর্থনীতি পশ্চিমা দেশগুলোকেও ছাড়িয়ে যেতে পারে। অমিত প্রাণশক্তি নিয়ে জাতি সেই পথেই এগোবে- নতুন বছরে এটাই প্রত্যাশা।
No comments