গাড়িগুলো কোথায় যায় জানতে চান প্রধানমন্ত্রী by আশরাফুল হক রাজীব
প্রকল্প শেষে বিলাসবহুল গাড়িগুলো কোথায় যায় জানতে চেয়েছেন স্বয়ং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। একই সঙ্গে এসব গাড়ির বিষয়ে তিনি কয়েকটি নির্দেশনাও দিয়েছেন। তাঁর এ নির্দেশনার আলোকে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় প্রকল্পের গাড়ির হিসাব গত ২৭ নভেম্বরের মধ্যে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে পাঠাতে সব মন্ত্রণালয় ও বিভাগকে অনুরোধ জানায়।
প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় সূত্রে সর্বশেষ জানা গেছে, বিভিন্ন মন্ত্রণালয় ও বিভাগ থেকে এ ব্যাপারে যে সাড়া পাওয়া গেছে, তা সন্তোষজনক নয়। প্রকল্পের গাড়ি জমা দেওয়ার বিষয়ে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় থেকে শিগগিরই নতুন নির্দেশনা যাচ্ছে বলেও জানা গেছে।
জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের কাছে প্রধানমন্ত্রী জানতে চান, 'বিভিন্ন প্রজেক্টে গাড়ি কেনা হয় যা অত্যন্ত দামি, সেসব গাড়ি
প্রজেক্ট শেষ হওয়ার পর কোথায় যায় এবং কী করা হয়?'
জনপ্রশাসন সচিব আবদুস সোবহান শিকদার কালের কণ্ঠকে বলেন, 'প্রধানমন্ত্রী প্রকল্পের দামি গাড়ির বিষয়ে অনুশাসন প্রদান করেছেন। তাঁর এ অনুশাসন অনুযায়ী জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিয়েছে। এর আগেও প্রকল্পের গাড়ির হিসাব জমা দেওয়ার জন্য বিভিন্ন মন্ত্রণালয়কে বলা হয়েছিল। এবার প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় থেকে সরাসরি চাওয়া হয়েছে।'
জানা যায়, সরকারের বিভিন্ন প্রকল্পের কাজ পরিদর্শনের জন্য অত্যন্ত দামি ও বিলাসবহুল গাড়ি কেনা হয়। এসব গাড়ি কেনার খরচ ধরেই প্রকল্প প্রস্তাব তৈরি করা হয়। এতে প্রকল্পের ব্যয় অনেক বেড়ে যায়। প্রকল্প শেষ হওয়ার ৬০ দিনের মধ্যে এসব গাড়ি জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় বা অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগে জমা দেওয়া বাধ্যতামূলক। কিন্তু প্রকল্প শেষে বেশির ভাগ ক্ষেত্রে এসব গাড়ি ফেরত দেওয়া হয় না। কর্মকর্তারা ইচ্ছামতো এসব গাড়ি ব্যবহার করেন। প্রকল্পসংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের উচ্চপদস্থ কর্মকর্তাদের অনেক সময় এসব গাড়ি ব্যবহার করতে দেওয়া হয়। অনেক কর্মকর্তা এসব গাড়ি নিজেরা ব্যবহার না করে তাঁদের পরিবারের সদস্যদের ব্যবহার করতে দেন। অনেক সময় প্রকল্প শেষ হওয়ার আগেও সরকারের প্রভাবশালী ব্যক্তিরা এসব গাড়ি নিজেদের ব্যক্তিগত ব্যবহারের জন্য নিয়ে নেন।
আরো জানা গেছে, বর্তমান সরকার দায়িত্ব নেওয়ার পর দফায় দফায় জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় থেকে সমাপ্ত প্রকল্পের গাড়ি সরকারি পরিবহন পুলে ফেরত দেওয়ার নির্দেশনা জারি করা হয়। এতে সাড়া দেয়নি সরকারের ৫২টি মন্ত্রণালয় বা বিভাগ। শেষ পর্যন্ত এসব গাড়ির শুধু হিসাব চেয়ে নির্ধারিত ফরম পূরণ করে মন্ত্রণালয়ে পাঠানোর নির্দেশ দেয় জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়। তাতে মাত্র ৩০টি মন্ত্রণালয় বা বিভাগ সাড়া দেয়। এসব মন্ত্রণালয়ের ৫০৫টি উন্নয়ন প্রকল্পের গাড়ির হিসাব জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়। এসব প্রকল্পের মোট গাড়ি রয়েছে আট হাজার ৩৩০টি। এর মধ্যে পাঁচ হাজার ৮৪৩টি সিডান কার, মাইক্রোবাস ও জিপ। বাকিগুলো মোটরসাইকেল। এসব গাড়ির মধ্যে মাত্র একটি গাড়ি সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ে ব্যবহারের জন্য সরকারের অনুমোদন নেওয়া হয়। অন্য কোনো গাড়ি পরিবহন পুলে ফেরত দেওয়া হয়নি বা সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের টিওঅ্যান্ডই-তে (টেবিল অব অর্গানোগ্রাম অ্যান্ড ইক্যুইপমেন্ট) অন্তর্ভুক্ত করা হয়নি। বাকি সব গাড়ি নিয়ম অমান্য করে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়, দপ্তর, অধিদপ্তর বা অন্য প্রকল্পে স্থানান্তর করা হয়েছে।
সরকারি গাড়ি নীতিমালায় বলা হয়েছে, প্রকল্প শেষ হওয়ার ৬০ দিনের মধ্যে গাড়ি পরিবহন পুলে জমা দিতে হবে। প্রকল্পের অচল যানবাহন ছয় মাসের মধ্যে বিক্রি করে টাকা সরকারি কোষাগারে জমা দিতে হবে। সমাপ্ত প্রকল্পের কোনো গাড়ি একই প্রকল্পের দ্বিতীয় মেয়াদে ব্যবহার করতে হলেও মন্ত্রণালয়ের টিওঅ্যান্ডইতে অন্তর্ভুক্ত করতে হবে। প্রকল্পের মেয়াদ শেষ হওয়ার ছয় মাস আগে থেকেই প্রকল্প পরিচালক এসব গাড়ি টিওঅ্যান্ডইতে অন্তর্ভুক্ত করার ব্যবস্থা নেবেন। নির্দিষ্ট সময়ে টিওঅ্যান্ডইতে অন্তর্ভুক্ত করতে না পারলে পরিবহন পুলে গাড়ি ফেরত দিতে হবে।
তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সাবেক উপদেষ্টা এবং সাবেক মহাহিসাব নিরীক্ষক ও নিয়ন্ত্রক হাফিজউদ্দিন আহমদ এ ব্যাপারে কালের কণ্ঠকে বলেন, 'জাতি হিসেবে আমরা খুব নিচে নেমে গেছি। এ জন্য নিয়মকানুনের তোয়াক্কা করি না। গাড়ি ফেরত দেওয়ার নিয়ম থাকলেও তা মানি না।'
জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের কাছে প্রধানমন্ত্রী জানতে চান, 'বিভিন্ন প্রজেক্টে গাড়ি কেনা হয় যা অত্যন্ত দামি, সেসব গাড়ি
প্রজেক্ট শেষ হওয়ার পর কোথায় যায় এবং কী করা হয়?'
জনপ্রশাসন সচিব আবদুস সোবহান শিকদার কালের কণ্ঠকে বলেন, 'প্রধানমন্ত্রী প্রকল্পের দামি গাড়ির বিষয়ে অনুশাসন প্রদান করেছেন। তাঁর এ অনুশাসন অনুযায়ী জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিয়েছে। এর আগেও প্রকল্পের গাড়ির হিসাব জমা দেওয়ার জন্য বিভিন্ন মন্ত্রণালয়কে বলা হয়েছিল। এবার প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় থেকে সরাসরি চাওয়া হয়েছে।'
জানা যায়, সরকারের বিভিন্ন প্রকল্পের কাজ পরিদর্শনের জন্য অত্যন্ত দামি ও বিলাসবহুল গাড়ি কেনা হয়। এসব গাড়ি কেনার খরচ ধরেই প্রকল্প প্রস্তাব তৈরি করা হয়। এতে প্রকল্পের ব্যয় অনেক বেড়ে যায়। প্রকল্প শেষ হওয়ার ৬০ দিনের মধ্যে এসব গাড়ি জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় বা অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগে জমা দেওয়া বাধ্যতামূলক। কিন্তু প্রকল্প শেষে বেশির ভাগ ক্ষেত্রে এসব গাড়ি ফেরত দেওয়া হয় না। কর্মকর্তারা ইচ্ছামতো এসব গাড়ি ব্যবহার করেন। প্রকল্পসংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের উচ্চপদস্থ কর্মকর্তাদের অনেক সময় এসব গাড়ি ব্যবহার করতে দেওয়া হয়। অনেক কর্মকর্তা এসব গাড়ি নিজেরা ব্যবহার না করে তাঁদের পরিবারের সদস্যদের ব্যবহার করতে দেন। অনেক সময় প্রকল্প শেষ হওয়ার আগেও সরকারের প্রভাবশালী ব্যক্তিরা এসব গাড়ি নিজেদের ব্যক্তিগত ব্যবহারের জন্য নিয়ে নেন।
আরো জানা গেছে, বর্তমান সরকার দায়িত্ব নেওয়ার পর দফায় দফায় জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় থেকে সমাপ্ত প্রকল্পের গাড়ি সরকারি পরিবহন পুলে ফেরত দেওয়ার নির্দেশনা জারি করা হয়। এতে সাড়া দেয়নি সরকারের ৫২টি মন্ত্রণালয় বা বিভাগ। শেষ পর্যন্ত এসব গাড়ির শুধু হিসাব চেয়ে নির্ধারিত ফরম পূরণ করে মন্ত্রণালয়ে পাঠানোর নির্দেশ দেয় জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়। তাতে মাত্র ৩০টি মন্ত্রণালয় বা বিভাগ সাড়া দেয়। এসব মন্ত্রণালয়ের ৫০৫টি উন্নয়ন প্রকল্পের গাড়ির হিসাব জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়। এসব প্রকল্পের মোট গাড়ি রয়েছে আট হাজার ৩৩০টি। এর মধ্যে পাঁচ হাজার ৮৪৩টি সিডান কার, মাইক্রোবাস ও জিপ। বাকিগুলো মোটরসাইকেল। এসব গাড়ির মধ্যে মাত্র একটি গাড়ি সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ে ব্যবহারের জন্য সরকারের অনুমোদন নেওয়া হয়। অন্য কোনো গাড়ি পরিবহন পুলে ফেরত দেওয়া হয়নি বা সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের টিওঅ্যান্ডই-তে (টেবিল অব অর্গানোগ্রাম অ্যান্ড ইক্যুইপমেন্ট) অন্তর্ভুক্ত করা হয়নি। বাকি সব গাড়ি নিয়ম অমান্য করে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়, দপ্তর, অধিদপ্তর বা অন্য প্রকল্পে স্থানান্তর করা হয়েছে।
সরকারি গাড়ি নীতিমালায় বলা হয়েছে, প্রকল্প শেষ হওয়ার ৬০ দিনের মধ্যে গাড়ি পরিবহন পুলে জমা দিতে হবে। প্রকল্পের অচল যানবাহন ছয় মাসের মধ্যে বিক্রি করে টাকা সরকারি কোষাগারে জমা দিতে হবে। সমাপ্ত প্রকল্পের কোনো গাড়ি একই প্রকল্পের দ্বিতীয় মেয়াদে ব্যবহার করতে হলেও মন্ত্রণালয়ের টিওঅ্যান্ডইতে অন্তর্ভুক্ত করতে হবে। প্রকল্পের মেয়াদ শেষ হওয়ার ছয় মাস আগে থেকেই প্রকল্প পরিচালক এসব গাড়ি টিওঅ্যান্ডইতে অন্তর্ভুক্ত করার ব্যবস্থা নেবেন। নির্দিষ্ট সময়ে টিওঅ্যান্ডইতে অন্তর্ভুক্ত করতে না পারলে পরিবহন পুলে গাড়ি ফেরত দিতে হবে।
তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সাবেক উপদেষ্টা এবং সাবেক মহাহিসাব নিরীক্ষক ও নিয়ন্ত্রক হাফিজউদ্দিন আহমদ এ ব্যাপারে কালের কণ্ঠকে বলেন, 'জাতি হিসেবে আমরা খুব নিচে নেমে গেছি। এ জন্য নিয়মকানুনের তোয়াক্কা করি না। গাড়ি ফেরত দেওয়ার নিয়ম থাকলেও তা মানি না।'
No comments