এশিয়া প্যাসিফিক আঞ্চলিক স্কাউট সম্মেলন, ঢাকা সেবায় সদাপ্রস্তুত by সিদ্ধার্থ মজুমদার
স্কাউটের টান বড় টান। এ এক অন্য রকম বন্ধুত্ব। এবারও তার প্রমাণ মিলল ২৫ থেকে ২৯ নভেম্বর ঢাকায় অনুষ্ঠিত এশিয়া প্যাসিফিক আঞ্চলিক স্কাউট সম্মেলনে। বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে বহু দূরের দেশ থেকে উড়ে এসেছিলেন তরুণ স্কাউট প্রতিনিধিরা।
তাঁরা এসেছিলেন অস্ট্রেলিয়া, নিউজিল্যান্ড, জাপান, চীন, দক্ষিণ কোরিয়া, মালয়েশিয়া, ফিলিপাইনসহ ২৩টি দেশ থেকে। এ সম্মেলনে সবাই হয়ে উঠেছিলেন এক বিশ্ব-পরিবারের অংশ। নানা দেশের, নানা ভাষার এসব তরুণ কাজ করেছেন কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে। গেয়েছেন তারুণ্যের জয়গান।
এতগুলো দেশের তরুণদের দ্রুত বন্ধু হতে অভিনব সব কৌশল এঁটেছিলেন সেদিন আয়োজকেরা। যেদিন সব দেশের স্কাউট এক ছাদের নিচে। তখনো কারও সঙ্গে কারও পরিচয় নেই। দ্রুত তাঁদের ১০ জন করে কয়েকটি ভাগে ভাগ করে দেওয়া হলো। ১০ জনের মুখোমুখি বসলেন আরও ১০ জন। এবার ১০ জন একই সঙ্গে আঁকতে শুরু করলেন সামনে বসা ভিনদেশি বন্ধুর ছবি। আর এই বন্ধুটি একই সঙ্গে গড় গড় করে বলে যেতে থাকলেন তাঁর পরিচয়, তাঁর ভালোলাগা-মন্দলাগা সবকিছু। সময় মাত্র এক মিনিট। আঁকা আর বলা শেষ হতেই তিনি চলে যান পাশের চেয়ারে। পরেরজন আবার আঁকতে শুরু করেন। তিনিও নিজের পরিচয় বলতে শুরু করেন। এমন করেই দ্রুত বন্ধু হয়ে যান তাঁরা। কাজের পরিবেশটাও বড্ড সরল হয়ে যায় তারপর।
মোট আটটি গ্রুপে ভাগ করে দেওয়া হয় সবাইকে। গ্রুপের সদস্যরা নিজেদের মতো করে কাজ করতে থাকেন। কাজ শেষে তুমুল বিতর্ক হয় একে অন্যের সঙ্গে। তাঁদের কাজের প্রধান বিষয় ছিল, ‘ব্রিজিং দ্য গ্যাপ’ শুধু স্কাউটিংয়ের মধ্যে সীমাবদ্ধ না রেখে নিজেদের মধ্যে তাঁরা সাঁকো তৈরি করতে চেয়েছেন। উঠে এসেছে পরিবেশ এবং প্রযুক্তিবিষয়ক কথাবার্তাও। তরুণ স্কাউটদের চাওয়া-পাওয়া প্রতিফলিত হয়েছে তাঁদের ফোরামে। অনেক খেটে তৈরি করা তাঁদের প্রস্তাবনাগুলো চলে যাবে মূল স্কাউট কনফারেন্সে। সেখান থেকে যা কিছু ভালো যা কিছু গ্রহণযোগ্য সেগুলো আগামী তিন বছরের জন্য বাস্তবায়িত হবে। অংশগ্রহণকারী জাপানি তরুণ হিকারি তাকেদা বললেন, ‘আমরা ভিন্ন ভিন্ন দেশ থেকে এলেও আমাদের লক্ষ্য ছিল একদমই অভিন্ন। এতগুলো দেশ মিলে আমরা একটা পরিবার হয়ে গিয়েছিলাম। বড় ভালো সময় কেটেছে এখানে।’
হংকংয়ের তউচিইয়াং আলভিনও গলা মেলালেন তাঁর সঙ্গে, ‘খুব উত্তেজনার মধ্যে কেটেছে পুরো সময়। সুযোগ দিলে তরুণেরাও যে ভালো কিছু ভাবতে পারেন। তা কিন্তু আমরা করে দেখিয়েছি।’
এই স্কাউট সম্মেলনের গুরুত্বপূর্ণ অংশ ছিল এপিআর কোর্স ফর লিডার ট্রেইনার এবং এপিআর স্কাউট ইয়ুথ ফোরাম।
ইয়ুথ ফোরামের শেষ দিন। বিকেল বেলা ছিল টান টান উত্তেজনা। আগামী তিন বছরের জন্য ইয়াং অ্যাডাল্ট মেম্বারস গ্রুপের নির্বাচন হবে। ২০১২ থেকে ২০১৫ সাল অবধি এই মেয়াদে নির্বাচিত হওয়ার জন্য প্রচার-প্রচারণার কমতি ছিল না কারও। কেউ কেউ নির্বাচনের প্রস্তুতি নিয়েছেন দুই বছর ধরে। পরিকল্পনা-সংবলিত ইশতেহার বিতরণ এবং ভোট প্রার্থনাও বাদ যায়নি। নির্বাচনে জেতার পর কীভাবে এশিয়া প্যাসিফিক অঞ্চলে স্কাউটদের কার্যক্রম আরও সম্প্রসারিত করা যাবে—এই নিয়েও ছিল পরিকল্পনা। বাংলাদেশের পঙ্কজ সূত্রধরও নির্বাচনের দৌড়ে ছিলেন। নির্বাচনের আগে ভোটারদের হাতে পৌঁছে গেল ব্যালট পেপার। স্বয়ং বাংলাদেশের নির্বাচন কমিশন সরবরাহ করল ব্যালট বাক্স। সবার ভোট দেওয়া শেষে ব্যালট বাক্স স্থানান্তরিত হলো গোপন কক্ষে। তারপর প্রতীক্ষা শেষে বাংলাদেশি স্কাউটদের আনন্দে ভাসিয়ে সদস্যপদ পেয়ে গেলেন পঙ্কজ সূত্রধর। প্রথম বাংলাদেশি হিসেবে পঙ্কজ পেলেন ‘ইয়াং অ্যাডাল্ট মেম্বারস গ্রুপের’ মর্যাদাপূর্ণ সদস্যপদ।
পঙ্কজ ছাড়াও নির্বাচিত হয়েছেন থাইল্যান্ড থেকে সর্নসন হো (চেয়ারপারসন), হংকং থেকে ট্যাম ম্যান-ইং, মালয়েশিয়া থেকে নিজারুল ওমর, মালদ্বীপ থেকে ফিরুজুল খলিল, ফিলিপাইন থেকে ইউজিন লেস্টার লিন।
নির্বাচনে বিজয়ী পঙ্কজ সূত্রধরের কাছে জানতে চেয়েছিলাম, আগামী তিন বছর কী কাজ করতে হবে তাঁদের। আনন্দিত পঙ্কজ বললেন, ‘ওয়ার্ল্ড স্কাউট ব্যুরোর এশিয়া প্যাসিফিক অঞ্চলের ইয়ুথ প্রোগ্রাম সাব কমিটির কার্যকরী সদস্য হিসেবে কাজ করতে হবে আমাকে। সেই সঙ্গে ২০১৫ সালে দক্ষিণ কোরিয়ায় অনুষ্ঠেয় স্কাউট ইয়ুথ ফোরামের মূল পরিচালনাকারীদের ভূমিকাও পালন করব আমরা।’
ঢাকার সম্মেলন সম্পর্কে আমরা জানতে চেয়েছিলাম এশিয়া প্যাসিফিক আঞ্চলিক স্কাউট সম্মেলনের সাংগঠনিক কমিটির সভাপতি হাবিবুল আলম বীর প্রতীকের কাছে,‘তিন বছর আগে মালয়েশিয়ার সম্মেলনে আমরা বলেছিলাম সত্যিকারভাবে যদি মাঠপর্যায়ে স্কাউটিং দেখতে চাও, তবে আমাদের দেশে আসো। আমাদের স্কাউটিংয়ের সেই সফল নমুনাই দেখল স্কাউট-বিশ্ব।’
এবার পালা দেশের বাইরে, অর্থাৎ দক্ষিণ কোরিয়ায় গিয়ে বাংলাদেশের মুখ উজ্জ্বল করার। এ জন্য মুখিয়ে আছেন বাংলাদেশের স্কাউটেরা। বাংলাদেশ তো সফলভাবে শেষ করল ২৪তম এপিআর কনফারেন্স, এখন সবার চোখ থাকবে দক্ষিণ কোরিয়ার আয়োজনের দিকে।
এতগুলো দেশের তরুণদের দ্রুত বন্ধু হতে অভিনব সব কৌশল এঁটেছিলেন সেদিন আয়োজকেরা। যেদিন সব দেশের স্কাউট এক ছাদের নিচে। তখনো কারও সঙ্গে কারও পরিচয় নেই। দ্রুত তাঁদের ১০ জন করে কয়েকটি ভাগে ভাগ করে দেওয়া হলো। ১০ জনের মুখোমুখি বসলেন আরও ১০ জন। এবার ১০ জন একই সঙ্গে আঁকতে শুরু করলেন সামনে বসা ভিনদেশি বন্ধুর ছবি। আর এই বন্ধুটি একই সঙ্গে গড় গড় করে বলে যেতে থাকলেন তাঁর পরিচয়, তাঁর ভালোলাগা-মন্দলাগা সবকিছু। সময় মাত্র এক মিনিট। আঁকা আর বলা শেষ হতেই তিনি চলে যান পাশের চেয়ারে। পরেরজন আবার আঁকতে শুরু করেন। তিনিও নিজের পরিচয় বলতে শুরু করেন। এমন করেই দ্রুত বন্ধু হয়ে যান তাঁরা। কাজের পরিবেশটাও বড্ড সরল হয়ে যায় তারপর।
মোট আটটি গ্রুপে ভাগ করে দেওয়া হয় সবাইকে। গ্রুপের সদস্যরা নিজেদের মতো করে কাজ করতে থাকেন। কাজ শেষে তুমুল বিতর্ক হয় একে অন্যের সঙ্গে। তাঁদের কাজের প্রধান বিষয় ছিল, ‘ব্রিজিং দ্য গ্যাপ’ শুধু স্কাউটিংয়ের মধ্যে সীমাবদ্ধ না রেখে নিজেদের মধ্যে তাঁরা সাঁকো তৈরি করতে চেয়েছেন। উঠে এসেছে পরিবেশ এবং প্রযুক্তিবিষয়ক কথাবার্তাও। তরুণ স্কাউটদের চাওয়া-পাওয়া প্রতিফলিত হয়েছে তাঁদের ফোরামে। অনেক খেটে তৈরি করা তাঁদের প্রস্তাবনাগুলো চলে যাবে মূল স্কাউট কনফারেন্সে। সেখান থেকে যা কিছু ভালো যা কিছু গ্রহণযোগ্য সেগুলো আগামী তিন বছরের জন্য বাস্তবায়িত হবে। অংশগ্রহণকারী জাপানি তরুণ হিকারি তাকেদা বললেন, ‘আমরা ভিন্ন ভিন্ন দেশ থেকে এলেও আমাদের লক্ষ্য ছিল একদমই অভিন্ন। এতগুলো দেশ মিলে আমরা একটা পরিবার হয়ে গিয়েছিলাম। বড় ভালো সময় কেটেছে এখানে।’
হংকংয়ের তউচিইয়াং আলভিনও গলা মেলালেন তাঁর সঙ্গে, ‘খুব উত্তেজনার মধ্যে কেটেছে পুরো সময়। সুযোগ দিলে তরুণেরাও যে ভালো কিছু ভাবতে পারেন। তা কিন্তু আমরা করে দেখিয়েছি।’
এই স্কাউট সম্মেলনের গুরুত্বপূর্ণ অংশ ছিল এপিআর কোর্স ফর লিডার ট্রেইনার এবং এপিআর স্কাউট ইয়ুথ ফোরাম।
ইয়ুথ ফোরামের শেষ দিন। বিকেল বেলা ছিল টান টান উত্তেজনা। আগামী তিন বছরের জন্য ইয়াং অ্যাডাল্ট মেম্বারস গ্রুপের নির্বাচন হবে। ২০১২ থেকে ২০১৫ সাল অবধি এই মেয়াদে নির্বাচিত হওয়ার জন্য প্রচার-প্রচারণার কমতি ছিল না কারও। কেউ কেউ নির্বাচনের প্রস্তুতি নিয়েছেন দুই বছর ধরে। পরিকল্পনা-সংবলিত ইশতেহার বিতরণ এবং ভোট প্রার্থনাও বাদ যায়নি। নির্বাচনে জেতার পর কীভাবে এশিয়া প্যাসিফিক অঞ্চলে স্কাউটদের কার্যক্রম আরও সম্প্রসারিত করা যাবে—এই নিয়েও ছিল পরিকল্পনা। বাংলাদেশের পঙ্কজ সূত্রধরও নির্বাচনের দৌড়ে ছিলেন। নির্বাচনের আগে ভোটারদের হাতে পৌঁছে গেল ব্যালট পেপার। স্বয়ং বাংলাদেশের নির্বাচন কমিশন সরবরাহ করল ব্যালট বাক্স। সবার ভোট দেওয়া শেষে ব্যালট বাক্স স্থানান্তরিত হলো গোপন কক্ষে। তারপর প্রতীক্ষা শেষে বাংলাদেশি স্কাউটদের আনন্দে ভাসিয়ে সদস্যপদ পেয়ে গেলেন পঙ্কজ সূত্রধর। প্রথম বাংলাদেশি হিসেবে পঙ্কজ পেলেন ‘ইয়াং অ্যাডাল্ট মেম্বারস গ্রুপের’ মর্যাদাপূর্ণ সদস্যপদ।
পঙ্কজ ছাড়াও নির্বাচিত হয়েছেন থাইল্যান্ড থেকে সর্নসন হো (চেয়ারপারসন), হংকং থেকে ট্যাম ম্যান-ইং, মালয়েশিয়া থেকে নিজারুল ওমর, মালদ্বীপ থেকে ফিরুজুল খলিল, ফিলিপাইন থেকে ইউজিন লেস্টার লিন।
নির্বাচনে বিজয়ী পঙ্কজ সূত্রধরের কাছে জানতে চেয়েছিলাম, আগামী তিন বছর কী কাজ করতে হবে তাঁদের। আনন্দিত পঙ্কজ বললেন, ‘ওয়ার্ল্ড স্কাউট ব্যুরোর এশিয়া প্যাসিফিক অঞ্চলের ইয়ুথ প্রোগ্রাম সাব কমিটির কার্যকরী সদস্য হিসেবে কাজ করতে হবে আমাকে। সেই সঙ্গে ২০১৫ সালে দক্ষিণ কোরিয়ায় অনুষ্ঠেয় স্কাউট ইয়ুথ ফোরামের মূল পরিচালনাকারীদের ভূমিকাও পালন করব আমরা।’
ঢাকার সম্মেলন সম্পর্কে আমরা জানতে চেয়েছিলাম এশিয়া প্যাসিফিক আঞ্চলিক স্কাউট সম্মেলনের সাংগঠনিক কমিটির সভাপতি হাবিবুল আলম বীর প্রতীকের কাছে,‘তিন বছর আগে মালয়েশিয়ার সম্মেলনে আমরা বলেছিলাম সত্যিকারভাবে যদি মাঠপর্যায়ে স্কাউটিং দেখতে চাও, তবে আমাদের দেশে আসো। আমাদের স্কাউটিংয়ের সেই সফল নমুনাই দেখল স্কাউট-বিশ্ব।’
এবার পালা দেশের বাইরে, অর্থাৎ দক্ষিণ কোরিয়ায় গিয়ে বাংলাদেশের মুখ উজ্জ্বল করার। এ জন্য মুখিয়ে আছেন বাংলাদেশের স্কাউটেরা। বাংলাদেশ তো সফলভাবে শেষ করল ২৪তম এপিআর কনফারেন্স, এখন সবার চোখ থাকবে দক্ষিণ কোরিয়ার আয়োজনের দিকে।
No comments