ক্ষমতার কাছাকাছি থাকতে এরশাদের নানা কৌশল by সেলিম জাহিদ
আগামী সংসদ নির্বাচনে এইচ এম এরশাদের নেতৃত্বাধীন জাতীয় পার্টির (জাপা) ভূমিকা আসলে কী হবে, তা এখনো স্থির করা হয়নি। তবে যারাই সরকার গঠন করুক, ক্ষমতার কাছাকাছি থাকতে এরশাদ নানা কৌশল ঠিক করে তৎপরতা চালাচ্ছেন বলে দলীয় একাধিক সূত্র জানিয়েছে।
জাপার সভাপতিমণ্ডলীর একাধিক সদস্য জানান, সরকারের সমালোচনা করে এরশাদের বক্তব্য দেওয়া, এক বছর ধরে মহাজোট ত্যাগের হুমকি, আগামী নির্বাচনে ৩০০ আসনে একক প্রার্থী দেওয়া, বিএনপি না এলেও নির্বাচনে অংশ নেওয়ার আগাম ঘোষণা এবং আগামী নির্বাচন নিয়ে ‘অনিশ্চয়তার’ আশঙ্কা প্রকাশ—এ সবই ওই কৌশলের অংশ।
নির্বাচনকালীন সরকার প্রশ্নে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ ও প্রধান বিরোধী দল বিএনপি মুখোমুখি অবস্থানে আছে। বিরাজমান রাজনৈতিক সংকট আরও ঘনীভূত হচ্ছে। এ অবস্থায় নির্বাচন নিয়ে ইতিমধ্যে নানা মহল থেকে শঙ্কা ও অনিশ্চয়তার কথা বলা হচ্ছে।
উদ্ভূত পরিস্থিতিতে জাপার বিভিন্ন পর্যায়ের নেতারা মনে করছেন, দুই দলের বাইরে তৃতীয় শক্তির উত্থানের সম্ভাবনা আছে। তেমন কিছু হলে তাতে এরশাদের গুরুত্ব বাড়তে পারে। আবার শেখ হাসিনার সরকারের অধীনে নির্বাচন হলে এবং তাতে বিএনপি না গেলে প্রধান বিরোধী দল হওয়ার সুযোগ হাতছাড়া করবে না জাপা। আর এই দুটির কোনোটিই না হয়ে যদি প্রধান দুই দলের অংশগ্রহণে আগামী নির্বাচন হয়, সে ক্ষেত্রে এরশাদ আওয়ামী লীগের সঙ্গেই থাকবেন।
জাপার দায়িত্বশীল একজন নেতা জানান, দলের চেয়ারম্যান এরশাদের সঙ্গে প্রতিবেশী দেশ ভারতের সুসম্পর্ক রয়েছে। আওয়ামী লীগের সঙ্গে থাকার ব্যাপারে এই সম্পর্কের প্রভাবও বেশ ক্রিয়াশীল।
অবশ্য নির্বাচনের আগে রাজনৈতিক পরিস্থিতি যদি বিএনপির অনুকূলে চলে যায়, তখন জাপার কৌশলও বদল হতে পারে। সে জন্য বিএনপির সঙ্গে যোগাযোগ রক্ষার চেষ্টা চলছে বলেও একটি সূত্র জানিয়েছে।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে জাপার কেন্দ্রীয় একজন নেতা প্রথম আলোকে বলেন, ‘এখন মুখে যা-ই বলেন না কেন, সামনের দিনগুলোতে দুই জোটের রাজনীতির জোয়ার-ভাটা দেখে তার পরই অবস্থান চূড়ান্ত করবেন এরশাদ। এর আগ পর্যন্ত নানা রকম বক্তৃতা-তৎপরতার মাধ্যমে নিজের অবস্থান সম্পর্কে একটা ধোঁয়াশা তৈরি করে রাখবেন তিনি।’
অবশ্য জাপার মহাসচিব এ বি এম রুহুল আমিন হাওলাদার দাবি করেন, ‘আমাদের লক্ষ্য হচ্ছে এককভাবে নির্বাচন করা। আশা করছি, এই নির্বাচনে যে আসন পাব, তাতে জাতীয় পার্টির সহযোগিতা ছাড়া দুই দলের কেউই সরকার গঠন করতে পারবে না।’
নতুন পদবি, আগাম মনোনয়ন: চলতি মাসের শুরুতে এরশাদ দলের দুই সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য কাজী ফিরোজ রশীদকে তাঁর মুখপাত্র ও জিয়াউদ্দিন আহমেদ বাবলুকে রাজনৈতিক উপদেষ্টা পদে নিয়োগ দেন।
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, আগামী নির্বাচনকে কেন্দ্র করে প্রধান দুই দল আওয়ামী লীগ ও বিএনপির সঙ্গে যোগাযোগ রক্ষায় এই দুই নেতাকে নতুন পদবি দেওয়া হয়। আর সভাপতিমণ্ডলীর আরেক জ্যেষ্ঠ সদস্য কাজী জাফর আহমদকে আগাম প্রার্থী ঘোষণা করা হয়েছে।
জানতে চাইলে জিয়াউদ্দিন আহমেদ স্বীকার করেন, আগামী নির্বাচনকে ঘিরে একটি রাজনৈতিক সংকট সামনে রেখে এই দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে তাঁকে। তিনি বলেন, ‘ছাত্রজীবন থেকে রাজনীতি করে আসছি। দলের জন্ম থেকে আছি। চেয়ারম্যান নিশ্চয়ই মনে করেছেন, জাতীয় পার্টিকে তাঁর লক্ষ্যে নিয়ে যাওয়ার জন্য আন্তরিক প্রচেষ্টা চালাতে পারব।’
আর কাজী ফিরোজ রশীদ বলেন, বিভিন্ন গণমাধ্যমের লোকজনের সঙ্গে তাঁর ভালো সম্পর্ক আছে। এই সম্পর্ক আরও দৃঢ় করার জন্য তাঁকে মুখপাত্রের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।
সরকার দুর্বল হওয়ার অপেক্ষায়: সরকারের নানা ব্যর্থতা ও আর্থিক কেলেঙ্কারির বিষয়ে মাঝেমধ্যে সমালোচনামুখর হন এরশাদ। গ্রামীণ ব্যাংকসহ অনেক বিষয়ে সরকারের নীতির সঙ্গে ভিন্নমত পোষণ করেন তিনি।
জাপার একটি সূত্র জানায়, নির্বাচনের কয়েক মাস আগ পর্যন্ত এ অবস্থা চলতে পারে। দলটির নেতারা মনে করেন, ক্ষমতাসীনদের ব্যর্থতা, দুর্নীতি ও কেলেঙ্কারির ঘটনায় সাধারণ মানুষের মধ্যে যে অসন্তুষ্টি তৈরি হয়েছে, এর সমালোচনা না করলে শরিক দল হিসেবে দায় জাপার ওপরও পড়বে। অন্যদিকে ক্ষমতাসীনদের ওপর বিরক্ত হয়ে জনমত বিপরীত দিকে ঝুঁকছে, সরকারের সমালোচনা করলে তাতে জাপাও ভাগ বসাতে পারবে।
জাপার কেন্দ্রীয় একাধিক নেতা জানান, মহাজোট থেকে বেরিয়ে আসার ব্যাপারে তাঁরা আরও সময় নেবেন। কারণ শেয়ারবাজার, পদ্মা সেতু, হলমার্ক ও রেল কেলেঙ্কারি এবং সর্বশেষ বৌদ্ধ সম্প্রদায়ের ওপর হামলার ঘটনায় অস্বস্তিকর পরিস্থিতিতে পড়েছে সরকার। এ অবস্থায় মহাজোট ভেঙে গেলে সরকার আরও চাপে পড়বে। তাতে ক্ষুব্ধ হয়ে সরকারের তরফ থেকে জাপার নেতাদের ওপর আঘাত এলে তা সইবার সক্ষমতা এরশাদের নেই। তবে মেয়াদের শেষ দিকে প্রশাসনের ওপর যখন সরকারের নিয়ন্ত্রণ দুর্বল হয়ে পড়বে, তখন পরিস্থিতি বুঝে জোট থেকে বেরিয়ে আসতে পারে জাপা।
নির্বাচনকালীন সরকার প্রশ্নে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ ও প্রধান বিরোধী দল বিএনপি মুখোমুখি অবস্থানে আছে। বিরাজমান রাজনৈতিক সংকট আরও ঘনীভূত হচ্ছে। এ অবস্থায় নির্বাচন নিয়ে ইতিমধ্যে নানা মহল থেকে শঙ্কা ও অনিশ্চয়তার কথা বলা হচ্ছে।
উদ্ভূত পরিস্থিতিতে জাপার বিভিন্ন পর্যায়ের নেতারা মনে করছেন, দুই দলের বাইরে তৃতীয় শক্তির উত্থানের সম্ভাবনা আছে। তেমন কিছু হলে তাতে এরশাদের গুরুত্ব বাড়তে পারে। আবার শেখ হাসিনার সরকারের অধীনে নির্বাচন হলে এবং তাতে বিএনপি না গেলে প্রধান বিরোধী দল হওয়ার সুযোগ হাতছাড়া করবে না জাপা। আর এই দুটির কোনোটিই না হয়ে যদি প্রধান দুই দলের অংশগ্রহণে আগামী নির্বাচন হয়, সে ক্ষেত্রে এরশাদ আওয়ামী লীগের সঙ্গেই থাকবেন।
জাপার দায়িত্বশীল একজন নেতা জানান, দলের চেয়ারম্যান এরশাদের সঙ্গে প্রতিবেশী দেশ ভারতের সুসম্পর্ক রয়েছে। আওয়ামী লীগের সঙ্গে থাকার ব্যাপারে এই সম্পর্কের প্রভাবও বেশ ক্রিয়াশীল।
অবশ্য নির্বাচনের আগে রাজনৈতিক পরিস্থিতি যদি বিএনপির অনুকূলে চলে যায়, তখন জাপার কৌশলও বদল হতে পারে। সে জন্য বিএনপির সঙ্গে যোগাযোগ রক্ষার চেষ্টা চলছে বলেও একটি সূত্র জানিয়েছে।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে জাপার কেন্দ্রীয় একজন নেতা প্রথম আলোকে বলেন, ‘এখন মুখে যা-ই বলেন না কেন, সামনের দিনগুলোতে দুই জোটের রাজনীতির জোয়ার-ভাটা দেখে তার পরই অবস্থান চূড়ান্ত করবেন এরশাদ। এর আগ পর্যন্ত নানা রকম বক্তৃতা-তৎপরতার মাধ্যমে নিজের অবস্থান সম্পর্কে একটা ধোঁয়াশা তৈরি করে রাখবেন তিনি।’
অবশ্য জাপার মহাসচিব এ বি এম রুহুল আমিন হাওলাদার দাবি করেন, ‘আমাদের লক্ষ্য হচ্ছে এককভাবে নির্বাচন করা। আশা করছি, এই নির্বাচনে যে আসন পাব, তাতে জাতীয় পার্টির সহযোগিতা ছাড়া দুই দলের কেউই সরকার গঠন করতে পারবে না।’
নতুন পদবি, আগাম মনোনয়ন: চলতি মাসের শুরুতে এরশাদ দলের দুই সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য কাজী ফিরোজ রশীদকে তাঁর মুখপাত্র ও জিয়াউদ্দিন আহমেদ বাবলুকে রাজনৈতিক উপদেষ্টা পদে নিয়োগ দেন।
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, আগামী নির্বাচনকে কেন্দ্র করে প্রধান দুই দল আওয়ামী লীগ ও বিএনপির সঙ্গে যোগাযোগ রক্ষায় এই দুই নেতাকে নতুন পদবি দেওয়া হয়। আর সভাপতিমণ্ডলীর আরেক জ্যেষ্ঠ সদস্য কাজী জাফর আহমদকে আগাম প্রার্থী ঘোষণা করা হয়েছে।
জানতে চাইলে জিয়াউদ্দিন আহমেদ স্বীকার করেন, আগামী নির্বাচনকে ঘিরে একটি রাজনৈতিক সংকট সামনে রেখে এই দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে তাঁকে। তিনি বলেন, ‘ছাত্রজীবন থেকে রাজনীতি করে আসছি। দলের জন্ম থেকে আছি। চেয়ারম্যান নিশ্চয়ই মনে করেছেন, জাতীয় পার্টিকে তাঁর লক্ষ্যে নিয়ে যাওয়ার জন্য আন্তরিক প্রচেষ্টা চালাতে পারব।’
আর কাজী ফিরোজ রশীদ বলেন, বিভিন্ন গণমাধ্যমের লোকজনের সঙ্গে তাঁর ভালো সম্পর্ক আছে। এই সম্পর্ক আরও দৃঢ় করার জন্য তাঁকে মুখপাত্রের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।
সরকার দুর্বল হওয়ার অপেক্ষায়: সরকারের নানা ব্যর্থতা ও আর্থিক কেলেঙ্কারির বিষয়ে মাঝেমধ্যে সমালোচনামুখর হন এরশাদ। গ্রামীণ ব্যাংকসহ অনেক বিষয়ে সরকারের নীতির সঙ্গে ভিন্নমত পোষণ করেন তিনি।
জাপার একটি সূত্র জানায়, নির্বাচনের কয়েক মাস আগ পর্যন্ত এ অবস্থা চলতে পারে। দলটির নেতারা মনে করেন, ক্ষমতাসীনদের ব্যর্থতা, দুর্নীতি ও কেলেঙ্কারির ঘটনায় সাধারণ মানুষের মধ্যে যে অসন্তুষ্টি তৈরি হয়েছে, এর সমালোচনা না করলে শরিক দল হিসেবে দায় জাপার ওপরও পড়বে। অন্যদিকে ক্ষমতাসীনদের ওপর বিরক্ত হয়ে জনমত বিপরীত দিকে ঝুঁকছে, সরকারের সমালোচনা করলে তাতে জাপাও ভাগ বসাতে পারবে।
জাপার কেন্দ্রীয় একাধিক নেতা জানান, মহাজোট থেকে বেরিয়ে আসার ব্যাপারে তাঁরা আরও সময় নেবেন। কারণ শেয়ারবাজার, পদ্মা সেতু, হলমার্ক ও রেল কেলেঙ্কারি এবং সর্বশেষ বৌদ্ধ সম্প্রদায়ের ওপর হামলার ঘটনায় অস্বস্তিকর পরিস্থিতিতে পড়েছে সরকার। এ অবস্থায় মহাজোট ভেঙে গেলে সরকার আরও চাপে পড়বে। তাতে ক্ষুব্ধ হয়ে সরকারের তরফ থেকে জাপার নেতাদের ওপর আঘাত এলে তা সইবার সক্ষমতা এরশাদের নেই। তবে মেয়াদের শেষ দিকে প্রশাসনের ওপর যখন সরকারের নিয়ন্ত্রণ দুর্বল হয়ে পড়বে, তখন পরিস্থিতি বুঝে জোট থেকে বেরিয়ে আসতে পারে জাপা।
No comments