দুই দেশের মধ্যে তিনটি চুক্তি সই- চীনকে আরও বিনিয়োগের আহ্বান প্রধানমন্ত্রীর

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বাংলাদেশের জ্বালানি, কৃষি ও অবকাঠামো খাতের উন্নয়নে আরও বেশি বিনিয়োগ করার জন্য চীন সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন। গতকাল রোববার প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে চীনের কমিউনিস্ট পার্টির


(সিপিসি) কেন্দ্রীয় কমিটির উচ্চপর্যায়ের এক প্রতিনিধিদলের সঙ্গে বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী এই আহ্বান জানান। খবর বাসসের।
প্রতিনিধিদলের নেতৃত্বে রয়েছেন সিপিসির কেন্দ্রীয় কমিটির পলিটব্যুরোর স্থায়ী কমিটির সদস্য লি চ্যাংচিন। বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী বলেন, বাংলদেশে চীনের বিনিয়োগ বাড়ানো, অবকাঠামোর উন্নয়ন এবং আঞ্চলিক যোগাযোগ ও বাণিজ্য ঘাটতি দূর করতে সহায়তার মাধ্যমে বিদ্যমান দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ককে আরও জোরদার করা সম্ভব।
বৈঠক শেষে প্রধানমন্ত্রীর প্রেস সচিব আবুল কালাম আজাদ সাংবাদিকদের জানান, প্রধানমন্ত্রী বাংলাদেশে চীনের কোম্পানিগুলোর জন্য পৃথক একটি বিশেষ অর্থনৈতিক এলাকা গঠনে জমি দেওয়ার প্রস্তাব করেন। তিনি বাংলাদেশ থেকে অধিক পণ্য আমদানির জন্য চীনের ব্যবসায়ীদের উৎসাহিত করতেও প্রতিনিধিদলের প্রতি আহ্বান জানান। তিনি বলেন, ঢাকা কৃষি প্রক্রিয়াকরণ, জ্বালানি, বিদ্যুৎ, ওষুধ, যোগাযোগ ও অবকাঠামো উন্নয়ন খাতে চীনের অধিক বিনিয়োগকে স্বাগত জানাবে।
প্রতিনিধিদলের প্রধান লি চ্যাংচিন নারায়ণগঞ্জের পাগলায় পানি শোধনাগারের সম্প্রসারণ এবং সড়ক ও যোগাযোগব্যবস্থার উন্নয়নে সহযোগিতার জন্য প্রধানমন্ত্রীর কাছে প্রস্তাব দেন। তিনি বলেন, চীন সরকার সে দেশে লেখাপড়ার সুবিধার্থে বাংলাদেশি শিক্ষার্থীদের বৃত্তি দ্বিগুণ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
চীনের প্রতিনিধিদলের মধ্যে রয়েছেন: কেন্দ্রীয় কমিটির আন্তর্জাতিক বিভাগের মন্ত্রী ওয়াং জিয়ারুই, শিক্ষামন্ত্রী ইয়াং গুইরেন, সংস্কৃতিমন্ত্রী কাই বু, রেডিও, ফিল্ম ও টেলিভিশনবিষয়ক স্টেট অ্যাডমিনিস্ট্রেশন মন্ত্রী কাই ফুচাও, প্রেস ও পাবলিকেশনবিষয়ক জেনারেল অ্যাডমিনিস্ট্রেশন মন্ত্রী লিউ বিন ঝি ও বাণিজ্যবিষয়ক ভাইস মিনিস্টার জিয়াং জেংওয়েল।
তিনটি চুক্তি স্বাক্ষর: বাংলাদেশ ও চীনের মধ্যে গতকাল তিনটি দ্বিপক্ষীয় চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছে। বিদ্যুৎসহ বিভিন্ন খাতে অর্থনৈতিক ও কারিগরি সহায়তা বৃদ্ধির লক্ষ্যে এ চুক্তি হয়। এর মধ্যে একটি সমঝোতা, একটি সমঝোতা সঞ্চারক (এমওইউ) এবং একটি কাঠামোগত চুক্তি রয়েছে।
সূত্র জানায়, অর্থনৈতিক ও কারিগরি সহায়তার ওপর চুক্তি ছাড়াও চীন বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাতে সহযোগিতা শক্তিশালী করবে এবং অবকাঠামো চুক্তির আওতায় বাংলাদেশকে কনসেশনাল ঋণ দেবে। চীনা প্রতিনিধিদলের সদস্য ও বাণিজ্যবিষয়ক ভাইস মিনিস্টার ঝিয়াং জেংগেল এবং বাংলাদেশের অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের জ্যেষ্ঠ সচিব ইকবাল মাহমুদ ও বিদ্যুৎ বিভাগের সচিব আবুল কালাম আজাদ প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে শেখ হাসিনার পক্ষে চুক্তিতে স্বাক্ষর করেন।
রাষ্ট্রপতির সঙ্গে প্রতিনিধিদের সাক্ষাৎ: বাংলাদেশ সফররত চীনা প্রতিনিধিদল গতকাল বঙ্গভবনে রাষ্ট্রপতি জিল্লুর রহমানের সঙ্গে দেখা করেছে। বৈঠককালে রাষ্ট্রপতি চীনা প্রতিনিধিদলকে স্বাগত জানান এবং চীনকে বাংলাদেশের অন্যতম প্রধান উন্নয়ন অংশীদার হিসেবে বর্ণনা করেন। রাষ্ট্রপতি সাহিত্যে নোবেল পাওয়ার জন্য চীনা লেখক মো. ইয়ানকে প্রতিনিধিদের মাধ্যমে অভিনন্দন জানান।

No comments

Powered by Blogger.