শ্রদ্ধাঞ্জলি: জহুরুল হক ও আবদুল্লাহ আলমুতী- তরুণদের নিয়ত পথ দেখাবেন by মুনির হাসান
দেশে বিজ্ঞানকে জনপ্রিয় করার জন্য এখন নানা উদ্যোগ-আয়োজন রয়েছে। উন্নত বিশ্বের মতো এ দেশেও হালে জনপ্রিয় বিজ্ঞান বা পপুলার সায়েন্সের কিছুটা কদর বেড়েছে। দেশের অধিকাংশ জাতীয় দৈনিকে বিজ্ঞানসংক্রান্ত আলাদা সাপ্তাহিক আয়োজন, এমনকি কম্পিউটার সংক্রান্ত প্রতিদিনকার আয়োজনও থাকে।
আমি যখন স্কুলে পড়ি, তখনই জহুরুল হকের লেখার সঙ্গে আমার পরিচয়। বিজ্ঞান সাময়িকী ও কয়েকটি বইয়ের মাধ্যমে অবশ্য আরও একজনের সঙ্গে আমার পরিচয় হয়, তিনি আবদুল্লাহ আলমুতী শরফুদ্দীন। টেলিভিশনে অবশ্য তাঁকে অনেকবার দেখেছি।
বুয়েটে পড়তে আসার পর জানতে পারি, আমার অন্যতম প্রিয় লেখক জহুরুল হক আর তড়িৎকৌশল বিভাগের অধ্যাপক আ মু জহুরুল হক একই ব্যক্তি।
আমাদের ইলেকট্রিক্যাল সার্কিটের অন্যতম পাঠ্যবই ছিল আরপি ওয়ার্ড সাহেবের লেখা। সেখানকার সমস্যাগুলো মোটামুটি সহজ ছিল। কিন্তু প্রথম ক্লাস টেস্ট দিতে গিয়ে দেখলাম একটি মাত্র পাঠ্যবই পড়ে পরীক্ষা হলে যাওয়া ঠিক নয়। তখনই খোঁজ। জানা গেল, বাংলা ভাষায় জহুরুল হক স্যার আমাদের একটি পাঠ্যপুস্তক লিখেছেন—তড়িৎকৌশল পরিচয়। ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের পাঠ্যবই যে বাংলায় লেখা সম্ভব, সেটি প্রথম জানলাম।
পরে জেনেছিলাম ইঞ্জিনিয়ারিং শব্দের বাংলা প্রতিশব্দ প্রকৌশল এবং বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটি অব ইঞ্জিনিয়ারিং অ্যান্ড টেকনোলজির বাংলা রূপ বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়—দুটোই ড. আ মু জহুরুল হকের অবদান। বিজ্ঞানের জটিল বিষয়ের পাঠ্যপুস্তক রচনায় জহুরুল হক যেমন অগ্রণী ছিলেন, তেমনি তাঁর হাতেই সূচিত হয়েছে দেশের প্রকৌশলশিক্ষা গবেষণার সর্বোচ্চ ধাপ—পিএইচডি গবেষণা।
খোদ রাজধানীর অধিকাংশ স্কুলেই ভালো মানের কোনো বিজ্ঞানাগার নেই। বিজ্ঞানের মূল শিক্ষা কিন্তু এর প্রয়োগ—সে জন্য হাতে-কলমে শিক্ষার কোনো বিকল্প নেই। মিরপুরে এখন যেখানে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের কার্যালয়, সেখানে আলমুতী স্যারের উদ্যোগে গড়ে উঠেছিল বাংলাদেশ শিক্ষা উপকরণ বোর্ড। তবে সেটা নব্বইয়ের দশকে বন্ধ হয়ে যায়।
দেশে বিজ্ঞানমনস্কতা সৃষ্টির জন্য জনগণকে ব্যাপকভাবে বিজ্ঞানের বিষয়ে আগ্রহী করে তোলার বিকল্প নেই। আবদুল্লাহ আলমুতী, জহুরুল হক প্রমুখ যখন বিজ্ঞান সংস্কৃতি পরিষদ গড়ে তোলেন, তখন তাঁদের মনে উপমহাদেশের ইন্ডিয়ান সোসাইটি ফর কালটিভেশন অব সায়েন্সের দৃষ্টান্ত ছিল।
তবে তাঁরা দুজনই বিজ্ঞানের নানা বিষয়কে সাধারণের কাছে তুলে ধরার জন্য প্রচুর লিখেছেন।
বাংলাদেশে বিজ্ঞান জনপ্রিয় আন্দোলনের এই দুই পথিকৃৎকে যথাযথভাবে সম্মান জানানোর তেমন কিছু আমরা করতে পারিনি।
আমি প্রস্তাব করেছিলাম (এখনো করছি), বুয়েটের তড়িৎকৌশল বিভাগের একটি ল্যাবরেটরি জহুরুল হক স্যারের নামে নামকরণ করতে। কেউ রাজি হননি। আমাকে শুধু জানিয়েছেন, বুয়েটে কারও নামে কোনো ল্যাব হয় না। পরে দেখলাম ওই তড়িৎকৌশল বিভাগেই চালু হয়েছে রবার্ট নয়েস ল্যাব। রবার্ট নয়েস বিদেশি বলে হয়তো সেটা সম্ভব হয়েছে!
বিজ্ঞান জাদুঘরের একটি প্রদর্শনী কক্ষ কিংবা সেখানে একটি বিজ্ঞান লাইব্রেরি গড়ে তুলে তার মাধ্যমে আলমুতী স্যারকে যথাযথ সম্মান জানানো এমন কি কোনো কঠিন কাজ?
বুয়েটে পড়তে আসার পর জানতে পারি, আমার অন্যতম প্রিয় লেখক জহুরুল হক আর তড়িৎকৌশল বিভাগের অধ্যাপক আ মু জহুরুল হক একই ব্যক্তি।
আমাদের ইলেকট্রিক্যাল সার্কিটের অন্যতম পাঠ্যবই ছিল আরপি ওয়ার্ড সাহেবের লেখা। সেখানকার সমস্যাগুলো মোটামুটি সহজ ছিল। কিন্তু প্রথম ক্লাস টেস্ট দিতে গিয়ে দেখলাম একটি মাত্র পাঠ্যবই পড়ে পরীক্ষা হলে যাওয়া ঠিক নয়। তখনই খোঁজ। জানা গেল, বাংলা ভাষায় জহুরুল হক স্যার আমাদের একটি পাঠ্যপুস্তক লিখেছেন—তড়িৎকৌশল পরিচয়। ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের পাঠ্যবই যে বাংলায় লেখা সম্ভব, সেটি প্রথম জানলাম।
পরে জেনেছিলাম ইঞ্জিনিয়ারিং শব্দের বাংলা প্রতিশব্দ প্রকৌশল এবং বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটি অব ইঞ্জিনিয়ারিং অ্যান্ড টেকনোলজির বাংলা রূপ বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়—দুটোই ড. আ মু জহুরুল হকের অবদান। বিজ্ঞানের জটিল বিষয়ের পাঠ্যপুস্তক রচনায় জহুরুল হক যেমন অগ্রণী ছিলেন, তেমনি তাঁর হাতেই সূচিত হয়েছে দেশের প্রকৌশলশিক্ষা গবেষণার সর্বোচ্চ ধাপ—পিএইচডি গবেষণা।
খোদ রাজধানীর অধিকাংশ স্কুলেই ভালো মানের কোনো বিজ্ঞানাগার নেই। বিজ্ঞানের মূল শিক্ষা কিন্তু এর প্রয়োগ—সে জন্য হাতে-কলমে শিক্ষার কোনো বিকল্প নেই। মিরপুরে এখন যেখানে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের কার্যালয়, সেখানে আলমুতী স্যারের উদ্যোগে গড়ে উঠেছিল বাংলাদেশ শিক্ষা উপকরণ বোর্ড। তবে সেটা নব্বইয়ের দশকে বন্ধ হয়ে যায়।
দেশে বিজ্ঞানমনস্কতা সৃষ্টির জন্য জনগণকে ব্যাপকভাবে বিজ্ঞানের বিষয়ে আগ্রহী করে তোলার বিকল্প নেই। আবদুল্লাহ আলমুতী, জহুরুল হক প্রমুখ যখন বিজ্ঞান সংস্কৃতি পরিষদ গড়ে তোলেন, তখন তাঁদের মনে উপমহাদেশের ইন্ডিয়ান সোসাইটি ফর কালটিভেশন অব সায়েন্সের দৃষ্টান্ত ছিল।
তবে তাঁরা দুজনই বিজ্ঞানের নানা বিষয়কে সাধারণের কাছে তুলে ধরার জন্য প্রচুর লিখেছেন।
বাংলাদেশে বিজ্ঞান জনপ্রিয় আন্দোলনের এই দুই পথিকৃৎকে যথাযথভাবে সম্মান জানানোর তেমন কিছু আমরা করতে পারিনি।
আমি প্রস্তাব করেছিলাম (এখনো করছি), বুয়েটের তড়িৎকৌশল বিভাগের একটি ল্যাবরেটরি জহুরুল হক স্যারের নামে নামকরণ করতে। কেউ রাজি হননি। আমাকে শুধু জানিয়েছেন, বুয়েটে কারও নামে কোনো ল্যাব হয় না। পরে দেখলাম ওই তড়িৎকৌশল বিভাগেই চালু হয়েছে রবার্ট নয়েস ল্যাব। রবার্ট নয়েস বিদেশি বলে হয়তো সেটা সম্ভব হয়েছে!
বিজ্ঞান জাদুঘরের একটি প্রদর্শনী কক্ষ কিংবা সেখানে একটি বিজ্ঞান লাইব্রেরি গড়ে তুলে তার মাধ্যমে আলমুতী স্যারকে যথাযথ সম্মান জানানো এমন কি কোনো কঠিন কাজ?
No comments