দাফন অনুষ্ঠান রূপ নিয়েছে সরকারবিরোধী সমাবেশে

লেবাননের অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তা বাহিনীর (আইএসএফ) গোয়েন্দা শাখার প্রধান উইসাম আল-হাসানের দাফন অনুষ্ঠানে গতকাল রোববার জনতার ঢল নামে। বিরোধীদলীয় নেতাদের আহ্বানে ওই দাফন অনুষ্ঠান একপর্যায়ে সরকারবিরোধী রাজনৈতিক সমাবেশে রূপ নেয়।


তাঁকে হত্যার জন্য সিরিয়াকে দায়ী করেছে বিরোধীরা।
বৈরুতে গত শুক্রবার গাড়িবোমা হামলায় উইসামসহ আটজন নিহত ও বেশ কয়েকজন আহত হয়। এ ঘটনায় ক্ষুব্ধ রাজনৈতিক নেতারা লেবাননের প্রধানমন্ত্রী নাজিব মিকাতির পদত্যাগ দাবি করেন। তবে তিনি এই দাবি প্রত্যাখ্যান করেন। শনিবার মন্ত্রিসভার জরুরি বৈঠক শেষে নাজিব বলেন, তিনি প্রেসিডেন্ট মিশেল স্লেইমানের অনুরোধে এবং দেশে ‘রাজনৈতিক শূন্যতা’ এড়াতে প্রধানমন্ত্রীর পদে বহাল থাকার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।
এদিকে প্রধান বিরোধীদলীয় নেতা ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী সাদ হারিরি গত শনিবার লেবাননের জনগণকে উইসামের দাফন অনুষ্ঠানে যোগ দেওয়ার আহ্বান জানান। বৈরুতে হামলার জন্য সিরিয়ার সরকারকেই দায়ী করেন তিনি।
উইসাম হত্যার ঘটনায় এখনো কোনো মামলা হয়নি এবং কাউকে গ্রেপ্তার করা হয়নি। তবে জাতিসংঘ-সমর্থিত একটি আদালত ওই হামলার ঘটনায় শিয়া মুসলিমদের সংগঠন হিজবুল্লাহ জড়িত বলে অভিযোগ করেছে। লেবাননে বর্তমান সরকারে হিজবুল্লাহ শরিক দল। সিরিয়ার ক্ষমতাসীন সরকারের সঙ্গেও হিজবুল্লাহর সুসম্পর্ক রয়েছে। তবে সংগঠনটি গত শুক্রবারের ‘কাপুরুষোচিত সন্ত্রাসী হামলাকে’ লেবাননের জাতীয় ঐক্য বিনষ্ট করার চেষ্টা বলে মন্তব্য করেছে।
সিরিয়ার প্রেসিডেন্ট বাশার আল-আসাদের চরম বিরোধী ছিলেন উইসাম। লেবাননের সাবেক প্রধানমন্ত্রী রফিক হারিরির কবরের পাশে বৈরুতে উইসামকে গতকাল বিকেলে দাফন করা হয়। এই দাফন অনুষ্ঠানে যোগ দিতে উইসামের স্ত্রী আনা আল-হাসান ও তাঁর দুই সন্তান প্যারিস থেকে বৈরুতে যান। উইসামের দাফনের আগে আইএসএফের সদর দপ্তরে তাঁর স্মরণে ‘শ্রদ্ধা ও শোক’ অনুষ্ঠান হয়।
উইসাম নিহত হওয়ার ঘটনায় লেবাননের উত্তরাঞ্চলীয় শহর ত্রিপোলি ও রাজধানী বৈরুত শহরে সুন্নি সম্প্রদায় ব্যাপক বিক্ষোভ করে। বিক্ষোভকারীরা টায়ার পুড়িয়ে সড়ক অবরোধ করে।
বৈরুতে ২০০৫ সালে এক হামলায় নিহত হন তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী রফিক হারিরি। ওই ঘটনার পর লেবানন থেকে সেনা প্রত্যাহার করতে বাধ্য হয় সিরিয়া। লেবাননে ১৯৭৫ থেকে ১৯৯০ সাল পর্যন্ত গৃহযুদ্ধের পর লিবিয়ার বড় অংশ দখল করে নিয়েছিল সিরিয়া। রয়টার্স, এএফপি ও বিবিসি।

No comments

Powered by Blogger.