মেধাবী মুখ- প্রতিকূলের যাত্রী by মারুফ ইসলাম
যে পারে সে পারে, পারে সে পাথরে ফুল ফোটাতে। কথাটা হয়তো হরহামেশাই শুনি আমরা, কিন্তু দৃষ্টান্ত? নৈবচ নৈবচ। তবে আশার কথা, হাজারো প্রতিকূলতা ডিঙিয়ে কেউ কেউ হয়ে ওঠেন দৃষ্টান্ত। শ্রমে-ঘামে-সাধনায় নিরন্তর সংগ্রাম করে তবু প্রমাণ করেই ছাড়েন, ‘যে পারে, সে পারে...।
’ এমনই একজন শিপলু হাওলাদার। নিজের দুর্বলতাকে শক্তিতে পরিণত করেছেন আর সবলদের চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিয়েছেন, ইচ্ছা থাকলেই উপায় হয়। শিপলুর বয়স যখন দেড় বছর, তখনই টাইফয়েড তাঁর দুটি পা নিশ্চল করে দেয়।
শিপলু বলেন,‘চিরতরে হুইল চেয়ারে ঠাঁই হয় আমার। মা-বাবা দুশ্চিন্তাগ্রস্ত হয়েছেন নিশ্চয়, তবে হতাশ হননি কখনো। সব সময় আমাকে বুঝিয়েছেন, মানুষের মেধাই তার সর্বশ্রেষ্ঠ সম্পদ।’
তাই শরীরের আর সব অঙ্গপ্রতঙ্গের চেয়ে মস্তিষ্কের ব্যবহারটাই সবচেয়ে বেশি করেছেন শিপলু। তাই হয়ে উঠেছেন অনন্য উজ্জ্বল একজন শিক্ষার্থী। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কম্পিউটারবিজ্ঞান বিভাগ থেকে সর্বশেষ স্নাতক পরীক্ষার ফলাফলে উত্তীর্ণ হয়েছেন সাফল্যোর সঙ্গে। মেধা তালিকায় স্থান করে নিয়েছেন শীর্ষ তিনে। এখন পড়ছেন স্নাতকোত্তর পর্যায়ে।
সংগত কারণে এই শিক্ষার্থীর অবাধ বিচরণ কম্পিউটার প্রোগ্রামিংয়ের রাজ্যে। এ পর্যন্ত দেশের প্রায় সবগুলো বিশ্ববিদ্যালয়ের কম্পিউটার প্রোগ্রামিং প্রতিযোগিতায় অংশ নিয়েছেন। দেশের বাইরে ভারতেও গিয়েছিলেন একবার এই প্রতিযোগিতার সূত্রেই। ‘সেটা ২০১০ সালের কথা। ভারতের কেরালা প্রদেশের অমৃতাপুরি বিশ্ববিদ্যালয়ে কম্পিউটার প্রোগ্রামিং প্রতিযোগিতায় অংশ নিতে গিয়েছিলাম। সেই প্রতিযোগিতায় ষষ্ঠ স্থান অধিকার করেছিলাম,’ শিপলু বলছিলেন সাফল্যের কথা। দেশেও এমন সাফল্য পেয়েছেন অধিকাংশ সময়। এ পর্যন্ত আসতে শিপলুকে কম বাধা-বিপত্তির মুখোমুখি হতে হয়নি। একটা স্মৃতি তো এখনো ভুলতে পারেন না তিনি। ‘আমার প্রাথমিক শিক্ষাজীবন কেটেছে গ্রামের বাড়ি মুন্সিগঞ্জের টঙ্গিবাড়িতে। এরপর আমার শিক্ষাজীবন বাধাহীন করার উদ্দেশ্যেই বাবা আমাকে ঢাকায় নিয়ে আসেন। কিন্তু কী দুঃখজনক ব্যাপার! অনেক স্কুলই আমাকে ফিরিয়ে দিল। আমার শারীরিক অযোগ্যতা নাকি ক্লাসের পরিবেশ নষ্ট করবে, এমন অজুহাত দেখিয়ে তারা আমাকে ভর্তি করাল না।’ বলতে বলতে চোখ দুটি ঝাপসা হয়ে আসে শিপলু হাওলাদারের। শেষ পর্যন্ত অবশ্য ধানমন্ডি উচ্চবিদ্যালয়ে ভর্তি হতে পেরেছিলেন। এবং এই বিদ্যালয় থেকেই কৃতিত্বের সঙ্গে মাধ্যমিক পাস করেন। এরপর উচ্চমাধ্যমিক পাস করেছেন মালিবাগের ন্যাশনাল কলেজ থেকে।
ইচ্ছা ছিল দেশের সেরা কোনো প্রতিষ্ঠানে পড়বেন। সেই স্বপ্ন সফলও হয়েছে শিপলুর। ভর্তি হয়েছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে। তবু বিনয় শিপলুর কণ্ঠে,‘অন্য কোথাও ভর্তি হলেও আমার কোনো দঃখবোধ হতো না। আমি যেখানেই পড়ি না কেন, সেখানে আমার মেধার সঠিক ব্যবহার করতে পারছি কি না, সেটাই দেখার বিষয়।’
শিপলু তাই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির পর থেকেই তাঁর মেধাকে নানাভাবে ব্যবহার করতে শুরু করেন। বিভিন্ন প্রোগ্রামিং প্রতিযোগিতায় অংশ নেওয়া তো বটেই, পাশাপাশি বিভিন্ন সফটওয়্যার প্রতিষ্ঠানে কাজ করেছেন প্রোগ্রামার হিসেবে। কীভাবে পেলেন এই কাজের সন্ধান, এমন প্রশ্নের জবাবে বললেন, ‘বিভিন্ন প্রতিযোগিতায় অংশ নিতে নিতেই অনেক প্রোগ্রামারের সঙ্গে পরিচয় হয়েছে আর কাজের সন্ধানও মিলেছে তাঁদের কাছেই।’
এখন তবে শিপলুর স্বপ্ন কী? চোখ দুটো আবারও চিকচিক করে ওঠে তাঁর। ‘আমার স্বপ্ন একটাই, বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক হওয়া। আর সেই সঙ্গে দেশের বাইরে পিএইচডি ডিগ্রিটাও সম্পন্ন করতে চাই।’
শিপলু বলেন,‘চিরতরে হুইল চেয়ারে ঠাঁই হয় আমার। মা-বাবা দুশ্চিন্তাগ্রস্ত হয়েছেন নিশ্চয়, তবে হতাশ হননি কখনো। সব সময় আমাকে বুঝিয়েছেন, মানুষের মেধাই তার সর্বশ্রেষ্ঠ সম্পদ।’
তাই শরীরের আর সব অঙ্গপ্রতঙ্গের চেয়ে মস্তিষ্কের ব্যবহারটাই সবচেয়ে বেশি করেছেন শিপলু। তাই হয়ে উঠেছেন অনন্য উজ্জ্বল একজন শিক্ষার্থী। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কম্পিউটারবিজ্ঞান বিভাগ থেকে সর্বশেষ স্নাতক পরীক্ষার ফলাফলে উত্তীর্ণ হয়েছেন সাফল্যোর সঙ্গে। মেধা তালিকায় স্থান করে নিয়েছেন শীর্ষ তিনে। এখন পড়ছেন স্নাতকোত্তর পর্যায়ে।
সংগত কারণে এই শিক্ষার্থীর অবাধ বিচরণ কম্পিউটার প্রোগ্রামিংয়ের রাজ্যে। এ পর্যন্ত দেশের প্রায় সবগুলো বিশ্ববিদ্যালয়ের কম্পিউটার প্রোগ্রামিং প্রতিযোগিতায় অংশ নিয়েছেন। দেশের বাইরে ভারতেও গিয়েছিলেন একবার এই প্রতিযোগিতার সূত্রেই। ‘সেটা ২০১০ সালের কথা। ভারতের কেরালা প্রদেশের অমৃতাপুরি বিশ্ববিদ্যালয়ে কম্পিউটার প্রোগ্রামিং প্রতিযোগিতায় অংশ নিতে গিয়েছিলাম। সেই প্রতিযোগিতায় ষষ্ঠ স্থান অধিকার করেছিলাম,’ শিপলু বলছিলেন সাফল্যের কথা। দেশেও এমন সাফল্য পেয়েছেন অধিকাংশ সময়। এ পর্যন্ত আসতে শিপলুকে কম বাধা-বিপত্তির মুখোমুখি হতে হয়নি। একটা স্মৃতি তো এখনো ভুলতে পারেন না তিনি। ‘আমার প্রাথমিক শিক্ষাজীবন কেটেছে গ্রামের বাড়ি মুন্সিগঞ্জের টঙ্গিবাড়িতে। এরপর আমার শিক্ষাজীবন বাধাহীন করার উদ্দেশ্যেই বাবা আমাকে ঢাকায় নিয়ে আসেন। কিন্তু কী দুঃখজনক ব্যাপার! অনেক স্কুলই আমাকে ফিরিয়ে দিল। আমার শারীরিক অযোগ্যতা নাকি ক্লাসের পরিবেশ নষ্ট করবে, এমন অজুহাত দেখিয়ে তারা আমাকে ভর্তি করাল না।’ বলতে বলতে চোখ দুটি ঝাপসা হয়ে আসে শিপলু হাওলাদারের। শেষ পর্যন্ত অবশ্য ধানমন্ডি উচ্চবিদ্যালয়ে ভর্তি হতে পেরেছিলেন। এবং এই বিদ্যালয় থেকেই কৃতিত্বের সঙ্গে মাধ্যমিক পাস করেন। এরপর উচ্চমাধ্যমিক পাস করেছেন মালিবাগের ন্যাশনাল কলেজ থেকে।
ইচ্ছা ছিল দেশের সেরা কোনো প্রতিষ্ঠানে পড়বেন। সেই স্বপ্ন সফলও হয়েছে শিপলুর। ভর্তি হয়েছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে। তবু বিনয় শিপলুর কণ্ঠে,‘অন্য কোথাও ভর্তি হলেও আমার কোনো দঃখবোধ হতো না। আমি যেখানেই পড়ি না কেন, সেখানে আমার মেধার সঠিক ব্যবহার করতে পারছি কি না, সেটাই দেখার বিষয়।’
শিপলু তাই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির পর থেকেই তাঁর মেধাকে নানাভাবে ব্যবহার করতে শুরু করেন। বিভিন্ন প্রোগ্রামিং প্রতিযোগিতায় অংশ নেওয়া তো বটেই, পাশাপাশি বিভিন্ন সফটওয়্যার প্রতিষ্ঠানে কাজ করেছেন প্রোগ্রামার হিসেবে। কীভাবে পেলেন এই কাজের সন্ধান, এমন প্রশ্নের জবাবে বললেন, ‘বিভিন্ন প্রতিযোগিতায় অংশ নিতে নিতেই অনেক প্রোগ্রামারের সঙ্গে পরিচয় হয়েছে আর কাজের সন্ধানও মিলেছে তাঁদের কাছেই।’
এখন তবে শিপলুর স্বপ্ন কী? চোখ দুটো আবারও চিকচিক করে ওঠে তাঁর। ‘আমার স্বপ্ন একটাই, বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক হওয়া। আর সেই সঙ্গে দেশের বাইরে পিএইচডি ডিগ্রিটাও সম্পন্ন করতে চাই।’
No comments