অতিথি পাখির চাই নিরাপদ পরিবেশ by এমএন সালেহ বায়েজীদ
শরৎ শেষে প্রকৃতিতে শীতের আগমন ঘটছে। কাশফুলের নরম শুভ্র পালক খসে শীত তার আগমনী বার্তা নিয়ে আসছে প্রকৃতিতে। আর প্রকৃতির এ আহ্বানে সুদূর সাইবেরিয়া থেকে ঝাঁকে ঝাঁকে অতিথি পাখি আসা শুরু করেছে আমাদের বাংলাদেশে। মাইগ্রেটরি এসব পাখি আসছে রাশিয়াসহ শীতপ্রধান দেশ থেকে।
এসব বিহঙ্গের মধ্যে আছে বিভিন্ন প্রজাতি। যেমন_ ছোট সরালি, বড় সরালি, বালিহাঁস। বিভিন্ন প্রজাতির স্নেকহেড পাখিসহ নাম না জানা বহু পাখি একটু আশ্রয়ের জন্য আমাদের দেশে আসে। বর্তমানে চীনে সাবস্টেশন হিসেবে এসব পাখি তাদের মাইগ্রেটরি রুট ব্যবহার করে। ফলে অনেক সময় কিছু পাখি এত লম্বা ভ্রমণে সেই সাবস্টেশনে থেকে যায়। চীন, ইন্দোনেশিয়াসহ ভারতের বিভিন্ন প্রদেশে এসব পাখি আশ্রয় নিচ্ছে। অথচ আজ থেকে অল্প কিছুদিন আগেও এসব পরিযায়ী পাখি সরাসরি আমাদের দেশে চলে আসত। ফলে আমাদের দেশে অদ্ভুতভাবে প্রাকৃতিক সৌন্দর্য বেড়ে যেত।
আমাদের দেশের সুনামগঞ্জের টাঙ্গুয়ার হাওর, মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গল উপজেলার হাইল হাওরে বাইক্কা বিলে বহু অতিথি পাখি আসত। জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় ছাড়াও ঢাকার কিছু জায়গায় এ পরিযায়ী পাখিরা ভিড় করত। শীতপ্রধান দেশ থেকে ঝাঁকে ঝাঁকে আসা এসব অতিথি পাখির কলতানে মুখর থাকত এসব জলাভূমি। কিন্তু বর্তমানে এসব পরিযায়ী পাখি তেমন আসছে না আমাদের দেশে।
আগে যেখানে প্রতি বছর বাইক্কা বিলেই পরিযায়ী পাখি আসত দু'তিন লাখ, বর্তমানে সেখানে আসছে এক লাখের ওপরে। টাঙ্গুয়ার হাওর পাখিদের থাকার জন্য সবচেয়ে বড় আশ্রম। আজ সেই টাঙ্গুয়ার হাওর নানা সমস্যায় জর্জরিত। বাংলাদেশের ইকো সিস্টেমে এসব মাইগ্রেটরি পাখির অনেক বড় অবদান রয়েছে। অথচ এসব পাখি গণহারে শিকার করা হচ্ছে। মানুষই যখন প্রকৃতির আশীর্বাদ হওয়ার কথা, তখন তারাই হচ্ছে আশীবিষ। জীবনের তাগিদে মৃত্যু, ক্ষুধা থেকে বাঁচার জন্য এসব পাখি আমাদের দেশে আসে একটু আশ্রয়ের জন্য। অথচ আমরা একি করছি। বিবেকে কি আমাদের একটু প্রশ্নও জাগে না? একবারও কি আমরা ভেবে দেখেছি, এসব পাখি তো আমাদের প্রকৃতির সন্তান। অথচ আমরা এসব প্রকৃতির সন্তানকে গলা টিপে হত্যা করি উদরপূর্তি বা কিছু টাকার লোভে।
প্রতি বছর বাড়ছে প্রকৃতি দূষণ, সেই সঙ্গে গণহারে পাখি শিকার হচ্ছে, ইকো সিস্টেম ধ্বংস, বায়ু, পানি সবকিছুর দূষণের মাত্রা দিন দিন যেন বেড়ে চলছে। আমরা যদি আমাদের প্রাকৃতিক এ ভারসাম্য ঠিক করার জন্য উদ্যোগী না হই তবে এমন একদিন আসবে, হয়তো এসব পরিযায়ী পাখি আর আমাদের দেশে আসবেই না। নতুন কোনো দেশে নতুনভাবে তারা তাদের আবাসস্থল তৈরি করে নেবে। বাংলাদেশ পুষ্প, বিহঙ্গ আর পুরাণের দেশ। আসুন, আমরা সবাই মিলে একটা রঙধনুর মতো সাত রঙে গড়া সবুজ-শ্যামল বাংলাদেশ গড়ি; যেখানে পাখিরা বিশেষ করে অতিথি পাখিরা নির্ভয়ে বিচরণ করবে। গণসচেতনতা থাকলে বাংলাদেশ হবে অতিথি পাখিদের আশ্রয়ের সর্বশ্রেষ্ঠ জায়গা। আমরা যেন পাখিদের নীড় তাদের কাছে ফিরিয়ে দিতে পারি। তারা যেন স্বপ্নের ডানা মেলে সুদূর সাইবেরিয়া থেকে প্রতি বছর এ দেশে আসে।
য়এমএন সালেহ বায়েজীদ : শিক্ষার্থী
বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়, ময়মনসিংহ
আমাদের দেশের সুনামগঞ্জের টাঙ্গুয়ার হাওর, মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গল উপজেলার হাইল হাওরে বাইক্কা বিলে বহু অতিথি পাখি আসত। জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় ছাড়াও ঢাকার কিছু জায়গায় এ পরিযায়ী পাখিরা ভিড় করত। শীতপ্রধান দেশ থেকে ঝাঁকে ঝাঁকে আসা এসব অতিথি পাখির কলতানে মুখর থাকত এসব জলাভূমি। কিন্তু বর্তমানে এসব পরিযায়ী পাখি তেমন আসছে না আমাদের দেশে।
আগে যেখানে প্রতি বছর বাইক্কা বিলেই পরিযায়ী পাখি আসত দু'তিন লাখ, বর্তমানে সেখানে আসছে এক লাখের ওপরে। টাঙ্গুয়ার হাওর পাখিদের থাকার জন্য সবচেয়ে বড় আশ্রম। আজ সেই টাঙ্গুয়ার হাওর নানা সমস্যায় জর্জরিত। বাংলাদেশের ইকো সিস্টেমে এসব মাইগ্রেটরি পাখির অনেক বড় অবদান রয়েছে। অথচ এসব পাখি গণহারে শিকার করা হচ্ছে। মানুষই যখন প্রকৃতির আশীর্বাদ হওয়ার কথা, তখন তারাই হচ্ছে আশীবিষ। জীবনের তাগিদে মৃত্যু, ক্ষুধা থেকে বাঁচার জন্য এসব পাখি আমাদের দেশে আসে একটু আশ্রয়ের জন্য। অথচ আমরা একি করছি। বিবেকে কি আমাদের একটু প্রশ্নও জাগে না? একবারও কি আমরা ভেবে দেখেছি, এসব পাখি তো আমাদের প্রকৃতির সন্তান। অথচ আমরা এসব প্রকৃতির সন্তানকে গলা টিপে হত্যা করি উদরপূর্তি বা কিছু টাকার লোভে।
প্রতি বছর বাড়ছে প্রকৃতি দূষণ, সেই সঙ্গে গণহারে পাখি শিকার হচ্ছে, ইকো সিস্টেম ধ্বংস, বায়ু, পানি সবকিছুর দূষণের মাত্রা দিন দিন যেন বেড়ে চলছে। আমরা যদি আমাদের প্রাকৃতিক এ ভারসাম্য ঠিক করার জন্য উদ্যোগী না হই তবে এমন একদিন আসবে, হয়তো এসব পরিযায়ী পাখি আর আমাদের দেশে আসবেই না। নতুন কোনো দেশে নতুনভাবে তারা তাদের আবাসস্থল তৈরি করে নেবে। বাংলাদেশ পুষ্প, বিহঙ্গ আর পুরাণের দেশ। আসুন, আমরা সবাই মিলে একটা রঙধনুর মতো সাত রঙে গড়া সবুজ-শ্যামল বাংলাদেশ গড়ি; যেখানে পাখিরা বিশেষ করে অতিথি পাখিরা নির্ভয়ে বিচরণ করবে। গণসচেতনতা থাকলে বাংলাদেশ হবে অতিথি পাখিদের আশ্রয়ের সর্বশ্রেষ্ঠ জায়গা। আমরা যেন পাখিদের নীড় তাদের কাছে ফিরিয়ে দিতে পারি। তারা যেন স্বপ্নের ডানা মেলে সুদূর সাইবেরিয়া থেকে প্রতি বছর এ দেশে আসে।
য়এমএন সালেহ বায়েজীদ : শিক্ষার্থী
বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়, ময়মনসিংহ
No comments