আরেকটি সোনালি দিনের আশায় by সাইদুজ্জামান
'সবাই জানতে চাচ্ছে কেন রান পাচ্ছি না। কিন্তু মনে রাখবেন, ব্যর্থতা একটা ঘটনা মাত্র, কোনো ব্যক্তি নয়। জন্মেছি জেতার জন্য', সোমবার ঢাকায় ফিরে করা ক্রিস গেইলের টুইটের প্রতিটি শব্দ থেকে যেন ঠিকরে বের হচ্ছে জেদ।
মুশফিকুর রহিমও জানেন বড় দলের বড় ক্রিকেটাররা স্বরূপে ফেরার ক্ষমতা রাখেন। তবে খুলনায় টানা দুটি জয়ের আত্মবিশ্বাসের জোরে গতকাল সন্ধ্যায় বাংলাদেশ অধিনায়ক যা বলে গেছেন, সেটি গেইলকে পাল্টা টুইট করতে পারলে ভালোই হতো, 'ওরা বড় দল, ঘুরে দাঁড়ানোর ক্ষমতা আছে। তবে আমরা যদি তিন ডিপার্টমেন্টেই আগের দুই ম্যাচের মতো খেলতে পারি, তাহলে ওরা ভালো খেললেও আমরা জিতব।' তৃতীয় ওয়ানডের টিকিটের জন্য হাহাকার দুই দল খুলনায় থাকতেই আছড়ে পড়েছিল ঢাকায়। বাধ্য হয়ে বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে টিকিট ফুরিয়ে যাওয়ার বার্তা দিয়েও স্বস্তিতে নেই বোর্ডসংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা। মিরপুর স্টেডিয়ামের কার পার্কিং থেকে শুরু করে টিকিটপ্রার্থীদের ভিড় ছড়িয়ে পড়ে বিসিবির করিডরেও। সিরিজ জেতা ম্যাচের সাক্ষী হতে আগ্রহী সবাইকে সুযোগ দিতে গেলে ২৫ হাজার দর্শক ধারণক্ষম মিরপুর স্টেডিয়ামের গ্যালারি তো বটেই, পুরো ঢাকার নগর পরিকল্পনাই পাল্টে ফেলতে হতে পারে! টিকিটের দাবি মেটাতে হিমশিম খাওয়া বিসিবি পরিচালক গাজী আশরাফ হোসেন লিপুর উদ্বেগ সিরিজের শেষ দুটি ওয়ানডেকে ঘিরেও, 'চার ও পাঁচ নম্বর ম্যাচের জন্য টিকিটের চাহিদা আরো বেশি!' তার মানে আজ 'মিস' হয়ে গেলেও পরের ম্যাচগুলোয়ও তো সিরিজ জেতার সম্ভাবনা নিয়ে মাঠে নামবে বাংলাদেশ।
২-০ ব্যবধানে এগিয়ে থাকা দলের নেতা মুশফিকুর রহিমের ভাবনায় সিরিজ নির্ধারণে সর্বাধিক গুরুত্ব পাচ্ছে আজকের দিন-রাতের ম্যাচটিই, "আমরা চেষ্টা করব কালকের ম্যাচটাও প্রথম দুটোর মতোই খেলতে, যাতে পরের দুটো ম্যাচে আমাদের জন্য পরিস্থিতি 'ডু অর ডাই' না হয়ে যায়।" ওয়েস্ট ইন্ডিজ একবার ঘুরে দাঁড়াতে পারলে যে উৎসবের সব রং ফিকে হয়ে যেতে পারে, সেই আশঙ্কা তো আছেই। ক্রিকেটে মানসিক শক্তির প্রভাব এতই বেশি যে, বাংলাদেশের ব্যাটিং স্বর্গেও পাঁচ ইনিংসে ক্রিস গেইলের সর্বোচ্চ স্কোর মাত্র ৩৫ রান! বোলারদের রাতের ঘুম কেড়ে নেওয়া এই ব্যাটসম্যান বাংলাদেশে এসে যেন নিজেই ঘুমিয়ে পড়েছেন, ঢালাওভাবে দলের সব ব্যাটসম্যানকেই এ দোষে দুষ্ট মনে করছেন ক্যারিবীয় কোচ ওটিস গিবসন। ব্যাপারটাকে পুরোপুরি গেইল কিংবা ক্যারিবীয় ব্যাটসম্যানদের খেয়ালি ব্যাটিং বলে মানতে নারাজ মুশফিক, 'এটা ঠিক যে তাঁরা উইকেট ছুড়ে দিয়ে এসেছেন। একই সঙ্গে এটাও ঠিক যে উইকেট ছুড়ে দিয়ে আসতে আমরা ওদের বাধ্যও করেছি। কারণ আমাদের বোলিংটা হয়েছে দারুণ। যে কারণে উইকেট ছুড়ে দিয়ে আসা ছাড়া কোনো উপায়ই ছিল না ওদের।'
খুলনার প্রতিপক্ষকে 'নিরুপায়' করে দেওয়ার আত্মবিশ্বাসটা কি কাল সন্ধ্যায় মিরপুর স্টেডিয়ামের মাঠে নেমেই একটু আপেক্ষিক মনে হলো মুশফিকুর রহিমের, 'দু-এক দিন আগে থেকেই গামিনীর (মিরপুরের কিউরেটর) সঙ্গে কথা হচ্ছিল। জিজ্ঞাসা করছিলাম, এখানে রাতে কুয়াশাটা কী রকম পড়ে। আজ দেখে অবাকই হলাম। এত বেশি কুয়াশা। আমার যত দূর মনে পড়ে, কিটপ্লাই কাপে ২৯০ করেও আমরা কুয়াশার জন্য ভারতের কাছে হেরে গিয়েছিলাম। সুতরাং, এটা অবশ্যই চিন্তার ব্যাপার।' শিশিরের যে হাবভাব, তাতে দ্বিতীয় ইনিংসের পুরোটা সময়ই বল 'গ্রিপ' করতে সমস্যা হবে বোলারদের; স্পিননির্ভর বাংলাদেশের জন্য যা আরো কঠিন। তাই টস জিতলেই যে ফিল্ডিং নেবেন মুশফিক, অন্তত এটা নিয়ে কোনো সংশয় নেই। ঠিক এক বছর পর রুবেল হোসেনের ওয়ানডে প্রত্যাবর্তনও নিশ্চিত করেছেন অধিনায়ক, 'রাজু (আবুল হাসান) যেহেতু নেই, আশা করছি, সব কিছু ঠিক থাকলে কাল সে ইনশাল্লাহ খেলবে।'
অভাবিত কিছু না ঘটলে আজকের ম্যাচে বাংলাদেশের একাদশে পরিবর্তন এই একটিই। কিন্তু ওয়েস্ট ইন্ডিজ দলে পরিবর্তনের ঝোড়ো হাওয়া বইবে কি না, সে সম্পর্কে নূ্যনতম ধারণা পাওয়ার সুযোগও কাল মেলেনি। অনুশীলনই যে করেনি ক্যারিবীয়রা! হোটেলেই জিম করেছেন ক্রিস গেইলরা। মিডিয়া ম্যানেজারের মাধ্যমে কোচের দু-একটি 'বাণী' অবশ্য ছড়িয়ে দেওয়া হয়েছে স্থানীয় সংবাদমাধ্যমে। নিজ দলের ব্যাটসম্যানদের সমালোচনার সঙ্গে আছে সিরিজে ফেরার হুঙ্কারও। তবে কোচের হুঙ্কারের চেয়ে গতকাল হোটেলে বসে ক্যারিবীয় ব্যাটসম্যানদের আত্মোপলব্ধি এবং ক্রিস গেইলের টুইট বাংলাদেশের জন্য সতর্কবাণীই। সঙ্গে টস হারলে রাতের শিশিরও 'যোগ' দিতে পারে মুশফিকদের বিপক্ষ দলে।
মাঠের বাইরে প্রত্যাশার বাঁধভাঙা স্রোত আর ভেতরে ওত পেতে থাকা জানা-অজানা শত্রুর ভিড়! চাপটা কি তাহলে বাংলাদেশের ওপরই বেশি? উত্তরে চাপটা প্রতিপক্ষের ওপরই সরিয়ে দিয়েছেন মুশফিকুর রহিম, 'চাপ তো এখন আমাদের ওপর না; পুরোটাই ওদের ওপর। কারণ ওরা যেভাবে হেরেছে, সেটা অবশ্যই ওদের ভাবাবে। আমরা ১ উইকেট বা ১০ রানে জিতিনি, অনেক বড় ব্যবধানেই জিতেছি।' ব্যবধানের চেয়েও বড় কথা, ওই দুটি ম্যাচে যখন যা দরকার ছিল, সহযোদ্ধাদের কাছ থেকে তা-ই পেয়েছেন অধিনায়ক। আজ তারই পুনরাবৃত্তি করে মুশফিকের প্রথম চাওয়া, 'কালকের (আজকের) ম্যাচে যেন আমরা তেমনই খেলি, যেমনটা আগের দুই ম্যাচে তিনটি ডিপার্টমেন্টেই খেলেছিলাম।'
তাহলে কি জয়ের লক্ষ্যে ছাড় দিচ্ছেন মুশফিক? না, খুলনার নৈপুণ্য ঢাকায় বয়ে আনতে পারলে জয়ের পক্ষেই বাজি ধরে আছেন মুশফিকুর রহিম। তবু বড় লক্ষ্যের সামনে দাঁড়িয়ে 'ছোট' দলের নেতার এটুকু সতর্ক না হলে কি আর চলে! সামান্য ভুলের সুযোগে হামলে পড়ার ক্ষমতা যে ওয়েস্ট ইন্ডিজের আছে, সেটি কারো অজানা থাকার কথা নয়। এই মিরপুরেই নিউজিল্যান্ডকে ৪-০-তে হারানোর সুখস্মৃতি আছে। তবে সেটি তো ২০১০ সালের ঘটনা। মাঝে এশিয়া কাপের স্নায়ুক্ষয়ী ফাইনালে হারের পর আবারও বড় প্রাপ্তির সম্ভাবনার সামনে বাংলাদেশ দল, যেখানে দাঁড়িয়ে মুশফিক মনে করিয়ে দিচ্ছেন, 'সিরিজ শুরুর আগে আমরাও ভাবিনি যে প্রথম দুইটা ম্যাচে আগে জিতব।'
টানা জয় আর অমিত সম্ভাবনার সৌরভ নিয়েও যেন অচেনা জগতে বাংলাদেশ দল।
২-০ ব্যবধানে এগিয়ে থাকা দলের নেতা মুশফিকুর রহিমের ভাবনায় সিরিজ নির্ধারণে সর্বাধিক গুরুত্ব পাচ্ছে আজকের দিন-রাতের ম্যাচটিই, "আমরা চেষ্টা করব কালকের ম্যাচটাও প্রথম দুটোর মতোই খেলতে, যাতে পরের দুটো ম্যাচে আমাদের জন্য পরিস্থিতি 'ডু অর ডাই' না হয়ে যায়।" ওয়েস্ট ইন্ডিজ একবার ঘুরে দাঁড়াতে পারলে যে উৎসবের সব রং ফিকে হয়ে যেতে পারে, সেই আশঙ্কা তো আছেই। ক্রিকেটে মানসিক শক্তির প্রভাব এতই বেশি যে, বাংলাদেশের ব্যাটিং স্বর্গেও পাঁচ ইনিংসে ক্রিস গেইলের সর্বোচ্চ স্কোর মাত্র ৩৫ রান! বোলারদের রাতের ঘুম কেড়ে নেওয়া এই ব্যাটসম্যান বাংলাদেশে এসে যেন নিজেই ঘুমিয়ে পড়েছেন, ঢালাওভাবে দলের সব ব্যাটসম্যানকেই এ দোষে দুষ্ট মনে করছেন ক্যারিবীয় কোচ ওটিস গিবসন। ব্যাপারটাকে পুরোপুরি গেইল কিংবা ক্যারিবীয় ব্যাটসম্যানদের খেয়ালি ব্যাটিং বলে মানতে নারাজ মুশফিক, 'এটা ঠিক যে তাঁরা উইকেট ছুড়ে দিয়ে এসেছেন। একই সঙ্গে এটাও ঠিক যে উইকেট ছুড়ে দিয়ে আসতে আমরা ওদের বাধ্যও করেছি। কারণ আমাদের বোলিংটা হয়েছে দারুণ। যে কারণে উইকেট ছুড়ে দিয়ে আসা ছাড়া কোনো উপায়ই ছিল না ওদের।'
খুলনার প্রতিপক্ষকে 'নিরুপায়' করে দেওয়ার আত্মবিশ্বাসটা কি কাল সন্ধ্যায় মিরপুর স্টেডিয়ামের মাঠে নেমেই একটু আপেক্ষিক মনে হলো মুশফিকুর রহিমের, 'দু-এক দিন আগে থেকেই গামিনীর (মিরপুরের কিউরেটর) সঙ্গে কথা হচ্ছিল। জিজ্ঞাসা করছিলাম, এখানে রাতে কুয়াশাটা কী রকম পড়ে। আজ দেখে অবাকই হলাম। এত বেশি কুয়াশা। আমার যত দূর মনে পড়ে, কিটপ্লাই কাপে ২৯০ করেও আমরা কুয়াশার জন্য ভারতের কাছে হেরে গিয়েছিলাম। সুতরাং, এটা অবশ্যই চিন্তার ব্যাপার।' শিশিরের যে হাবভাব, তাতে দ্বিতীয় ইনিংসের পুরোটা সময়ই বল 'গ্রিপ' করতে সমস্যা হবে বোলারদের; স্পিননির্ভর বাংলাদেশের জন্য যা আরো কঠিন। তাই টস জিতলেই যে ফিল্ডিং নেবেন মুশফিক, অন্তত এটা নিয়ে কোনো সংশয় নেই। ঠিক এক বছর পর রুবেল হোসেনের ওয়ানডে প্রত্যাবর্তনও নিশ্চিত করেছেন অধিনায়ক, 'রাজু (আবুল হাসান) যেহেতু নেই, আশা করছি, সব কিছু ঠিক থাকলে কাল সে ইনশাল্লাহ খেলবে।'
অভাবিত কিছু না ঘটলে আজকের ম্যাচে বাংলাদেশের একাদশে পরিবর্তন এই একটিই। কিন্তু ওয়েস্ট ইন্ডিজ দলে পরিবর্তনের ঝোড়ো হাওয়া বইবে কি না, সে সম্পর্কে নূ্যনতম ধারণা পাওয়ার সুযোগও কাল মেলেনি। অনুশীলনই যে করেনি ক্যারিবীয়রা! হোটেলেই জিম করেছেন ক্রিস গেইলরা। মিডিয়া ম্যানেজারের মাধ্যমে কোচের দু-একটি 'বাণী' অবশ্য ছড়িয়ে দেওয়া হয়েছে স্থানীয় সংবাদমাধ্যমে। নিজ দলের ব্যাটসম্যানদের সমালোচনার সঙ্গে আছে সিরিজে ফেরার হুঙ্কারও। তবে কোচের হুঙ্কারের চেয়ে গতকাল হোটেলে বসে ক্যারিবীয় ব্যাটসম্যানদের আত্মোপলব্ধি এবং ক্রিস গেইলের টুইট বাংলাদেশের জন্য সতর্কবাণীই। সঙ্গে টস হারলে রাতের শিশিরও 'যোগ' দিতে পারে মুশফিকদের বিপক্ষ দলে।
মাঠের বাইরে প্রত্যাশার বাঁধভাঙা স্রোত আর ভেতরে ওত পেতে থাকা জানা-অজানা শত্রুর ভিড়! চাপটা কি তাহলে বাংলাদেশের ওপরই বেশি? উত্তরে চাপটা প্রতিপক্ষের ওপরই সরিয়ে দিয়েছেন মুশফিকুর রহিম, 'চাপ তো এখন আমাদের ওপর না; পুরোটাই ওদের ওপর। কারণ ওরা যেভাবে হেরেছে, সেটা অবশ্যই ওদের ভাবাবে। আমরা ১ উইকেট বা ১০ রানে জিতিনি, অনেক বড় ব্যবধানেই জিতেছি।' ব্যবধানের চেয়েও বড় কথা, ওই দুটি ম্যাচে যখন যা দরকার ছিল, সহযোদ্ধাদের কাছ থেকে তা-ই পেয়েছেন অধিনায়ক। আজ তারই পুনরাবৃত্তি করে মুশফিকের প্রথম চাওয়া, 'কালকের (আজকের) ম্যাচে যেন আমরা তেমনই খেলি, যেমনটা আগের দুই ম্যাচে তিনটি ডিপার্টমেন্টেই খেলেছিলাম।'
তাহলে কি জয়ের লক্ষ্যে ছাড় দিচ্ছেন মুশফিক? না, খুলনার নৈপুণ্য ঢাকায় বয়ে আনতে পারলে জয়ের পক্ষেই বাজি ধরে আছেন মুশফিকুর রহিম। তবু বড় লক্ষ্যের সামনে দাঁড়িয়ে 'ছোট' দলের নেতার এটুকু সতর্ক না হলে কি আর চলে! সামান্য ভুলের সুযোগে হামলে পড়ার ক্ষমতা যে ওয়েস্ট ইন্ডিজের আছে, সেটি কারো অজানা থাকার কথা নয়। এই মিরপুরেই নিউজিল্যান্ডকে ৪-০-তে হারানোর সুখস্মৃতি আছে। তবে সেটি তো ২০১০ সালের ঘটনা। মাঝে এশিয়া কাপের স্নায়ুক্ষয়ী ফাইনালে হারের পর আবারও বড় প্রাপ্তির সম্ভাবনার সামনে বাংলাদেশ দল, যেখানে দাঁড়িয়ে মুশফিক মনে করিয়ে দিচ্ছেন, 'সিরিজ শুরুর আগে আমরাও ভাবিনি যে প্রথম দুইটা ম্যাচে আগে জিতব।'
টানা জয় আর অমিত সম্ভাবনার সৌরভ নিয়েও যেন অচেনা জগতে বাংলাদেশ দল।
No comments