জলাবদ্ধতা-আবর্জনা নয়, টাকাই যাচ্ছে জলে
চট্টগ্রাম মহানগরীকে জলাবদ্ধতামুক্ত রাখার জন্য বছরজুড়ে কোনো না কোনো কার্যক্রম চললেও কাজের কাজ তেমন কিছুই হচ্ছে না। নালা-নর্দমা থেকে ময়লা-আবর্জনা অপসারণ ও খাল পুনর্খননের কাজ বারবার করা হলেও তাতে নগরবাসীর সুফল না পাওয়ার ব্যাপারটি উদ্বেগজনক।
অথচ প্রতি বছর এ খাতে কোটি কোটি টাকা ব্যয় করা হচ্ছে। খাল ও নালাগুলো থেকে ময়লা-আবর্জনা অপসারণে নিয়োজিত কর্মীরা কাজ করেন। কিন্তু ময়লা-আবর্জনা তুলে তা আবার পাশেই রেখে দেওয়া হচ্ছে। ফলে খুব স্বাভাবিকভাবেই স্তূপীকৃত ময়লা ফের গড়িয়ে পড়ছে নালা কিংবা খালে। বৃষ্টি হলে সেই গড়িয়ে পড়া ত্বরান্বিত হচ্ছে। অল্প বৃষ্টিতেই তাই জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হচ্ছে নগরীতে। অনেক ক্ষেত্রেই খাল ও নালা থেকে ময়লা-আবর্জনা তুলে পাশের রাস্তার ধারে রাখা হচ্ছে। ফলে বৃষ্টি হলে সেই ময়লা রাস্তায়ও চলে আসছে। এতে পরিবেশের মারাত্মক ক্ষতি হচ্ছে। বিশেষজ্ঞরাও বলছেন, চট্টগ্রামে ড্রেনেজ ব্যবস্থার মাস্টার প্ল্যানের বাস্তবায়ন ছাড়া জলাবদ্ধতা সমস্যার স্থায়ী সমাধান সম্ভব নয়। চট্টগ্রাম নগরীকে জলাবদ্ধতামুক্ত রাখতে নালা-নর্দমা ও খালগুলো নিয়মিত পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন করাকে চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের পক্ষ থেকে গুরুত্ব দিয়ে কাজ করার বিষয়টি আশাব্যঞ্জক। এর জন্য আলাদা স্ট্যান্ডিং কমিটিও করা হয়েছে। কিন্তু স্ট্যান্ডিং কমিটির সভাপতিই নিজেদের দুর্বলতা স্বীকার করেছেন। কোটি কোটি টাকা ব্যয়ে ময়লা-আবর্জনা উত্তোলন করা হলেও তা জায়গার অভাবে সরিয়ে নেওয়া সম্ভব হচ্ছে না। এতে জলাবদ্ধতা সমস্যার কোনো সমাধান হচ্ছে না। অথচ নালার ময়লার সঙ্গে যাচ্ছে সরকারের কোটি কোটি টাকা। নালা-নর্দমা, খাল থেকে ময়লা উত্তোলন করে তা পাশে রেখে দিলে আবার নালা-নর্দমাতে গিয়েই পড়বে, এমনটা খুব সাধারণ জ্ঞানেই বোঝা সম্ভব। কিন্তু বিষয়টি চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের সংশ্লিষ্টরা কেন বুঝতে পারছেন না সেটি আমাদের বোধগম্য নয়। চট্টগ্রাম নগরীর জলাবদ্ধতা সমস্যা সমাধানে উত্তোলিত ময়লা-আবর্জনা সরিয়ে ভিন্ন জায়গায় নিয়ে যেতে হবে বলে আমরা মনে করি। তা না হলে উত্তোলিত ময়লা-আবর্জনার মতো টাকাও যাবে জলে।
No comments