স্কুল ভর্তি-সর্বত্র চাই ভালো প্রতিষ্ঠান
রাজধানীর ২৪টি সরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে ভর্তির জন্য শনিবার ফরম বিতরণ শুরু হয়েছে। বিদ্যালয়গুলো মান অনুযায়ী তিন ক্যাটাগরিতে বিভক্ত। প্রথম শ্রেণীতে ভর্তির জন্য শিক্ষার্থীদের পরীক্ষা দিতে হবে না, বরং লটারির মাধ্যমে শিক্ষার্থী নির্বাচনের নিয়ম এবারেও বহাল থাকছে।
দেশের সব সরকারি ও বেসরকারি বিদ্যালয়েও একই নিয়ম। ৫-৬ বছরের শিশুদের ভর্তির জন্য লিখিত পরীক্ষার মুখোমুখি করার কোনো অর্থ নেই। এ ব্যবস্থায় মূলত লাভবান হয় কোচিং সেন্টার ব্যবসায়ে যুক্তরা। তাদের হাত থেকে শিক্ষার্থীদের মুক্ত করার জন্য মহাজোট সরকারের শিক্ষা মন্ত্রণালয় নানামুখী চেষ্টা চালাচ্ছে। এর প্রতি রয়েছে অভিভাবকসহ শিক্ষার প্রসার ও মান বাড়াতে আগ্রহী সব মহলের আন্তরিক সমর্থন। তবে এটাও মনে রাখতে হবে যে, 'ভালো স্কুল' হিসেবে স্বীকৃত সরকারি ও বেসরকারি প্রতিষ্ঠানগুলোতেই শিক্ষার্থীদের ভিড় হয়। সরকারি স্কুলগুলোর প্রতি আকর্ষণের বাড়তি কারণ বেতন ও অন্যান্য চার্জ তুলনামূলক কম। এসব প্রতিষ্ঠানে সরকার প্রচুর ভর্তুকি দেয়। অবকাঠামো নির্মাণেও থাকে সহায়তা। সবচেয়ে বড় কথা, বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের উদ্যোক্তাদের মতো লাভের কথা সরকার চিন্তা করে না। আমরা মনে করি পর্যায়ক্রমে রাজধানীসহ দেশের এমনকি প্রত্যন্ত অঞ্চলের সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানও এ ধরনের মনোভাব দ্বারাই পরিচালিত হওয়া উচিত। বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান থেকে লাভ হতেই পারে। এভাবে প্রাপ্ত অর্থ প্রধানত প্রতিষ্ঠানের উন্নতির জন্য ব্যবহার করা উচিত। কিন্তু শিক্ষাকে কেন্দ্র করে বাণিজ্য করার চিন্তা পরিহারই শ্রেয়। আমাদের দেশ অর্থনৈতিকভাবে তেমন সচ্ছল নয়। সরকারের কোষাগারে টানাটানি থাকেই। এ অবস্থায় শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোর মান বাড়ানোর জন্য শিক্ষানুরাগী ও দানশীল ব্যক্তি এবং প্রতিষ্ঠানের আরও বেশি এগিয়ে আসা উচিত। একই সঙ্গে সরকারের বিনিয়োগও বাড়াতে হবে। তাহলেই সব স্কুল 'ভালো প্রতিষ্ঠান' হিসেবে স্বীকৃত হবে এবং ভর্তির জন্য হাতেগোনা কয়েকটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ওপর থেকে চাপ কমে যাবে। মেধাবী ছাত্রছাত্রী কেবল রাজধানীর কিছুসংখ্যক শিক্ষা প্রতিষ্ঠানেই সৃষ্টি হবে, এটা হতে পারে না। সুযোগ সৃষ্টি করা হলে শহর-বন্দর-গ্রাম যে কোনো প্রতিষ্ঠান থেকেই অনেক অনেক মেধাবী মুখ নিয়মিত বের হয়ে আসবে, তাতে সন্দেহ নেই।
No comments