চলছে গরু-ছাগলের বিরাট হাট- পর্যাপ্ত জায়গা ও বিনোদনের অভাবে বিপর্যস্ত গবাদি সমাজ

দেশে কার হাট, সাইকেল হাট, চিকেন হাট টাইপের অসংখ্য হাট থাকলেও বর্তমানে ফর্মে আছে কোরবানির পশুর হাট। পশুর হাট হচ্ছে এমন এক জায়গা, যেখানে গরু, মহিষ, ছাগল, ভেড়া এমনকি আরবের উটও একসঙ্গে ঘাস, ভুসি কিংবা লাঠির বাড়ি খায়।


প্রতিবছর কার্বন ডাই-অক্সাইডের পরিমাণ যেমন বাড়ছে, তেমনি বাড়ছে হাট এবং হাটের পশুর সংখ্যা। কিন্তু হাটের পশুদের বিনোদনের কথা কেউই ভাবছে না। হাটে নেই পর্যাপ্ত জায়গা। যে কারণে দূর-দূরান্ত থেকে আসা পশুগুলোকে ভ্রমণক্লান্তি নিয়েই দাঁড়িয়ে থাকতে হয় ঘণ্টার পর ঘণ্টা। একটু হাঁটাহাঁটি করে অন্য পশুদের সঙ্গে কুশল বিনিময় কিংবা বর্তমান রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে ‘গবাদি সমাজের ভূমিকা’ শীর্ষক আলোচনারও উপায় নেই। তা ছাড়া পশুদের কোনো প্রাইভেসিও নেই এখানে। একটা গরু কিংবা ছাগল নিজের মতো করে একটু চিন্তাভাবনা করবে, আরাম-আয়েশ করবে সে সুযোগ কোথায়? অবশ্য যেখানে মানুষের কথাই কেউ ভাবছে না, সেখানে পশুদের কথা ভাবা তো বহু দূরের কথা। উপযুক্ত গরু পছন্দ করার জন্য মানুষকে অনেক ঘোরাঘুরি করতে হয়। কারও পছন্দ সাদাকালো পশু, কারও আবার রঙিন। অসংখ্য পশুর মাঝখান থেকে মনের মতো পশুকে খুঁজে বের করা সহজ কাজ নয়। দু-এক চক্কড় দিয়েই মানুষ কাহিল হয়ে যায়। অথচ হাটগুলোতে নেই কোনো বিশ্রামাগার। কিন্তু কর্তৃপক্ষ এসব নিয়ে কিছুই ভাবছে না। তারা নিজেদের এবং নিজেদের পশু নিয়েই ব্যস্ত। তবুও আশা করি, ভবিষ্যতে কর্তৃপক্ষ এ বিষয়গুলো নিয়ে গভীরভাবে ভাববে। যাই হোক, অধিক কথার সার্থকতা নাই। যারা কোরবানির পশু কিনেছেন তাঁদের এবং তাঁদের পশুদের জানাই আন্তরিক শুভেচ্ছা। পশুদের কাছে অনুরোধ, পশু হলেও দেশ ও সমাজের প্রতি আপনাদের দায়বদ্ধতা আছে। যেখানে-সেখানে ‘ইয়ে’ করবেন না। মনে রাখবেন, আপনার শহর পরিষ্কার রাখতে হবে আপনাকেই। যাঁরা এখনো পশু কেনেননি, তাঁরা আজই নিকটস্থ হাট থেকে পশু কিনে ফেলুন। মনে রাখবেন, সময়, নদীর স্রোত, কোরবানির পশু, কসাই এসব কারও জন্য অপেক্ষা করে না। লেখা এখানেই শেষ করতে হচ্ছে, কারণ আমাকে আবার যেতে হবে কসাই খুঁজতে। আশা করি, সবার ঈদ ভালোভাবে কাটবে। ঈদ মোবারক।

No comments

Powered by Blogger.