ঈদে আগাম বাড়ি ফেরায়ও ভোগান্তি
নির্বিঘ্নে বাড়ি ফেরার প্রত্যাশায় গতকাল রবিবার থেকেই শুরু হয় অনেকের ঈদযাত্রা। অন্যদিকে দশমীর মাত্র দুই দিন বাকি থাকায় হিন্দু সম্প্রদায়ের বেশির ভাগ লোকের গতকালই বাড়ি ফেরা ছিল প্রায় অত্যাবশ্যকীয়।
তাই গাবতলী, সায়েদাবাদ এবং মহাখালী বাস টার্মিনালে যাত্রীদের চাপ বাড়ার পাশাপাশি নগরীজুড়ে যানজট ছিল তীব্র। দেড় ঘণ্টার পথ পেরোতে হয়েছে তিন ঘণ্টায়। যাদের টিকিট কাটা ছিল, তাদের সময়মতো পৌঁছাতেই গলদঘর্ম হতে হয়।
বেসরকারি কম্পানির কর্মকর্তা পরেশ সাহা সিলেটের বাড়িতে পূজা উদ্যাপন করতে মিরপুরের শেওড়াপাড়া থেকে সকাল ১০টায় রওনা দেন সায়েদাবাদের উদ্দেশে। তিনি বলেন, 'সায়েদাবাদ পৌঁছাতেই বাজল ১টা। বিজয় সরণি, কারওয়ান বাজার, কাকরাইল, টিটিপাড়া আর সায়েদাবাদের যানজটে দেড় ঘণ্টার পথে তিন ঘণ্টা লেগে গেল। দেড়টায় শ্যামলী পরিবহনের বাসে উঠে নিশ্চিন্তে বসলেও গাড়ি যেন এগোচ্ছে না। ফ্লাইওভার নির্মাণের কারণে বিভিন্ন স্থানে রাস্তা বন্ধ থাকায় যাত্রাবাড়ী পৌঁছাই সোয়া এক ঘণ্টায়।' মোবাইল ফোনে তিনি আরো বলেন, 'কাঁচপুর ব্রিজের পাঁচ মিনিটের পথ পেরোতে লাগল আরো ২৫ মিনিট। রূপগঞ্জ থেকে ভুলতায় যেতেও পৌনে এক ঘণ্টা সময় লাগল। নরসিংদী পর্যন্ত রাস্তার দুই পাশেই উঁচু-নিচু গর্ত। একটা গাড়িকে সাইড দিতে গেলেই চাকা পড়ে যায় গর্তে। তাই আতঙ্ক নিয়েই ফিরতে হচ্ছে বাড়িতে।'
গতকাল রাজধানীজুড়ে ছিল প্রচণ্ড যানজট। এমনিতেই সপ্তাহের শুরুর দিন এবং সঙ্গে যোগ হয়েছিল বাড়ি ফেরা মানুষ। উত্তরা থেকে মতিঝিল যেতে সময় লাগছিল প্রায় তিন ঘণ্টা। মহাখালী ফ্লাইওভারের ওপর প্রতিটি গাড়িকেই আটকে থাকতে হয়। সায়েদাবাদে মানুষের প্রচণ্ড চাপ থাকায় বাসাবো, গুলিস্তান ও কমলাপুরে ছিল দুঃসহ যানজট। ১০ মিনিটের হাঁটার পথ পেরোতে এক ঘণ্টা লেগে যায়। কিন্তু অনেকেই হাতে ব্যাগ এবং বিভিন্ন জিনিসপত্র থাকায় গাড়ি থেকে নেমে হেঁটে যেতেও পারছিল না। বাধ্য হয়ে গাড়িতেই বসে থাকতে হয়।
ঈদে বাড়ি ফেরা মানুষের চাপ সামলাতে গুলিস্তান থেকে যাত্রাবাড়ী পর্যন্ত সড়কে নেওয়া হয়নি কোনো বিশেষ ব্যবস্থা। ফ্লাইওভার নির্মাণের কারণে সড়কটির বেশির ভাগ জায়গায়ই মালপত্র রাখা হয়েছে। রাস্তার বড় অংশ বন্ধ করে কাজ করা হচ্ছে। আবার কাজ শেষ হয়ে গেলেও অকারণে অনেক স্থান বন্ধ রাখা হয়েছে। কোনো রকমে এক লেনে এঁকেবেঁকে গাড়ি চলছে। খানাখন্দ আর বড় বড় গর্তে পরিপূর্ণ পুরো রাস্তা। গর্তে পড়ে অনেক সময়ই বাসগুলো আটকে থাকছে। ঈদের পাঁচ দিন আগে থাকতেই এ অবস্থা সৃষ্টি হওয়ায় সামনে আরো ভয়াবহ অবস্থার আশঙ্কা করছে ঘরে ফেরা লোকজন।
গাবতলী বাসস্ট্যান্ডে গিয়ে দেখা যায়, সকাল থেকেই দক্ষিণাঞ্চলের বাড়ি ফেরা মানুষ জড়ো হচ্ছিল এ টার্মিনালে। অনেকেই অফিস শেষ করে আসবেন বলেও জানা যায়। তবে মাওয়া-কাওরাকান্দি ফেরিঘাটে ট্রাক পারাপার বন্ধ থাকায় বেশির ভাগ ট্রাকই পার হচ্ছিল পাটুরিয়া-গোয়ালন্দ এবং আরিচা-নগরবাড়ী দিয়ে। তাই সকাল থেকেই ফেরি পারের অপেক্ষায় শত শত বাস।
সাদ সুপার ডিলাঙ্রে সুপারভাইজার সাঈদ হোসেন বলেন, 'গোয়ালন্দে সকাল ৭টা থেকে প্রায় আড়াই শ গাড়ির পেছনে থেকে অপেক্ষা করছিলাম। আর গরুর ট্রাক তো ছিল অনেক। ১১টার দিকে ফেরির সিরিয়াল পাই। গাবতলী পৌঁছাতে দুপুর ২টা বেজে যায়। অথচ আমার ১টায় গাবতলী থেকে ট্রিপ নিয়ে ফেরার কথা ছিল।'
ইমরান হোসেন অপেক্ষা করছিলেন বরিশালের সূর্যমুখী পরিবহনের জন্য। তিনি বলেন, 'দুপুর ১টায় গাড়ি ছাড়ার কথা থাকলেও দেড়টা বাজে, গাড়ির দেখা নেই। কাউন্টার থেকে বলেছে ১০ মিনিটের ভেতরে চলে আসবে, হেমায়েতপুরে যানজটে আছে। তাই অপেক্ষা করছি।'
বাসের জন্য অপেক্ষা করা নীলুফার বলেন, 'ঝামেলা এড়াতেই একটু আগে বাড়িতে যাচ্ছি। হাজারীবাগ থেকে এ পর্যন্ত আসতেই দুই ঘণ্টা লাগল। আবার ফেরিঘাটে যানজটের কথা শুনে ভয় লাগছে। এখনই যদি যানজট হয়, তাহলে পরে গেলেও পারতাম। সঙ্গে ছোট বাচ্চা, বুঝতে পারছি না কী হবে।'
গাবতলী টার্মিনালে যেন পুরুষের চেয়ে নারীর সংখ্যাই ছিল বেশি। বিশেষ করে অনেক পরিবার মহিলা ও শিশুদের আগেই বাড়ি পাঠিয়ে দিচ্ছে, যাতে ভোগান্তিতে না পড়তে হয়। এ টার্মিনালে বড় বড় কম্পানির বাসগুলো ছাড়া অন্যান্য পরিবহনের টিকিট পাওয়া যাচ্ছিল। সেলসম্যানদের ডাকাডাকিও শোনা যায়। কাউন্টারগুলো জানায়, ২৪ অক্টোবর থেকে সব টিকিট বিক্রি হয়ে গেছে এবং ওই দিন থেকেই যাত্রীদের প্রচণ্ড চাপ পড়বে। তবে স্পেশাল কিছু ট্রিপ ছাড়া হবে, যেগুলোর টিকিট তাৎক্ষণিক দেওয়া হবে।
গাবতলী টার্মিনালে পুলিশ ও র্যাব ক্যাম্প বসানো হয়েছে। বেশি ভাড়া যাতে আদায় করা না হয় সে জন্য বিআরটিএর ভিজিল্যান্স টিমও সার্বক্ষণিক কাজ করছে বলে জানা যায়।
গতকাল কমলাপুর স্টেশনে সাধারণের চেয়ে যাত্রীদের চাপ অনেক বেশি ছিল। এর মধ্যেও বেশ কিছু রুটের ট্রেনের টিকিট তাৎক্ষণিক পাওয়া গেছে। সকাল থেকে সময়মতো সব ট্রেন ছেড়ে গেছে বলে জানান স্টেশন ম্যানেজার মো. খায়রুল বশীর। তিনি বলেন, 'মূল চাপ শুরু হবে আগামী ২৩ অক্টোবর মঙ্গলবার থেকে। তবে আমাদের বিশেষ ট্রেন এবং স্ট্যান্ডিং টিকিট থাকায় যাত্রীদের চাপ মোকাবিলা করতে পারব।'
বেসরকারি কম্পানির কর্মকর্তা পরেশ সাহা সিলেটের বাড়িতে পূজা উদ্যাপন করতে মিরপুরের শেওড়াপাড়া থেকে সকাল ১০টায় রওনা দেন সায়েদাবাদের উদ্দেশে। তিনি বলেন, 'সায়েদাবাদ পৌঁছাতেই বাজল ১টা। বিজয় সরণি, কারওয়ান বাজার, কাকরাইল, টিটিপাড়া আর সায়েদাবাদের যানজটে দেড় ঘণ্টার পথে তিন ঘণ্টা লেগে গেল। দেড়টায় শ্যামলী পরিবহনের বাসে উঠে নিশ্চিন্তে বসলেও গাড়ি যেন এগোচ্ছে না। ফ্লাইওভার নির্মাণের কারণে বিভিন্ন স্থানে রাস্তা বন্ধ থাকায় যাত্রাবাড়ী পৌঁছাই সোয়া এক ঘণ্টায়।' মোবাইল ফোনে তিনি আরো বলেন, 'কাঁচপুর ব্রিজের পাঁচ মিনিটের পথ পেরোতে লাগল আরো ২৫ মিনিট। রূপগঞ্জ থেকে ভুলতায় যেতেও পৌনে এক ঘণ্টা সময় লাগল। নরসিংদী পর্যন্ত রাস্তার দুই পাশেই উঁচু-নিচু গর্ত। একটা গাড়িকে সাইড দিতে গেলেই চাকা পড়ে যায় গর্তে। তাই আতঙ্ক নিয়েই ফিরতে হচ্ছে বাড়িতে।'
গতকাল রাজধানীজুড়ে ছিল প্রচণ্ড যানজট। এমনিতেই সপ্তাহের শুরুর দিন এবং সঙ্গে যোগ হয়েছিল বাড়ি ফেরা মানুষ। উত্তরা থেকে মতিঝিল যেতে সময় লাগছিল প্রায় তিন ঘণ্টা। মহাখালী ফ্লাইওভারের ওপর প্রতিটি গাড়িকেই আটকে থাকতে হয়। সায়েদাবাদে মানুষের প্রচণ্ড চাপ থাকায় বাসাবো, গুলিস্তান ও কমলাপুরে ছিল দুঃসহ যানজট। ১০ মিনিটের হাঁটার পথ পেরোতে এক ঘণ্টা লেগে যায়। কিন্তু অনেকেই হাতে ব্যাগ এবং বিভিন্ন জিনিসপত্র থাকায় গাড়ি থেকে নেমে হেঁটে যেতেও পারছিল না। বাধ্য হয়ে গাড়িতেই বসে থাকতে হয়।
ঈদে বাড়ি ফেরা মানুষের চাপ সামলাতে গুলিস্তান থেকে যাত্রাবাড়ী পর্যন্ত সড়কে নেওয়া হয়নি কোনো বিশেষ ব্যবস্থা। ফ্লাইওভার নির্মাণের কারণে সড়কটির বেশির ভাগ জায়গায়ই মালপত্র রাখা হয়েছে। রাস্তার বড় অংশ বন্ধ করে কাজ করা হচ্ছে। আবার কাজ শেষ হয়ে গেলেও অকারণে অনেক স্থান বন্ধ রাখা হয়েছে। কোনো রকমে এক লেনে এঁকেবেঁকে গাড়ি চলছে। খানাখন্দ আর বড় বড় গর্তে পরিপূর্ণ পুরো রাস্তা। গর্তে পড়ে অনেক সময়ই বাসগুলো আটকে থাকছে। ঈদের পাঁচ দিন আগে থাকতেই এ অবস্থা সৃষ্টি হওয়ায় সামনে আরো ভয়াবহ অবস্থার আশঙ্কা করছে ঘরে ফেরা লোকজন।
গাবতলী বাসস্ট্যান্ডে গিয়ে দেখা যায়, সকাল থেকেই দক্ষিণাঞ্চলের বাড়ি ফেরা মানুষ জড়ো হচ্ছিল এ টার্মিনালে। অনেকেই অফিস শেষ করে আসবেন বলেও জানা যায়। তবে মাওয়া-কাওরাকান্দি ফেরিঘাটে ট্রাক পারাপার বন্ধ থাকায় বেশির ভাগ ট্রাকই পার হচ্ছিল পাটুরিয়া-গোয়ালন্দ এবং আরিচা-নগরবাড়ী দিয়ে। তাই সকাল থেকেই ফেরি পারের অপেক্ষায় শত শত বাস।
সাদ সুপার ডিলাঙ্রে সুপারভাইজার সাঈদ হোসেন বলেন, 'গোয়ালন্দে সকাল ৭টা থেকে প্রায় আড়াই শ গাড়ির পেছনে থেকে অপেক্ষা করছিলাম। আর গরুর ট্রাক তো ছিল অনেক। ১১টার দিকে ফেরির সিরিয়াল পাই। গাবতলী পৌঁছাতে দুপুর ২টা বেজে যায়। অথচ আমার ১টায় গাবতলী থেকে ট্রিপ নিয়ে ফেরার কথা ছিল।'
ইমরান হোসেন অপেক্ষা করছিলেন বরিশালের সূর্যমুখী পরিবহনের জন্য। তিনি বলেন, 'দুপুর ১টায় গাড়ি ছাড়ার কথা থাকলেও দেড়টা বাজে, গাড়ির দেখা নেই। কাউন্টার থেকে বলেছে ১০ মিনিটের ভেতরে চলে আসবে, হেমায়েতপুরে যানজটে আছে। তাই অপেক্ষা করছি।'
বাসের জন্য অপেক্ষা করা নীলুফার বলেন, 'ঝামেলা এড়াতেই একটু আগে বাড়িতে যাচ্ছি। হাজারীবাগ থেকে এ পর্যন্ত আসতেই দুই ঘণ্টা লাগল। আবার ফেরিঘাটে যানজটের কথা শুনে ভয় লাগছে। এখনই যদি যানজট হয়, তাহলে পরে গেলেও পারতাম। সঙ্গে ছোট বাচ্চা, বুঝতে পারছি না কী হবে।'
গাবতলী টার্মিনালে যেন পুরুষের চেয়ে নারীর সংখ্যাই ছিল বেশি। বিশেষ করে অনেক পরিবার মহিলা ও শিশুদের আগেই বাড়ি পাঠিয়ে দিচ্ছে, যাতে ভোগান্তিতে না পড়তে হয়। এ টার্মিনালে বড় বড় কম্পানির বাসগুলো ছাড়া অন্যান্য পরিবহনের টিকিট পাওয়া যাচ্ছিল। সেলসম্যানদের ডাকাডাকিও শোনা যায়। কাউন্টারগুলো জানায়, ২৪ অক্টোবর থেকে সব টিকিট বিক্রি হয়ে গেছে এবং ওই দিন থেকেই যাত্রীদের প্রচণ্ড চাপ পড়বে। তবে স্পেশাল কিছু ট্রিপ ছাড়া হবে, যেগুলোর টিকিট তাৎক্ষণিক দেওয়া হবে।
গাবতলী টার্মিনালে পুলিশ ও র্যাব ক্যাম্প বসানো হয়েছে। বেশি ভাড়া যাতে আদায় করা না হয় সে জন্য বিআরটিএর ভিজিল্যান্স টিমও সার্বক্ষণিক কাজ করছে বলে জানা যায়।
গতকাল কমলাপুর স্টেশনে সাধারণের চেয়ে যাত্রীদের চাপ অনেক বেশি ছিল। এর মধ্যেও বেশ কিছু রুটের ট্রেনের টিকিট তাৎক্ষণিক পাওয়া গেছে। সকাল থেকে সময়মতো সব ট্রেন ছেড়ে গেছে বলে জানান স্টেশন ম্যানেজার মো. খায়রুল বশীর। তিনি বলেন, 'মূল চাপ শুরু হবে আগামী ২৩ অক্টোবর মঙ্গলবার থেকে। তবে আমাদের বিশেষ ট্রেন এবং স্ট্যান্ডিং টিকিট থাকায় যাত্রীদের চাপ মোকাবিলা করতে পারব।'
No comments