কর্মসৃজন কর্মসূচি-কাঙালের ধন চুরি...
সরকারের কর্মসৃজন কর্মসূচি কেবলই দরিদ্র জনগোষ্ঠীর জন্য। কিন্তু বরিশালের বাবুগঞ্জে তাতে ভাগ বসিয়েছে সরকারি কয়েকজন কর্মকর্তা। একেই বলে রক্ষক হয়ে ভক্ষক।
বুধবার সমকালে 'কর্মসৃজন কর্মসূচি : বাবুগঞ্জে পাঁচ লাখ টাকা আত্মসাৎ করেছেন সরকারি কর্মকর্তারা' শিরোনামের খবরে বলা হয় : অতিদরিদ্রদের প্রকল্পের প্রথম কিস্তির আওতায় নন-ওয়েজ খাতে কাজ না করেই ভিন্ন ভিন্ন চেকের মাধ্যমে অর্থ আত্মসাৎ করা হয়েছে। বিষয়টি ধরা পড়ার পর আত্মসাতের অর্থ দ্বিতীয় কিস্তির কাজের সঙ্গে সমন্বয় করে দেওয়ার অঙ্গীকার করলে তা করেননি সংশ্লিষ্ট প্রকল্পের সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পালনকারী সরকারি কর্মকর্তারা। এর সঙ্গে যুক্তদের কেবল সতর্ক করে দিয়ে কিংবা বদলি করেই যেন সরকার দায়িত্ব শেষ না করে, সেটাই প্রত্যাশা থাকবে। তারা শুধু কাঙালের জন্য বরাদ্দ অর্থ আত্মসাৎ করেননি, সরকারের একটি অগ্রাধিকারসম্পন্ন কর্মসূচির গোড়াটাই কেটে দিতে চেয়েছেন। এখন প্রশ্ন হচ্ছে কেবল কি বাবুগঞ্জেই এমন অপরাধ সংঘটিত হয়েছে? সরকারের জন্য জরুরি কাজ হচ্ছে প্রতিটি উপজেলা ধরে এ বিষয়ে অনুসন্ধান পরিচালনা। কেবল যে সরকারি কর্মকর্তারা এ ধরনের অপরাধ সংঘটন করেন, সেটা বলা যাবে না। এর সঙ্গে প্রভাবশালী রাজনৈতিক নেতৃত্ব এমনকি জনপ্রতিনিধিরাও কোথাও কোথাও যুক্ত হয়ে পড়েন। হতদরিদ্র জনগোষ্ঠীর ন্যায্য পাওনায় তারা অন্যায়ভাবে ভাগ বসান। সংবাদপত্রে এ সংক্রান্ত খবর প্রকাশিত হলে ওপরের কর্তৃপক্ষের কিছুটা টনক নড়ে, কিছু পদক্ষেপও হয়তো নিতে দেখা যায়। আর লুকিয়ে করা সম্ভব হলে দরিদ্ররা চরমভাবে বঞ্চিত হয়। এ কারণে দেশের সর্বত্র কর্মসৃজন কর্মসূচির ওপর সরকারের নজরদারি বাড়ানোর জন্য অনুরোধ থাকবে। এ ক্ষেত্রেও সতর্ক থাকতে হবে যাতে ভূত তাড়ানোর সরিষায় যেন ভূতের আছর না হয়। দরিদ্র জনগোষ্ঠীর জন্য সরকারের খোলাবাজারে প্রচুর ভর্তুকি দিয়ে চাল বিক্রি, ভিজিএফসহ আরও কয়েক ধরনের কল্যাণমুখী প্রকল্প চালু রয়েছে। এসব ক্ষেত্রেও অনিয়ম-দুর্নীতি হয় এবং তা বন্ধে কঠোর মনোভাব প্রত্যাশিত। ১৭ এপ্রিল রাজধানীর কারওয়ান বাজার থেকে বিপুল পরিমাণ ওএমএস কর্মসূচির চাল উদ্ধারের ঘটনা থেকে নিশ্চয়ই সরকার করণীয় খুঁজে পাবে।
No comments