দাউদকান্দিতে এসিড সন্ত্রাস-ফারজানার ঘাতকদের কঠোর শাস্তি হোক
কুমিল্লার দাউদকান্দি উপজেলার সোনাকান্দা গ্রামের নারী-পুরুষ কাঁদছে তাদের প্রিয় সন্তান ফারজানা আক্তারের জন্য। গতকাল মঙ্গলবার মাত্র ১৫ বছর বয়সী এ কিশোরীর জানাজায় সর্বস্তরের হাজার হাজার মানুষের সমাবেশ ঘটে।
শিক্ষক ও শিক্ষার্থী, প্রশাসনের কর্মকর্তা, থানার দারোগা-পুলিশ, ব্যবসায়ী, কৃষক, দিনমজুর_ সবাই শোকার্ত। একই সঙ্গে তাদের ক্ষোভ, ঘৃণা ও ধিক্কার সেসব অপরাধীর জন্য_ যাদের কারণে অকালেই ঝরে গেল মেয়েটির জীবন। গত ১২ নভেম্বর এসিড সন্ত্রাসের শিকার হয়েছিল মাদ্রাসার নবম শ্রেণীর ছাত্রী ফারজানা। পড়াশোনার বাইরে অন্য কিছুর প্রতি তার আগ্রহ ছিল না। জামালকান্দি গ্রামের বখাটে যুবক সাদ্দাম হোসেন তাকে দীর্ঘদিন থেকেই নানাভাবে উত্ত্যক্ত করে আসছিল। পরিবার, সমাজ ও আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী সময়মতো ওই বখাটেকে নিবৃত্ত ও শায়েস্তা করলে হয়তো এমন বিপর্যয়ের সৃষ্টি হতো না। সাদ্দাম ও তার দুষ্কর্মের কয়েকজন সহচরের নিক্ষিপ্ত এসিডে ফারজানা এবং তার পরিবারের আরও দু'জন দগ্ধ হয়ে তিন সপ্তাহ ঢাকায় চিকিৎসাধীন ছিল। এ সময়ের মধ্যে দাউদকান্দি পুলিশ মামলার তিন আসামিকে গ্রেফতার করে। কিন্তু মূল অভিযুক্ত সাদ্দাম হোসেন এখনও পলাতক। কেন সে এত দিন ধরাছোঁয়ার বাইরে_ দাউদকান্দি থানা কর্তৃপক্ষকেই তার জবাবদিহি করতে হবে। এলাকার জনপ্রতিনিধি, রাজনৈতিক দলের নেতৃবৃন্দ এবং সমাজপতিদের প্রতি অনুরোধ_ এ ধরনের ভয়ঙ্কর সন্ত্রাসীদের প্রতি কঠোর মনোভাব গ্রহণ করুন। কোনোভাবেই তাদের প্রতি বিন্দুমাত্র অনুকম্পা নয়। সাদ্দাম হোসেনসহ বাকি অপরাধীদের গ্রেফতার এবং দ্রুত তাদের বিচারের ব্যবস্থা করে কঠোর শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে। আইনের ফাঁকফোকর গলিয়ে অপরাধীরা ছাড়া পেয়েছে_ এমন অভিযোগ যেন কোনোভাবেই দেশবাসীকে শুনতে না হয়। কঠোর আইন প্রণয়ন এবং সামাজিক সচেতনতা বৃদ্ধির কারণে এসিড সন্ত্রাসের ঘটনা কিছুটা নিয়ন্ত্রণে এসেছিল। অপরাধ কাজে যেন এ রাসায়নিকের ব্যবহার হতে না পারে, সে বিষয়ে নজরদারি বাড়ছিল। দাউদকান্দির ঘটনার পর নতুন করে দেশের কোথাও যেন এ ধরনের ঘৃণ্য অপরাধ না ঘটে, সে বিষয়ে প্রশাসন ও আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীকে তৎপরতা বাড়াতে হবে।
No comments