অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধিতে পিপিপি-এমপি-ব্যবসায়ী সহযোগিতা জরুরি
অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি বাড়ানোর জন্য সরকারি-বেসরকারি অংশীদারিত্ব (পিপিপি) জোরদারের আবশ্যকতা অনস্বীকার্য। বিশেষ করে ব্যয়বহুল অবকাঠামো উন্নয়ন এবং জ্বালানি খাত, পানি ব্যবস্থাপনা থেকে বিভিন্ন ক্ষেত্রের প্রয়োজনীয় প্রকল্প রূপায়ণের জন্য পিপিপি ব্যবস্থা দেশের অর্থনীতির চেহারাই পাল্টে দিতে পারে।
এই ব্যবস্থায় একদিকে যেমন বেসরকারি উদ্যোক্তারা প্রকল্পের জন্য প্রয়োজনীয় অর্থসংস্থান করতে পারেন, তেমনি সরকার অর্থ, প্রযুক্তিসহ নানা উপায়ে বিশেষ করে বেসরকারি পুঁজির নিরাপত্তাবলয় হিসেবে অবদান রাখতে পারে। এ ক্ষেত্রে সরকারের ব্যবস্থাপনাগত দুর্বলতা দূর করতে পারেন বেসরকারি উদ্যোক্তারা। এ প্রক্রিয়ায় বিশ্বে আজ অনেক বড় বড় প্রকল্প বাস্তবায়িত হচ্ছে। শনিবার ঢাকার এক হোটেলে 'পিপিপিকে আরও কার্যকর করতে সংসদ সদস্য ও বেসরকারি খাতের মধ্যে সহযোগিতা জোরদারকরণ' শীর্ষক আঞ্চলিক সম্মেলনে দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোতে বিদ্যমান আইনের দুর্বলতাকেই এ ক্ষেত্রে বিরাট বাধা হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে। আলোচকরা সবাই একবাক্যে এ জন্য দেশগুলোর আইনসভার সদস্য এবং বেসরকারি উদ্যোক্তাদের মধ্যে সহযোগিতা গড়ে তোলার ওপর জোর দিয়েছেন। আমরা মনে করি, আইনের দুর্বলতা দ্রুত দূর করে সরকারি-বেসরকারি অংশীদারিত্বকে এ অঞ্চলের দেশগুলোতে অর্থবহ পর্যায়ে নিয়ে যাওয়ার জন্য এটিই উত্তম পন্থা। আইনের কোন ধারাগুলো পরিবর্তন করা দরকার সে ব্যাপারে আইন প্রণেতাদের পরামর্শ দিতে পারবেন ব্যবসায়ীরা। এটা স্বীকার্য যে, দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোতে বিশেষত আমাদের দেশে অবকাঠামো ও জ্বালানি সমস্যা দ্রুত অর্থনৈতিক উন্নয়নের সম্ভাবনাকে মারাত্মকভাবে বাধাগ্রস্ত করছে। সস্তা শ্রমসহ উন্নয়নের বেশ কয়েকটি উপাদান এখানে সহজলভ্য হওয়া সত্ত্বেও উলি্লখিত কারণে ব্যাপক আকারে বিদেশি বিনিয়োগ আসছে না। আইনের দুর্বলতা দূর করার মাধ্যমে পিপিপির অধীনে উদ্যোক্তাদের পুঁজি ও মুনাফার নিরাপত্তা নিশ্চিত হলে তারা এসব খাতে বিনিয়োগে বিরাট অবদান রাখতে পারেন। এই প্রক্রিয়ায় এক সময় দক্ষিণ এশিয়া বিশ্ব অর্থনীতির প্রত্যাশিত ইঞ্জিন হয়ে উঠতে পারবে। শনিবারের আঞ্চলিক সম্মেলনটি এসব দিক থেকে যথেষ্ট গুরুত্বের দাবি রাখে। সম্মেলনের পরামর্শ অনুযায়ী পিপিপি কার্যকর করার পথে আইনি দুর্বলতা দূর করার জন্য সংসদ সদস্য ও ব্যবসায়ীদের মধ্যে সহযোগিতা গড়ে তোলার পদক্ষেপ যত তাড়াতাড়ি নেওয়া হবে, ততই বাংলাদেশসহ গোটা দক্ষিণ এশিয়ার জন্য মঙ্গল।
No comments