প্যাট্রিয়ট- ইতিবৃত্ত
সামরিক বাহিনীর অস্ত্রভাণ্ডারকে সমৃদ্ধ
করতে ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিরক্ষাব্যবস্থা 'প্যাট্রিয়টের' জুড়ি নেই। শক্রর
ক্ষেপণাস্ত্র আর যুদ্ধবিমান ধ্বংস করতেই এর জন্ম। বর্তমানে বিশ্বের
গুটিকয়েক দেশের হাতে এ ব্যবস্থা রয়েছে।
একটি রাডার, নিয়ন্ত্রণকেন্দ্র,
জ্বালানি সরবরাহকেন্দ্র, যোগাযোগ টাওয়ার ও নিক্ষেপকের (যে যন্ত্র থেকে
ক্ষেপণাস্ত্র ছোড়া হয়) সমন্বয়ে এই ক্ষেপণাস্ত্রবিধ্বংসী ব্যবস্থা গড়ে তোলা
হয়। নির্মাতারা জানায়, একটি ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিরোধী ব্যবস্থায় ১৬টি পর্যন্ত
নিক্ষেপক থাকতে পারে। যুক্তরাষ্ট্র সাধারণত আট থেকে ১০টি ব্যবহার করে। আগে
প্রতিটি নিক্ষেপকে চারটি করে ক্ষেপণাস্ত্র থাকত। সর্বাধুনিক 'প্যাক-৩'
সংস্করণে ১৬টি পর্যন্ত ক্ষেপণাস্ত্র রাখার ব্যবস্থা রয়েছে।রাডার ও নিয়ন্ত্রণকেন্দ্র থেকে নিক্ষেপকগুলো এক কিলোমিটার পর্যন্ত দূরে থাকতে পারে। যোগসূত্রের কাজ করে বেতারতরঙ্গ। খুব সূক্ষ্ম রশ্মি দিয়ে সুবিশাল এলাকার নজরদারি করে রাডার। এর গতি অত্যন্ত দ্রুত। প্রতি সেকেন্ডে কয়েক হাজার এলাকা ঘুরে আসতে পারে রাডারের এই 'চোখ'। ১০০ কিলোমিটার এলাকার মধ্যে অস্বাভাবিক কিছু 'চোখে' আটকালেই রাডার সংকেত পাঠায় নিয়ন্ত্রণকেন্দ্রে।
নিয়ন্ত্রণকেন্দ্র সিদ্ধান্ত নিলে মাত্র কয়েক সেকেন্ডের মধ্যেই দুটি ক্ষেপণাস্ত্র সেই 'অস্বাভাবিকতা' (সাধারণত শত্রুর ক্ষেপণাস্ত্র) লক্ষ্য করে ছুটে যায়। পাঁচ মিটার লম্বা ক্ষেপণাস্ত্রগুলো শব্দের গতির চেয়ে পাঁচগুণ দ্রুততাসম্পন্ন। প্রতিটি ক্ষেপণাস্ত্র ৯০ কিলোগ্রাম বিস্ফোরক বইতে পারে। তবে এ ব্যবস্থার সবচেয়ে বড় সংকট হচ্ছে নিক্ষেপের পর ক্ষেপণাস্ত্রগুলোর সক্রিয় হতে ৯ সেকেন্ড সময় লেগে যায়।
প্যাট্রিয়টের ব্যবহার শুরু হয় ১৯৮১ সালে। তবে নাম ছড়ায় ১৯৯১ সালে উপসাগরীয় যুদ্ধের সময়। তখন ইরাকের স্কাড ক্ষেপণাস্ত্রের বিরুদ্ধে ঢাল হিসেবে ব্যবহার করা হয় প্যাট্রিয়টকে। বর্তমানে যুক্তরাষ্ট্র, জার্মানি, নেদারল্যান্ডস, জাপান, ইসরায়েল, সৌদি আরব, কুয়েত, তাইওয়ান ও গ্রিসের কাছে এ ব্যবস্থা রয়েছে। সূত্র : বিবিসি।
No comments