হৃদয়নন্দন বনে-হাতে হাত ধরে সোনালি আলোর দিকে by আলী যাকের
বছরের এই সময়টিকে, বাল্যকাল থেকে শুনে আসছি আমরা, সুদিন বলা হয়ে থাকে। এর কারণ একাধিক। প্রথমত, ভাঙাচোরা রাস্তাঘাট, খানাখন্দ ভরা জলপ্রধান এই দেশে বছরের বাকি সময়গুলোতে চলাফেরা করা দুষ্কর।
দ্বিতীয়ত, অগ্রহায়ণ মাস থেকে আমাদের ফসল কাটার সময় শুরু এবং সেই কারণেই নবান্ন উৎসব পালিত হয় এই সময়। তৃতীয়ত, তরিতরকারিতে বাজার ভরে যায়। ফলে আমাদের নিত্যপ্রয়োজনীয় আহার্য বস্তুর মূল্য আয়ত্তের মধ্যে চলে আসে। গ্রীষ্মের দাবদাহ না থাকায় আমরা দিনের সবসময়ই একটি কবোষ্ণ আরামদায়ক অবস্থায় কালযাপন করি। অতএব, এই সময়টি এলেই আমার মন আনন্দে উৎফুল্ল হয়ে ওঠে। নানা কাজে উৎসাহ বেশি পাই এবং মনের আনন্দে ঘর থেকে বাইরেও বেরিয়ে যাই যখন-তখন। শহর ছাড়িয়ে নানা দিকে ঘুরে বেড়াতে বড় ভালো লাগে। এবারেও ভেবেছিলাম হেমন্তের শেষ এবং শীতের শুরুতে ওইভাবেই দিন কাটবে। সেই চিন্তা নিয়ে ভিন দেশ থেকে বেশ হৃষ্ট মনে দেশে ফিরে এসেছিলাম। কিন্তু আসার দিন বিমানে বাংলাদেশি পত্রিকাতেই মর্মান্তিক সংবাদগুলো পড়লাম। বস্ত্র কারখানায় অগি্নকাণ্ড, শতাধিক নিহত। নির্মিতব্য ফ্লাইওভার অকস্মাৎ ভেঙে পড়ায় একাধিক মানুষ নিহত। মনটা ভারী হয়ে এলো। যখন আমাদের দারিদ্র্যপীড়িত জনগোষ্ঠী আবহাওয়া এবং ঋতুর কারণে আনন্দিত হয়ে ওঠে, ভাবতে শুরু করে আবার এলো সেই পিঠা, পায়েস, খেজুরের রস কিংবা নলেন গুড়ের দিনগুলো; সে সঙ্গে এলো ঋতুবাহিত আনন্দের সময়। ঠিক তখনই এ ধরনের বিপর্যয় এবং অপঘাতে মৃত্যু সবাইকে কেমন যেন হতচকিত করে ফেলে। হৃদয় দুঃখে মথিত হয়ে যায়। চোখ ভিজে আসে, চোখ ভেসে যায়।
এ ধরনের ঘটনা আর যার জন্য যা-ই হোক না কেন, আমাদের গণমাধ্যমের জন্য ভীষণ তাৎপর্যপূর্ণ। সে ছাপার অক্ষরের মাধ্যমেই হোক কিংবা ইলেকট্রনিক মাধ্যম। সংবাদদাতাদের কাজই হচ্ছে খবরের সন্ধানে সর্বময় ঘুরে বেড়ানো। তবে এ কথাও সত্য যে, সকল সংবাদই সংবাদ নয়। ইংরেজিতে বলা হয়ে থাকে, Good news is no news. এই বাক্যটি যে কেবল আমাদের দেশের সংবাদমাধ্যমের জন্যই প্রযোজ্য, তা নয়। সারাবিশ্বেই সব সংবাদমাধ্যম এই দর্শনে বিশ্বাস করে। Good news is no news . অতএব, জুতসই মন্দ সংবাদ পেলে সাংবাদিকরা উঠেপড়ে লেগে যান সেই সংবাদকে ব্যবহার করে কীভাবে মানুষের মনে আবেগের উত্তাল ঊর্মি তৈরি করা যায়। আমরা সাগ্রহে সেসব সংবাদ পাঠ করি। চোখ বাষ্পাকুল হয়ে আসে। অনেকে ডুকরে কেঁদে উঠি। একবার রাজশাহী থেকে একটি বাস ঢাকায় আসার পথে কোনো এক ব্রিজের রেলিং ভেঙে একটি নদীতে তলিয়ে গিয়েছিল। সেই বাসে আমাদের দফতরের এক নারীকর্মী ছিলেন, যার সলিলসমাধি হয় সেই নদীতে। তার স্মরণসভায় আমার সহকর্মী আসাদুজ্জামান নূর তার বক্তব্যে বলেন, '... আমি কেবল ভাবছি যে যখন দরজা-জানালা বন্ধ বাসের ভেতরে প্রবল বেগে পানি প্রবেশ করছে এবং আস্তে আস্তে ও তলিয়ে যাচ্ছে সেই পানিতে, বাঁচার এক অদম্য আকাঙ্ক্ষা নিয়ে, তখন তার মনের অবস্থা কী হয়েছিল। সে আপ্রাণ চেষ্টা করে চলেছে হাত-পা ছুড়ে বাঁচার চেষ্টায়, কিন্তু কিছুতেই কোনো লাভ হচ্ছে না। এ কথা ভাবলেই আমার দম বন্ধ হয়ে আসছে।' ঠিক একইভাবে আমি যখন ভাবি যে, একটি বস্ত্র কারখানার দুটি তলায় সব দরজা বন্ধ, দাউদাউ করে আগুন ছুটে চলেছে চারদিকে, তখন সেখানে বন্দি শতাধিক কর্মীর অন্তিম অবস্থাটি কী ছিল! ভাবি আর আমার নিজের নিঃশ্বাসও বন্ধ হয়ে আসে।
এসব দুর্ঘটনার পর স্বভাবতই প্রশ্ন আসে, কেমন করে এ ধরনের প্রাণনাশী ঘটনা ঘটতে পারে এমন একটি জায়গায় যেখানে বছরের পর বছর শত শত মানুষ প্রতিনিয়ত কাজ করে আসছে। হতেই পারে এ নিছক দুর্ঘটনা। কিন্তু যখন দেখি যে এহেন দুর্ঘটনা এই প্রথম নয়। অনেক বছর ধরেই ক্রমাগত ঘটে আসছে, তখন মনে সন্দেহ দানা বাঁধে। বিশেষত এই দুর্ঘটনার পরে যখন জানতে পাই যে, কারখানার লোহার গেট তালাবদ্ধ ছিল এবং যার খুলে দেওয়ার কথা, সে গেট খুলে দেয়নি। যখন দেখি যে, অন্য একটি কারখানায় সামান্য কিছু অর্থের বিনিময়ে আবার অগি্নসংযোগের চেষ্টা করা হয়েছিল। এসব বিষয়ের কারণে যদি আমাদের মনে হয় গোটা ব্যাপারটি একটি পূর্বপরিকল্পিত ষড়যন্ত্র, তাহলে দোষ দেব কাকে? সেদিন একটি জনপ্রিয় টেলিভিশন চ্যানেলে এ বিষয়ে এক আলোচনায় একজন বলছিলেন যে, এই একের পর এক দুর্ঘটনার পেছনে যে বিশাল একটি চক্রান্ত রয়েছে সে বিষয়ে কোনো সন্দেহ নেই এবং এই চক্রান্তকারীরা দেশের মঙ্গল কিংবা উন্নতি নিয়ে বড় শঙ্কিত এই কারণে যে, এই উন্নতির কারণে বর্তমান প্রশাসনকে কোনোমতেই ক্ষমতাচ্যুত করা যাবে না। পরিসংখ্যান দেখলে আমরা বুঝতে পারি যে, এখন সব দিক দিয়েই বাংলাদেশ উন্নয়নমুখী। যেখানে বছর দুয়েক আগেও ১০% প্রবৃদ্ধি নিয়ে ভারত পথচলা শুরু করে আজ ৪%-এ নেমে এসেছে, সেখানে আমাদের প্রবৃদ্ধি গত কয়েক বছর ধরে ৬%-এ বিদ্যমান। এখন আমরা ৭%-এর দিকে হাত বাড়াচ্ছি। আমাদের বিদেশি মুদ্রার তহবিল বাংলাদেশের ইতিহাসে সর্বোচ্চ সীমায় গিয়ে পেঁৗছেছে। রফতানিতে আমাদের প্রবৃদ্ধি সব বছরের চেয়ে এবারে বেশি। আমাদের জনসংখ্যা রফতানিও ঊর্ধ্বমুখী। অতি সম্প্রতি আমাদের জনশক্তি রফতানির ক্ষেত্রে মালয়েশিয়া সব বাধা অপসারণ করেছে। বিদ্যুৎ উৎপাদনে আমরা সর্বোচ্চ মাত্রায় পেঁৗছেছি। প্রবাস থেকে আমাদের শ্রমজীবী মানুষরা অনেক বেশি বিদেশি মুদ্রা এখন দেশে পাঠাচ্ছেন। এহেন পরিস্থিতিতে এসব অঘটন যদি আমাদের মনে এ ধরনের সন্দেহের উদ্রেক করে যে, দেশের সামগ্রিক অবস্থাকে স্থবির করার জন্য এবং অনিয়ন্ত্রণযোগ্য অস্থিরতা সৃষ্টি করার জন্য কোনো একটি চক্র ষড়যন্ত্রে মেতেছে, তাহলে কি আমাদের দোষ দেওয়া যায়?
প্রশ্ন আসতে পারে, কেন এ দেশেরই কেউ এই ধরনের হীন চক্রান্তে লিপ্ত হবে? আমরা তো অতীতেও দেখেছি, এ দেশের কিছু কুসন্তান সর্বদাই নিজের নাক কেটে পরের যাত্রা ভঙ্গ করার প্রয়াস পেয়েছে। যেখানে একটি দেশের জন্ম-সংগ্রামের মাধ্যমে অর্জিত মূল্যবোধ এবং আদর্শ কোনো একটি চক্র মেনে নিতে পারে না এবং এক সুদূরপ্রসারী ষড়যন্ত্রের জাল বিস্তার করে ক্ষমতায় আরোহণ হয় তাদের একমাত্র লক্ষ্য, তখন তারা যে কোনো নাশকতামূলক কাজে বিনা দ্বিধায় এগিয়ে যেতে পারে এবং এখন যখন বাংলাদেশের যুদ্ধাপরাধী, মানবতাবিরোধী, রাষ্টদ্রোহী, ধর্ষণকারী, কিছু অমানুষের বিচার কাজ ত্বরিতগতিতে এগিয়ে চলেছে, তখন দেশের সামগ্রিক পরিস্থিতিকে অস্থিতিশীল করে তোলার জন্য কোনো ষড়যন্ত্র থেকেই ওই দুর্বৃত্তরা পিছপা হবে না।
এমন একটি পরিস্থিতে বস্ত্র-পোশাক শিল্পের মালিকরা, ওইসব কল-কারখানার শ্রমিকরা এবং সাধারণ দেশপ্রেমিক গণমানুষ যদি হাতে হাত ধরে বলিষ্ঠ পদক্ষেপে এগিয়ে না আসে, তাহলে এককভাবে সরকারের পক্ষে সত্যিকার অর্থে কোনো শক্ত পদক্ষেপ গ্রহণ করা সম্ভব হবে বলে মনে হয় না। এই মুহূর্তে প্রয়োজন সব দেশপ্রেমিক মানুষের ঐক্যের। কেবল তাহলেই আমাদের ভবিষ্যৎ সত্যিকার অর্থে বলিষ্ঠভাবে এগিয়ে যাবে হাতে হাত ধরে সোনালি আলোর দিকে।
আলী যাকের :সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব
এ ধরনের ঘটনা আর যার জন্য যা-ই হোক না কেন, আমাদের গণমাধ্যমের জন্য ভীষণ তাৎপর্যপূর্ণ। সে ছাপার অক্ষরের মাধ্যমেই হোক কিংবা ইলেকট্রনিক মাধ্যম। সংবাদদাতাদের কাজই হচ্ছে খবরের সন্ধানে সর্বময় ঘুরে বেড়ানো। তবে এ কথাও সত্য যে, সকল সংবাদই সংবাদ নয়। ইংরেজিতে বলা হয়ে থাকে, Good news is no news. এই বাক্যটি যে কেবল আমাদের দেশের সংবাদমাধ্যমের জন্যই প্রযোজ্য, তা নয়। সারাবিশ্বেই সব সংবাদমাধ্যম এই দর্শনে বিশ্বাস করে। Good news is no news . অতএব, জুতসই মন্দ সংবাদ পেলে সাংবাদিকরা উঠেপড়ে লেগে যান সেই সংবাদকে ব্যবহার করে কীভাবে মানুষের মনে আবেগের উত্তাল ঊর্মি তৈরি করা যায়। আমরা সাগ্রহে সেসব সংবাদ পাঠ করি। চোখ বাষ্পাকুল হয়ে আসে। অনেকে ডুকরে কেঁদে উঠি। একবার রাজশাহী থেকে একটি বাস ঢাকায় আসার পথে কোনো এক ব্রিজের রেলিং ভেঙে একটি নদীতে তলিয়ে গিয়েছিল। সেই বাসে আমাদের দফতরের এক নারীকর্মী ছিলেন, যার সলিলসমাধি হয় সেই নদীতে। তার স্মরণসভায় আমার সহকর্মী আসাদুজ্জামান নূর তার বক্তব্যে বলেন, '... আমি কেবল ভাবছি যে যখন দরজা-জানালা বন্ধ বাসের ভেতরে প্রবল বেগে পানি প্রবেশ করছে এবং আস্তে আস্তে ও তলিয়ে যাচ্ছে সেই পানিতে, বাঁচার এক অদম্য আকাঙ্ক্ষা নিয়ে, তখন তার মনের অবস্থা কী হয়েছিল। সে আপ্রাণ চেষ্টা করে চলেছে হাত-পা ছুড়ে বাঁচার চেষ্টায়, কিন্তু কিছুতেই কোনো লাভ হচ্ছে না। এ কথা ভাবলেই আমার দম বন্ধ হয়ে আসছে।' ঠিক একইভাবে আমি যখন ভাবি যে, একটি বস্ত্র কারখানার দুটি তলায় সব দরজা বন্ধ, দাউদাউ করে আগুন ছুটে চলেছে চারদিকে, তখন সেখানে বন্দি শতাধিক কর্মীর অন্তিম অবস্থাটি কী ছিল! ভাবি আর আমার নিজের নিঃশ্বাসও বন্ধ হয়ে আসে।
এসব দুর্ঘটনার পর স্বভাবতই প্রশ্ন আসে, কেমন করে এ ধরনের প্রাণনাশী ঘটনা ঘটতে পারে এমন একটি জায়গায় যেখানে বছরের পর বছর শত শত মানুষ প্রতিনিয়ত কাজ করে আসছে। হতেই পারে এ নিছক দুর্ঘটনা। কিন্তু যখন দেখি যে এহেন দুর্ঘটনা এই প্রথম নয়। অনেক বছর ধরেই ক্রমাগত ঘটে আসছে, তখন মনে সন্দেহ দানা বাঁধে। বিশেষত এই দুর্ঘটনার পরে যখন জানতে পাই যে, কারখানার লোহার গেট তালাবদ্ধ ছিল এবং যার খুলে দেওয়ার কথা, সে গেট খুলে দেয়নি। যখন দেখি যে, অন্য একটি কারখানায় সামান্য কিছু অর্থের বিনিময়ে আবার অগি্নসংযোগের চেষ্টা করা হয়েছিল। এসব বিষয়ের কারণে যদি আমাদের মনে হয় গোটা ব্যাপারটি একটি পূর্বপরিকল্পিত ষড়যন্ত্র, তাহলে দোষ দেব কাকে? সেদিন একটি জনপ্রিয় টেলিভিশন চ্যানেলে এ বিষয়ে এক আলোচনায় একজন বলছিলেন যে, এই একের পর এক দুর্ঘটনার পেছনে যে বিশাল একটি চক্রান্ত রয়েছে সে বিষয়ে কোনো সন্দেহ নেই এবং এই চক্রান্তকারীরা দেশের মঙ্গল কিংবা উন্নতি নিয়ে বড় শঙ্কিত এই কারণে যে, এই উন্নতির কারণে বর্তমান প্রশাসনকে কোনোমতেই ক্ষমতাচ্যুত করা যাবে না। পরিসংখ্যান দেখলে আমরা বুঝতে পারি যে, এখন সব দিক দিয়েই বাংলাদেশ উন্নয়নমুখী। যেখানে বছর দুয়েক আগেও ১০% প্রবৃদ্ধি নিয়ে ভারত পথচলা শুরু করে আজ ৪%-এ নেমে এসেছে, সেখানে আমাদের প্রবৃদ্ধি গত কয়েক বছর ধরে ৬%-এ বিদ্যমান। এখন আমরা ৭%-এর দিকে হাত বাড়াচ্ছি। আমাদের বিদেশি মুদ্রার তহবিল বাংলাদেশের ইতিহাসে সর্বোচ্চ সীমায় গিয়ে পেঁৗছেছে। রফতানিতে আমাদের প্রবৃদ্ধি সব বছরের চেয়ে এবারে বেশি। আমাদের জনসংখ্যা রফতানিও ঊর্ধ্বমুখী। অতি সম্প্রতি আমাদের জনশক্তি রফতানির ক্ষেত্রে মালয়েশিয়া সব বাধা অপসারণ করেছে। বিদ্যুৎ উৎপাদনে আমরা সর্বোচ্চ মাত্রায় পেঁৗছেছি। প্রবাস থেকে আমাদের শ্রমজীবী মানুষরা অনেক বেশি বিদেশি মুদ্রা এখন দেশে পাঠাচ্ছেন। এহেন পরিস্থিতিতে এসব অঘটন যদি আমাদের মনে এ ধরনের সন্দেহের উদ্রেক করে যে, দেশের সামগ্রিক অবস্থাকে স্থবির করার জন্য এবং অনিয়ন্ত্রণযোগ্য অস্থিরতা সৃষ্টি করার জন্য কোনো একটি চক্র ষড়যন্ত্রে মেতেছে, তাহলে কি আমাদের দোষ দেওয়া যায়?
প্রশ্ন আসতে পারে, কেন এ দেশেরই কেউ এই ধরনের হীন চক্রান্তে লিপ্ত হবে? আমরা তো অতীতেও দেখেছি, এ দেশের কিছু কুসন্তান সর্বদাই নিজের নাক কেটে পরের যাত্রা ভঙ্গ করার প্রয়াস পেয়েছে। যেখানে একটি দেশের জন্ম-সংগ্রামের মাধ্যমে অর্জিত মূল্যবোধ এবং আদর্শ কোনো একটি চক্র মেনে নিতে পারে না এবং এক সুদূরপ্রসারী ষড়যন্ত্রের জাল বিস্তার করে ক্ষমতায় আরোহণ হয় তাদের একমাত্র লক্ষ্য, তখন তারা যে কোনো নাশকতামূলক কাজে বিনা দ্বিধায় এগিয়ে যেতে পারে এবং এখন যখন বাংলাদেশের যুদ্ধাপরাধী, মানবতাবিরোধী, রাষ্টদ্রোহী, ধর্ষণকারী, কিছু অমানুষের বিচার কাজ ত্বরিতগতিতে এগিয়ে চলেছে, তখন দেশের সামগ্রিক পরিস্থিতিকে অস্থিতিশীল করে তোলার জন্য কোনো ষড়যন্ত্র থেকেই ওই দুর্বৃত্তরা পিছপা হবে না।
এমন একটি পরিস্থিতে বস্ত্র-পোশাক শিল্পের মালিকরা, ওইসব কল-কারখানার শ্রমিকরা এবং সাধারণ দেশপ্রেমিক গণমানুষ যদি হাতে হাত ধরে বলিষ্ঠ পদক্ষেপে এগিয়ে না আসে, তাহলে এককভাবে সরকারের পক্ষে সত্যিকার অর্থে কোনো শক্ত পদক্ষেপ গ্রহণ করা সম্ভব হবে বলে মনে হয় না। এই মুহূর্তে প্রয়োজন সব দেশপ্রেমিক মানুষের ঐক্যের। কেবল তাহলেই আমাদের ভবিষ্যৎ সত্যিকার অর্থে বলিষ্ঠভাবে এগিয়ে যাবে হাতে হাত ধরে সোনালি আলোর দিকে।
আলী যাকের :সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব
No comments